Ajker Patrika

একজনই পরীক্ষার্থী, তা-ও ফেল

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০: ৫৬
একজনই পরীক্ষার্থী, তা-ও ফেল

দুই বছর আগে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রসায়নে অকৃতকার্য হন। এরপর মাঝখানে এক বছর পরীক্ষা দেননি। এবার শিক্ষা বোর্ড থেকে বিশেষ অনুমতি (রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ) নিয়ে আবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ওই ছাত্রী। কিন্তু এবারও ফেল! আর তাতেই শতভাগ ফেলের তালিকায় উঠে এসেছে চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় কলেজটি থেকে এই একজন পরীক্ষার্থীই অংশ নিয়েছিলেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এবার চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাত্র একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সে ফেল করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ছাড়া আরও একটি প্রতিষ্ঠান এবার শতভাগ ফেলের তালিকায় উঠে এসেছে। খাগড়াছড়ির মহালছড়ি এলাকার ওই কলেজ থেকে চার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ পাস করেনি। ছাত্রসংখ্যা কম থাকার পরও কী কারণে তারা ফেল করেছে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’ 

ফলাফলে দেখা যায়, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ২৬৭টি কলেজ থেকে ৯৯ হাজার ৬২৮ জন। এর মধ্যে ২৬৫টি কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৮৯ হাজার ৫২ জন পাস করেন। বাকি দুটি কলেজ থেকে কেউ পাস করেননি। এর মধ্যে পটিয়া থানাধীন চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন এবং তিনি অকৃতকার্য হয়েছেন। এ ছাড়া খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ির বৌদ্ধ শিশুঘর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চারজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে কেউই পাস করেননি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল সেকশনের প্রধান শাহেলা নাসরিন শিউলি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কলেজ সেকশনটা চার বছর আগে বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে গত তিন বছর কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়নি।’ 

তাহলে এই একজন শিক্ষার্থী কীভাবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি কলেজের অধ্যক্ষ স্যার বলতে পারবেন। এ বিষয়ে আপনি ওনার সঙ্গে কথা বলেন।’ 

পরে যোগাযোগ করা হলে চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ সেকশনের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইউছুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী ২০১৯ সালে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রসায়নে অকৃতকার্য হয়। এরপর মাঝখানে দুই বছর তার কোনো খোঁজখবর ছিল না। এবার এসে আবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে বলে জানায়। তারপর আমরা বলেছি, শিক্ষা বোর্ড যদি অনুমতি দেয়, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। পরে শিক্ষা বোর্ড থেকে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ বাড়িয়ে সে এবার পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু এবারও পাস করতে পারেনি।’ 

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. জাহেদুল হক বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী বিশেষ কারণ দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ এক বছর বাড়াতে পারেন। ওই শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করেছেন। সেই অনুযায়ী মেয়াদ বাড়িয়ে তাঁকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থী ফেল করলে সেই দায়ভার একান্ত ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। এর জন্য শিক্ষা বোর্ড কোনোভাবে দায়ী নয়।’ 

 ২০২০ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে শতভাগ ফেলের তালিকায় কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না। এর আগে ২০১৯ সালে একটি এবং এর আগের বছর ২০১৮ সালে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সবাই ফেল করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত