Ajker Patrika

নদীতে ইলিশ নেই, বাজারে দাম চড়া

মো. সাইফুল ইসলাম আকাশ, বোরহানউদ্দিন (ভোলা)
নদীতে ইলিশ নেই, বাজারে দাম চড়া

ইলিশের মৌসুমেও ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের দেখা নেই। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা। রুপালি ইলিশের আকাল চলছে। ফলে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করছেন ইলিশ। যা খেটে খাওয়া নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে। 

গত বছর এই সময় ইলিশের দাম কম থাকলেও এবার দাম দ্বিগুণ। বাজারে ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে তেমন ইলিশ নেই। আর আড়তে যে ইলিশ উঠছে তার দামও অনেক বেশি। ফলে বেশি দামেই ইলিশ বিক্রি করতে হচ্ছে। 

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত ইলিশের জোগান অন্য সময়ে একটু কম থাকে বলে অনেকেই ইলিশ খাওয়ার জন্য এই দিনগুলির জন্য অপেক্ষা করেন কিন্তু সেই আশাতেও এবার জল পড়ে গিয়েছে। মূলত ইলিশের জোগান কম থাকায় বাজারে ইলিশের দাম কিছুতেই কমছে না। 

আজ রোববার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী ইলিশ নিয়ে বসেছেন। তবে সেখানে তেমন ভিড় নেই। বাজারে এক কেজি ৫০০ গ্রাম থেকে ২ কেজি ওজনের ইলিশের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২ হাজার টাকা কেজি। 

এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৯০০ টাকা, আধা কেজির নিচে ৮০০ টাকা কেজি, ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ টাকা কেজি, ছোট সাইজের (২৫০-৩০০ গ্রাম) ইলিশ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

পৌর বাজারের ইয়াকুব আলী নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘২০০-২৫০ গ্রামের ইলিশ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে ইলিশ তেমন নেই, দামও চড়া। তুলনামূলকভাবে ক্রেতাও কম।’ 

বাজারে আসা ক্রেতা রিপন বলেন, বাসা থেকে ইলিশ মাছ কিনতে বলেছে। বাজারে এসে দেখি মাছের দাম অনেক বেশি। ছোট সাইজের আধা কেজি ইলিশ ৪০০ টাকায় কিনলাম। 

অনেককেই ইলিশ কেনার জন্য বাজারে গিয়েও দাম শুনে ফিরে আসতে দেখা গেছে। 

উপজেলা মৎস্য আড়তদার বাবুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, এখন ইলিশের মৌসুম। অথচ সাগর-নদীতে ইলিশ তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝে দুই মাসের বেশি সময় মাছ ধরা বন্ধ ছিল, তখন সাগরে মাছ ছিল। এখন জেলেরা তেমন মাছ পাচ্ছে না। যে কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে মাছের দাম বেশি।’ 

বাবুল চন্দ্র হাওলাদার আরও বলেন, ‘গত বছর এই সময় বাজারে ইলিশের প্রচুর সরবরাহ ছিল। এবার সরবরাহ কম। ছোট জাটকা ইলিশ ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক কেজির ঊর্ধ্বের ইলিশ ১৪০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘নদীতে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ওপর ভিত্তি করে জোয়ার-ভাটায় প্রভাব পড়ে। ভরা পূর্ণিমা বা অমাবস্যার সময়টাকে বলে ভরাকাতাল। আর ভরা পূর্ণিমা ও অমাবস্যার মাঝামাঝি সময়টাকে বলে মরাকাতাল। মরাকাতালের সময়টাতে নদীতে জোয়ার-ভাটার প্রভাব কম থাকে।’ 

মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বর্তমানে মরাকাতাল চলছে। তাই মাছ কিছুটা কম পাচ্ছে জেলেরা। তবে আর কিছুদিন পরই ভরা পূর্ণিমাতে ইলিশে জেলেদের জাল ভরে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর ও দূষণের ফলে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের মৌসুমেও জেলেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীতাকুণ্ডে বাসচাপায় পথচারী নারী নিহত

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম), প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় আফরোজা বেগম (৫৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পৌরসদরস্থ পন্থিছিলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত পথচারী নারী চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ঢাকামুখী সৌদিয়া পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের পন্থিছিলা এলাকা অতিক্রমকালে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই নারীকে চাপা দেয়। এতে বাসচাপায় পিষ্ট হয়ে ওই নারী গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) জাকির রাব্বানী। তিনি জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিহত ওই নারীর মরদেহ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ শঙ্কামুক্ত, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ২২
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সরওয়ার বাবলা নামে আরেকজন নিহত হয়েছেন। শান্ত নামে এক বিএনপি কর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হতাহত তিনজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনজনের মধ্যে সরওয়ার বাবলা মারা গেছেন। বাকি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনাস্থলে গুলিতে লুটিয়ে পড়া সরওয়ার বাবলার একটি ছবি আজকের পত্রিকার সংগ্রহে এসেছে। বুধবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাঁচলাইশের হামজার বাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, মনোনয়ন পেয়ে হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন এরশাদ উল্লাহ। সময়টা ছিল মাগরিবের নামাজের পরপরই। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরশাদ উল্লাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করে।

ঘটনাস্থলে এরশাদ উল্লাহর কাছাকাছি থাকা বিএনপি নেতা মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমি এরশাদ ভাইয়ের খুব কাছেই ছিলাম। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়া শুরু করে। হুড়োহুড়িতে আমি নিজেও পায়ে আঘাত পেয়েছি।’ বর্তমানে তিনিও এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল।

বিষয়টি জানতে বায়েজিদ থানারি ওসিকে বারবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় মুজিবুর রহমান শেখ (৪৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে মোড়লডাঙ্গা এলাকার একটি বাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

মুজিবুর উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের মোড়লডাঙ্গা গ্রামের গোলাপ শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ সকালে মোড়লডাঙ্গায় নিজাম শেখের বাগানের একটি মেহগনিগাছে মুজিবুরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।

মৃতের ভাই জিল্লাল শেখ ও হাবি শেখের দাবি, তাঁদের ভাইকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। তাঁরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কে বা কারা মুজিবুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজজাক মীর বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে সঠিকভাবে জানা যাবে আসলে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ইয়াছিনের সমর্থকদের বিক্ষোভ, অগ্রভাগে নারীরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা নারীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়।

নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূবালী চত্বরে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইয়াছিনকে কুমিল্লা-৬ আসনে দলের প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন তাঁর অনুসারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের মিছিলে প্রায় ৮ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ‘ইয়াছিন ভাইয়ের মনোনয়ন ফেরত চাই’, ‘৮-এর প্রার্থী ৬-এ কেন—মানিনা, মানব না’, ‘আমি কে, তুমি কে, ইয়াছিন ভাই, ইয়াছিন ভাই’, ‘জেল-জুলুম, কারাগারে ইয়াছিন ভাই’ স্লোগান দেন।

ইয়াছিনের সমর্থকেরা বলছেন, ইয়াছিন দীর্ঘদিন ধরে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সহায়তায় নেতা-কর্মীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা খরচ, পারিবারিক সহায়তা, ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, রাজনৈতিক অবদান ও তৃণমূলের সঙ্গে সংযুক্তি বিবেচনা করে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলে হাজি ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত