ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া (নোয়াখালী)
হাতিয়ায় বিয়েবাড়ি, নতুন অতিথি আগমন, ঈদ, পূজাসহ বড় সব অনুষ্ঠানে মহিষের দইয়ের কদর অনেক বেশি। গ্রামাঞ্চলে দই ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান চিন্তাই করা যায় না। এই ঐতিহ্য চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা অতিথি ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছেও রয়েছে এর অনেক সুনাম। চরের মহিষের দুধ দিয়ে তৈরি করা এই দই এখন উপহার হিসেবে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। নোয়াখালীর এই দ্বীপ উপজেলার মহিষের দইয়ের বাণিজ্যিকভাবে রয়েছে অনেক সম্ভাবনা।
হাতিয়া উপজেলার চারপাশে ১০টি চরে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার মহিষ। বাতানেরা (মহিষ পালনের জন্য যাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়) এসব মহিষের দেখভাল করেন। প্রতিদিন বিভিন্ন চর থেকে প্রায় ৩ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করেন গোয়ালারা। তা দিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি করেন দই। চরের মহিষের দইয়ের কদর বেশি থাকায় বংশানুক্রমে অনেকে যুগ যুগ ধরে এই ব্যবসা করে আসছেন।
আফাজিয়া বাজারের সুজয় দধি ভান্ডারের মালিক মনিন্দ কুমার দেবনাথ (৮৫) জানান, ১৯৬৯ সাল থেকে এই ব্যবসা করে আসছেন। তখন এক মণ দুধ পাওয়া যেত ১০-১২ টাকায়। এখন বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। ব্যবসা ছেলের হাতে তুলে দিয়েছেন। মাঝেমধ্যে তিনি এসে দেখভাল করেন।
মনিন্দ কুমার দেবনাথ আরও জানান, এখন দইয়ের ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে মাটির হাঁড়িতে দই বসানো হতো। এখন টিনের কৌটা ও প্লাস্টিকের বালতিতে বসানো হয়। তবে মান আগের মতো রয়ে গেছে। বাপ-চাচাদের হাতে শিক্ষা নিয়ে করা এই ব্যবসায় কখনো রাসায়নিক ব্যবহার করেননি। এর পরও স্বাদ ও সুনাম অক্ষুণ্ন রয়েছে। আগে মানুষ মাটির ছোট হাঁড়ির একটি দুটি করে কিনে নিয়ে যেত। এখন মানুষ মণকে মণ কিনে নেয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।
মনিন্দ কুমার দেবনাথের ছেলে সঞ্জয় কুমার দেবনাথ জানান, এক কেজি দুধে ৭০০-৮০০ গ্রাম দই হয়। স্থানীয় বাজারে এক কেজি দইয়ের দাম ২০০ টাকা। একসময় গোয়ালারা হাটের দিন রাস্তার পাশে বসে মাটির হাঁড়িতে বসানো দই বিক্রি করতেন। এখন দিন বদলে গেছে। দোকান থেকে নিয়ে যান গ্রাহকেরা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম অর্ডারও নিয়ে থাকেন তাঁরা। একটি অনুষ্ঠানের জন্য ১০-২০ মণ, এমনকি কখনো কখনো আরও বেশি সরবরাহ করতে হয়।
তিনি আরও জানান, গত মাসে একজন কুয়েতপ্রবাসী তাঁর কাছ থেকে বেশ কিছু দই নিয়ে গেছেন। এই দই কুয়েতে মালিকসহ আপনজনদের উপহার হিসেবে খাওয়াবেন। শুধু কুয়েত নয়, তাঁদের তৈরি দই বিভিন্ন সময়ে ওমান, দুবাই ও সৌদি আরবসহ যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাতিয়ার মহিষের দইয়ের সুনাম রয়েছে অর্ধশত বছরের ও বেশি সময় ধরে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে পাঠানো হচ্ছে। হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী জাহাজে পাঠানো হয় এই দই।
আফাজিয়া বাজারের রনি দধি ভান্ডারের মালিক মো. রনি জানান, হাতিয়ার বাইরে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এই দইয়ের চাহিদা অনেক বেশি। আগে তাঁদের তৈরি করা দই চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করতেন। এখন অনেক পাইকার এসে হাতিয়া থেকে নিয়ে যান। এ ছাড়া শীতের মৌসুমে বেড়াতে আসা লোকজন এই দইয়ের অনেক বড় ক্রেতা। এখন প্লাস্টিকের পাত্রে দই বসানোর কারণে পরিবহন অনেক সহজ।
চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়ায় বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ বলেন, হাতিয়ার মহিষের দই খেয়েছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। খুবই তৃপ্তি পেয়েছেন। এখন বাজারে এসে ১০ কেজির অর্ডার দিয়েছেন। যাওয়ার সময় চট্টগ্রামে বাসায় নিয়ে যাবেন।
তিনি আরও জানান, হাতিয়ার দইয়ে কোনো কেমিক্যাল নেই বলে মনে হয়েছে। খাওয়ার পর তৈলাক্ত আবরণ লেগে যায় হাতে। খেতেও অনেক সুস্বাদু।
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, মহিষের দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে প্রোটিন বেশি থাকে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ মহিষের দুধ ও দই খেয়ে ভিটামিনের এই চাহিদা পূরণ করে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, হাতিয়ার চারপাশে অসংখ্য চর রয়েছে। এসব চরে ১০ হাজারের মতো মহিষ রয়েছে। এসব মহিষ থেকে পাওয়া দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় দই, যার চাহিদা স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে রয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। হাতিয়ায় সরকারিভাবে মহিষের বাণিজ্যিক পালন বৃদ্ধির জন্য একটি অঞ্চলকে গোচারণভূমি ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
হাতিয়ায় বিয়েবাড়ি, নতুন অতিথি আগমন, ঈদ, পূজাসহ বড় সব অনুষ্ঠানে মহিষের দইয়ের কদর অনেক বেশি। গ্রামাঞ্চলে দই ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান চিন্তাই করা যায় না। এই ঐতিহ্য চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা অতিথি ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছেও রয়েছে এর অনেক সুনাম। চরের মহিষের দুধ দিয়ে তৈরি করা এই দই এখন উপহার হিসেবে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। নোয়াখালীর এই দ্বীপ উপজেলার মহিষের দইয়ের বাণিজ্যিকভাবে রয়েছে অনেক সম্ভাবনা।
হাতিয়া উপজেলার চারপাশে ১০টি চরে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার মহিষ। বাতানেরা (মহিষ পালনের জন্য যাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়) এসব মহিষের দেখভাল করেন। প্রতিদিন বিভিন্ন চর থেকে প্রায় ৩ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করেন গোয়ালারা। তা দিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি করেন দই। চরের মহিষের দইয়ের কদর বেশি থাকায় বংশানুক্রমে অনেকে যুগ যুগ ধরে এই ব্যবসা করে আসছেন।
আফাজিয়া বাজারের সুজয় দধি ভান্ডারের মালিক মনিন্দ কুমার দেবনাথ (৮৫) জানান, ১৯৬৯ সাল থেকে এই ব্যবসা করে আসছেন। তখন এক মণ দুধ পাওয়া যেত ১০-১২ টাকায়। এখন বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। ব্যবসা ছেলের হাতে তুলে দিয়েছেন। মাঝেমধ্যে তিনি এসে দেখভাল করেন।
মনিন্দ কুমার দেবনাথ আরও জানান, এখন দইয়ের ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে মাটির হাঁড়িতে দই বসানো হতো। এখন টিনের কৌটা ও প্লাস্টিকের বালতিতে বসানো হয়। তবে মান আগের মতো রয়ে গেছে। বাপ-চাচাদের হাতে শিক্ষা নিয়ে করা এই ব্যবসায় কখনো রাসায়নিক ব্যবহার করেননি। এর পরও স্বাদ ও সুনাম অক্ষুণ্ন রয়েছে। আগে মানুষ মাটির ছোট হাঁড়ির একটি দুটি করে কিনে নিয়ে যেত। এখন মানুষ মণকে মণ কিনে নেয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।
মনিন্দ কুমার দেবনাথের ছেলে সঞ্জয় কুমার দেবনাথ জানান, এক কেজি দুধে ৭০০-৮০০ গ্রাম দই হয়। স্থানীয় বাজারে এক কেজি দইয়ের দাম ২০০ টাকা। একসময় গোয়ালারা হাটের দিন রাস্তার পাশে বসে মাটির হাঁড়িতে বসানো দই বিক্রি করতেন। এখন দিন বদলে গেছে। দোকান থেকে নিয়ে যান গ্রাহকেরা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম অর্ডারও নিয়ে থাকেন তাঁরা। একটি অনুষ্ঠানের জন্য ১০-২০ মণ, এমনকি কখনো কখনো আরও বেশি সরবরাহ করতে হয়।
তিনি আরও জানান, গত মাসে একজন কুয়েতপ্রবাসী তাঁর কাছ থেকে বেশ কিছু দই নিয়ে গেছেন। এই দই কুয়েতে মালিকসহ আপনজনদের উপহার হিসেবে খাওয়াবেন। শুধু কুয়েত নয়, তাঁদের তৈরি দই বিভিন্ন সময়ে ওমান, দুবাই ও সৌদি আরবসহ যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাতিয়ার মহিষের দইয়ের সুনাম রয়েছে অর্ধশত বছরের ও বেশি সময় ধরে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে পাঠানো হচ্ছে। হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী জাহাজে পাঠানো হয় এই দই।
আফাজিয়া বাজারের রনি দধি ভান্ডারের মালিক মো. রনি জানান, হাতিয়ার বাইরে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এই দইয়ের চাহিদা অনেক বেশি। আগে তাঁদের তৈরি করা দই চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করতেন। এখন অনেক পাইকার এসে হাতিয়া থেকে নিয়ে যান। এ ছাড়া শীতের মৌসুমে বেড়াতে আসা লোকজন এই দইয়ের অনেক বড় ক্রেতা। এখন প্লাস্টিকের পাত্রে দই বসানোর কারণে পরিবহন অনেক সহজ।
চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়ায় বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ বলেন, হাতিয়ার মহিষের দই খেয়েছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। খুবই তৃপ্তি পেয়েছেন। এখন বাজারে এসে ১০ কেজির অর্ডার দিয়েছেন। যাওয়ার সময় চট্টগ্রামে বাসায় নিয়ে যাবেন।
তিনি আরও জানান, হাতিয়ার দইয়ে কোনো কেমিক্যাল নেই বলে মনে হয়েছে। খাওয়ার পর তৈলাক্ত আবরণ লেগে যায় হাতে। খেতেও অনেক সুস্বাদু।
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, মহিষের দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে প্রোটিন বেশি থাকে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ মহিষের দুধ ও দই খেয়ে ভিটামিনের এই চাহিদা পূরণ করে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, হাতিয়ার চারপাশে অসংখ্য চর রয়েছে। এসব চরে ১০ হাজারের মতো মহিষ রয়েছে। এসব মহিষ থেকে পাওয়া দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় দই, যার চাহিদা স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে রয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। হাতিয়ায় সরকারিভাবে মহিষের বাণিজ্যিক পালন বৃদ্ধির জন্য একটি অঞ্চলকে গোচারণভূমি ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
মুফিজুল হক সিকদার দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) আসরের নামাজের পর রাউজান উপজেলার নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের ফতেহনগর গ্রামের ফতেহ মোহাম্মদ সিকদার বাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
৪ মিনিট আগেসুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ শিক্ষার্থীসহ ৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ঘাতক বাসচালককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাকির আলম (৩৫) সিলেটের বিশ্বনাথের...
১ ঘণ্টা আগেমাদারীপুর সদর, রাজৈর, কালকিনি, শিবচর ও ডাসার উপজেলায় কাগজে-কলমে ১৭টি নদনদী থাকলেও বর্তমানে দৃশ্যমান ১০টি। এর মধ্যে পদ্মা, পালরদী, আড়িয়াল খাঁ, ময়নাকাটা, বিষারকান্দি ও কুমার নদ উল্লেখযোগ্য। এসব নদনদী ঘিরে জেলার ৫ উপজেলায় ৩৪টি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২৯টি পুরোপুরি অকেজো, আর বাকি ৫টিও
১ ঘণ্টা আগেস্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার কিছু পর রুবেল তার প্রতিষ্ঠান ‘এফ রহমান ট্রেডিং’-এর ভেতরে কাজ করছিলেন। এসময় একদল দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। চিৎকার শুনে পাশের দোকানদার ও সিএনজি চালকরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে