Ajker Patrika

পরিবার সচেতন হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৭: ৫৭
পরিবার সচেতন হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

দেশে ৮০ লাখের বেশি মাদকাসক্ত আছে। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ যুবক। তাদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ শিক্ষিত আর অশিক্ষিত রয়েছে ৪০ শতাংশ। এটি খুবই ভয়াবহ একটি চিত্র। মাদকের এই ভয়বহতা দূর করতে শিগগিরই আইন সংশোধন করা হচ্ছে। আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কি মনে আছে সেই ঐশির কথা? মাদকের এই ছোবল থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হলে পরিবারের মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটাতে হবে। পরিবার সচেতন হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। মনে রাখবেন, মাদকের সঙ্গে জড়িতদের শেষ গন্তব্য কিন্তু কারাগার।’ 

আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই ইয়াবায় আসক্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর আছে হেরোইন। এখন আবার আইস এসেছে। এসব মাদক বিক্রি ও ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় যুবসমাজ সেবনের পাশাপাশি ব্যবসায়ও ঝুঁকে পড়ছে। আমাদের এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে ভয়াবহতা অপেক্ষা করছে। সচেতনতার মাধ্যমেও পরিবর্তন সম্ভব।’ 

এ সময় ১০ শতাংশ মানুষ সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাদকে কেউ একবারেই আসক্ত হয় না। প্রথমে সিগারেটে টান দেয়, পরে অন্য কিছু বা গাঁজা খেয়ে সে শূন্যে ভেসে বেড়ায়। মাদকের বিস্তার রোধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ভিশন-২০৪১-এ মাদকমুক্ত উন্নত দেশ গড়ার কথা জানিয়েছেন। আমরা মাদক থেকে বাঁচতে পারলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না।’ 

মাদক নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। তবে ভয়াল মাদক আসে মিয়ানমার থেকে। দেশটি সহযোগিতা ও নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দেয়, কিন্তু বাস্তবে কিছুই করে না। নাফ নদী পার হলেই মিয়ানমারের বিভিন্ন রুট দিয়ে মাদক আসে, আবার দুর্গম পাহাড় এলাকা দিয়েও মাদক আসে। দেশটি থেকে মাদক যাতে ঠেকানো যায়, এ জন্য আমরা বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করছি। মাদক প্রতিরোধে বিজিবিকে হেলিকপ্টার দিয়েছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ডোপ টেস্টের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি। ডোপ টেস্ট করার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যে যুবকই মাদকে আক্রান্ত হবে, তাকে হাসপাতালে পাঠাব। সরকারি চাকরি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেও আমরা ডোপ টেস্ট করাব।’ 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন। 

এর আগে রোববার দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করার জন্য আইন তৈরি হচ্ছে (সংশোধন) বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওই আইনের মধ্যেই থাকবে, ভর্তির সময় মেডিকেল টেস্ট করা হবে, যেখানে ডোপ টেস্টও যুক্ত হবে।’ 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে ডোপ টেস্ট আগেই শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যাঁরাই নিয়োগ পাবেন, তাঁদের যেন ডোপ টেস্ট করা হয় এবং সিভিল সার্জন যে টেস্ট করেন, সেখানে যেন এই ডোপ টেস্ট যুক্ত করা হয়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেটিও চলে এসেছে। এটিও (ভর্তিচ্ছুদের ডোপ টেস্ট) করা হচ্ছে। তবে এটি ব্যাপকভাবে করার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। সেই প্রচেষ্টাও শুরু করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত