Ajker Patrika

ইউক্যালিপটাস-আকাশমণি নিষিদ্ধে সখীপুরে বিপাকে শতাধিক নার্সারি মালিক

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
সখীপুর উপজেলার শোলাপ্রতিমা গ্রামের একটি নার্সারিতে রাখা ইউক্যালিপটাস চারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সখীপুর উপজেলার শোলাপ্রতিমা গ্রামের একটি নার্সারিতে রাখা ইউক্যালিপটাস চারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন শতাধিক নার্সারি মালিক ও কৃষক। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪০ লাখ চারা উৎপাদন করা হয়েছে। হঠাৎ এই নিষেধাজ্ঞায় চারা বিক্রি তো দূরের কথা—এখন সেগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

প্রতিমা বংকী, শোলা প্রতিমা, বোয়ালীসহ বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক হারে বাণিজ্যিকভাবে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের চারা উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতিবছর এই উপজেলায় প্রায় ৬০ লাখ চারা তৈরি করেন নার্সারির মালিকেরা, যা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় কৃষক ও নার্সারির মালিকদের ভাষ্য, উচ্চ মুনাফার আশায় ফলদ ও দেশি গাছ বাদ দিয়ে অধিকাংশ জমিতে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা লাগানো হচ্ছে। বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের বাইরেও ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ছে এসব গাছের চাষ।

তবে উদ্ভিদবিদ ও পরিবেশবিদদের মতে, ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি প্রজাতির গাছ মাটির উর্বরতা নষ্ট করে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নামিয়ে আনে। এই প্রেক্ষাপটে ১৫ মে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এসব চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়।

প্রতিমা বংকী গ্রামের শরিফুল ইসলাম, আব্দুর রহিম, নাসির উদ্দিন ও শহিদুল ইসলাম জানান, তাঁরা সবাই মিলে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার চারা উৎপাদন করেছেন। এখন এসব চারা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

উপজেলা নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘চারা উৎপাদন হয়ে গেছে। এখন যদি বিক্রি না করা যায়, তাহলে কৃষকেরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই আমরা সরকারি ভর্তুকির দাবি জানাচ্ছি।’

সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা বিষয়টি নার্সারির মালিকদের জানিয়েছি। তবে সরকারি সহযোগিতার বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি।’

টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগের বাগানগুলো রাখা গেলেও নতুন করে এসব চারা উত্তোলন ও বিক্রি নিষিদ্ধ। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত