Ajker Patrika

কাঁকড়ি নদীর দখল নিয়ে কাড়াকাড়ি

মো. আকতারুজ্জামান চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা
নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা। কয়েকবার উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক প্রভাবে তা থমকে গেছে। কাঁকড়ি নদীর উজিরপুর ইউনিয়নের মিয়ার বাজার এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা। কয়েকবার উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক প্রভাবে তা থমকে গেছে। কাঁকড়ি নদীর উজিরপুর ইউনিয়নের মিয়ার বাজার এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কাঁকড়ি নদীর পাড় নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি। দুই পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা। জমি হাতবদল করলেই দখলকারীরা পাচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। উচ্ছেদে কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তা থমকে গেছে। সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে এই দখল-বাণিজ্যে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি টাকার বিনিময়ে তিনি অন্যের জমি দখলে সহযোগিতা করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।

কাঁকড়ি বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তসীমা নদী। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পূর্বাংশের সিপাহীজলা জেলা হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ইউনিয়ন দিয়ে প্রবেশ করে কাশিনগর ইউনিয়ন হয়ে ডাকাতিয়া নদীতে গিয়ে মিশেছে। সর্পিলাকার নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ২২ মিটার। দখল-দূষণে কালের বিবর্তনে নদীটি এখন মৃতপ্রায়।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, প্রভাবশালী মহল নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে তুলেছে কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা। গড় প্রস্থ কমতে কমতে এখন ৯ থেকে ১০ মিটার রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকবার নদীটি খনন করলেও তা কাজে আসেনি। কাঁকড়ি নব্যতা হারানোয় বর্ষা মৌসুমে প্লাবিত হয় তিন ইউনিয়নের জনপদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়া বাজার, কলাবাগান ও কাশিনগরের বিশাল এলাকাজুড়ে প্রভাবশালী মহল দুই পাড় দখল করে নদীর জায়গা কেনাবেচা করছে। কাশিনগরে নদীর পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে শতাধিক মার্কেট ও দোকানঘর।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাশিনগর এলাকার জুলফে আলী মেম্বার তাঁর দখল করা জায়গাটি বিক্রি করেন জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে। একই কায়দায় আবুল কাশেম, মনিরুজ্জামান দখল বিক্রি করেছেন তৃতীয় পক্ষের কাছে। এ ছাড়াও ফয়েজ আহাম্মেদ ও মো. হারুন বিক্রি করেছেন জসিম ও সুলতান নামের ব্যক্তির কাছে। অহিদ মিয়া তাঁর দখল বিক্রি করেছেন নুর হোসেন ও আবুল মিয়ার কাছে। এমন অনেকে নিজের দখল করা জমি বিক্রি করেছেন। এ জায়গাগুলোয় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানঘর ও বহুতল মার্কেট।

কাশিনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সামছুল আলম বলেন, কাশিনগর এলাকায় কাঁকড়ি নদীর কয়েক একর জায়গা রয়েছে। জায়গাগুলো যে যার মতো দখল করে মার্কেট ও দোকানঘর তৈরি করেছেন। দখলস্বত্ব হিসেবে অনেকে আবার অন্যের কাছে কোটি টাকায় বিক্রিও করছেন। ‘আপনিও তো নদীর জায়গা বিক্রি করে দিয়েছেন’—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আমার দখল স্বত্বের জায়গাটি অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। আমার মতো অনেকেই কেনাবেচা করছেন।’

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলেছে, নদীর কাশিনগর এলাকায় ২০২০ সালে ৬৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদ অভিযানের তারিখ ধার্য করা হয়। জেলা প্রশাসন কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও নিযুক্ত করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকের হস্তক্ষেপে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।

আবুল বাশার নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘কাশিনগর বাজারে কাঁকড়ি নদীর পাড়ে আমাদের একটি তেলের মিল ছিল। সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের সহযোগিতায় ২০২১ সালে আমার প্রতিষ্ঠানটি রাতের আঁধারে দখল করে নেন সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। বিনিময়ে সাইফুলের কাছ থেকে মুজিবুল হক পান ৫ কোটি টাকা। আমি প্রতিবাদ করলে মুজিবুল হক আমার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে এলাকা থেকে বিতাড়িত করেন।’

আবুল বাশার আরও বলেন, ‘আমি আমার সেই দোকানের পাশে আব্দুস সালামের কাছ থেকে ১০ শতক জায়গা দুই কোটি টাকা দিয়ে দখলসূত্রে কিনেছিলাম। আমার সেই জায়গাটিও তাঁরা দখল করেছেন।’

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ অলিউজ্জামান বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযান একটি নিয়মিত কার্যক্রম। আমরা পর্যায়ক্রমে জেলার সব নদীর অবৈধ দখল স্থাপনা উচ্ছেদ করব। কাঁকড়ি নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য মন্ত্রণালয়ে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করব।’

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘কাঁকড়ি নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজখবর নিয়ে উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে স্টেডিয়াম নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ, দুদকের অভিযান

নোয়াখালী প্রতিনিধি
দুদকের অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুদকের অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে দুদক নোয়াখালী কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জাহেদ আলম ও ইন্সপেক্টর মো. ইদ্রিসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

দুদক জানায়, গত দেড় বছর আগে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে সোনাইমুড়ী উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শুরু করে মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, বালু ব্যবহার, স্ল্যাব ও সিঁড়ির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ কমসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তথ্য পেয়ে অভিযান চালায় দুদক নোয়াখালীর একটি দল।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুজন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করার পর নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া পুরো স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজে ব্যবহৃত অন্য সামগ্রীর গুণগত মান নিয়েও অনিয়ম পাওয়া গেছে।

তবে অভিযান পরিচালনার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বা তাঁর কোনো সহকারীকে পাওয়া যায়নি।

দুদকের ইন্সপেক্টর মো. ইদ্রিস বলেন, ‘মিনি স্টেডিয়ামটি নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। অনিয়মগুলো আমরা লিপিবদ্ধ করেছি। প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণের পর সেখান থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছুটি পায়নি অসুস্থ শ্রমিক, মৃত্যুর পর ক্ষুব্ধ সহকর্মীদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর অংশে অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর অংশে অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অসুস্থ শ্রমিককে ছুটি না দেওয়া ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণের অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা।

এতে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মহাসড়কের মদনপুর অংশে তাঁরা এ অবরোধ করেন। পরে প্রশাসন তাঁদের বুঝিয়ে দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।

জানা যায়,বন্দর উপজেলার ‘লারিস ফ্যাশন’ নামক একটি গার্মেন্টসের একজন নারী শ্রমিক অসুস্থ অবস্থায় কাজ করে যাচ্ছিলেন।গতকাল তিনি বেশি অসুস্থতা বোধ করলে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। তবে কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে কোনো সাড়া না দিয়ে কাজ করে যেতে বাধ্য করেন।এ অবস্থায় ওই নারী অতিরিক্ত অসুস্থ হয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান।তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের সহকর্মী মারা যাওয়ার জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। অসুস্থ হওয়া সত্বেও তাঁরা ছুটি না দেওয়ায় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। মালিকপক্ষের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁরা এ আন্দোলনে নামেন।

এ বিষয়ে লারিস ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল বলেন, ‘গতকাল আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই খানে মৃত্যু হয়। এটা তো আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এবং মৃত্যুর পর দাফন সম্পন্ন করতে যত কার্যক্রম ছিল সবই আমাদের কোম্পানি থেকে করা হয়েছে। মৃত্যুর পেছনে তো কারও হাত থাকে না। আমরা ওই শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা তাদের কথা দিয়েছি যে সব ধরনের সাহায্য করব। আমাদের কোম্পানি থেকে তাদের জন্য অর্থনৈতিক একটা ব্যবস্থাও করা হবে। তবে আমাদের কোম্পানির শ্রমিকদের দাবি যে ওই ফ্লোরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা লাগবে। আমরা তাতেও রাজি হয়েছি। কিন্তু তারা তবুও সড়ক অবরোধ করেছে।’

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষকে দায়ী করে শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও উপস্থিত হয়ে তাঁদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিই। বর্তমান মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গঙ্গাচড়ায় ১৮ মাসের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

 গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ১৮ মাস বয়সী এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরের বিরুদ্ধে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী শিশুটিকে প্রথমে গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ঘটনার সময় তিনি ও তাঁর স্ত্রী ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁদের ছোট মেয়ে বাড়ির সামনে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল। একপর্যায়ে প্রতিবেশী কিশোর (অভিযুক্ত) গান শোনানোর কথা বলে শিশুটিকে কোলে করে নিজের শয়নকক্ষে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে তার মা-বাবা দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিশুটিকে ওই কক্ষে পাওয়া যায় কিন্তু অভিযুক্ত কিশোর দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এ সময় শিশুটির বাবার চিৎকারে প্রতিবেশীরাও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। শিশুটিকে রক্তক্ষরণ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।

শিশুটির বাবা বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসা ও আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করতে গিয়ে মামলা করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। আমি দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল ইমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, “ঘটনাটিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত স্বামী

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে ডোবায় উল্টে পড়ে ট্রাক। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে ডোবায় উল্টে পড়ে ট্রাক। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুরে স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে ট্রাকের চাপায় গাব্রিয়েল বিশ্বাস (৪২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের মধ্যকূল মাদারতলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত গাব্রিয়েল বিশ্বাস যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া মিশন এলাকার কাশেম বিশ্বাসের ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে গাব্রিয়েল বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী পল্লিচিকিৎসক ইয়াকুব আলীর কাছে চিকিৎসা নিতে মধ্যকূল মাদারতলায় যান। গাব্রিয়েল বিশ্বাস স্ত্রীকে রেখে চিকিৎসকের বাড়িসংলগ্ন যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে বসে প্রস্রাব করার সময় যশোরের দিক থেকে আসা একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিয়ে পাশের মাছের ঘেরে উল্টে পড়ে। এ সময় গাব্রিয়েল বিশ্বাস ওই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করেন। ডাক্তার দেখাতে এসে স্বামীর এমন মৃত্যুতে আহাজারিতে ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী।

ঘটনাস্থলে থাকা কেশবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ট্রাকের চালক এবং হেলপার দুজনেই পালিয়ে গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত