পানিবন্দী

হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পাড় উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে তিনটি গ্রামের অন্তত দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে ৫৪টি পরিবারকে আশ্রয়ণকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।

জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের গত বৃহস্পতিবারের রাতের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ১০ উপজেলার ৮৬ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী অবস্থায় আছেন ১৫ লাখ মানুষ।

কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাট, বিয়ানীবাজার ও জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিবন্দী মানুষ রয়েছেন দুর্ভোগে।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নে ১০ বছর ধরে স্লুইসগেট অকেজো থাকলেও মেরামতে উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে বর্ষার সময় দীর্ঘদিন পানিবন্দী থাকেন মানুষ।

পাইকগাছায় মিনহাজ নদীর মুখে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে পলি জমে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ শুষ্ক মৌসুমে খনন না করলে বর্ষা মৌসুমে দু'উপজেলার শতাধিক গ্রাম পানিবন্দী হয়ে হয়ে যেতে পারে।

উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বুধবার সকাল ৯টায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

দফায় দফায় ভারী বর্ষণে যশোরের মনিরামপুরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়ির আঙিনায় এমনকি বসতঘরে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন উপজেলার পূর্ব এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নের ২০-২৫টি গ্রামের অন্তত দুই হাজার পরিবার। পানি উঠেছে চলাচলের রাস্তাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। 

টানা ২০ দিন ধরে ফরিদপুরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পাঁচটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫টি স্কুলের শ্রেণিকক্ষ ও ৪৪টি স্কুলের মাঠ তলিয়ে গেছে। এতে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তা নিয়ে অনিশ্চয়তার দেখা দিয়েছে। 

দেশের মধ্যাঞ্চলগুলোতে পদ্মাসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আরও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। পানিবন্দী জীবনযাপন করছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকে ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র।

পানি নিষ্কাশনের নালা দখল করে নেওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকার অন্তত ৩০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাড়ির ভেতরে-বাইরে হাঁটুপানি জমে থাকায় এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।

রাজবাড়ীতে গত কয়েক দিন ধরে ফের বাড়তে শুরু করেছে পদ্মার পানি। যেকারণে পদ্মা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল আবারও পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭টি গ্রামের সাড়ে সাত হাজার পরিবারের ত্রিশ হাজার মানুষ। জেলার তিনটি পয়েন্টেই পানি এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।