Ajker Patrika

র‍্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবক অপহরণ, ৭২ ঘণ্টা পর উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধি
টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টা পর কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। আজ রোববার টেকনাফ উপজেলার রঙ্গিখালীর গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত সৈনিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। অভিযানে অপহরণকারী চক্রের আস্তানা থেকে একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, তিন রাউন্ড অ্যামুনেশন, র‍্যাবের পোশাক ও ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে।

র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বুধবার রাতে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ১৫ নম্বর ক্যাম্প থেকে মো. হাফিজ উল্লাহকে র‍্যাব পরিচয়ে তিনজন অস্ত্রধারী অপহরণ করে পাশের রঙ্গিখালী গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায়।

টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

টেকনাফে এক সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল কামরুল হাসান বলেন, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. রহিমুল্লাহর ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেনের যোগসাজশে র‍্যাব পরিচয়ে তিনজন অস্ত্রধারী বরখাস্ত সৈনিক সুমন, সন্ত্রাসী রাকিব ও শিকদার ডেকে নিয়ে পাশের রঙ্গিখালী গহিন পাহাড়ে নিয়ে যান।

পরে সন্ত্রাসীরা ভিকটিমের পরিবার থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণের বিষয়ে প্রশাসনের সহায়তা নিলে হাফিজ উল্লাহকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। খবর পেয়ে র‍্যাব-১৫ ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।

টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

কামরুল হাসান বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাবের একটি চৌকস দল রঙ্গিখালীতে অপহরণের অন্যতম প্রধান হোতা ডাকাত সরদার শাহ আলমের বাড়িতে হানা দিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামের সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার বিকেলে উখিয়ার মরিচ্যা বাজারে অভিযান চালিয়ে মূল হোতা বরখাস্ত সৈনিক মো. সুমন মুন্সিকে আটক করে।

র‍্যাবের অধিনায়ক বলেন, আটক সুমনের মাধ্যমে অপহরণকারী শাহ আলম, রাকিব ও শিকদারকে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার্তা পাঠালেও তাতে সাড়া দেননি। এরপর আজ সকালে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বন বিভাগের ২৫৬ জন সদস্য গহিন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করেন।

টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেকনাফে গহিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

লে. কর্নেল কামরুল হাসান আরও বলেন, গ্রেপ্তার মো. সুমন মুন্সি (৩৩) গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আকবর আলী মুন্সির ছেলে। ২০১৯ সালে তিনি সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী এলাকায় র‍্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে র‍্যাব-১৫-এর হাতে গ্রেপ্তার হন সুমন মুন্সি। এ ছাড়াও ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন টিভি টাওয়ার এলাকায় ছিনতাইকালে মো. সুমন মুন্সি, তাঁর সহযোগীসহ উখিয়া থানা-পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত