সালাম ফারুক

বিছানার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখছিলেন বাবা। হঠাৎ তার সামনে লম্বালম্বি করে সাইকেলটি রাখল নিধি।
: বাবা, শক্ত করে ধরে রাখো।
: কেন?
: আ রে ধরো না। না ধরলে কিন্তু তোমার অনেক লস হয়ে যাবে। কথা শুনে বাবার তো আক্কেল গুড়ুম।
: কেন? আমার লস হবে কেন?
: না ধরলে তো আমি পড়ে যাব।
: তো?
: তখন আমাকে হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে না? তখন তোমার অনেক টাকা খরচ হয়ে যাবে না?
কথা তো ঠিক। পাশ থেকে মেধা হাসি থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে। দূর থেকে ওর মা শুনে মুচকি হাসছেন। অগত্যা, পেছন থেকে শক্ত করে ধরে রাখলেন বাবা। আর সেই সাইকেলে বসে প্যাডেল ঘোরাতে ঘোরাতে মনের আনন্দে টিভি দেখছে নিধি। আর বারবার বলছে, ‘ঘুমিয়ে পড় না কিন্তু। হাত সরালেই লস তোমারই হবে বলে দিলাম।’
করোনা শুরুর পর থেকেই সাইকেল নিয়ে বাইরে যাওয়া বন্ধ ছিল দুই বোনের। দিনে বেশ কয়েকবার এ ঘর থেকে ও ঘরে যাওয়া-আসা করত। দুই রুমের নাম দিয়েছিল ঢাকা ও টাঙ্গাইল। কখনো নিজেরা বসে হেঁটে হেঁটে, কখনোবা দুই সিটে দুটি পুতুল বসিয়ে চলত তাদের এ কথিত আন্তজেলা পরিবহন। কিন্তু ছোট্ট জায়গায় কত আর চালানোর মজা মেলে? তাই কদিন পরই সাইকেলটি অলস হয়ে পড়ে। ঠাঁই হয় বারান্দার এক কোণে।
মাস দুয়েক আগে বাসায় কাজ করানোর সময় আবার নজরে আসে সাইকেলটি। তত দিনে দুই চাকা পাংচারসহ বিভিন্ন স্থানে ধরেছে জং। মেরামত ছাড়া এটি নিয়ে বাইরে বের হওয়া সম্ভবই নয়। লকডাউনের কারণে সব বন্ধ থাকায় মেরামতের সুযোগ ছিল না বেশ কয়েক মাস। কিন্তু তাই বলে কি খেলা থেমে থাকবে? না। এই যে সাইকেলে বসে প্যাডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে টিভি দেখছে নিধি।
এরই মধ্যে শুরু হলো বিজ্ঞাপন বিরতি। হঠাৎ বাবাকে নিধির প্রশ্ন—
: আচ্ছা বাবা, সাইকেল কে আবিষ্কার করেছেন, জানো?
: জানি না। তবে গুগল দেখে বলতে পারি।
: আচ্ছা, তুমি খুঁজে বের করো। আমি ততক্ষণ পায়ের ব্যায়াম করি।
মোবাইল হাতে নিয়ে বাবা গুগলে সার্চ দিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই নিধির প্রশ্নের জবাব মিলল উইকিপিডিয়ায়। বাবা পড়ে শোনালেন।
: সাইকেল আবিষ্কারের দাবি করেন অনেকে। তবে দুই চাকার বাহন জনসমক্ষে প্রথম আনেন জার্মানির কার্ল ভন ড্যারন। তিনি ১৮১৭ সালে জার্মানির ম্যানহেইম শহরে তাঁর আবিষ্কৃত বাহনের প্রদর্শনী করেন। প্রথম দিকের সাইকেলের দুই চাকা সমান ছিল না। ১৮৮০ সালে সর্বপ্রথম দুই চাকা সমান পর্যায়ে নিয়ে আসা হয় এবং চেন ও টায়ার সংযুক্ত করা হয়।
: আচ্ছা বাবা, সাইকেল চালানোর সময় মানুষ পড়ে যায় না কেন?
: সাইকেল চালানো একটা আর্ট। একটা কৌশল।
: যেমন?
: এই ধরো, চালানোর সময় সামনের দিকে তাকাতে হয়। অনেকে সামনের চাকার দিকে তাকিয়ে থাকে। তখন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। সাইকেলটা যেদিকে কাত হবে, সেদিকে সামনের চাকাটা ঘুরিয়ে প্যাডেল চাপ দিয়ে ব্যালেন্স করে নিলে আর পড়ে না।
: তুমিও কি এমন ছোট সাইকেল দিয়ে চালানো শিখেছ?
: না, আমি বড় সাইকেল দিয়ে শিখেছি।
: ছোটবেলা তুমি বড় সাইকেলের সিটে বসতে কী করে?
: সিটে তো বসতে পারতাম না। প্যাডেলের ওপরের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে এক পা অপর প্রান্তের প্যাডেলে রাখতাম। এক হাতে সিটের সামনের পাইপটি ডান হাতে শক্ত করে ধরতাম আর বাঁ হাতে বাঁ পাশের হ্যান্ডেলটা ধরে চালাতাম।
: পড়ে যেতে না?
: প্রথম প্রথম তো অনেকবার পড়েছি। এরপর যখন শেখা হয়ে গেল তখন আর পড়িনি।
: ওহ, আচ্ছা।
: আমরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতাম। দোকানেও যেতাম। প্রতিদিন বিকেলে বন্ধুরা মিলে ঘুরে বেড়াতাম। খুব মজা হতো।
: গাড়ির ভয় করত না?
: মফস্বল শহরে তখন বড় গাড়ি তেমন চলত না। তাই আমাদের ভয় ছিল না। ঢাকার রাস্তায় তো অনেক বড় বড় বাস-ট্রাক চলে। তাই এখানে বড় রাস্তায় সাইকেল চালানোটা নিরাপদ না।
: সাইকেলের জন্য আলাদা রাস্তা থাকলে ভালো হতো। তাই না বাবা?
: তা তো হতোই। আমাদের দেশে এখন সাইকেলের খুব জনপ্রিয়তা। সাইকেল এখন অনেক আধুনিক হয়ে গেছে। হয়তো একসময় এর জন্য আলাদা লেন হবে।
: ওহ! তাহলে তো খুব মজা হবে। আমরাও চালাতে পারব।
প্রশ্ন ছেড়ে এবার নিধির আবদার—
: বাবা, সাইকেলটা ঠিক করে আনো না।
: হুম, খুবই জরুরি। সময় বের করতে পারলেই নিয়ে যাব।
এমন সময় মেধার আবদার—
: বাবা, আমি তো বড় হয়ে গেছি। সাইকেলটার হ্যান্ডেল আমার হাঁটুতে লেগে যায়। ডানে-বামে ঘোরাতে কষ্ট হয়। আমাকে নতুন একটা কিনে দিতে হবে।
: হুম, আমি সেটাই ভাবছি। তবে দুটো শর্ত আছে।
: কী কী?
: পড়ায় ফাঁকিবাজি করা যাবে না।
: আচ্ছা। পড়ব।
: অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে যে রেজাল্ট হবে সেটা সন্তোষজনক হতে হবে।
মেধা ঘাড় কাত করে বুঝাল, ঠিক আছে।
: আরেকটা শর্ত কী বাবা?
: আম্মুর কথা সঙ্গে সঙ্গে শুনতে হবে। কোনো কথা যেন একাধিকবার বলা না লাগে।
: ঠিক আছে।
: মনে থাকে যেন। তুমি তো আবার ভুলে যাও।
: মনে থাকবে। ভুলব না।
: নতুন সাইকেল কিনলে আগেরটা ঠিক করা হবে না। তাই নিধিকেও চালাতে দিতে হবে।
: আমি আর কী দেব? আমারই তো চালাতে গিয়ে ওর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে।
: হা হা হা।
রান্নাঘর থেকে এবার যোগ দিলেন মা।
: ভালো হলো। ভাঙারিওলার কাছে সাইকেলটা দিয়ে এটা-সেটা কেনা যাবে।
: উহু, তা হবে না। গিন্নির কথায় আপত্তি জানালেন কর্তা।
: তাহলে?
: পার্টসগুলো কাজে লাগাতে হবে।
: কী, শোপিস বানাবে নাকি?
: হুম, তেমনটিই ভাবছি। বিশেষ করে টায়ার-টিউব খুলে চাকা দুটো ড্রইংরুমের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখব। কেমন হবে?
: বুদ্ধি তো ভালোই। খারাপ হবে না মনে হচ্ছে।
: বাকিগুলোর মধ্যেও যেগুলো রাখা যায়, রাখব। যদি র্যাপিং পেপারে মুড়িয়েও শোপিস বানানো যায়, বানাব।
কথা শুনে সাইকেলেই উল্টো দিকে ঘুরে বাবার দিকে মুখ করে বসল নিধি। টিভির ভলিউম কমিয়ে মেধাও মনোযোগ দিল। বাবার এমন ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনা তাদের খুব পছন্দ। মাঝেমধ্যে পরামর্শও দেয়। সাইকেলের যন্ত্রাংশ খুলে শোপিস বানানোর কথা ওঠায় তাদের মাথায় খেলতে থাকল নানান বুদ্ধি। বাবা-মার কথার মাঝখানে ঢুকে শুরু করল নিধি—
নিধি: বাবা, দুটো চাকার মাঝখানে কিছু দিয়ে তুমি বসার জিনিস বানাতে পারো। মোড়ার মতো করে।
মেধা: না বাবা, বেডসাইড টেবিল বানাবে।
নিধি: আর তিন কোণা ফ্রেমটা রং করে দেওয়ালে ঝুলিয়ে দেব।
মেধা: র্যাপিং করে রাখতে পার। টেবিলের নিচের স্টিলের ফ্রেমটা যেভাবে রেখেছ।
নিধি: চেনটা কয়েলের মতো পেঁচিয়ে রাখব।
মেধা: হুম। আর চেনের চাকা দুইটাও সুন্দর। চকচক করে।
কন্যাদের একের পর এক মন্তব্যে বাবার যেন মাথা খুলছে। খুব মজা পাচ্ছেন মাও।
বাবা: তাহলে তোমার আম্মু ভাঙারিওলাকে কী দেবে?
মেধা: হ্যান্ডেল আর প্যাডেলগুলো কাজে লাগবে না।
নিধি: আম্মু ওগুলো তোমার।
কন্যার কথায় বাবা ও মা দুজনেই হেসে ওঠেন। ততক্ষণে মায়ের রান্না শেষ। টেবিলে খাবার সাজিয়ে হাসতে হাসতে মা বললেন–হইছে, আমার কথা ভাবতে হবে না। আসো, সবাই খেতে আসো।
মাসখানেক পর নতুন সাইকেল এল। সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেধার মাপে। তাই নিধির জন্য একটু বড়ই হয়ে যায়। তবে এ সাইকেল চালিয়ে এরই মধ্যে দুয়েকটা প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও অর্জন করে নিয়েছে বড় জন। সর্বশেষ স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। আগেরবার হয়েছিল রানার্সআপ। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও শেখানো যাচ্ছে না নিধিকে। চালাতে পারলেও সমস্যা হচ্ছে ওঠা-নামায়। তবুও মাঝেমধ্যে চেষ্টা করছে।
এদিকে, বারান্দার এক কোণে ঠাঁই হয়েছে অচল সাইকেলের। নতুন সাইকেল পেয়ে এখন আর কেউ ওটা ছুঁয়েও দেখে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী অনেক দিন আগে চাকা দুটো খোলা হলেও কোথায় যে রাখা হয়েছে তার খবর নেই। খোলার অপেক্ষায় থাকা অন্যসব পার্টসও যেন সখ্য গড়েছে মরিচার সঙ্গে।

বিছানার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখছিলেন বাবা। হঠাৎ তার সামনে লম্বালম্বি করে সাইকেলটি রাখল নিধি।
: বাবা, শক্ত করে ধরে রাখো।
: কেন?
: আ রে ধরো না। না ধরলে কিন্তু তোমার অনেক লস হয়ে যাবে। কথা শুনে বাবার তো আক্কেল গুড়ুম।
: কেন? আমার লস হবে কেন?
: না ধরলে তো আমি পড়ে যাব।
: তো?
: তখন আমাকে হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে না? তখন তোমার অনেক টাকা খরচ হয়ে যাবে না?
কথা তো ঠিক। পাশ থেকে মেধা হাসি থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে। দূর থেকে ওর মা শুনে মুচকি হাসছেন। অগত্যা, পেছন থেকে শক্ত করে ধরে রাখলেন বাবা। আর সেই সাইকেলে বসে প্যাডেল ঘোরাতে ঘোরাতে মনের আনন্দে টিভি দেখছে নিধি। আর বারবার বলছে, ‘ঘুমিয়ে পড় না কিন্তু। হাত সরালেই লস তোমারই হবে বলে দিলাম।’
করোনা শুরুর পর থেকেই সাইকেল নিয়ে বাইরে যাওয়া বন্ধ ছিল দুই বোনের। দিনে বেশ কয়েকবার এ ঘর থেকে ও ঘরে যাওয়া-আসা করত। দুই রুমের নাম দিয়েছিল ঢাকা ও টাঙ্গাইল। কখনো নিজেরা বসে হেঁটে হেঁটে, কখনোবা দুই সিটে দুটি পুতুল বসিয়ে চলত তাদের এ কথিত আন্তজেলা পরিবহন। কিন্তু ছোট্ট জায়গায় কত আর চালানোর মজা মেলে? তাই কদিন পরই সাইকেলটি অলস হয়ে পড়ে। ঠাঁই হয় বারান্দার এক কোণে।
মাস দুয়েক আগে বাসায় কাজ করানোর সময় আবার নজরে আসে সাইকেলটি। তত দিনে দুই চাকা পাংচারসহ বিভিন্ন স্থানে ধরেছে জং। মেরামত ছাড়া এটি নিয়ে বাইরে বের হওয়া সম্ভবই নয়। লকডাউনের কারণে সব বন্ধ থাকায় মেরামতের সুযোগ ছিল না বেশ কয়েক মাস। কিন্তু তাই বলে কি খেলা থেমে থাকবে? না। এই যে সাইকেলে বসে প্যাডেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে টিভি দেখছে নিধি।
এরই মধ্যে শুরু হলো বিজ্ঞাপন বিরতি। হঠাৎ বাবাকে নিধির প্রশ্ন—
: আচ্ছা বাবা, সাইকেল কে আবিষ্কার করেছেন, জানো?
: জানি না। তবে গুগল দেখে বলতে পারি।
: আচ্ছা, তুমি খুঁজে বের করো। আমি ততক্ষণ পায়ের ব্যায়াম করি।
মোবাইল হাতে নিয়ে বাবা গুগলে সার্চ দিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই নিধির প্রশ্নের জবাব মিলল উইকিপিডিয়ায়। বাবা পড়ে শোনালেন।
: সাইকেল আবিষ্কারের দাবি করেন অনেকে। তবে দুই চাকার বাহন জনসমক্ষে প্রথম আনেন জার্মানির কার্ল ভন ড্যারন। তিনি ১৮১৭ সালে জার্মানির ম্যানহেইম শহরে তাঁর আবিষ্কৃত বাহনের প্রদর্শনী করেন। প্রথম দিকের সাইকেলের দুই চাকা সমান ছিল না। ১৮৮০ সালে সর্বপ্রথম দুই চাকা সমান পর্যায়ে নিয়ে আসা হয় এবং চেন ও টায়ার সংযুক্ত করা হয়।
: আচ্ছা বাবা, সাইকেল চালানোর সময় মানুষ পড়ে যায় না কেন?
: সাইকেল চালানো একটা আর্ট। একটা কৌশল।
: যেমন?
: এই ধরো, চালানোর সময় সামনের দিকে তাকাতে হয়। অনেকে সামনের চাকার দিকে তাকিয়ে থাকে। তখন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। সাইকেলটা যেদিকে কাত হবে, সেদিকে সামনের চাকাটা ঘুরিয়ে প্যাডেল চাপ দিয়ে ব্যালেন্স করে নিলে আর পড়ে না।
: তুমিও কি এমন ছোট সাইকেল দিয়ে চালানো শিখেছ?
: না, আমি বড় সাইকেল দিয়ে শিখেছি।
: ছোটবেলা তুমি বড় সাইকেলের সিটে বসতে কী করে?
: সিটে তো বসতে পারতাম না। প্যাডেলের ওপরের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে এক পা অপর প্রান্তের প্যাডেলে রাখতাম। এক হাতে সিটের সামনের পাইপটি ডান হাতে শক্ত করে ধরতাম আর বাঁ হাতে বাঁ পাশের হ্যান্ডেলটা ধরে চালাতাম।
: পড়ে যেতে না?
: প্রথম প্রথম তো অনেকবার পড়েছি। এরপর যখন শেখা হয়ে গেল তখন আর পড়িনি।
: ওহ, আচ্ছা।
: আমরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতাম। দোকানেও যেতাম। প্রতিদিন বিকেলে বন্ধুরা মিলে ঘুরে বেড়াতাম। খুব মজা হতো।
: গাড়ির ভয় করত না?
: মফস্বল শহরে তখন বড় গাড়ি তেমন চলত না। তাই আমাদের ভয় ছিল না। ঢাকার রাস্তায় তো অনেক বড় বড় বাস-ট্রাক চলে। তাই এখানে বড় রাস্তায় সাইকেল চালানোটা নিরাপদ না।
: সাইকেলের জন্য আলাদা রাস্তা থাকলে ভালো হতো। তাই না বাবা?
: তা তো হতোই। আমাদের দেশে এখন সাইকেলের খুব জনপ্রিয়তা। সাইকেল এখন অনেক আধুনিক হয়ে গেছে। হয়তো একসময় এর জন্য আলাদা লেন হবে।
: ওহ! তাহলে তো খুব মজা হবে। আমরাও চালাতে পারব।
প্রশ্ন ছেড়ে এবার নিধির আবদার—
: বাবা, সাইকেলটা ঠিক করে আনো না।
: হুম, খুবই জরুরি। সময় বের করতে পারলেই নিয়ে যাব।
এমন সময় মেধার আবদার—
: বাবা, আমি তো বড় হয়ে গেছি। সাইকেলটার হ্যান্ডেল আমার হাঁটুতে লেগে যায়। ডানে-বামে ঘোরাতে কষ্ট হয়। আমাকে নতুন একটা কিনে দিতে হবে।
: হুম, আমি সেটাই ভাবছি। তবে দুটো শর্ত আছে।
: কী কী?
: পড়ায় ফাঁকিবাজি করা যাবে না।
: আচ্ছা। পড়ব।
: অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে যে রেজাল্ট হবে সেটা সন্তোষজনক হতে হবে।
মেধা ঘাড় কাত করে বুঝাল, ঠিক আছে।
: আরেকটা শর্ত কী বাবা?
: আম্মুর কথা সঙ্গে সঙ্গে শুনতে হবে। কোনো কথা যেন একাধিকবার বলা না লাগে।
: ঠিক আছে।
: মনে থাকে যেন। তুমি তো আবার ভুলে যাও।
: মনে থাকবে। ভুলব না।
: নতুন সাইকেল কিনলে আগেরটা ঠিক করা হবে না। তাই নিধিকেও চালাতে দিতে হবে।
: আমি আর কী দেব? আমারই তো চালাতে গিয়ে ওর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে।
: হা হা হা।
রান্নাঘর থেকে এবার যোগ দিলেন মা।
: ভালো হলো। ভাঙারিওলার কাছে সাইকেলটা দিয়ে এটা-সেটা কেনা যাবে।
: উহু, তা হবে না। গিন্নির কথায় আপত্তি জানালেন কর্তা।
: তাহলে?
: পার্টসগুলো কাজে লাগাতে হবে।
: কী, শোপিস বানাবে নাকি?
: হুম, তেমনটিই ভাবছি। বিশেষ করে টায়ার-টিউব খুলে চাকা দুটো ড্রইংরুমের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখব। কেমন হবে?
: বুদ্ধি তো ভালোই। খারাপ হবে না মনে হচ্ছে।
: বাকিগুলোর মধ্যেও যেগুলো রাখা যায়, রাখব। যদি র্যাপিং পেপারে মুড়িয়েও শোপিস বানানো যায়, বানাব।
কথা শুনে সাইকেলেই উল্টো দিকে ঘুরে বাবার দিকে মুখ করে বসল নিধি। টিভির ভলিউম কমিয়ে মেধাও মনোযোগ দিল। বাবার এমন ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনা তাদের খুব পছন্দ। মাঝেমধ্যে পরামর্শও দেয়। সাইকেলের যন্ত্রাংশ খুলে শোপিস বানানোর কথা ওঠায় তাদের মাথায় খেলতে থাকল নানান বুদ্ধি। বাবা-মার কথার মাঝখানে ঢুকে শুরু করল নিধি—
নিধি: বাবা, দুটো চাকার মাঝখানে কিছু দিয়ে তুমি বসার জিনিস বানাতে পারো। মোড়ার মতো করে।
মেধা: না বাবা, বেডসাইড টেবিল বানাবে।
নিধি: আর তিন কোণা ফ্রেমটা রং করে দেওয়ালে ঝুলিয়ে দেব।
মেধা: র্যাপিং করে রাখতে পার। টেবিলের নিচের স্টিলের ফ্রেমটা যেভাবে রেখেছ।
নিধি: চেনটা কয়েলের মতো পেঁচিয়ে রাখব।
মেধা: হুম। আর চেনের চাকা দুইটাও সুন্দর। চকচক করে।
কন্যাদের একের পর এক মন্তব্যে বাবার যেন মাথা খুলছে। খুব মজা পাচ্ছেন মাও।
বাবা: তাহলে তোমার আম্মু ভাঙারিওলাকে কী দেবে?
মেধা: হ্যান্ডেল আর প্যাডেলগুলো কাজে লাগবে না।
নিধি: আম্মু ওগুলো তোমার।
কন্যার কথায় বাবা ও মা দুজনেই হেসে ওঠেন। ততক্ষণে মায়ের রান্না শেষ। টেবিলে খাবার সাজিয়ে হাসতে হাসতে মা বললেন–হইছে, আমার কথা ভাবতে হবে না। আসো, সবাই খেতে আসো।
মাসখানেক পর নতুন সাইকেল এল। সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেধার মাপে। তাই নিধির জন্য একটু বড়ই হয়ে যায়। তবে এ সাইকেল চালিয়ে এরই মধ্যে দুয়েকটা প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও অর্জন করে নিয়েছে বড় জন। সর্বশেষ স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। আগেরবার হয়েছিল রানার্সআপ। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও শেখানো যাচ্ছে না নিধিকে। চালাতে পারলেও সমস্যা হচ্ছে ওঠা-নামায়। তবুও মাঝেমধ্যে চেষ্টা করছে।
এদিকে, বারান্দার এক কোণে ঠাঁই হয়েছে অচল সাইকেলের। নতুন সাইকেল পেয়ে এখন আর কেউ ওটা ছুঁয়েও দেখে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী অনেক দিন আগে চাকা দুটো খোলা হলেও কোথায় যে রাখা হয়েছে তার খবর নেই। খোলার অপেক্ষায় থাকা অন্যসব পার্টসও যেন সখ্য গড়েছে মরিচার সঙ্গে।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
২ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২১ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

বিছানার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখছিলেন বাবা। হঠাৎ তার সামনে লম্বালম্বি করে সাইকেলটি রাখল নিধি। : বাবা, শক্ত করে ধরে রাখো। : কেন? : আ রে ধরো না। না ধরলে কিন্তু তোমার অনেক লস হয়ে যাবে। কথা শুনে বাবার তো আক্কেল গুড়ুম।
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২১ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

বিছানার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখছিলেন বাবা। হঠাৎ তার সামনে লম্বালম্বি করে সাইকেলটি রাখল নিধি। : বাবা, শক্ত করে ধরে রাখো। : কেন? : আ রে ধরো না। না ধরলে কিন্তু তোমার অনেক লস হয়ে যাবে। কথা শুনে বাবার তো আক্কেল গুড়ুম।
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
২ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

বিছানার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখছিলেন বাবা। হঠাৎ তার সামনে লম্বালম্বি করে সাইকেলটি রাখল নিধি। : বাবা, শক্ত করে ধরে রাখো। : কেন? : আ রে ধরো না। না ধরলে কিন্তু তোমার অনেক লস হয়ে যাবে। কথা শুনে বাবার তো আক্কেল গুড়ুম।
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
২ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

বিছানার পাশে সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখছিলেন বাবা। হঠাৎ তার সামনে লম্বালম্বি করে সাইকেলটি রাখল নিধি। : বাবা, শক্ত করে ধরে রাখো। : কেন? : আ রে ধরো না। না ধরলে কিন্তু তোমার অনেক লস হয়ে যাবে। কথা শুনে বাবার তো আক্কেল গুড়ুম।
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
২ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২১ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫