Ajker Patrika

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪ 

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম বাদশা মিয়া (১৭)। গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চারজন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আজ রোববার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বোন।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় আবু কালাম মিয়ার (চট্টগ্রামের মাছ ব্যবসায়ী) পার্শ্ববর্তী বাড়িতে ঢাকা থেকে ১৫-১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে বেড়াতে আসে।

গত শনিবার মেয়েটি গ্রামের বাজারে যাওয়ার পথে পাড়ার অনিকের নেতৃত্বে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল যুবক নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। সে সময় আবু কালাম মিয়ার ছেলে বাদশা প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। এর জেরেই অনিকের নেতৃত্বে উচ্ছৃঙ্খল যুবকেরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শনিবার রাতে বাদশার বাড়িতে গিয়ে সশস্ত্র হামলা চালায়।

হামলাকারীরা এ সময় বাড়ির উঠোনে সকলের সামনে বাদশাকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। হামলার সময় বাদশাকে বাঁচাতে এসে তারেক, মাইনুদ্দিন, সাইফুল ও জিহাদ গুরুতর আহত হয়। এর মধ্যে আহত সাইফুল ও জিহাদকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গ্রামের হাইন্যা গোষ্ঠীর চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী কালামের ছেলে বাদশার ওপর এ বর্বরোচিত হামলা করে গ্রামেরই মোশারফ মাস্টারের গোষ্ঠীর কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক। ঘটনার পর পুলিশ মোশারফ মাস্টারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতেই নবীনগর থানায় নিয়ে আসে। তবে থানায় সারা রাত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভোরে তাঁকে (মোশারফ) ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে অনিককে এক নম্বর আসামি করে ২১ জনের নাম উল্লেখপূর্বক থানায় মামলা হয়।

পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত রাসেল মিয়া (৩২), ইউনুস মিয়া (৩৫), শাকিল আহমেদ (১৯) ও মাসুদ মিয়া (২০) নামে এজাহার নামীয় চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম, নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং লাশ উদ্ধার করা হয়।

অ্যাডিশনাল এসপি সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার জের ধরেই বাদশাকে নির্মমভাবে বাড়ির উঠোনে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় ২১ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। পুলিশ এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে আজ সকালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত