Ajker Patrika

৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রলীগ নেতা 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রলীগ নেতা 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শান্ত কুমার রায় (৩০) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা ৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। 

এক লাখ টাকা দিলেই এক সপ্তাহে পর সেই টাকার সঙ্গে দিতেন ১০ হাজার টাকা লাভ। দুই লাখে ২০ হাজার টাকা। যে যত বেশি টাকা দিতো তিনি ততো বেশি লাভ পেতেন। কাউকে বলেছেন স্বর্ণ, কাউকে বলেছেন জমির ব্যবসা, আবার কাউকে বলেছেন সিগারেটের ব্যবসায় লগ্নি করে মিলে এই টাকার লাভ। 

কিন্তু কারো কাছে বলা যাবে না এই ব্যবসায় লগ্নির করার কথা। এই ফাঁদে পড়েন দুটি গ্রামের অন্তত ১৫ জন মানুষ। তাঁদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা। 

শান্ত কুমার রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে। 

তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক। রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও। ধর্মীয় আচার আচরণ মেনে চলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি সক্রিয় সদস্য ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস)। 

গত শনিবার থেকে ছাত্রলীগ নেতা শান্তকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরই উন্মোচন হতে থাকে শান্ত রায়ের আসল পরিচয়। এখন পর্যন্ত অন্তত ৬টি অভিযোগ পড়েছে নবীনগর থানায়। এসব অভিযোগে শান্ত রায় ছাড়াও তার বাবা নির্মল রায়কে বিবাদী করা হয়েছে। 

এর মধ্যে শ্যামল চন্দ্র দাস ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ছগির আহমেদ ১২ লাখ, হক সাব ৪০ লাখ, আব্বাস উদ্দিন ২০ লাখ ৬০ হাজার, সুজন মিয়া ২০ লাখ, অক্লান্ত দেবনাথ ৩ লাখ টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিয়েছেন সাইমন স্টোরের মালিক মাহফুজুর রহমান ৩ লাখ ৬ হাজার, ঢাকা কনফেকশনারির বাবুল মিয়া ১১ লাখ, জাহাঙ্গীর আলম ৩৯ লাখ, বিকাশ এজেন্ট আরিকুর রহমান রনি ৩ লাখ, আরেক বিকাশ এজেন্ট মা টেলিকম থেকে ৮০ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বড়িকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ১ লাখ ও সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রিফাত আহমেদের থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়া অভিযোগ করেছেন। 

জানা যায়, শান্ত কুমার রায়ের বাবা নির্মল কুমার রায় পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করেন। কিন্তু শান্ত কুমার রায় গ্রামের বাড়ি নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দিতে বসবাস করতেন। তিনি সবাইকে জানিয়েছেন, তার বাবা স্বর্ণের ব্যবসা করেন। শান্ত দীর্ঘদিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হতে চেষ্টা করেছিলেন। 

 জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাদের সান্নিধ্য পান। ফলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির বদলে এক লাফে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন। শুধু তা ই নন, পেয়ে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক পদ। কিন্তু গত শনিবার থেকে শান্ত রায়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বের হয়ে আসে একে একে অনেক পাওনাদার। পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ভারতে পালিয়ে যাওয়া খবর উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ভুক্তভুগী সুজন মিয়া বলেন, স্বর্ণ ক্রয় করার কথা বলে কয়েক দিনের জন্য আমার থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকাগুলো আমি বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে দিয়েছিলাম। এখন শুনছি, তিনি বহু লোকের টাকা মেরে ভারতে পাড়ি দিয়েছেন।

ভুক্তভুগী রিফাত আহমেদ বলেন, আমার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন সিগারেটের ব্যবসার কথা বলে। শনিবারের পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ।

ছাত্রলীগ নেতা শান্ত কুমার রায় ও তার বাবা নির্মল রায়ের মুঠোফোনে অনেকবার চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমাদের কাছে কেউ এখনও অভিযোগ করেনি। 

এ ব্যাপারে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, শান্তের বিষয়ে আমরা বেশকিছু লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার ভোট বয়কট প্রগতিশীলদের, পুনর্নির্বাচন দাবি

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির হোতা মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু গ্রেপ্তার

নতুন ট্রেন্ড ন্যানো ব্যানানা, নিজের থ্রিডি ফিগারিন বানাবেন যেভাবে

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা

প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছাত্রদল সমর্থিত ভিপির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত