তামাক

তামাক কোম্পানিগুলোর হাত অনেক লম্বা তাই তামাক বিরোধী অনেক সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।

প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের সব কটির মূল্যস্তর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও বিড়িতে বাড়ানোর প্রস্তাব নেই। সিগারেটের মূল্য বাড়ানোর পাশাপাশি একটি স্তরে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।  এর ফলে সিগারেটের দাম যে বাড়তে পারে তা নিশ্চিত। তবে বিড়ির দাম বাড়বে কিনা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রতিবছর ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সদস্যদেশগুলো যথাযোগ্য  মর্যাদায় এ দিবসটি সরকারি ও বেসরকারিভাবে পালন করে। এবার এই দিবসের প্রতিপাদ্য

বাংলাদেশে তামাকের যে করহার আছে, তা তামাকের ব্যবহার ঠেকাতে পারছে না। কার্যকর করারোপের অভাবে দেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। সিগারেটের চারটি স্তর থাকার ফলে সিগারেট ব্যবহারকারী সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে তুলনামূলকভাবে কম দামি সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবন ও সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এখনই পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।

সিগারেটসহ সব তামাক পণ্য বন্ধ করে দেওয়া হলে সরকারের এক টাকাও ক্ষতি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তামাক বিরোধী জোটের আহ্বায়ক ও অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান। আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রজ্ঞা, আত্মা ও টোবাকো ফ্রি উই–এর উদ্যোগে আয়োজিত কেমন তামাক কর চাই শীর্ষক প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য

দশ বছর আগে বাজারে ২০-২৫টি তামাক কোম্পানি তামাক ক্রয় করত। তখন আমরা দাম-দর করে বেশি দামে তামাক বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু এখন দুই তিনটি বিদেশি কোম্পানির হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি। তাদের সিন্ডিকেট করে বেঁধে দেওয়া দামে তামাক বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছি। কোনো প্রতিযোগিতা নেই...

দেশে তামাকের ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। আর প্রতিমাসে ১৩ হাজার ৪১৬ ও প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন ৪৪৭ জন। এ হিসাবে প্রতি ঘণ্টায় ১৮ জনের বেশি মানুষের তামাক ব্যবহারের কারণে মৃত্যু হচ্ছে। গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়-এর এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

দেশের ৯৯ হাজার ৬০০ একর জমিতে তামাক চাষ হয়। যা স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। এ পরিমাণ জমিতে তুলা চাষ করতে পারলে দেশ আরও লাভবান হবে বলে দাবি করেছে দেশের তামাক বিরোধী জোট।

রংপুরের মিঠাপুকুরে কৃষকেরা আবারও ক্ষতিকর তামাক চাষে ঝুঁকছেন। দুটি কোম্পানির প্রলোভনে পড়ে তাঁরা প্রায় ১৫ বছর পর এ চাষ শুরু করেছেন।

দেশে লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়। অন্যদিকে তুলার চাষ হয় মাত্র ২০ থেকে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রতি বছর গার্মেন্টস পণ্য তৈরি করতে ৯ বিলিয়ন বেল তুলার প্রয়োজন হয়। এই তুলার মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ দেশে উৎপাদন হয়, বাকি তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।