Ajker Patrika

৯৭.৪ বিলিয়নে ওপেনএআই কিনতে চান মাস্ক, প্রস্তাব গেছে বোর্ডে

আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৩৩
২০১৮ সালে ওপেনএআই ছেড়ে চলে যান মাস্ক ছবি: সংগৃহীত
২০১৮ সালে ওপেনএআই ছেড়ে চলে যান মাস্ক ছবি: সংগৃহীত

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআই–কে কেনার জন্য ৯৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বা ৯ হাজার ৭৪০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দিয়েছে ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন এক বিনিয়োগকারী সংস্থা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মাস্কের আইনজীবী মার্ক টোবেরফ। গত সোমবার ওপেনএআই–এর ‘সব সম্পদ’ কেনার জন্য প্রযুক্তি কোম্পানিটির বোর্ডের কাছে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবের জবাবে মাস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ অল্টম্যান বলেন, ‘না ধন্যবাদ, তবে আপনি চাইলে আমরা টুইটার ৯ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারে কিনে নিতে পারি।’

এই প্রস্তাবটি ইলন মাস্ক এবং ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের নতুন এক অধ্যায়। ২০১৫ সালে তারা একত্রে ওপেনএআই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে ২০১৮ সালে সংস্থাটি ছেড়ে চলে যান মাস্ক। এরপর থেকেই দুজনের সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দেয়।

অল্টম্যান ওপেনএআই-কে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চেষ্টা করছেন। তবে মাস্ক এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্মত নয়। মাস্কের মতে, ওপেনএআই প্রতিষ্ঠার সময় মূল্য উদ্দেশ্য ছিল মানবতার উপকারে এআই তৈরি করা। তবে প্রতিষ্ঠান এখন এই নীতি থেকে সরে আসছে।

তবে ওপেনএআই দাবি করছে, উন্নত এআই মডেল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

এই প্রস্তাবটি মাস্কের এআই কোম্পানি এক্সএআই এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত ইকুইটি ফার্ম, যেমন: বারন ক্যাপিটাল গ্রুপ এবং ভ্যালর ম্যানেজমেন্টের সমর্থন করছে।

মাস্ক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এখন সময় এসেছে ওপেনএআইকে আবারও একটি ওপেন সোর্স এবং নিরাপত্তা-কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার, যা একসময় ছিল। আমরা এটি নিশ্চিত করব।’

ইলন মাস্কের পক্ষ থেকে দেওয়া ৯৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবটি ওপেনএআই-এর সর্বশেষ বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ওপেনএআই সর্বশেষ তহবিল সংগ্রহ করেছিল, তখন তার বাজারমূল্য ছিল ১৫৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বর্তমানে ওপেনএআই-এর মূল্য ৩০০ বিলিয়ন ডলার হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যা মাস্কের প্রস্তাবের তুলনায় অনেক বেশি।

সম্প্রতি বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যার নাম ‘স্টারগেট প্রজেক্ট’। এর প্রকল্পের মূল্য ৫০০ বিলিয়ন ডলার। এই প্রকল্পের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রাথমিকভাবে ওপেনএআই এবং সফটব্যাংক প্রত্যেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো—উন্নত কম্পিউটিং পাওয়ারের মাধ্যমে নতুন ও শক্তিশালী এআই মডেল তৈরি করা।

একে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এআই অবকাঠামো প্রকল্প’ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, এটি ‘প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ’ যুক্তরাষ্ট্রে রাখতে সহায়ক হবে।

ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টা হওয়া সত্ত্বেও মাস্ক দাবি করেছেন যে, এই প্রকল্পটি ‘যতটুকু অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা আসলে তাদের কাছে নেই’। যদিও তিনি তার মন্তব্যের পক্ষে কোনো বিস্তারিত তথ্য বা প্রমাণ সামনে আনেননি।

২০২২ সালে টুইটারের ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কেনেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিল, তিনি পুরো টুইটার কিনে নেবেন।

সেই বছরের এপ্রিল মাসে টুইটার কেনার প্রস্তাব দেন তিনি। প্ল্যাটফর্মটি কেনার পর টুইটারকে আরও বেশি উদার, উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। টুইটারের শেয়ার প্রতি ৫৪ দশমিক ২ ডলার মূল্য নির্ধারণ করে কোম্পানিটি কেনার জন্য ৪৪ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রস্তাব দেন মাস্ক।

শুরুতে, টুইটারের বোর্ড এই প্রস্তাবটি এড়িয়ে যায় এবং মাস্কের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করার প্রস্তুতি নেয়। তবে মাস্কের প্রস্তাবটি অনেক বড় অঙ্কের ছিল, যার ফলে বোর্ড শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে পড়তে থাকে। শেষে এই প্রস্তাব মেনে নেয় টুইটারের বোর্ড এবং মাস্কের নেতৃত্বে টুইটার বিক্রি হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে সব ধরনের আইনি বাধা দূর করে টুইটার কিনে নেন ইলন মাস্ক এবং প্ল্যাটফর্মের নতুন মালিক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এমনকি নিজের অন্যান্য কোম্পানির সঙ্গে নাম মিলিয়ে প্ল্যাটফর্মটির নাম রাখেন ‘এক্স’।

ওপেনএআই কেনার বিষয়টি তাই টুইটারের মতো হতে পারে। কারণ বিষয়টি শুধু অল্টম্যানের হাতে নেই। কোম্পানির বোর্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা মাস্কের প্রস্তাবে রাজি হলে অল্টম্যানও ওপেনএআই বিক্রিতে বাধ্য হবে। এ ছাড়া মাস্ক এখন ট্রাম্পের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিশ্বের শীর্ষ এই ধনীর হাতে নজিরবিহীনভাবে ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই ওপেনএআই ভবিষ্যতে আরও বেশ চাপের সম্মুখীন হবে বলে ধারণা করা যায়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলে ব্লক করা হবে সাইট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলে ব্লক করা হবে সাইট

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামীকাল ১৯ অক্টোবর থেকে যদি কোনো সংবাদপত্র (অনলাইন ভার্সনসহ), নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা ওয়েবসাইটে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট প্রচারিত হয় তবে বিনা নোটিশে সেই সাইট ব্লক করে দেওয়া হবে।

আজ শনিবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন ও প্রমোশনাল কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে। যা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর পরিপন্থী এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। এই ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকার একাধিক প্রজ্ঞাপন ও প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের সতর্কতার পর ইতিমধ্যে ক্রিকইনফো, জনকণ্ঠ, ঢাকা পোস্টসহ আরও বেশ কয়েকটি পত্রিকা তাদের এডসেন্স পরিবর্তন করেছে, এজন্য তাদের ধন্যবাদ।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্ম বান্ধব রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে এ বিষয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ), জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যৌথভাবে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়ার বিজ্ঞাপন সাময়িক বন্ধ করেছে ইএসপিএন ক্রিকইনফো: ফয়েজ আহমদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ফাইল ছবি
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, ক্রিকেট খেলা বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো জুয়ার বিজ্ঞাপন সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে। গতকাল বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘ইএসপিএন ক্রিকইনফো জুয়ার বিজ্ঞাপন সাময়িক বন্ধ করেছে বলে জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘দেশের সব পত্রিকা, অনলাইন পোর্টালসহ যেকোনো স্থানীয় এবং আঞ্চলিক মিডিয়া প্রতিষ্ঠান, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সংস্থা, কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং সেলিব্রেটিদের প্রতি আহ্বান জানানো জানানো যাচ্ছে যে—তারা যেন কোনোভাবেই জুয়া, বেটিং, পর্নোগ্রাফি বা অনৈতিক পণ্য ও সেবার প্রচারে অংশগ্রহণ না করেন এবং এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওয়েবসাইট, পত্রিকা ও নিউজ পোর্টাল, অ্যাপ ইত্যাদি ডিফল্ড এডসেন্স-এ না চালিয়ে বরং কাস্টমাইজড করতে হবে যাতে জুয়া পর্ন গ্যাম্বলিং এবং এতদসংক্রান্ত গেইমিং বিজ্ঞাপন বা পপ-আপ না আসে।’

ফয়েজ আহমেদ আরও লেখেন, ‘মোবাইল কোম্পানি, আইএসপি, গুগল অ্যাডসেন্স, মেটা অ্যাডসহ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মগুলোকেও বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্থানীয় আইন, পপ-আপ ব্লকিং ও ফিল্টারিং নীতি কঠোরভাবে অনুসরণের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল, টেকনোলজি প্ল্যাটফর্ম, ইন্টারনেট সেবাদাতা, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, স্পোর্টস সাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং এমনকি কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জুয়া, বেটিং ও পর্নগ্রাফি বিষয়ক বিজ্ঞাপন ও প্রোমোশনাল কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে। এই ধরনের কার্যকলাপ বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২-এর সরাসরি পরিপন্থী।’

তিনি আরও জানান, ‘জুয়ার বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলবে এবং প্রচলিত আইন ভঙ্গ করলে জনমত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করার বিষয় সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে, এবং এব্যাপারে পাবলিক কমিউনিকেশন করা হবে।’

বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্ম বান্ধব রাখতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান ফয়েজ আহমদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সচল ইউটিউব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০২৫ সালে ইউটিউবের আয় ডিজনিকে ছাড়িয়ে যাবে। ছবি: সংগৃহীত
২০২৫ সালে ইউটিউবের আয় ডিজনিকে ছাড়িয়ে যাবে। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবের স্ট্রিমিং প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শত শত ব্যবহারকারী এই বিষয়ে অভিযোগ জানানোর পর ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধান করে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইউটিউব জানিয়েছে, তাদের ওয়েবসাইট ও অ্যাপে দেখা দেওয়া টেকনিক্যাল বা কারিগরি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। এর আগে, সারা বিশ্বের শত শত হাজার ব্যবহারকারী ইউটিউবের স্ট্রিমিং সেবায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানান।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে এশিয়ার সময় এক্সে ইউটিউব লিখেছে, ‘সমস্যাটি এখন ঠিক করা হয়েছে—এখন আপনারা ইউটিউব, ইউটিউব মিউজিক ও ইউটিউব টিভিতে স্বাভাবিকভাবে ভিডিও চালাতে পারবেন!’ তবে ইউটিউব জানায়নি, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ার কারণ কী ছিল বা এটি কতটা বড় পরিসরে ঘটেছিল।

ওয়েবসাইট ও অ্যাপের রিয়েল টাইম ত্রুটির তথ্য সংগ্রহকারী সাইট ডাউনডিটেকটর জানায়, পূর্ব এশিয়ার সময় সকাল ৭টার কিছু আগে (জিএমটি সময় বুধবার রাত ১১টার দিকে) ইউটিউব, ইউটিউব মিউজিক ও ইউটিউব টিভিতে সমস্যা দেখা দেয়।

এশিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা দ্রুতই ভিডিও স্ট্রিমিং, ওয়েবসাইটে প্রবেশ ও অ্যাপ ব্যবহারে সমস্যা হওয়ার অভিযোগ জানান। ডাউনডিটেকটরের ব্যবহারকারীদের তৈরি ত্রুটির মানচিত্র অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যা রিপোর্ট করা হয়।

জাপান, ব্রাজিল ও যুক্তরাজ্যেও বড় ধরনের বিঘ্নের খবর পাওয়া যায়। তবে সমস্যার প্রকৃত পরিধি নির্ধারণ করা যায়নি, কারণ ডাউনডিটেকটরের তথ্য মূলত ব্যবহারকারীদের রিপোর্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

ডাউনডিটেকটরের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫৭ মিনিটে ত্রুটি রিপোর্টের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮ টিতে পৌঁছায়, এরপর তা দ্রুত কমে যায়। একই সময়ের মধ্যে ইউটিউব মিউজিক ও ইউটিউব টিভিতেও কিছু সমস্যা দেখা দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে এসব প্ল্যাটফর্মে ত্রুটি রিপোর্টের সংখ্যা ৫ হাজারের নিচেই ছিল বলে জানিয়েছে ডাউনডিটেকটর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করছে চ্যাটজিপিটি, শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট রাখার পরিকল্পনা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংস্থা ওপেনএআই। সংস্থার প্রধান স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই আচরণ করতে চান, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে অল্টম্যান জানান, চ্যাটবটের আসন্ন সংস্করণগুলোতে এটিকে আরও মানবীয় আচরণ করার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে তা কেবল ব্যবহারকারীরা চাইলে, শুধু ব্যবহারের মাত্রা বাড়ানোর জন্য নয়। ডিসেম্বরে ‘এজ-গেটিং’ (বয়স যাচাই) ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হওয়ার পর, যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইরোটিকার (যৌনতা সম্পর্কিত কনটেন্ট) মতো বিষয়বস্তুও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ইলন মাস্কের এআই সংস্থা এক্সএআই সম্প্রতি গ্রক চ্যাটবটে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করেছে। এরপরই ওপেনএআই এমন পদক্ষেপ নিল। এই পদক্ষেপ সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।

তবে এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে এক গভীর বিতর্ক। চলতি বছরের শুরুতে, ১৬ বছর বয়সী এক মার্কিন কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা-মা ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ম্যাট এবং মারিয়া রেইন নামে ওই দম্পতি অভিযোগ করেন, চ্যাটজিপিটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল যথেষ্ট কার্যকর নয়। মামলায় কিশোর অ্যাডামের সঙ্গে চ্যাটবটের কথোপকথনের লগ জমা দেওয়া হয়। সেখানে দেখার যায়, আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে সে চ্যাটবটের কথা বলেছিল।

স্যাম অল্টম্যান স্বীকার করেন, মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে তাঁরা আগে চ্যাটজিপিটিকে ‘বেশ সীমাবদ্ধ’ রেখেছিলেন। তবে তিনি এখন দাবি করছেন, সংস্থাটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রশমিত করতে পেরেছে এবং নতুন টুলের মাধ্যমে ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরাপদে বিধিনিষেধ শিথিল করা সম্ভব।’

ওপেনএআই-এর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে। সমালোচকদের মতে, প্ল্যাটফর্মে ইরোটিকা অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে। আইন সংস্থা বোয়েস শিলার ফ্লেক্সনারের অংশীদার জেনি কিম প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তারা কীভাবে নিশ্চিত করবে যে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত অংশ বা ইরোটিকায় প্রবেশ করতে পারবে না?’ কিম মন্তব্য করেন, ওপেনএআই-ও অন্যান্য বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলো মানুষকে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করছে।

এদিকে, সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সম্প্রতি একটি বিলে ভেটো দিয়েছেন, যে আইনে শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক আচরণে উৎসাহিত করতে পারে এমন এআই চ্যাটবট নিষিদ্ধ করার এখতিয়ার থাকত। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, শিশু-কিশোরদের এআই সিস্টেমের সঙ্গে নিরাপদে যোগাযোগ করতে শেখা অপরিহার্য।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) চ্যাটবটগুলো কীভাবে শিশুদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করছে, সেটি তদন্ত শুরু করেছে।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ওপেনএআই-এর এই পদক্ষেপ বাজারে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার জন্য একটি প্রচেষ্টামাত্র। ওপেনএআই-এর আয় বাড়ছে, তবে সংস্থাটি এখনো লাভজনক নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত বাজার দখলের লড়াইয়ে কোম্পানিটি এই ধরনের বিতর্কিত পদক্ষেপ নিতে নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত