Ajker Patrika

ভারী বর্ষণে ফেনীতে আবারও ৭৫টি গ্রাম প্লাবিত

ফেনী প্রতিনিধি
ভারী বর্ষণে ফেনীতে আবারও ৭৫টি গ্রাম প্লাবিত

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৭৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বাঁধ ভেঙে ১৭টি অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। দেড় মাসের মধ্যে পরপর তিন বার বন্যার কবলে পড়েছে এ দুই উপজেলা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার হাজারো মানুষ। 

মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপজেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়কে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (অ. দা.) মো. আবুল কাশেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোমবার গভীর রাত থেকে নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে।’ 

স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বারবার লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে। ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে গড়িমসি করার কারণে আবারও একই স্থানে ভাঙনের দেখা দিয়েছে। এখন ভাঙন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। 

পরশুরাম উপজেলার মালীপাথর এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফ উদ্দিন বলেন, ‘অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে ঘরবাড়ি তিনবার পানিতে তলিয়ে গেছে। এভাবে টানা বৃষ্টি হলে আমাদের অবস্থা কি হবে আল্লাহ ভালো জানেন। প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করছে। খুব কষ্টে দিন পার করছি।’ 

বীরচন্দ্র নগর এলাকার বাসিন্দা বাহার উদ্দিন বলেন, ‘এদিকের এলাকা উঁচু হওয়ায় সাধারণত বন্যার পানি প্রবেশ করে না। কিন্তু এবার ভারী বর্ষণে ঘর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও আত্মগোপনে। এখনো কোন ধরনের সহায়তা বা কেউ খোঁজখবরও নেয়নি আমাদের।’ 
 
ফুলগাজী উপজেলার নিলক্ষী এলাকার কৃষক আলী আজম বলেন, ‘জুলাইয়ের বন্যায় ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে যায়। নতুন করে বীজতলা তৈরি করে রোপণের কয়েক দিন পরে ২ আগস্ট আবারও পানিতে ডুবে যায়। গত দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে এখন নতুন করে সব জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। দেড় মাসে তিনবারের বন্যায় এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সুযোগ নেই। আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।’ 

বন্যায় ডুবে যাওয়া ফুলগাজী উপজেলার গ্রাম। ছবি: আজকের পত্রিকাজানতে চাইলে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীর বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৯ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৫০ টন চাল মজুত রয়েছে।’ 

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া বলেন, ‘বন্যার পানিতে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এখনো নদীর বাঁধ উপচে প্রবল স্রোতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। উপজেলায় ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৮ মেট্রিক টন চাল মজুত রয়েছে।’ 

এদিকে গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও শহরের সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে যানচলাচল ব্যাহত হওয়ায় সাধারণ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, জেলায় টানা দুই দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত