জলদস্যু

২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আবদুল্লাহর পিছু নেওয়া জাহাজ থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। দস্যুরা বাংলাদেশিদের হত্যার হুমকি দিলে গুলি থেমে যায় বলে পরিবারের কাছে অডিও বার্তা দিয়েছেন জাহাজের এক নাবিক।

২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ পড়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে। বাংলাদেশি জাহাজটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে। আর জাহাজটিকে অনুসরণ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি জাহাজ। গতকাল বুধবার ইইউর সামুদ্রিক নিরাপত্তা বাহিনী এক বিবৃতিতে খবরটি জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা

মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর জাহান মনি নিজেদের কবজায় নেওয়ার পর সোমালি ডাকাতেরা জাহাজটিকে সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে দেখা যায় ছিনতাই হওয়া আরও ২২-২৩টি জাহাজ। এর মধ্যে একমাত্র জাহান মনি কর্তৃপক্ষ মুক্তিপণের মাধ্যমে আমাদের সুরক্ষিত অবস্থায় মুক্ত করে আনে। এমভি আবদুল্লাহর বেলায়ও সেটা

ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এই ছিনতাইয়ের পেছনে জলদস্যুদের মূল লক্ষ্য মুক্তিপণ আদায়। এমনটাই জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার সোমালিয়া উপকূলের কাছে রয়েছে। জিম্মি করার ৪৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মুক্তিপণের জন্য এখনও কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। 

সোমালিয়ায় দস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিকের মধ্যে একজন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সিংবাহুড়া গ্রামের মোহাম্মদ সালেহ আহমদ। গতকাল বুধবার সকালে মোবাইল ফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেষ কথা হয় তাঁর। তখন দোয়া চান তাঁদের কাছে।

সোমালি জলদস্যুদের কবজা থেকে এমভি আবদুল্লাহ ও এতে থাকা ২৩ নাবিককে উদ্ধারে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক ডেকেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে কেবিন থেকে নেভিগেশন ব্রিজে (যেখান থেকে জাহাজ পরিচালনা করা হয়) নেওয়া হয়েছে। জিম্মি সবাই ভালো আছেন। জলদস্যুরা সবাইকে সাহরি খেতেও দিয়েছেন। মার্চেন্ট নেভির ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খানের কাছে অপরিচিত নম্বর থেকে পাঠানো অডিও বার্তায় এ

মাত্র পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন নাবিক হোসাইন মোহাম্মদ আলী (২৬)। এরপর দুই মাস আগে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিক হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ আলী। বরিশালের বানারিপাড়া উপজেলার বিসারাকান্দি ইউনিয়নের উমরেরপাড় গ্রামের বাসিন্দা তিনি।

জলদস্যুদের হাতে আক্রমণের পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বাবার হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম একটি বার্তা পাঠায় তারিকুল ইসলাম। সেই বার্তায় লেখা ছিল, ‘আব্বু মাফ কইরেন আমাকে। দোয়া করেন আমাদের জন্য।’ 

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার খুলনার মো. তৌফিকুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগ–উৎকণ্ঠার দিন কাটাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জিম্মি হওয়ার ঘটনা জানার পর থেকে দুশ্চিন্তা কাটছে না তাঁদের।

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশির একজন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের ছেলে ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ বিপ্লব (৩৮)। তিনি ওই গ্রামের রৌশন ভূঁইয়া বাড়ির আবুল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তাঁর মায়ের নাম রৌশনারা।

ভারত মহাসাগরে কেএসআরএম মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান সোমালিয়ায় জলদস্যুদের ডেরায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ জাহাজে অবস্থান করা নাবিকেরা জিম্মি হওয়ার আগে ও পরে বেশ কয়েকটি অডিও বার্তায় সার্বিক পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন।

দুদিন আগে (সোমবার) বিকেলে ফেসবুক পোস্টে বিষুব রেখা অতিক্রম করার কথা জানিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের সাব্বির হোসেন। মাথা ন্যাড়া করা ছবিও পোস্ট করেছিলেন। পরদিন মঙ্গলবার পরিবার জানতে পারে আরব সাগরে তাদের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে, তাদের জিম্মি করা হয়েছে...

নাজমুল হকের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চর নুরনগর গ্রামে। আজ বুধবার সকালে সরেজমিন গিয়ে কথা হয় তাঁর স্বজনদের সঙ্গে। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাজমুলের মা নার্গিস খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছেলের প্রাণভিক্ষা চাই। এই ছেলেটা আমাদের খুব যত্নের। এই ছেলের টাকায় আমাদের সংসার চলে।’

‘জলদস্যুরা আমাদের জাহাজে ঢুকে পড়েছে, আমার জন্য দোয়া কর। আর মনে হয় কথা হবে না’ এসব কথা স্ত্রী তানিয়া আক্তারকে বলেন সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া মো. রোকন উদ্দিন নামের একজন বাংলাদেশি প্রকৌশলী। এরপর তাঁদের মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে যায়। 

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সোমালীয় জলসীমায় জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের সুস্থভাবে দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।