মো. সাইফুল ইসলাম, বোরহানউদ্দিন (ভোলা)
জন্ম ভোলায় হলেও এর জলোহাওয়ায় আর বেড়ে ওঠা হয়নি তাঁর। বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে মায়ের কাছেও আর থাকা হয়নি তাঁর। ভোলা থেকে ঢাকা, ঢাকা থেকে সুইজারল্যান্ড। কিন্তু ‘রক্তের নিঃশব্দ সুর/সদা চলে নাড়িতন্তু বেয়ে’। নাড়ির এই টান কে অস্বীকার করবে? ভোলার সেই শিশু কুলসুমও পারেননি। চার দশকের বেশি সময় পর তিনি ফিরে এসেছেন তাঁর জন্মমাটিতে। তবে এই লম্বা সময়ে তিনি হারিয়েছেন তাঁর জন্মনামটি। তাঁর নাম এখন ম্যারি।
কুলসুম বা ম্যারি ফিরেছেন বোরহানউদ্দিনের মানিকা ইউনিয়নের দরগাহ খোলা এলাকার চটিয়া গ্রামের মনু ফকির বাড়িতে। যে বাড়ি থেকে, যে গ্রাম থেকে তিনি চলে গিয়েছিলেন, বলা ভালো চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, গতকাল বুধবার সেখানেই ফিরলেন নতুন নাম নিয়ে। মাঝখানে চলে গেছে চার দশকের বেশি সময়। জন্মমাটির সঙ্গে সেদিনের কুলসুম ও আজকের ম্যারির যে বিচ্ছেদ, তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘অভাব’ নামের শব্দটি।
জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে কুলসুমের বাবা মো. ইউসুফের মৃত্যু হয়। তখন পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে অথই সাগরে পড়েন তাদের মা। জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যায় অভাব। এই অভাবের কারণে প্রথম উন্মূল হয় কুলসুম ও তার পরিবার। কচি হাতে মায়ের আঙুল ধরে পাড়ি সাত ভাইবোন পাড়ি দেয় ঢাকায়। ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাঠপট্টিতে একটি ছোট ঘরে সাত সন্তান নিয়ে ওঠেন তার মা মাফিয়া বেগম। কিন্তু অভাব কাটল না। কিছুদিন পর কুলসুম ও তার ছোট বোন সুমির আশ্রয় হয় একটি এতিমখানায়। তখন কুলসুমের বয়স ৫ বছর, আর ছোট বোন সুমির বয়স ৩ বছর। সেই এতিমখানা থেকে তাদের দুই বোনকে দত্তক নেন এক সুইস দম্পতি। সেখানেই বড় হন কুলসুম ও তাঁর ছোট বোন সুমি।
কিন্তু দেশের টান, জন্মমাটির টান এবং সবার ওপরে মায়ের টান তাঁকে ছাড়ল না। তিনি ফিরে এলেন মায়ের খোঁজে। ৪৫ বছর পর সাংবাদিক মনজুরুল করিমের মাধ্যমে অনেক চেষ্টার পর খুঁজে পান মাকে। আর গতকাল বুধবার এলেন গ্রামের বাড়িতে। মা মাফিয়া বেগমের বয়স এখন ৮৫। শরীর অশক্ত। তাই মায়ের হাত ধরে আর গ্রামে ফেরা হলো না। কিন্তু আপনজনদের কাছে, আপন ভূমিতে তো ফেরা হলো।
বুধবার ম্যারি নাম নিয়ে কুলসুম যখন নিজের ফেলে যাওয়া বাড়ি এলেন, তখন চারদিকে সাজ সাজ রব। সেই কুলসুমকে বরণ করে নিতে কত আয়োজন। কুলসুম ও তাঁর স্বামী সুইজারল্যান্ডের নাগরিক আন্দ্রে সিমন ভারমুটকে তাঁর গ্রামের মানুষ ফুল দিয়ে বরণ করেন। তাঁদের আগমনের খবর পেয়েই আগে থেকেই সাজানো হয়েছিল পুরো বাড়ি। ডেকোরেটর ডেকে আনা হয়েছিল।
সাংবাদিক মনজুরুল করিম বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডপ্রবাসী এক ব্যক্তির মাধ্যমে আমরা ম্যারির বিষয়ে প্রথম জানতে পারি। কুলসুম ও তাঁর বোন সুমির ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হই যে, তাঁরা এ পরিবারের। আর আজ ম্যারিকে তাঁর পরিবারের পৌঁছে দিই।’
এদিকে দীর্ঘদিন পর ম্যারি তাঁর পরিবারকে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা। চোখে জল। তবে এ জল আনন্দের। সুইস ভাষায় বলছেন নানা কথা।
কুলসুম, আজকের ম্যারির ছোট চাচা মো. আব্দুল রব আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘ ৪৫ বছর পর আমার ভাইজিকে দেখতে পেয়েছি। সে আমাকে প্রথমে চিনতে পারেনি। পরে চিনছে। আমরা খুবই খুশি। সকালে বাড়িতে ঢুকেই কুলসুম তার বাবার কবর জিয়ারত করে। এর পর সবার সাথে একে একে দেখা করে। যদিও আমরা তার ভাষা বুঝতে পারি না। কিন্তু ঢাকার সাংবাদিক মনজুরুল করিম ভাইয়ের মাধ্যমে আমাদের কথা তাকে বুঝিয়ে বলি। সেও যা বলে, তা আবার মনজুরুল করিম আমাদের বুঝিয়ে বলেন।’
দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময়ের এই বিচ্ছেদের পর পুনর্মিলন অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বুধবার সকাল ৮টার দিকে ম্যারি তাঁর গ্রামের বাড়ি আসেন। আর দুপুর ১টার দিকে তাঁরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। মাত্র তো কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু এই কয়েক ঘণ্টাতেই যেন কয়েকটি দশকের বিচ্ছেদ বেদনা ঘুচল।
জন্ম ভোলায় হলেও এর জলোহাওয়ায় আর বেড়ে ওঠা হয়নি তাঁর। বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে মায়ের কাছেও আর থাকা হয়নি তাঁর। ভোলা থেকে ঢাকা, ঢাকা থেকে সুইজারল্যান্ড। কিন্তু ‘রক্তের নিঃশব্দ সুর/সদা চলে নাড়িতন্তু বেয়ে’। নাড়ির এই টান কে অস্বীকার করবে? ভোলার সেই শিশু কুলসুমও পারেননি। চার দশকের বেশি সময় পর তিনি ফিরে এসেছেন তাঁর জন্মমাটিতে। তবে এই লম্বা সময়ে তিনি হারিয়েছেন তাঁর জন্মনামটি। তাঁর নাম এখন ম্যারি।
কুলসুম বা ম্যারি ফিরেছেন বোরহানউদ্দিনের মানিকা ইউনিয়নের দরগাহ খোলা এলাকার চটিয়া গ্রামের মনু ফকির বাড়িতে। যে বাড়ি থেকে, যে গ্রাম থেকে তিনি চলে গিয়েছিলেন, বলা ভালো চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, গতকাল বুধবার সেখানেই ফিরলেন নতুন নাম নিয়ে। মাঝখানে চলে গেছে চার দশকের বেশি সময়। জন্মমাটির সঙ্গে সেদিনের কুলসুম ও আজকের ম্যারির যে বিচ্ছেদ, তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘অভাব’ নামের শব্দটি।
জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে কুলসুমের বাবা মো. ইউসুফের মৃত্যু হয়। তখন পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে অথই সাগরে পড়েন তাদের মা। জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যায় অভাব। এই অভাবের কারণে প্রথম উন্মূল হয় কুলসুম ও তার পরিবার। কচি হাতে মায়ের আঙুল ধরে পাড়ি সাত ভাইবোন পাড়ি দেয় ঢাকায়। ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাঠপট্টিতে একটি ছোট ঘরে সাত সন্তান নিয়ে ওঠেন তার মা মাফিয়া বেগম। কিন্তু অভাব কাটল না। কিছুদিন পর কুলসুম ও তার ছোট বোন সুমির আশ্রয় হয় একটি এতিমখানায়। তখন কুলসুমের বয়স ৫ বছর, আর ছোট বোন সুমির বয়স ৩ বছর। সেই এতিমখানা থেকে তাদের দুই বোনকে দত্তক নেন এক সুইস দম্পতি। সেখানেই বড় হন কুলসুম ও তাঁর ছোট বোন সুমি।
কিন্তু দেশের টান, জন্মমাটির টান এবং সবার ওপরে মায়ের টান তাঁকে ছাড়ল না। তিনি ফিরে এলেন মায়ের খোঁজে। ৪৫ বছর পর সাংবাদিক মনজুরুল করিমের মাধ্যমে অনেক চেষ্টার পর খুঁজে পান মাকে। আর গতকাল বুধবার এলেন গ্রামের বাড়িতে। মা মাফিয়া বেগমের বয়স এখন ৮৫। শরীর অশক্ত। তাই মায়ের হাত ধরে আর গ্রামে ফেরা হলো না। কিন্তু আপনজনদের কাছে, আপন ভূমিতে তো ফেরা হলো।
বুধবার ম্যারি নাম নিয়ে কুলসুম যখন নিজের ফেলে যাওয়া বাড়ি এলেন, তখন চারদিকে সাজ সাজ রব। সেই কুলসুমকে বরণ করে নিতে কত আয়োজন। কুলসুম ও তাঁর স্বামী সুইজারল্যান্ডের নাগরিক আন্দ্রে সিমন ভারমুটকে তাঁর গ্রামের মানুষ ফুল দিয়ে বরণ করেন। তাঁদের আগমনের খবর পেয়েই আগে থেকেই সাজানো হয়েছিল পুরো বাড়ি। ডেকোরেটর ডেকে আনা হয়েছিল।
সাংবাদিক মনজুরুল করিম বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডপ্রবাসী এক ব্যক্তির মাধ্যমে আমরা ম্যারির বিষয়ে প্রথম জানতে পারি। কুলসুম ও তাঁর বোন সুমির ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হই যে, তাঁরা এ পরিবারের। আর আজ ম্যারিকে তাঁর পরিবারের পৌঁছে দিই।’
এদিকে দীর্ঘদিন পর ম্যারি তাঁর পরিবারকে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা। চোখে জল। তবে এ জল আনন্দের। সুইস ভাষায় বলছেন নানা কথা।
কুলসুম, আজকের ম্যারির ছোট চাচা মো. আব্দুল রব আজকের পত্রিকাকে বলেন, দীর্ঘ ৪৫ বছর পর আমার ভাইজিকে দেখতে পেয়েছি। সে আমাকে প্রথমে চিনতে পারেনি। পরে চিনছে। আমরা খুবই খুশি। সকালে বাড়িতে ঢুকেই কুলসুম তার বাবার কবর জিয়ারত করে। এর পর সবার সাথে একে একে দেখা করে। যদিও আমরা তার ভাষা বুঝতে পারি না। কিন্তু ঢাকার সাংবাদিক মনজুরুল করিম ভাইয়ের মাধ্যমে আমাদের কথা তাকে বুঝিয়ে বলি। সেও যা বলে, তা আবার মনজুরুল করিম আমাদের বুঝিয়ে বলেন।’
দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময়ের এই বিচ্ছেদের পর পুনর্মিলন অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বুধবার সকাল ৮টার দিকে ম্যারি তাঁর গ্রামের বাড়ি আসেন। আর দুপুর ১টার দিকে তাঁরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। মাত্র তো কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু এই কয়েক ঘণ্টাতেই যেন কয়েকটি দশকের বিচ্ছেদ বেদনা ঘুচল।
প্রায় ১৭০ বছর আগে বাংলাদেশে চায়ের চাষ শুরু হয়। পরে সময় যত পেরিয়েছে, চা-বাগানের সংখ্যা ও পরিধি বেড়েছে। কিন্তু বাগানের শ্রমিকদের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এখন বেকারত্বে জর্জরিত হয়ে আছে শ্রমিকদের পরিবারগুলো।
৪৩ মিনিট আগেশ্রমিকের হাতুড়ির আঘাতে ভাঙছে ইট, গড়ে উঠছে দালান, সেতু, রাস্তা। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এই পরিশ্রমের কাজ করেও জোড়া লাগেনি তাঁদের ভাগ্য। এখান থেকে পাওয়া সামান্য আয়ে তাঁরা কোনোরকমে ধরে রেখেছেন সংসারের হাল।
১ ঘণ্টা আগেসড়কের গর্তে আটকে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পেছনে তৈরি হয়েছে যানজট। পেছন থেকে কেউ জোরে হর্ন দিচ্ছে, আবার কেউ করছে গালাগাল। শেষমেশ কয়েকজন মিলে ধাক্কা দিয়ে ওঠাতে হয়েছে রিকশাটিকে। গত রোববার সকালে এমনটাই দেখা যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে হাতিরঝিল যাওয়ার সড়কে। সড়কটি পান্থপথ-তেজগাঁও লিংক রোড নামেও...
৯ ঘণ্টা আগেগাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে মাসব্যাপী শুরু হয়েছে কুটিরশিল্প মেলা। ১৮ এপ্রিল শুরু হওয়া এ মেলায় হস্ত ও কুটিরশিল্পের কোনো পণ্য নেই। রয়েছে দুটি মিষ্টির দোকান, কয়েকটি ফুচকার স্টল, ভূতের বাড়ি জাদু প্রদর্শনী, সার্কাস, নাগরদোলা, স্লিপার, ওয়াটার বোট, লটারির টিকিট বিক্রির ১০-১২টি কাউন্টার ও লটারির ড্র...
৯ ঘণ্টা আগে