Ajker Patrika

লাঞ্ছিত মুক্তিযোদ্ধার ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা, শীর্ষ ২ আসামি জামায়াতের বহিষ্কৃত সমর্থক

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ বুধবার ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় জামায়াত সমর্থক (বহিষ্কৃত) আবুল হাসেম ও অহিদুর রহমানকে ১ ও ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে আবদুল হাই কানু উল্লেখ করেন, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। গত রোববার বাতিসার লুদিয়ারা নিজ গ্রামে এলে জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেমসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা মারধর করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ছাড়া করে। এ সময় তারা ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এতে সামাজিকভাবে তাঁর ১০০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে।

জানতে চাইলে ওসি এ টি এম আক্তার উজ জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু নিজে থানায় উপস্থিত হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১২ জনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা মামলার অপর সকল আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।’

এর আগে গত রোববার রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

অভিযোগ উঠেছে, জামায়াতে ইসলামীর লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে বহিষ্কার করেছে দলটি। একই সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় দলের জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, রোববার দুপুরে কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই গ্রামের প্রবাসী আবুল হাশেমের নেতৃত্বে অহিদ, রাসেল, পলাশসহ ১০-১২ জন আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন।

ভিডিওতে ওই ব্যক্তিদের বলতে শোনা যায়, ‘তুমি বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করেছ, নির্যাতন, জুলুম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আমাদের বাড়িছাড়া করেছ।’ এ সময় আবদুল হাই কানু দুই হাত তুলে তাদের কাছে ক্ষমা চান। তবে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা বলেন, ‘তুমি এলাকাতে থাকতে পারবা না। তুমি কুমিল্লা ছেড়ে চলে যাও।’

স্থানীয়রা জানান, ওই ঘটনার পর আবদুল হাই কানু এলাকা ছেড়ে পাশের জেলা ফেনীতে তাঁর ছেলে গোলাম মোস্তফা বিপ্লবের বাসায় চলে যান। তিনি সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গ্রেপ্তারের দাবিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল–সমাবেশ করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ। বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ শেষে হায়দার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে সমাবেশ করে। এতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন মজুমদার, সদস্য জাহিদুল ইসলাম, নাছিম মিয়াজী ও আবুল হাসনাত সিয়াম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত