Ajker Patrika

চট্টগ্রামের সব সরকারি কলেজ অধিভুক্ত করতে আগ্রহী চবি

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২২: ৪৬
চট্টগ্রামের সব সরকারি কলেজ অধিভুক্ত করতে আগ্রহী চবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুশাসন অনুযায়ী প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত হয় রাজধানীর সাতটি বড় সরকারি কলেজ। এরপর পেরিয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর। এরমধ্যে আর কোনো স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাবির মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অধীনেও সরকারি কলেজগুলো অন্তর্ভুক্ত হলে সেশনজট কমবে, বাড়বে শিক্ষার মান। লাভবান হবে বিশ্ববিদ্যালয়। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, ঢাবির মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও সরকারি কলেজগুলো অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের কলেজগুলোর তালিকাও সংগ্রহ করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে প্রথম সারির ১০ কলেজ। 

বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশে কলেজ আছে প্রায় ৩ হাজার। এর মধ্যে ৮৮১টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এত শিক্ষার্থীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সেশনজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জীবন। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট চায় না, কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যাক। কারণ এসব কলেজ নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করছে। সে জন্য এত দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। তবে, এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও চায় কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে যাক। 

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ কমাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নিয়ে সভা হয়। 

সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা কলেজগুলোকে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে একমত হন। পরে ২০১৫ সালে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে তৎকালীন ঢাবি উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক ছাড়াও শিক্ষাবিদ ও চবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ছিলেন। 

ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের কাছে কমিটির প্রস্তাব ছিল স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে যেসব কলেজ আছে সেগুলো অধিভুক্ত করা। ওইসময় প্রাথমিকভাবে ঢাবির অধীনে অধিভুক্ত করার জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলে ৪৪টি কলেজকে বেছে নেওয়া হয়। আর চবির অধীনে ৩৪টি কলেজকে অধিভুক্ত করার জন্য তালিকা করা হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট, সেটি বানচাল করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। পরে ঢাবির অধীনে ২০১৭ সালে সাতটি সরকারি কলেজকে অধিভুক্ত করে। এরপর প্রায় ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোনো কলেজকে অধিভুক্ত করা যায়নি।’ 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখন সহযোগিতা করবে
নতুন শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন নতুনভাবে সাজাচ্ছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে জোর দিয়েছেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে ঢাবির মতো চবির অধীনেও সরকারি কলেজগুলো অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ অধিভুক্ত করার ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিরোধিতা করলেও, এখন তারা সহযোগিতা করবে বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চবি বা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি কলেজগুলো গেলে শিক্ষার মান বাড়বে। সেশনজট কমবে। শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নের বিপরীতে বিরোধিতা করার প্রশ্নই উঠে না। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা বরং সরকারকে সহযোগিতা করব।’

চবি উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার বলেন, ‘চট্টগ্রামের সব সরকারি কলেজ চবির অধীনে আনতে আমরা রাজি আছি।’

সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলে কলেজেরই লাভ বেশি। শিক্ষার্থীরা বেস্ট মনিটরিং পাবে। শিক্ষকেরাও মনিটরিংয়ের আওতায় আসবে। অন্তর্ভুক্ত হতে অধীর আগ্রহে বসে আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত