Ajker Patrika

বরগুনার সড়কে ‘খানাখন্দে মোগো অটো উইল্ডা যায়’

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার সড়কে বেহাল দশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরগুনার সড়কে বেহাল দশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘ভাই নামেন, সামনে ভাঙ্গা আর গর্ত, যাত্রী নিয়া যাওয়া সম্ভব না। এই বর্ষায় সব রাস্তারই অবস্থা খারাপ। মাঝে মাঝে খানাখন্দে মোগো অটো উইল্ডা যায়। এই তো গত সপ্তাহে গৌরীচন্না বাজারে গর্তে পড়ে আমার গাড়ি উইল্ডা দুইজন যাত্রী আহত হয়েছে। রাস্তাগুলো মেরামত করা না হলে বড় কোনো দুর্ঘটনার শিকার হইব আমরা।’ গত বুধবার বিকালে সড়কে ভোগান্তি নয়ে এসব কথা বলেন বরগুনা সদরের খাজুরতলা গ্রামের অটোরিকশাচালক রুস্তুম আকন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছ, বরগুনা-বাকেরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের অধিকাংশ স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। সড়কটির সবচেয়ে শোচনীয় রূপ দেখা যায় নতুন বাসস্ট্যান্ড, গৌরীচন্না বাজার ও চান্দখালী বাজার এলাকায়। এই স্থানে সড়কে বড় বড় গর্ত হওয়ায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আমতলী-তালতলী-সোনাকাটা সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও যানবাহনের চালকেরা। তিন বছর আগে ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির কিছু অংশ সংস্কার হলেও বর্তমানে অন্তত ২৪ কিলোমিটার অংশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা সদর উপজেলার নলী বাজার থেকে বরগুনা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কেও। এ ছাড়া ছোটবগী-তালতলী, বরগুনা-চালিতাতলী, বরগুনা-কালীরতবক, পরীরখাল-রাখাইনপাড়া, বামনা-খোলপটুয়া, ডৌয়াতলা-আয়লা বাজার, বৈকালিন বাজার-আয়লা, পচাকোড়ালিয়া-চান্দখালীসহ একাধিক সড়ক খানাখন্দে ভরা। যানবাহন চলাচলের সময় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে এসব রাস্তায়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্যসূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয় উপজেলায় এলজিইডির আওতায় ৭ হাজার ৫৬১ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়কের মধ্যে ১ হাজার ৪৪১ কিলোমিটার কার্পেটিং। বাকি ৬ হাজার ১২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। এসব সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করে। প্রতি অর্থবছরে পাকা সড়কে অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ মেরামতের প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৪৮০ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করতে হবে।

এলজিইডির তথ্যমতে, জেলার প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার পাকা সড়ক সংস্কারে ৩১২ কোটি টাকা দরকার হলেও চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ পেয়েছে মাত্র ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে পূর্বের অসমাপ্ত কাজ বাবদ ওই টাকা থেকে খরচ হবে ২০ কোটি। ফলে কার্যত নতুন মেরামতের জন্য থাকছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা, তা দিয়ে প্রায় ২১ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার সম্ভব হবে, যা প্রয়োজনের তুলনায় ৪.৩৭ ভাগ। অথচ বাস্তবে জেলার অনেক বেশি সড়কই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে কথা বললে কয়েকজন অটোচালক, ভ্যান, সিএনজি অটোরিকশা, বাস ও ট্রাকচালক বলেন, বছরের পর বছর আমরা ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছি। প্রায়ই গর্তে পড়ে গাড়ি নষ্ট হয়, যাত্রীরাও বিরক্ত হয়ে ঝগড়া করে। সরকার পাল্টায়, কিন্তু রাস্তার চেহারা পাল্টায় না। কখনো বেহাল দশা উপেক্ষা করে রাস্তার সৌন্দর্য ফিরে আসবে বলে মনে হয় না।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খান বলেন, বরাদ্দ সীমিত হওয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো আগে সংস্কার করা হচ্ছে। বাকি রাস্তা সংস্কারের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন। অতিরিক্ত অর্থের আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় স্কুলশিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ: রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুদকের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত