Ajker Patrika

এবার জেলা পরিষদ সদস্যকে প্রকাশ্যে হুমকি এমপি মোস্তাফিজের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
এবার জেলা পরিষদ সদস্যকে প্রকাশ্যে হুমকি এমপি মোস্তাফিজের

চট্টগ্রাম-১৬ আসনের নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। এ কারণে নির্বাচন কমিশন মামলা করেও থামাতে পারছে না তাঁকে। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থককে (জেলা পরিষদের সদস্য) প্রকাশ্যে মারার হুমকি দিয়েছেন, করেছেন উচ্চারণ অনুপযোগী গালাগালও।

গতকাল সোমবার রাতে বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মাঠে নির্বাচনী জনসভায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল মোস্তফা চৌধুরীকে এই হুমকি দেন মোস্তাফিজ। তাঁকে উদ্দেশ করে গালি দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। চাম্বল ইউপি মাঠে ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওই নির্বাচনী সভা হয়।

৪৭ সেকেন্ডের ভিডিও বক্তব্যে মোস্তাফিজ বলেন, ‘আর ওগ্গা আছে গন্ডামারার, ইতার নাম সংগ্রাম। ইতি জেলা পরিষদের নির্বাচনের সময় আঁরত্তুন ২৫ লাখ টেঁয়া অলাত লইল। এই টেঁয়া খুঁজজি আর ইতি আঁরে পল্টি মারি ট্রাক মার্কায় গিয়ে গই। ... ইতারে কল গরিজ্জে ন ধরের। আঁই টেঁয়া উন খুজ্জম, ন দিলে পিট্টম।’

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল মোস্তফা চৌধুরী সংগ্রাম বাঁশখালী থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্য। এ ছাড়া বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউপি থেকে ২০১৭ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে হেরে যান। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ কবির লিটনের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাতে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ক্ষিপ্ত হয়ে এই বক্তব্য দেন। এখানে আরও এক হেভিওয়েট প্রার্থী মুজিবুর রহমানও ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তাঁর পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল মোস্তফা চৌধুরী সংগ্রাম বলেন, ‘এমপি সাহেব একজন সিনিয়র নেতা, ওনাকে আমি সম্মান করি। কিন্তু প্রকাশ্যে জনসভায় আমাকে ... বাচ্চা বলে অশ্লীল কথাগুলো বলে ঠিক করেননি, তা দুঃখজনক। উনি আমার থেকে কোনো টাকা পান না। মিথ্যা কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে আমার নেতা আব্দুল্লাহ কবির লিটন ভাই বক্তব্যের মাধ্যমে জবাব দেবেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গালি দিয়েছি কী হয়েছে। গালি আরও দিব। টাকা পাচ্ছি, তাই গালি দিয়েছি।’

গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হারুন মোল্লা বাদী হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহারে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের পেটানোর অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া গত ২২ ডিসেম্বর এমপি মোস্তাফিজ বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমদকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেন। এই অপরাধে বাঁশখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। সেটির তদন্তও চলছে।

তা ছাড়া চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সেলিমুল হক চৌধুরীকে পেটানো, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে গালি দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শনসহ নানামুখী ঘটনা ঘটানোর কারণে আলোচিত মোস্তাফিজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত