Ajker Patrika

পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বসবাস খাগড়াছড়ির ৩৫ হাজার পরিবারের

নীরব চৌধুরী বিটন, খাগড়াছড়ি
কেটে ফেলা পাহাড়ের পাশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস। গতকাল বিকেলে সদরের গোলাবাড়ি এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেটে ফেলা পাহাড়ের পাশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস। গতকাল বিকেলে সদরের গোলাবাড়ি এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়িতে ভারী বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধসের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ শঙ্কা মাথায় নিয়ে জেলাজুড়ে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে হাজারো পরিবার। তাঁদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন।

নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে জেলায় টানা বৃষ্টি শুরু হয়। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির তোড়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলার দুর্গম আলুটিলা এলাকায় ছোট একটি পাহাড় ধসে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, খাগড়াছড়িতে ৩৫ হাজার পরিবার পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এর মধ্যে পৌর এলাকার ৩০টি স্থানে বাস করছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। বেআইনিভাবে পাহাড় কেটে পাদদেশে কিংবা ওপরে বসবাসরতদের বেশির ভাগই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। ভারী বর্ষা এলে তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ে। সদরের শালবন, কদমতলী, কুমিল্লাটিলা, মোল্লাপাড়া, কলাবাগান, নেন্সিবাজার, কৈবল্যপিঠ ও সবুজবাগ এলাকায় এভাবে বসবাস করা হচ্ছে। এ ছাড়া দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি, রামগড়, লক্ষ্মীছড়ি ও মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে লোকজনের বাস আছে।

বসবাসকারী ব্যক্তিরা জানান, অন্য কোথাও জায়গা না থাকায় তাঁরা পাহাড়ের পাদদেশে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে থাকছেন। এখন সরকারি উদ্যোগে যদি পাকা দেয়াল দেওয়া হয়, তাহলে তাঁরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবেন। কিংবা তাঁদের যদি অন্য কোথাও পুনর্বাসন করা হয়, তাহলে সেখানে চলে যাবেন।

সদরের গোলাবাড়ী এলাকায় তিন বছর আগে পাহাড় ধসে পড়ে মিথিলা মারমার ঘরের ওপর। তিনি ঝুঁকি নিয়ে এখনো সেখানে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বলে গত বছর এক পরিবার চলে গেছে। আমাদের জায়গা নেই, নিরুপায় হয়ে বাস করতে হচ্ছে।’

এ নিয়ে কথা হলে খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি হলে পাহাড় ধস এবং ধস হলে জানমালের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছি।’

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্রশাসক ও জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার যেখানে মানুষ বসবাস করছেন, সেখানে সচেতনতামূলক মাইকিং চলমান রয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘সতর্কতার জন্য আজকে (বৃহস্পতিবার) বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেছি। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের সদরের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও মাঠপর্যায়ে রয়েছেন এবং লোকজনকে সচেতন করছেন। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেন আশ্রয় নেন, সে ব্যাপারে বলছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়া-পাকিস্তান চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্যে নতুন মোড়ের ইঙ্গিত

নগদের ১৫০ কোটি টাকা বেহাতের অভিযোগ নিয়ে যা বললেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক

আরাকান আর্মির হাতে মিয়ানমারের জেনারেল নিহত, চীনা টার্মিনালের কাছে চলছে লড়াই

বগুড়ায় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ৩ পুলিশ ও আনসার সদস্য কারাগারে

সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধই সেনাবাহিনীর চেতনার উৎস: সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত