মারুফ ইসলাম

ক্রিস্টিনা ক্যালডেরনের বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। ১৭ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শুধু এক বর্ষীয়সী নারীরই মৃত্যু হয়নি, মৃত্যু হয়েছে একটি ভাষারও। ভাষাটির নাম ‘ইয়ামানা’।
দক্ষিণ আমেরিকার এই নারী কথা বলতেন প্রাচীন ইয়াগন সম্প্রদায়ের ভাষায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ক্রিস্টিনাই ছিলেন এই পৃথিবীর সর্বশেষ ব্যক্তি, যিনি ইয়ামানা ভাষায় কথা বলতে পারতেন। ইয়াগন সম্প্রদায়ের আরও অনেক মানুষ রয়েছেন বিশ্বে, কিন্তু কেউ এখন ইয়ামানা ভাষায় কথা বলেন না।
এভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেক ভাষার। এরই মধ্যে কালের গর্ভে ভেসে গেছে কত ভাষা, তার খবর কি আমরা জানি?
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো প্রতিবছর ভাষা নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে থাকে। ইউনেসকো বলছে, ইতিমধ্যে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে কত ভাষা, তার সঠিক হিসাব তাদের জানা নেই। ভাষাবিদেরা বিভিন্ন অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া ভাষা গণনা করেছেন। তাঁদের মতে, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অন্তত ৭৫টি ভাষা। যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চল থেকে গত ৫০০ বছরে কমপক্ষে ১১৫টি ভাষা হারিয়ে গেছে। অথচ কলম্বাসের সময়ে ওই অঞ্চলে ভাষা ছিল ১৮০টি।
নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কোয়ার্টাজের এক প্রতিবেদন বলছে, ১৯৫০ সালের পর আফ্রিকা অঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ৩৭টি ভাষা। আর এই সময়ের মধ্যে সারা পৃথিবী থেকেই হারিয়ে গেছে ২৩০টি ভাষা।
সম্প্রতি বিলুপ্ত হয়েছে এমন কিছু ভাষার তালিকা দিয়েছে ইউনেসকো। সেই তালিকায় রয়েছে ‘আক্কালা সামি’, ‘আসেক্স’, ‘উবাই’ ও ’ইয়াক’।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, আক্কালা সামি রাশিয়া অঞ্চলের ভাষা। এই ভাষায় কথা বলা শেষ মানুষটি মারা গেছেন ২০০৩ সালে। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে আক্কালা সামি। তানজানিয়ার ভাষা আসেক্স বিলুপ্ত হয়েছে ১৯৭৬ সালে। উবাই তুরস্কের আশপাশের অঞ্চলের একটি ভাষা। এই ভাষায় কথা বলতে পারতেন একমাত্র তেফভিক ইসেংক নামের এক ব্যক্তি। তিনি ১৯৯২ সালে মারা যান। তারপর থেকে উবাই ভাষায় কথা বলার মতো একজন মানুষকেও পাওয়া যায়নি। এ রকম আরেক ব্যক্তির নাম মারিয়ে স্মিথ জোনস। তিনি বাস করতেন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায়। মারিয়ে ছিলেন ইয়াক ভাষায় কথা বলা শেষ ব্যক্তি। তিনি ২০০৮ সালে মারা গেলে তাঁর সঙ্গে ‘মারা’ যায় ইয়াক ভাষাও।
একটি ভাষার মৃত্যু মানে তার সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক কিছুর মৃত্যু। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংস্কৃতি, প্রথা, আচরণ ইত্যাদিও মরে যায় তখন, ভেসে যায় কালের স্রোতে।
ভাষাবিদেরা বলেন, কোনো ভাষা এক দিনে মরে না। একটু একটু করে মৃত্যু হয় ভাষার। যেসব ভাষা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে, তাদের বলা হয় বিলুপ্তপ্রায় ভাষা। পৃথিবীতে এখন বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সংখ্যা অনেক।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বরে নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভল্যুশন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, আগামী ১০০ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে প্রায় দেড় হাজার ভাষা। এই ভাষাগুলো এখন বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় আছে।
কোন কোন অঞ্চলের ভাষা সেগুলো? ভাষাবিজ্ঞানীরা বলছেন, এশিয়া অঞ্চলে অন্তত ৮টি ভাষা বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। এই ভাষাগুলো হচ্ছে সারিকলি, সেজ, আইনু, নাইকান উপিক, হিজল, সোয়াচ, কুসুন্দা ও মেডনেস আলেয়ুত।
এশিয়ান জিয়োগ্রাফিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব তাজিকিস্তানের ভাষা ‘সারিকলি’। এ ভাষায় এখনো ১৬ হাজার মানুষ কথা বলেন। আর রাশিয়ার সুন্তা অঞ্চলের মুসলিম নৃগোষ্ঠীদের ভাষা ‘সেজ’। এ ভাষায় এখন কথা বলেন ১৫ হাজার ১৫৪ জন মানুষ। আইনু ভাষায় কথা বলেন কতজন মানুষ, জানেন কি? জাপানের হোক্কাইদু অঞ্চলের মাত্র ১০০ জন মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এই এক শ মানুষের মৃত্যু হলেই হারিয়ে যাবে ভাষাটি।
ওদিকে ‘নাইকান উপিক’ ভাষায় কথা বলা মানুষদের দেখা যায় সাইবেরিয়ান অঞ্চলের চুকসি পেনিনসুলায়। এই ভাষার মানুষের সংখ্যা মাত্র ৭০০। ককেশিয়ায় মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জন আদিবাসী মানুষ আছে, যারা হিজল ভাষায় কথা বলে। কম্বোডিয়ার সামরং লয়েউ গ্রামে মাত্র ১০ জন মানুষ বাস করে, যারা ‘সোয়াচ’ ভাষায় কথা বলে। নেপালের গান্দুক গ্রামে কুসুন্দা আদিবাসীদের মধ্যে মাত্র আটজন ব্যক্তি কুসুন্দা ভাষায় কথা বলে। রাশিয়ার বেরিং আইল্যান্ডের মাত্র পাঁচজন ব্যক্তি মেডনেস আলেয়ুত ভাষায় কথা বলে। এই মুষ্টিমেয় মানুষগুলোর মৃত্যু হলে কী হবে এসব ভাষার? স্রেফ চিরতরে হারিয়ে যাবে।
আচ্ছা, আফ্রিকা অঞ্চলের ভাষার খবর কী? এ অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় ভাষা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম কোয়ার্টাজ। সেই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সুদানের ৬৫টি, ক্যামেরুনের ৩৬টি, নাইজেরিয়ার ২৯টি, চাদের ২৯টি, ইথিওপিয়ার ২৮টি, সেনেগালের ১৫টি, কেনিয়ার ১৩টি, তানজানিয়ার ১২টি ও দক্ষিণ আফ্রিকার ১০টি ভাষা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রপূর্ণ ভাষাভাষীর অঞ্চল বলা হয় উত্তর আমেরিকাকে। স্টোরি ম্যাপসের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এ অঞ্চলের দেশগুলোতে কমপক্ষে ৪০০ ভাষায় কথা বলা মানবসন্তান আছে। এই ৪০০ ভাষার মধ্যে অর্ধেক ভাষাই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে বলে জানিয়েছে উত্তর আমেরিকার এনডেঞ্জার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্রজেক্ট। এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, যদি ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করার উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে অচিরেই এ অঞ্চল থেকে ঐতিহ্যবাহী দুই শ ভাষা হারিয়ে যাবে।
শুধু বিদেশি ভাষাই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে এমন নয়। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশের কিছু ভাষাও। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ২০১৮ সালে ভাষা নিয়ে একটি গবেষণা করেছিল। সেই গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রচলিত ১৪টি ভাষা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাষাগুলো হচ্ছে কুন্দ, খারিয়া, কোদা, সৌরা, মুন্দারি, কোল, মাল্টো, খুমি, পাংখুয়া, রেঙ্গমিচা, চাক, খায়াং, লুসি ও লালেং। এসব ভাষাভাষী মানুষেরা প্রধানত দেশের উত্তরাঞ্চলে, সিলেট অঞ্চলে এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করে। তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে ৪১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে, যারা নিজস্ব ভাষায় কথা বলে। তারা জনসংখ্যার দিক থেকে খুব বেশি নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংখ্যা হাজারের ঘর পার হবে না।
হারিয়ে যাওয়া এবং হারাতে বসা এসব ভাষার পরিণতিই বলে দিচ্ছে, ভাষারও যত্ন নিতে হয়। না হলে বাঁচে না। ফি বছর ভাষা দিবস আসে আর যায়, কিন্তু ভাষার আর্তনাদ কারও কানে পৌঁছায় কি? একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তুর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্বের অনেক দেশেই এ দিবস ঘটা করে পালিত হয়। কিন্তু ভাষার ভেসে যাওয়া ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ আজ অব্দি কোনো দেশ নিতে পেরেছে কি? বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে বোধ হয়।

ক্রিস্টিনা ক্যালডেরনের বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। ১৭ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শুধু এক বর্ষীয়সী নারীরই মৃত্যু হয়নি, মৃত্যু হয়েছে একটি ভাষারও। ভাষাটির নাম ‘ইয়ামানা’।
দক্ষিণ আমেরিকার এই নারী কথা বলতেন প্রাচীন ইয়াগন সম্প্রদায়ের ভাষায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ক্রিস্টিনাই ছিলেন এই পৃথিবীর সর্বশেষ ব্যক্তি, যিনি ইয়ামানা ভাষায় কথা বলতে পারতেন। ইয়াগন সম্প্রদায়ের আরও অনেক মানুষ রয়েছেন বিশ্বে, কিন্তু কেউ এখন ইয়ামানা ভাষায় কথা বলেন না।
এভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেক ভাষার। এরই মধ্যে কালের গর্ভে ভেসে গেছে কত ভাষা, তার খবর কি আমরা জানি?
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো প্রতিবছর ভাষা নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে থাকে। ইউনেসকো বলছে, ইতিমধ্যে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে কত ভাষা, তার সঠিক হিসাব তাদের জানা নেই। ভাষাবিদেরা বিভিন্ন অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া ভাষা গণনা করেছেন। তাঁদের মতে, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অন্তত ৭৫টি ভাষা। যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চল থেকে গত ৫০০ বছরে কমপক্ষে ১১৫টি ভাষা হারিয়ে গেছে। অথচ কলম্বাসের সময়ে ওই অঞ্চলে ভাষা ছিল ১৮০টি।
নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কোয়ার্টাজের এক প্রতিবেদন বলছে, ১৯৫০ সালের পর আফ্রিকা অঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ৩৭টি ভাষা। আর এই সময়ের মধ্যে সারা পৃথিবী থেকেই হারিয়ে গেছে ২৩০টি ভাষা।
সম্প্রতি বিলুপ্ত হয়েছে এমন কিছু ভাষার তালিকা দিয়েছে ইউনেসকো। সেই তালিকায় রয়েছে ‘আক্কালা সামি’, ‘আসেক্স’, ‘উবাই’ ও ’ইয়াক’।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, আক্কালা সামি রাশিয়া অঞ্চলের ভাষা। এই ভাষায় কথা বলা শেষ মানুষটি মারা গেছেন ২০০৩ সালে। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে আক্কালা সামি। তানজানিয়ার ভাষা আসেক্স বিলুপ্ত হয়েছে ১৯৭৬ সালে। উবাই তুরস্কের আশপাশের অঞ্চলের একটি ভাষা। এই ভাষায় কথা বলতে পারতেন একমাত্র তেফভিক ইসেংক নামের এক ব্যক্তি। তিনি ১৯৯২ সালে মারা যান। তারপর থেকে উবাই ভাষায় কথা বলার মতো একজন মানুষকেও পাওয়া যায়নি। এ রকম আরেক ব্যক্তির নাম মারিয়ে স্মিথ জোনস। তিনি বাস করতেন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায়। মারিয়ে ছিলেন ইয়াক ভাষায় কথা বলা শেষ ব্যক্তি। তিনি ২০০৮ সালে মারা গেলে তাঁর সঙ্গে ‘মারা’ যায় ইয়াক ভাষাও।
একটি ভাষার মৃত্যু মানে তার সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক কিছুর মৃত্যু। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংস্কৃতি, প্রথা, আচরণ ইত্যাদিও মরে যায় তখন, ভেসে যায় কালের স্রোতে।
ভাষাবিদেরা বলেন, কোনো ভাষা এক দিনে মরে না। একটু একটু করে মৃত্যু হয় ভাষার। যেসব ভাষা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে, তাদের বলা হয় বিলুপ্তপ্রায় ভাষা। পৃথিবীতে এখন বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সংখ্যা অনেক।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বরে নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভল্যুশন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, আগামী ১০০ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে প্রায় দেড় হাজার ভাষা। এই ভাষাগুলো এখন বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় আছে।
কোন কোন অঞ্চলের ভাষা সেগুলো? ভাষাবিজ্ঞানীরা বলছেন, এশিয়া অঞ্চলে অন্তত ৮টি ভাষা বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। এই ভাষাগুলো হচ্ছে সারিকলি, সেজ, আইনু, নাইকান উপিক, হিজল, সোয়াচ, কুসুন্দা ও মেডনেস আলেয়ুত।
এশিয়ান জিয়োগ্রাফিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব তাজিকিস্তানের ভাষা ‘সারিকলি’। এ ভাষায় এখনো ১৬ হাজার মানুষ কথা বলেন। আর রাশিয়ার সুন্তা অঞ্চলের মুসলিম নৃগোষ্ঠীদের ভাষা ‘সেজ’। এ ভাষায় এখন কথা বলেন ১৫ হাজার ১৫৪ জন মানুষ। আইনু ভাষায় কথা বলেন কতজন মানুষ, জানেন কি? জাপানের হোক্কাইদু অঞ্চলের মাত্র ১০০ জন মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এই এক শ মানুষের মৃত্যু হলেই হারিয়ে যাবে ভাষাটি।
ওদিকে ‘নাইকান উপিক’ ভাষায় কথা বলা মানুষদের দেখা যায় সাইবেরিয়ান অঞ্চলের চুকসি পেনিনসুলায়। এই ভাষার মানুষের সংখ্যা মাত্র ৭০০। ককেশিয়ায় মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জন আদিবাসী মানুষ আছে, যারা হিজল ভাষায় কথা বলে। কম্বোডিয়ার সামরং লয়েউ গ্রামে মাত্র ১০ জন মানুষ বাস করে, যারা ‘সোয়াচ’ ভাষায় কথা বলে। নেপালের গান্দুক গ্রামে কুসুন্দা আদিবাসীদের মধ্যে মাত্র আটজন ব্যক্তি কুসুন্দা ভাষায় কথা বলে। রাশিয়ার বেরিং আইল্যান্ডের মাত্র পাঁচজন ব্যক্তি মেডনেস আলেয়ুত ভাষায় কথা বলে। এই মুষ্টিমেয় মানুষগুলোর মৃত্যু হলে কী হবে এসব ভাষার? স্রেফ চিরতরে হারিয়ে যাবে।
আচ্ছা, আফ্রিকা অঞ্চলের ভাষার খবর কী? এ অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় ভাষা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম কোয়ার্টাজ। সেই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সুদানের ৬৫টি, ক্যামেরুনের ৩৬টি, নাইজেরিয়ার ২৯টি, চাদের ২৯টি, ইথিওপিয়ার ২৮টি, সেনেগালের ১৫টি, কেনিয়ার ১৩টি, তানজানিয়ার ১২টি ও দক্ষিণ আফ্রিকার ১০টি ভাষা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রপূর্ণ ভাষাভাষীর অঞ্চল বলা হয় উত্তর আমেরিকাকে। স্টোরি ম্যাপসের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এ অঞ্চলের দেশগুলোতে কমপক্ষে ৪০০ ভাষায় কথা বলা মানবসন্তান আছে। এই ৪০০ ভাষার মধ্যে অর্ধেক ভাষাই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে বলে জানিয়েছে উত্তর আমেরিকার এনডেঞ্জার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্রজেক্ট। এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, যদি ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করার উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে অচিরেই এ অঞ্চল থেকে ঐতিহ্যবাহী দুই শ ভাষা হারিয়ে যাবে।
শুধু বিদেশি ভাষাই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে এমন নয়। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশের কিছু ভাষাও। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ২০১৮ সালে ভাষা নিয়ে একটি গবেষণা করেছিল। সেই গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রচলিত ১৪টি ভাষা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাষাগুলো হচ্ছে কুন্দ, খারিয়া, কোদা, সৌরা, মুন্দারি, কোল, মাল্টো, খুমি, পাংখুয়া, রেঙ্গমিচা, চাক, খায়াং, লুসি ও লালেং। এসব ভাষাভাষী মানুষেরা প্রধানত দেশের উত্তরাঞ্চলে, সিলেট অঞ্চলে এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করে। তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে ৪১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে, যারা নিজস্ব ভাষায় কথা বলে। তারা জনসংখ্যার দিক থেকে খুব বেশি নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংখ্যা হাজারের ঘর পার হবে না।
হারিয়ে যাওয়া এবং হারাতে বসা এসব ভাষার পরিণতিই বলে দিচ্ছে, ভাষারও যত্ন নিতে হয়। না হলে বাঁচে না। ফি বছর ভাষা দিবস আসে আর যায়, কিন্তু ভাষার আর্তনাদ কারও কানে পৌঁছায় কি? একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তুর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্বের অনেক দেশেই এ দিবস ঘটা করে পালিত হয়। কিন্তু ভাষার ভেসে যাওয়া ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ আজ অব্দি কোনো দেশ নিতে পেরেছে কি? বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে বোধ হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

নানাভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেক ভাষার। এরই মধ্যে কালের গর্ভে ভেসে গেছে কত ভাষা, তার খবর কি আমরা জানি?
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

নানাভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেক ভাষার। এরই মধ্যে কালের গর্ভে ভেসে গেছে কত ভাষা, তার খবর কি আমরা জানি?
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

নানাভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেক ভাষার। এরই মধ্যে কালের গর্ভে ভেসে গেছে কত ভাষা, তার খবর কি আমরা জানি?
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

নানাভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেক ভাষার। এরই মধ্যে কালের গর্ভে ভেসে গেছে কত ভাষা, তার খবর কি আমরা জানি?
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১ দিন আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে