Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা, হচ্ছেন বরখাস্ত

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ০২
লক্ষ্মীপুরে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা, হচ্ছেন বরখাস্ত

লক্ষ্মীপুরে আলিম মাদ্রাসার দশম শ্রেণির সাত ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরকে আসামি করে শিশু নির্যাতন, ২০১৩ আইনে মামলা করেছেন ছাত্র শাহাদাত হোসেনের মা সাহেদা বেগম। আজ শনিবার সকালে বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসার সম্মেলনকক্ষে শিক্ষকদের নিয়ে সভা করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বালাগাত উল্যাহ। এতে সাময়িকভাবে ওই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

এদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, এর আগে নাশকতার একাধিক মামলায় জেল খেটেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। এসব কারণে আগেও মাদ্রাসা থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন। পরে আবারও চাকরিতে বহাল হন তিনি। 

মাদ্রাসা সমিতির নেতা আলমগীর হোসেন ও নিজাম উদ্দিন এ ঘটনরার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে মুক্তি দিতে প্রশাসনের নিকট দাবি জানান। তাঁরা জানান, নৈতিক শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের শাসন করতে সাত শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চুল কাটা ঠিক হয়নি। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়। তার পরও শিক্ষক হিসেবে তাঁকে ছাড় দিতে অনুরোধ করেন তাঁরা। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত বিষয়টি উদ্ঘাটন করার দাবি জানান তাঁরা। 

মামলার বাদীর মেয়ে কাজল বেগম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অন্যায়ভাবে তার ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই তাঁর মা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। 

অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরের স্বজনদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার মঞ্জুরুল কবির। সামনে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার কথা রয়েছে তাঁর। এ কারণে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর মুক্তির দাবি জানান স্বজনেরা। 

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. বালাগাত উল্যাহ জানান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন আইনের গতিতে চলবে। অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের নিয়ে সভা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিধি মোতাবেক তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, উক্ত ঘটনায় এক ছাত্রের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, ‘এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। অভিযুক্ত শিক্ষককে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে কী কারণে এ ঘটনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।’ 

উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কাজীরদীঘিরপাড় আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা মঞ্জুরুল কবির প্রতিদিনের মতো বুধবার শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য কার্যক্রমে অংশ নেন। একপর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দাখিলের সাত ছাত্রকে দাঁড় করিয়ে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দা আসতে বলেন। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে একটি কাঁচি এনে একে একে সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশের চুল এলোমেলোভাবে কেটে দেন। পরে তারা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেরিয়ে যায়। এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখা যায়। ভিডিওতে কয়েকজন ছাত্রকে কান্না করতে দেখা গেছে। 

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয় জেলাজুড়ে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজীরদীঘিরপাড় এলাকা থেকে মাদ্রাসার ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। তিনি হামছাদী কাজীরদীঘিরপাড় আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক এবং বামনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এরদোয়ানও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত