Ajker Patrika

৪ মাসেও আসেনি সৌদিতে ছাগলের খামারে নিহত প্রবাসীর মরদেহ

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
৪ মাসেও আসেনি সৌদিতে ছাগলের খামারে নিহত প্রবাসীর মরদেহ

সৌদি আরবের একটি ছাগলের খামারে নিহত বাংলাদেশি যুবক আব্দুর রহমানের মরদেহ চার মাসেও দেশে আনা সম্ভব হয়নি। কবে ছেলের মরদেহ আসবে জানেন না মা-বাবা। 

আবদুর রহমান সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের কাছে আল হারমোলিয়াহ এলাকায় একটি ছাগলের খামারে কাজ করতেন। পরিবারের অভিযোগ, মালিকপক্ষের লোকেরা রহমানকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। গত ১ মে ওই দেশের পুলিশ তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ বর্তমানে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। 

আবদুর রহমান লক্ষ্মীপুরের জেলার কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. হানিফের ছেলে।

গতকাল সোমবার রহমানের ছোট বোনের স্বামী প্রবাসী মো. ইউছুফ মোবাইল ফোনে জানান, দেশে মরদেহ পাঠাতে কয়েকবার সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু দূতাবাস থেকে মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে ও মরদেহ দেশে পাঠাতে সেভাবে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। সৌদি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পুলিশ তাঁকে জানিয়েছে, রহমানের মৃত্যুর প্রতিবেদন বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দূতাবাস থেকে কিছুই জানা যায়নি।

রহমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছেলের শোকে মুষড়ে পড়েছেন মা-বাবা। যে কোনো মূল্যে ছেলের মরদেহ দেশে আনতে চান। ছেলে হত্যার বিচার চান। এর জন্য তাঁরা সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস ও সরকারের সহযোগিতা চান। 

পরিবারের লোকজন জানায়, গত ১ মে সৌদি আরবের পুলিশ রহমানের রক্তাক্ত মরদেহ তাঁর কর্মস্থল থেকে উদ্ধার করে। মরদেহ উদ্ধারের পাঁচ দিন পর জানতে পারে পরিবার। 

চার মাস পেরিয়ে গেলেও ছেলের মরদেহ দেশে আনতে পারেননি স্বজনেরা। সৌদি আরবে অবস্থানরত স্বজনদের বরাত দিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানান, আবদুর রহমানকে হত্যা করে মরদেহ রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গাড়ি চাপায় মৃত্যু বলে প্রচার করে মালিকপক্ষ। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এক সৌদি নাগরিক ও একজন সুদানি নাগরিককে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে। 

আব্দুর রহমানের মা লাকী বেগম বলেন, সুদানি সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর ছেলের প্রায়ই ঝগড়া হতো। সৌদি আরবে ঈদের আগের দিন বিকেলে ছেলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কথা বলার সময় হঠাৎ আব্দুর রহমান চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘মা, আজরাইল আসে’। এরপর থেকে তাঁকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে জামাতা ইউছুফকে ঘটনাস্থলে পাঠালে তিনি জানান, আব্দুর রহমানের সঙ্গে সুদানি এক সহকর্মীর ঝগড়া হয়েছিল। ঝগড়ার একদিন পর রহমানের রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। পরে ইউছুফ স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তাঁর মরদেহ দেখে আসেন। 

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, আব্দুর রহমানের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ও মরদেহ দেশে আনতে পরিবার তাঁর কাছে আবেদন করেছিল। তিনি সে কথা জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত