মুহম্মদ মজিবুর রহমান

২০২০ সালে যখন লুইজ গ্ল্যিককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো তখন বঙ্গ সমাজে এক ‘গেল গেল’ রব উঠল, হায় হায়, এ কাকে পুরস্কার দেওয়া হলো, আমরা তো তাঁকে চিনি না। আমাদের সবার পঠনের সীমানা বিশ্ববিস্তৃত নয়। সবাই যে সবাইকে চিনবেন, এমনও নয়। তবে আমরা না চিনলেও ইউরোপ- আমেরিকাতে লুইজ গ্ল্যিক সে সময়ই পরিচিত ছিলেন। কেননা, ইতিপূর্বে লুইজ এলিজাবেথ গ্ল্যিক মার্কিন সাহিত্য জগতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পুলিৎজার পেয়েছেন (১৯৯৩) তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য ওয়াইল্ড আইরিস’-এর জন্য। ২০০৩-২০০৪ সালে তিনি আমেরিকার ‘পোয়েট লোরিয়েট’ হয়েছেন। কবিতার নিবিড় পাঠকগণ নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগেই লুইজ গ্ল্যিকের একাধিক কবিতা পাঠ করেছেন ‘দ্য নর্টন অ্যান্থোলজি অব পোয়েট্রি’ (১৯৯৬) এবং ‘দ্য রিভারসাইড অ্যান্থোলজি অব লিটারেচার’ (১৯৮৮)-এর মতো নামকরা সব কাব্য সংগ্রহের সুবাদে। আজকের এই ২০২৩ সালে এসে লুইজ গ্ল্যিক কে, তা আর চিনিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিশ্বের সব বড় বড় সংবাদমাধ্যম লুইজ গ্ল্যিকের নামে স্মৃতিগাথা যেমন প্রকাশ করছে, তেমনি গ্ল্যিকের কবিতা এবং তাঁর কবিতা ও জীবন নিয়ে আলোচনা ছাপছে। লুইজ গ্ল্যিক ১৪ অক্টোবর ২০২৩ সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন।
একজন কবি, মৃত্যুদিনেই প্রমাণ করেন, তিনি মরেননি। লুইজ গ্ল্যিক তাঁর মৃত্যুদিনেই প্রমাণ করলেন তাঁকে নিয়ে আলোচনা, তাঁর সাহিত্য নিয়ে চর্চার শুরু হলো আরও গভীরতর করে। এখন আর কেউ বলতে পারবেন না, লুইজ গ্ল্যিককে তো চিনতে পারলাম না। বিশ্ব সাহিত্যের চর্চাকারীকে আজ লুইজ গ্ল্যিককে চিনে নিতে হবে। একজন কবির এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন, যখন তাঁকে চিনে নেওয়ার দায় পাঠকের ঘাড়েই বর্তায়। কাজেই কবির মৃত্যুতে শোক নয়, কবিকে আরও নতুন করে বাঁচিয়ে রাখার দায় তৈরি হয়। কেননা, সত্যিকারের কবি তো অমর।
আজকের দিনে এসে বলা যায়, লুইজ গ্ল্যিক কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এই প্রতিষ্ঠার কারণ কেবল তাঁর পুরস্কার নয়, এর অন্যতম কারণ, তাঁর কবিতার নিজস্ব স্বর। সেই যে জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, ‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি’। সেই ‘কেউ কেউ’ হয়ে ওঠার প্রধান শর্ত হলো বিশ্ব কবিতার মানচিত্রে নিজের স্বরটি প্রবলভাবে আলাদা করে তুলে ধরা। লুইজ গ্ল্যিকের কবিতা পাঠই আপনাকে বলে দেবে, তিনি কতটা অনন্য। তাঁর কবিতার জগতে প্রবেশের আগে তাঁর জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গিটাও খানিকটা জেনে নেওয়া যাক তবে।
সত্যিকারের লেখক, কবি এবং যথার্থ মানুষ তো প্রাকৃতিকভাবেই আলাদা। প্রকৃতি বা সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার এ এক বড় অবদান যে প্রত্যেক মানুষের জেনেটিক কোড আলাদা, চোখের ছাপ, হাতের ছাপ সব আলাদা। তবুও কবিতা লিখতে গিয়ে, ছবি আঁকতে গিয়ে আমরা কেমন একটা বাঁধাধরা ফ্রেমে আটকে যাই। আমরা পূর্বসূরিদের দ্বারা প্রভাবিত হই এবং তার চেয়েও বেশি করে একটা পূর্বধারণা মেনে নিই যে কবিতা এমন, গান এমন, চিত্রকর্ম এমন হতে হবে। এই মান ধারণা মেনে নেওয়াটাই বোধ হয় একজন শিল্পী, কবির অনন্যতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। লুইজ গ্ল্যিকের মতো কারও কারও কবিতা এই অনন্ত অনন্যতার পথে যাত্রা করে। তাঁর কবিতায় তিনি লিখছেন—
আমার মায়ের আর বাবার কোষ; এইবার তোমার পালা
অন্যতম হওয়া, শ্রেষ্ঠতম হওয়া।
(মা আর শিশু)
প্রত্যেক মা তার এই শিশুকে এটুকু শিক্ষাই আদতে দিতে পারে, বাবা-মায়ের কোষ থেকে যে শিশুটি জন্মায়, বড় হয়, তার অন্যতম হওয়ার, শ্রেষ্ঠতম হওয়ার ধারাবাহিক দায়টা তার সেই কোষের মধ্যেই থাকে। কেননা, প্রত্যেক সন্তানই আলাদা, প্রত্যেক মানুষই আলাদা। এই আলাদা সত্তাটি ধরে রাখলেই নিজের কর্মটিও ভিড় থেকে আলাদা হয়ে নিজেকে উদ্ভাসিত করে। বিশ শতকের মহিরুহ শিল্পী পাবলো পিকাসো একবার বয়ান করেছিলেন, ‘প্রত্যেক শিশুই একজন শিল্পী। সমস্যাটা হলো সে যখন বেড়ে ওঠে, তখন সে কতটা শিল্পী রয়ে যায়, সেটুকু সুরক্ষা করা।’ নিজেকে রক্ষা করা, নিজের ভেতরের একান্ত শিল্পীকে রক্ষা করার লড়াইটা লুইজ গ্ল্যিকের কবিতায় পেয়ে যাই, বারবার—
আমি টিকে থাকার আশা করিনি,
পৃথিবী আমাকে দমন করছিল। আমি আশা করিনি
আবার জেগে ওঠার, অনুভব করব
যে এই স্যাঁতসেঁতে পৃথিবীতে আমার শরীর
আবার সাড়া দিতে পারবে, স্মরণ করছিলাম
বহুকাল পরে কেমন করে আবার খুলতে হয়
শীতল আলোতে
নব বসন্তকে
(তুষারপাত)
পৃথিবী যতই দমন করতে চেষ্টা করুক, কবি জেগে ওঠে। সত্যিকারের কবি, শিল্পী সাড়া দিতে পারে নববসন্তে কিংবা তুষারপাতে, এমনকি ইটের দেয়ালের মতো সম্পর্ক ভেদ করেও কবি জেগে ওঠে—
আশ্চর্যের কিছু নেই তুমি তোমার মতোই,
রক্তে ভয় পাও, তোমার নারী
যেন একটার পর আরেকটা ইটের দেয়াল।
(ভালোবাসার কবিতা)
কবিতার নিজস্বতা, কবিতার শক্তিই একজন কবিকে অনন্তের ময়দানে অমরত্ব দান করে। আমাদের জীবনানন্দ বারবার ফিরে আসেন। ধানসিড়ি নদীটির তীরে। হয়তো শঙ্খচিল, শালিকের বেশে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি করে তিনি ফিরে আসেন নিজের কবিতার মাধ্যমেই। জীবনানন্দ এই বাংলা ছেড়ে যাননি, যাবেন না। লুইজ গ্ল্যিক পৃথিবীর আরেক প্রান্তে, আরেক শতাব্দীতে মৃত্যুবরণ করেও ফিরে আসেন, জন্মাতে থাকেন, নিজের অস্তিত্বকে গাঢ়তর করে তোলেন তাঁর কবিতায়—
আমি জানি না। হয়তো আমি ফিরে আসব,
হয়তো কোনোভাবে শেষ পর্যন্ত আমরা একত্র হব।
আমি সেই আকাঙ্ক্ষাই করেছিলাম যা সব সময় আকাঙ্ক্ষা করি।
আমি আরেকটা কবিতার আকাঙ্ক্ষা করেছিলাম।
(আকাঙ্ক্ষা)
কাজেই, আজ, লুইজ গ্ল্যিক প্রয়াত হলেন আর আমরা এই আকাঙ্ক্ষা রাখলাম, বিশ্ব কবিতার পাঠ দরবারে তিনি ফিরে আসবেন, বারবার। কেননা, কবির প্রয়াণ নেই। কবি চলতে থাকেন অবিরাম, অনন্য অনন্তের পথ ধরে।

২০২০ সালে যখন লুইজ গ্ল্যিককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো তখন বঙ্গ সমাজে এক ‘গেল গেল’ রব উঠল, হায় হায়, এ কাকে পুরস্কার দেওয়া হলো, আমরা তো তাঁকে চিনি না। আমাদের সবার পঠনের সীমানা বিশ্ববিস্তৃত নয়। সবাই যে সবাইকে চিনবেন, এমনও নয়। তবে আমরা না চিনলেও ইউরোপ- আমেরিকাতে লুইজ গ্ল্যিক সে সময়ই পরিচিত ছিলেন। কেননা, ইতিপূর্বে লুইজ এলিজাবেথ গ্ল্যিক মার্কিন সাহিত্য জগতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পুলিৎজার পেয়েছেন (১৯৯৩) তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য ওয়াইল্ড আইরিস’-এর জন্য। ২০০৩-২০০৪ সালে তিনি আমেরিকার ‘পোয়েট লোরিয়েট’ হয়েছেন। কবিতার নিবিড় পাঠকগণ নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগেই লুইজ গ্ল্যিকের একাধিক কবিতা পাঠ করেছেন ‘দ্য নর্টন অ্যান্থোলজি অব পোয়েট্রি’ (১৯৯৬) এবং ‘দ্য রিভারসাইড অ্যান্থোলজি অব লিটারেচার’ (১৯৮৮)-এর মতো নামকরা সব কাব্য সংগ্রহের সুবাদে। আজকের এই ২০২৩ সালে এসে লুইজ গ্ল্যিক কে, তা আর চিনিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিশ্বের সব বড় বড় সংবাদমাধ্যম লুইজ গ্ল্যিকের নামে স্মৃতিগাথা যেমন প্রকাশ করছে, তেমনি গ্ল্যিকের কবিতা এবং তাঁর কবিতা ও জীবন নিয়ে আলোচনা ছাপছে। লুইজ গ্ল্যিক ১৪ অক্টোবর ২০২৩ সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন।
একজন কবি, মৃত্যুদিনেই প্রমাণ করেন, তিনি মরেননি। লুইজ গ্ল্যিক তাঁর মৃত্যুদিনেই প্রমাণ করলেন তাঁকে নিয়ে আলোচনা, তাঁর সাহিত্য নিয়ে চর্চার শুরু হলো আরও গভীরতর করে। এখন আর কেউ বলতে পারবেন না, লুইজ গ্ল্যিককে তো চিনতে পারলাম না। বিশ্ব সাহিত্যের চর্চাকারীকে আজ লুইজ গ্ল্যিককে চিনে নিতে হবে। একজন কবির এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন, যখন তাঁকে চিনে নেওয়ার দায় পাঠকের ঘাড়েই বর্তায়। কাজেই কবির মৃত্যুতে শোক নয়, কবিকে আরও নতুন করে বাঁচিয়ে রাখার দায় তৈরি হয়। কেননা, সত্যিকারের কবি তো অমর।
আজকের দিনে এসে বলা যায়, লুইজ গ্ল্যিক কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এই প্রতিষ্ঠার কারণ কেবল তাঁর পুরস্কার নয়, এর অন্যতম কারণ, তাঁর কবিতার নিজস্ব স্বর। সেই যে জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, ‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি’। সেই ‘কেউ কেউ’ হয়ে ওঠার প্রধান শর্ত হলো বিশ্ব কবিতার মানচিত্রে নিজের স্বরটি প্রবলভাবে আলাদা করে তুলে ধরা। লুইজ গ্ল্যিকের কবিতা পাঠই আপনাকে বলে দেবে, তিনি কতটা অনন্য। তাঁর কবিতার জগতে প্রবেশের আগে তাঁর জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গিটাও খানিকটা জেনে নেওয়া যাক তবে।
সত্যিকারের লেখক, কবি এবং যথার্থ মানুষ তো প্রাকৃতিকভাবেই আলাদা। প্রকৃতি বা সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার এ এক বড় অবদান যে প্রত্যেক মানুষের জেনেটিক কোড আলাদা, চোখের ছাপ, হাতের ছাপ সব আলাদা। তবুও কবিতা লিখতে গিয়ে, ছবি আঁকতে গিয়ে আমরা কেমন একটা বাঁধাধরা ফ্রেমে আটকে যাই। আমরা পূর্বসূরিদের দ্বারা প্রভাবিত হই এবং তার চেয়েও বেশি করে একটা পূর্বধারণা মেনে নিই যে কবিতা এমন, গান এমন, চিত্রকর্ম এমন হতে হবে। এই মান ধারণা মেনে নেওয়াটাই বোধ হয় একজন শিল্পী, কবির অনন্যতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। লুইজ গ্ল্যিকের মতো কারও কারও কবিতা এই অনন্ত অনন্যতার পথে যাত্রা করে। তাঁর কবিতায় তিনি লিখছেন—
আমার মায়ের আর বাবার কোষ; এইবার তোমার পালা
অন্যতম হওয়া, শ্রেষ্ঠতম হওয়া।
(মা আর শিশু)
প্রত্যেক মা তার এই শিশুকে এটুকু শিক্ষাই আদতে দিতে পারে, বাবা-মায়ের কোষ থেকে যে শিশুটি জন্মায়, বড় হয়, তার অন্যতম হওয়ার, শ্রেষ্ঠতম হওয়ার ধারাবাহিক দায়টা তার সেই কোষের মধ্যেই থাকে। কেননা, প্রত্যেক সন্তানই আলাদা, প্রত্যেক মানুষই আলাদা। এই আলাদা সত্তাটি ধরে রাখলেই নিজের কর্মটিও ভিড় থেকে আলাদা হয়ে নিজেকে উদ্ভাসিত করে। বিশ শতকের মহিরুহ শিল্পী পাবলো পিকাসো একবার বয়ান করেছিলেন, ‘প্রত্যেক শিশুই একজন শিল্পী। সমস্যাটা হলো সে যখন বেড়ে ওঠে, তখন সে কতটা শিল্পী রয়ে যায়, সেটুকু সুরক্ষা করা।’ নিজেকে রক্ষা করা, নিজের ভেতরের একান্ত শিল্পীকে রক্ষা করার লড়াইটা লুইজ গ্ল্যিকের কবিতায় পেয়ে যাই, বারবার—
আমি টিকে থাকার আশা করিনি,
পৃথিবী আমাকে দমন করছিল। আমি আশা করিনি
আবার জেগে ওঠার, অনুভব করব
যে এই স্যাঁতসেঁতে পৃথিবীতে আমার শরীর
আবার সাড়া দিতে পারবে, স্মরণ করছিলাম
বহুকাল পরে কেমন করে আবার খুলতে হয়
শীতল আলোতে
নব বসন্তকে
(তুষারপাত)
পৃথিবী যতই দমন করতে চেষ্টা করুক, কবি জেগে ওঠে। সত্যিকারের কবি, শিল্পী সাড়া দিতে পারে নববসন্তে কিংবা তুষারপাতে, এমনকি ইটের দেয়ালের মতো সম্পর্ক ভেদ করেও কবি জেগে ওঠে—
আশ্চর্যের কিছু নেই তুমি তোমার মতোই,
রক্তে ভয় পাও, তোমার নারী
যেন একটার পর আরেকটা ইটের দেয়াল।
(ভালোবাসার কবিতা)
কবিতার নিজস্বতা, কবিতার শক্তিই একজন কবিকে অনন্তের ময়দানে অমরত্ব দান করে। আমাদের জীবনানন্দ বারবার ফিরে আসেন। ধানসিড়ি নদীটির তীরে। হয়তো শঙ্খচিল, শালিকের বেশে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি করে তিনি ফিরে আসেন নিজের কবিতার মাধ্যমেই। জীবনানন্দ এই বাংলা ছেড়ে যাননি, যাবেন না। লুইজ গ্ল্যিক পৃথিবীর আরেক প্রান্তে, আরেক শতাব্দীতে মৃত্যুবরণ করেও ফিরে আসেন, জন্মাতে থাকেন, নিজের অস্তিত্বকে গাঢ়তর করে তোলেন তাঁর কবিতায়—
আমি জানি না। হয়তো আমি ফিরে আসব,
হয়তো কোনোভাবে শেষ পর্যন্ত আমরা একত্র হব।
আমি সেই আকাঙ্ক্ষাই করেছিলাম যা সব সময় আকাঙ্ক্ষা করি।
আমি আরেকটা কবিতার আকাঙ্ক্ষা করেছিলাম।
(আকাঙ্ক্ষা)
কাজেই, আজ, লুইজ গ্ল্যিক প্রয়াত হলেন আর আমরা এই আকাঙ্ক্ষা রাখলাম, বিশ্ব কবিতার পাঠ দরবারে তিনি ফিরে আসবেন, বারবার। কেননা, কবির প্রয়াণ নেই। কবি চলতে থাকেন অবিরাম, অনন্য অনন্তের পথ ধরে।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
১৯ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
২৪ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

২০২০ সালে যখন লুইজ গ্ল্যিককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো তখন বঙ্গ সমাজে এক ‘গেল গেল’ রব উঠল, হায় হায়, এ কাকে পুরস্কার দেওয়া হলো, আমরা তো তাঁকে চিনি না। আমাদের সবার পঠনের সীমানা বিশ্ববিস্তৃত নয়। সবাই যে সবাইকে চিনবেন, এমনও নয়। তবে আমরা না চিনলেও ইউরোপ- আমেরিকাতে লুইজ গ্ল্যিক সে সময়ই পরিচিত ছিলেন।
১৪ অক্টোবর ২০২৩
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
১৯ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
২৪ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

২০২০ সালে যখন লুইজ গ্ল্যিককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো তখন বঙ্গ সমাজে এক ‘গেল গেল’ রব উঠল, হায় হায়, এ কাকে পুরস্কার দেওয়া হলো, আমরা তো তাঁকে চিনি না। আমাদের সবার পঠনের সীমানা বিশ্ববিস্তৃত নয়। সবাই যে সবাইকে চিনবেন, এমনও নয়। তবে আমরা না চিনলেও ইউরোপ- আমেরিকাতে লুইজ গ্ল্যিক সে সময়ই পরিচিত ছিলেন।
১৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
২৪ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

২০২০ সালে যখন লুইজ গ্ল্যিককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো তখন বঙ্গ সমাজে এক ‘গেল গেল’ রব উঠল, হায় হায়, এ কাকে পুরস্কার দেওয়া হলো, আমরা তো তাঁকে চিনি না। আমাদের সবার পঠনের সীমানা বিশ্ববিস্তৃত নয়। সবাই যে সবাইকে চিনবেন, এমনও নয়। তবে আমরা না চিনলেও ইউরোপ- আমেরিকাতে লুইজ গ্ল্যিক সে সময়ই পরিচিত ছিলেন।
১৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
১৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

২০২০ সালে যখন লুইজ গ্ল্যিককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো তখন বঙ্গ সমাজে এক ‘গেল গেল’ রব উঠল, হায় হায়, এ কাকে পুরস্কার দেওয়া হলো, আমরা তো তাঁকে চিনি না। আমাদের সবার পঠনের সীমানা বিশ্ববিস্তৃত নয়। সবাই যে সবাইকে চিনবেন, এমনও নয়। তবে আমরা না চিনলেও ইউরোপ- আমেরিকাতে লুইজ গ্ল্যিক সে সময়ই পরিচিত ছিলেন।
১৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
১৯ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
২৪ দিন আগে