Ajker Patrika

মিতু হত্যার পর মুসার আত্মীয়র বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয় ৩ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৯ মে ২০২১, ১৬: ৫৩
মিতু হত্যার পর মুসার আত্মীয়র বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয় ৩ লাখ টাকা

চট্টগ্রাম: সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে মোকলেসুর রহমান ইরাদ নামে একজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফিউদ্দিন এর আদালত এ জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।

ইরাদ বাবুল আক্তারের পূর্বপরিচিত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক।

আদালতসূত্রে জানা যায়, মিতু হত্যার দুই-তিন দিন পর বাবুল আক্তার তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুলকে ফোন করে সোর্স মুসার আত্মীয় কাজী আল মাহমুদকে বিকাশে তিন লাখ টাকা দিতে বলেন। পরে সাইফুল হক ইরাদের মাধ্যমে সেই টাকা পাঠান। মুসার আত্মীয় আল মাহমুদও মিতু হত্যায় জড়িত ছিলেন।

আদালত সূত্রমতে মোখলেস জবানবন্দিতে আরও বলেন, কুষ্টিয়ায় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন বাবুল আক্তার। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তেন সাইফুল হক। সেসময় দুজনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে বাবুল চাকরিতে যোগ দেন। সাইফুল হক কুষ্টিয়াতে ব্যবসা শুরু করেন। সাইফুলের ব্যবসায় অংশীদার হন বাবুল আক্তার। এসব কথা মোখলেস সাইফুলের কাছে শুনেছেন। এ ছাড়া দুজনের বন্ধুত্ব সম্পর্কে তিনি জানেন।

এর আগে বাবুলের দায়ের করা মিতু হত্যা মামলায় সাইফুল হক ও কাজী আল মাহমুদ সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন। তিন লাখ টাকা বিকাশে দেয়ার বিষয়ে তারা প্রায় অভিন্ন তথ্যই দিয়েছিলেন।

মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাক্ষী হিসেবে মোখলেস আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা আজকের পত্রিকাকে মোখলেসের জবানবন্দি দেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে তিনি কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, বাবুল আক্তারের সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার মুছার আত্মীয় কাজী আল মাহমুদ। মিতু হত্যার কয়েক দিন পর মুসাকে বাড়ি থেকে সাদা পোশাকের একদল পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এরপর তার আর হদিস মেলেনি। এ দাবি মুসার স্ত্রীর। এদিকে পুলিশের দাবি মুসা পলাতক। তারা মুসাকে তুলে নেয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকাল সোয়া ৭টায় নগরীর জিইসি মোড়ে মিতু খুন হন। তিনি ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে জিইসির মোড় যাচ্ছিলেন। সে সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মিতুর মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে দুর্বৃত্তরা মোটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। ওই সময় বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। তাঁর আগে তিনি চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তার হত্যা মামলা করেন। ২০১৬ সালের ৫ জুন বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় গত ১২ মে আদালতে পিবিআই ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে। একইদিন বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুল আক্তারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মিতু হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বাবুলকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ ৷ পরে গত ১৭ মে বাবুল আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি না হওয়ায় আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত