Ajker Patrika

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীশিক্ষার হার বাড়ানোর তাগিদ

প্রযুক্তি ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫: ২৩
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীশিক্ষার হার বাড়ানোর তাগিদ

প্রযুক্তিতে নারী এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে নারীর অন্তর্ভুক্তি ও ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে বিকাল তিনটায় বিগ টেন্ট হলে আয়োজিত হয় বিশেষ সেমিনার। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজের সহযোগিতায় অধিবেশনটি যৌথভাবে আয়োজন করে বেসিস ও বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি (বিডাব্লিউআইটি)। ‘ইনক্লুসন অব উইমেন ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানে দেশে প্রযুক্তির পাশাপাশি বিভিন্ন সেক্টরের সফল নারী, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, অভিনেত্রীদেরকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই বিশেষ সেমিনারটি।

ডন সামদানি ফ্যাসিলিটেসন এবং কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানের চিফ ইন্সপিরেশন অফিসার ডন সামদানির সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।

ড. লাফিফা জামাল বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীর অন্তর্ভূক্তি বাড়াতে তাদের শিক্ষার হার বাড়াতে হবে। গ্রাম ও শহরে পুরুষের তুলনায় নারীরা শিক্ষার দিক থেকে এখনো পিছিয়ে। বর্তমানে ৩০% নারী শুধু আইটি নিয়ে পড়াশোনা করে। দেশে ১২% নারী আইটি প্রফেশনাল। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীর অনেক ভূমিকা রয়েছে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীরা যাতে আইটিতে পড়াশোনা করতে পারে সেজন্য তাদের বেশি করে পড়াশোনা করার বিভিন্ন সুযোগ করে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আর জিপিএ ৫ পেয়ে কিছু করা যাবে না, যদি না কোন বিশেষ বিষয়ে দক্ষতা না অর্জন করা যায়। যেকোন বিষয়ে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে বলে জানান তিনি। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নারীর অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে নারীর শিক্ষা বাড়াতে হবে। নারীরা যদি আইটিতে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারে তাহলে তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারবে।’

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে অসম্ভব বলে কোন শব্দ নেই। আমার কাছে সবই সম্ভব। যেকোন কিছুর যদি লক্ষ্য ঠিক থাকে আর মনে দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকে তাহলে অসম্ভবকেও জয় করা যায়।’

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে আমি আজ এ জায়গায় এসেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের নারীরা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। তারা এখন গ্রামে বসে মোবাইলের সাহায্যে অনলাইনে ব্যবসা করছে। বিকাশে টাকা লেনদেন করছে। মেয়েরা অনলাইনে ক্লাস করছে। স্মার্ট বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। নারীরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে অবদান রেখে চলেছে।’

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইম্যান-এর উপাচার্য ড. রুবানা হক বলেন, ‘আমি বলবো আগের তুলনায় আইটিতে নারীর পড়াশোনার হার বেড়েছে। তবে সে সংখ্যাটা কম। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের বেশি করে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আইটিতে পড়াশোনা করতে উৎসাহিত করতে হবে। নারী আইটি প্রফেশনাল বেশি তৈরি করতে পারলে তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।’

নারীদের বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে নারীদের নেটওয়ার্কিং বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বনামধন্য ব্যারিস্টার ও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা নিহাদ কবির। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে নারীদের সংসারের দায়িত্ব দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়। তাদের ছেড়ে দিতে হবে। বিভিন্ন আইটিভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হলে তারা  প্রযুক্তি ক্যারিয়ারে নিজেরদের যুক্ত করার বিষয়ে উৎসাহিত হবে।’

বেসিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিরা জুবেরী হিমিকা বলেন, ‘প্রযুক্তি এমন একটা বিষয় যেটির মাধ্যমে খুব সহজে কোটি কোটি মানুষের সাথে যুক্ত হওয়া যায়। আমার স্বপ্ন ছিল এমন একটা প্রতিষ্ঠান করার যেখানে অনেক নারীর কর্মসংস্থান হবে। আজ সেটি করতে পেরেছি।’

বাংলাদেশ উইম্যান ইন টেকনোলজির (বিডাব্লিউআইটি) সভাপতি ও উদ্যোক্তা রেজওয়ানা খান বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই নিজের জীবনের পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কিছু করেছি। যা করবো আগে থেকেই সব পরিকল্পনা করে রেখেছি। সে অনুসারে কাজ করেছি। একজন ভাল মা, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হতে চেয়েছি, আজ হয়েছি।’

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘যেকোনো কাজ করার জন্য সততার সঙ্গে পরিশ্রম করতে হয়। পরিশ্রম করার পরেও যদি আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে সেটার ফল আমরা ভবিষ্যতে পাব। আমাদের দেশে প্রতিটি মেয়েই প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের সব মেয়ে পুরুষদের মত সমান অধিকার পাবে। আমার দৃষ্টিতে সেটিই স্মার্ট বাংলাদেশ যেখানে নারী-পুরুষ সম অধিকার পাবে- এটিই আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ।’

ডান অ্যান্ড ব্র্যান্ডস্ট্রিট ডেটা অ্যান্ড অ্যানালাইটিকস প্রাইভেট লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার জারা জাবিন মাহবুব বলেন, আমাদের দেশের প্রযুক্তি খাতের এইচআররা নারীদের ন্যূনতম চার ঘন্টা পার্টটাইম কাজ করার সুযোগ করে দিতে পারেন। একজন নারী এমনিতেই মাল্টিটাস্কিং হন। সেখানে তাকে ফুলটাইম কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ না করে, পার্টটাইম কাজ করার সুযোগ করে দিলেই তারা আরও এগিয়ে যাবে। 

এবারের বেসিস সফটএক্সপো প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। আগ্রহীরা বেসিস সফটএক্সপোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে নিবন্ধন করে প্রদর্শনীতে অংশ নিতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত