Ajker Patrika

ভিটেবাড়ি বিক্রির হুমকি: বাবাকে হত্যার পর লাশ ১০ টুকরা করলো ছেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ৫৪
ভিটেবাড়ি বিক্রির হুমকি: বাবাকে হত্যার পর লাশ ১০ টুকরা করলো ছেলেরা

চট্টগ্রামে বাবাকে গলাটিপে হত্যার পর লাশ ১০ টুকরা করার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মো. হাসানের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান। 

আজ বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সাদ্দাম হোসেনের আদালতে এই জবানবন্দি দেন তিনি। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার পর নিহতের ছেলে মোস্তাফিজুর বুধবার তাঁর বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে বিস্তারিত জবানবন্দি দিয়েছেন।’ 

স্বীকারোক্তিতে মোস্তাফিজুর বলেন, ‘২০ সেপ্টেম্বর পারিবারিক ও সাংসারিক নানান বিষয় নিয়ে বাবা, ছোট ভাইসহ আমরা তিনজন চট্টগ্রাম শহরে ছোট ভাইয়ের বাসায় আলোচনা করতে থাকি। একপর্যায়ে বাবার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন আমার বাবা আমার গালে থাপ্পড় মারে। এতে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। সহ্য করতে না পেরে দুই হাত দিয়ে বাবার গলায় চেপে ধরি। এতে বাবা মারা যায়। প্রথমে বস্তায় বাবার লাশ ঢুকিয়ে রুমের এক কোনায় রেখে রুমটি তালা মেরে বাইরে চলে আসি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন ছোট বোনের জামাই ফোরকানকে কল দিয়ে একটি সিএনজি আনার কথা বলি। ওই সিএনজিতে করে পরে মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিই।’ এরপর লাশ টুকরা করা এবং ফেলার বিস্তারিত বর্ণনা দেন তিনি। 

জবানবন্দিতে মোস্তাফিজুর আরও বলেন, তাঁরা দুই ভাই ও এক বোন। তাঁর বয়স যখন ৬-৭ বছর, তখন তাঁর বাবা শহরে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি মা ও দাদির কাছে বড় হন। কৃষিকাজ করেন। তাঁর ছোট ভাই সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর গার্মেন্টসে চাকরি করেন এবং ছোট বোন রাজিয়া বেগমের বিয়ে হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন বাবা ফিরে না আসায় তাঁর মা বাড়িতে বাপের ভিটায় বসবাস করতেন। প্রায় ২৮ বছর পর তাঁর বাবা ফিরে আসেন। ৭-৮ মাস পর বাবা আবার বাড়ি থেকে চলে যান। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। তবে তাঁর কাকা ও কাকির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতেন। তিন মাস পর বাবা আবার বাড়ি ফিরে আসেন। প্রায়ই তাঁর মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করতেন। ১০-১৫ দিন থাকার পর কাউকে না বলে বাড়ি থেকে চলে যান। দেড় মাস পর আবার ফিরে আসেন। তারপর বাবা ভিটেবাড়ি বিক্রি করে দেবেন বলে হুমকি দেন। 

মোস্তাফিজুর বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের আগে বাবা চট্টগ্রাম শহরে আমার ছোট ভাইয়ের বাসায় আসে। আমার মা আগে চিকিৎসার জন্য তখন ছোট ভাইয়ের বাসায় ছিল।’ 

জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, শরীর থেকে হাত ২টি ও হাটুর উপর থেকে পা ২টি কাটা হয়। পরে হাত ৪ টুকরা ও পা ৪ টুকরা করা হয়। এতে সব মিলিয়ে হাত চার টুকরা, পা চার টুকরা, শরীর ও মাথা মিলে ১০ টুকরা করা হয়।

পুলিশ ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেটে একটি খালের পাড়ে পাওয়া ট্রলিব্যাগের ভেতর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির হাত-পাসহ শরীরের খণ্ডিত ৮টি অংশ উদ্ধার করে। পরের দিন বডি (শরীর) উদ্ধার করে। কিন্তু এখনো মাথা উদ্ধার সম্ভব হয়নি।  

এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ছায়া তদন্ত চালিয়ে নিশ্চিত হয়, নিহত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাতারিয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাসিন্দা মো. হাসান (৬১)। 

এ ঘটনায় তাঁ স্ত্রী ও মোস্তাফিজুরকে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে তাঁদের ২৪ সেপ্টেম্বর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। পাশাপাশি মামলাটিও পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়। অভিযুক্ত ছোট ছেলে ও তাঁর স্ত্রী এখনো পলাতক। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নেত্রকোনায় সাবেক ছাত্রদল নেতাকে মারধর বর্তমান সভাপতির

প্রিয় জেন-জি সন্তানেরা, আমি শিবপুরীতে—নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিঠি

সাংবাদিককে নির্যাতন: সাবেক ডিসি সুলতানাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির হোতা মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু গ্রেপ্তার

নেপালের সামনে ভারতবিরোধী মনোভাব ও হিন্দুত্ববাদের জটিল সমীকরণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত