Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে চকরিয়ায় ব্যাপক ক্ষতি, বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই ২৪ ঘণ্টা

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে চকরিয়ায় ব্যাপক ক্ষতি, বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই ২৪ ঘণ্টা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে ঘরবাড়ি ও গাছের ডালপালা ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে আজ বুধবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চকরিয়া উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অনেকক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজের মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন পণ্য নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ করতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন উপজেলার লোকজন। বিদ্যুৎ নির্ভর সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে এই অঞ্চলে। 

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা যায়নি।’ 

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) চকরিয়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চকরিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে চকরিয়া উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়নে গত মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়। 

ঝোড়ো বাতাসে পৌরশহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুতের সংযোগ লাইনের ওপর পড়ে। টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেটের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিউবোর সঞ্চালন লাইনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের ৪৫টি খুঁটি ভেঙে গেছে, হেলে পড়েছে ৪০টি খুঁটি। ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ১৫ টি,২৫০টি মিটার ভেঙেছে, বিভিন্ন স্থানে সঞ্চালন লাইনের ওপর গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। চকরিয়া উপজেলায় মোট ৯১ হাজার ২৫৭ জন গ্রাহক আছেন বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

বিউবো জানায়, বিউবোর চকরিয়া পৌরসভা ও ইউনিয়নে গ্রাহক আছেন ৩৪ হাজার। বিভিন্ন স্থানে চারটি খুঁটি ভেঙে গেছে। ২৫ স্থানে সঞ্চালন লাইনের ওপর গাছ পড়েছে। এতে পুরো চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা অন্ধকারাচ্ছন্ন রয়েছে। 

পল্লী বিদ্যুৎ ও বিউবো বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত এসব লাইন সচল করতে পল্লী বিদ্যুতের দুই শতাধিক কর্মী মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। ৬০ কিলোমিটার এলাকায় ভেঙে পড়া গাছের ডালপালা সরানোর কাজ করছে বিউবো।

ঢেমুশিয়া বাজার এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বিদ্যুৎ নেই। এখন বাড়িতে মোমবাতি জ্বালিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ করতে হচ্ছে। একদিকে বাড়িতে গাছ পড়েছে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক কষ্টে হচ্ছে।’

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান সুমন বলেন, ‘বিদ্যুৎ নেই ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেছে। বাড়িতে ফ্রিজে থাকা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম দুর্ভোগে আছি।’

পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর মোর্শেদ তামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পূজার ছুটিতে অনেক দিন পর বাড়িতে এসেছি। সারা দিন ঝোড়ো বৃষ্টির পর সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। এখন মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে গেছে। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।’

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ছাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাত হানার পর পল্লী বিদ্যুতের বিভিন্ন খুঁটি ভেঙে গেছে। অনেক খুঁটি হেলে গিয়ে সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের পুরো টিম দ্রুত সময়ে বিদ্যুৎ দিতে কাজ করছেন। আশা করছি, আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’

চকরিয়ায় বিউবোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল হক বলেন, ‘চকরিয়া থেকে কক্সবাজার লাইনে প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকায় গাছের ডালপালা পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছ সরানোর পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। এখন আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত