Ajker Patrika

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের অভিযোগ তদন্ত স্থগিত চেয়ে সিএসের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের অভিযোগ তদন্ত স্থগিত চেয়ে সিএসের চিঠি

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ৩২টি তদন্ত প্রতিবেদনের পরও তদন্ত শেষ হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাঁর বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে। এদিকে সুজন বড়ুয়ার অভিযোগ তদন্তে আপত্তি জানিয়ে কমিটির প্রধানকে তদন্ত স্থগিত করতে চিঠি দিয়েছেন সিভিল সার্জন (সিএস)। গত ২৮ মে তদন্ত কমিটির সভাপতিকে এই চিঠি দেন তিনি।

জানা গেছে, সুজন বড়ুয়ার অভিযোগ তদন্ত কমিটির প্রধানকে তদন্ত স্থগিত করতে চিঠি দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস। গত ২৮ মে তদন্ত কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আব্দুল মান্নানকে এই চিঠি দেন তিনি। এতে তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখতে সুজন বডুয়ার সংশ্লিষ্ট একটি আবেদন সুপারিশসহ অগ্রগ্রামী করেন সিভিল সার্জন। এ বিষয়ে আদালতে মামলা থাকার কথা জানান তিনি।

এর আগে গত ২৫ মে সিভিল সার্জন চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালককে দেওয়া আরেকটি চিঠিতে সুজন বড়ুয়াকে হয়রানিমূলক তদন্ত থেকে অব্যাহতি দিতে আবেদনও অগ্রগ্রামী করেন। এই আবেদনে সুজন বড়ুয়ার বিষয়ে ৩২টি তদন্ত প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন। এত অভিযোগ থাকলেও তাঁর তদন্ত শেষ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ দাবি করেন, তদন্তের বিষয়টি হয়রানিমূলক। এই বিষয়ে ৩২টি প্রতিবেদন আছে। যা সুজন বড়ুয়ার কাছে সংরক্ষিত।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ১৪ মে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির অপর দুজন সদস্য হলেন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিয়া বিনতে আলম এবং চট্টগ্রাম লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হানিফ। তদন্ত কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের মরিচ্যা পালং গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে তিনি ওই উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীর চাকরি নেন। এই ঠিকানা দিয়েই তিনি রাজশাহীর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি থেকে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স (এসআইটি) সম্পন্ন করেন।

এই সুজন বড়ুয়াই আবার ২০১২ সালে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি নেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের অধীনে থাকা স্বাস্থ্য বিভাগের রাজস্থলি উপজেলায়। কিন্তু এবার ঠিকানা দেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির উত্তর ঘুমধুমের বালুখালী গ্রাম। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামে ওই স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা থাকায় সুজন অনিয়মের আশ্রয় নেন।

রাঙামাটিতে সুজন বড়ুয়ার ভুয়া ঠিকানা দেখিয়ে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি দ্রুত বদলি হয়ে সটকে পড়েন বান্দরবানে। এতে অনেকটা আড়ালে পড়ে যায় তাঁর ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের বিষয়টি। সেখানে যোগ দেওয়ার অল্প দিনেই তিনি জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পান।

তদন্ত কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চট্টগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার জাল সনদ ও দুটি জন্ম নিবন্ধন দিয়ে চাকরি নেওয়া অভিযোগে তদন্ত স্থগিত রাখার আবেদন পাঠিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বললে আমরা তদন্ত স্থগিত রাখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত