Ajker Patrika

ঝেংয়ের স্বপ্ন ভেঙে সাবালেঙ্কার টানা শিরোপা

ঝেংয়ের স্বপ্ন ভেঙে সাবালেঙ্কার টানা শিরোপা

মাত্র ৭৬ মিনিট। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মেয়েদের ফাইনালে চীনের ঝেং কিনওয়েনকে হারাতে আরিনা সাবালেঙ্কার লাগল এত কম সময়। 

দুর্দান্ত ছন্দে থেকেই টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলেন সাবালেঙ্কা। সেই ছন্দ ধরে রেখেই ফাইনালে উঠেছিলেন; একটা সেটও হাতছাড়া হতে দেননি। বোঝাই যাচ্ছিল প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা ঝেং কিনওয়েনের জন্য ম্যাচটা কঠিনই হবে। কিন্তু এতটাই কঠিন হবে কে জানত! কিন্তু সাবালেঙ্কা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গড়ে তুলতে দেননি। 

ফাইনালেও কোনো সেট হাতছাড়া করেননি সাবালেঙ্কা। জিতেছেন ৬-৩,৬-২ গেমে। ২০০০ সালের পর কোনো সেট না হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতা পঞ্চম নারী প্রতিযোগী সাবালেঙ্কা। তাঁর আগে এই সময়ে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন অ্যাশলেই বার্টি, সেরেনা উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভা ও লিন্ডসে ড্যাভেনপোর্ট। 

রেকর্ড বইয়ের আরেকটি জায়গায় অবশ্য ২৫ বছর বয়সী সাবালেঙ্কা জায়গা করে নিয়েছেন তাঁরই স্বদেশি ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার পাশে। ২০১৩ সালে টানা তাঁর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর সাবালেঙ্কাই টানা দুটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনজয়ী প্রথম নারী। 

সাবালেঙ্কার এই জয়ে স্বপ্নভঙ্গ ঝেং কিনওয়ানের। প্রথমবারের মতো উঠে এসেছিলেন গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে। কিন্তু ফাইনালটা ফাইনালের মতো খেলতে পারলেন না। ডাবল ফল্ট করেছেন ৬টি, আনফোরস এরর ১৬টি। তবে এক দশকের মধ্যে চীনের প্রথম প্রতিযোগী হিসেবে ফাইনালে উঠেছেন, ঝেংয়ের জন্য এটাই বা কম কী!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হ্যাটট্রিক করে দুই কিংবদন্তির পাশে লেভা

ক্রীড়া ডেস্ক    
হ্যাট্রটিকের পর লেভা যেন উড়তে চাইলেন। ছবি: এক্স
হ্যাট্রটিকের পর লেভা যেন উড়তে চাইলেন। ছবি: এক্স

চোটের কারণে এক মাস মাঠের বাইরে থাকার পর লা লিগায় সেলতা ভিগোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রথমবার শুরুর একাদশে নামেন রবার্ট লেভানডভস্কি। ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখলেন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে। হ্যাটট্রিক করেছেন এই পোলিশ স্ট্রাইকার। তাতেই দুই কিংবদন্তি ফুটবল ফেরেঙ্ক পুসকাস ও আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর পাশে বসেছেন ৩৭ বছর বয়সী লেভা।

লা লিগায় এটা লেভার তৃতীয় হ্যাটট্রিক। ডি স্টেফানো ও পুসকাসের পর তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে ৩৫ পেরোনোর পর স্পেনের শীর্ষ লিগে তিনটি হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়লেন বার্সেলোনার এই ফরোয়ার্ড। বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে ২০২২-২৩ মৌসুমে কাতালান ক্লাবে যোগ দেন লেভা। দ্বিতীয় মৌসুমে বার্সার হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পান–প্রতিপক্ষ ভ্যালেন্সিয়া। গত মৌসুমে আলাভেসের বিপক্ষে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন তিনি। এবার সেলতার জালে তিনবার বল পাঠিয়ে পুসকাস ও ডি স্টেফানোর রেকর্ডে ভাগ বসালেন লেভা।

তাঁর হ্যাটট্রিকের দিনে সেলতাকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে বার্সা। বালাইদোস স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধেই দুইবার জালের দেখা পান লেভা। বিরতির পরও আরও এক গোল করেন। সফরকারী দলের হয়ে বাকি গোলটি করেন লামিনে ইয়ামাল। নিজেদের মাঠে দুই দফা সমতায় ফিরে লড়াইয়ের আভাস দিলেও আর বার্সার সঙ্গে পেরে উঠেনি সেলতা।

বার্সার জয়ের দিনে স্কোরশিটে নাম উঠেনি মার্কাশ রাশফোর্ডের। এরপরও দলের পূর্ণ পয়েন্ট পাওয়ায় অবদান আছে এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডের। জোড়া অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে দারুণ একটা দিনই পার হলো বার্সার ফরোয়ার্ডদের জন্য।

এই জয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান তিনে নামিয়ে এনেছে বার্সা। একি দিন রায়ো ভায়োকানোর সঙ্গে হোঁচট খেয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। তাদের সংগ্রহ ৩১ পয়েন্ট। বার্সার নামের পাশে আছে ২৮ পয়েন্ট। উভয় দলই খেলেছে সমান ১২ ম্যাচ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৫
ফুটবল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন আসিফ। ছবি: সংগৃহীত
ফুটবল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন আসিফ। ছবি: সংগৃহীত

দেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেট কোচ, সংগঠক ও ক্রীড়া কর্মকর্তাদের নিয়ে গতকাল শুরু হয়েছে বিসিবির ক্রিকেট কনফারেন্স। সেখানে ফুটবল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বিসিবি পরিচালক ও গায়ক আসিফ আকবর। ফুটবলের জন্য ক্রিকেট খেলা যাচ্ছে না বলে দাবি তাঁর। সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ফুটবল অঙ্গনে। আসিফ ক্ষমা না চাইলে বড় অ্যাকশনে যাবেন সাবেক ও বর্তমান ফুটবলাররা।

আজকের পত্রিকাকে জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার জাহিদ হাসান এমিলি বলেন, ‘তিনি যদি ক্ষমা না চান, তাঁর বিরুদ্ধে বিশাল অ্যাকশনে যাব। বিসিবিতে আমরা চিঠি দেব তাঁকে বিতাড়িত করার। তাঁর এ কথা শুনে দেখলাম বুলবুল ভাইয়েরা তালি দিচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে চরম অ্যাকশন হবে। মানহানির মামলা দেওয়া হবে।’

কোন ফুটবলার আসিফের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন, তা জানতে চান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু। ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে ফুটবল ও ফুটবলারদের নিয়ে এমন বক্তব্যকে ধিক্কার ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ সব খেলাই আমাদের। কোনো খেলাকে ছোট করে দেখার নেই। তবে আসিফ আকবরের এমন বক্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। অবশ্যই এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। উনার কাছে আমি জানতে চাওয়া, কোন ফুটবল খেলোয়াড় উনার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন?’

আসিফের বক্তব্যে বৈষম্যের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন আরেক ডিফেন্ডার জাহিদ হাসান শান্ত, ‘কোনো সময় ক্রিকেটকে ছোট করে দেখিনি। পদ পেয়ে আপনার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। ইউরোপের দেশগুলো যদি ক্রিকেট খেলত, তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেট কোথায় থাকত? বিশ্বে কয়টা দেশ ক্রিকেট খেলে, আর কয়টা দেশে ফুটবল খেলে? এভাবে ফুটবলকে ছোট করে আপনার কথা বলা ঠিক হয়নি। আপনি ফুটবল আর ক্রিকেটের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করলেন। আশা করি, লাইভে এসে বিষয়টা সমাধান করবেন। শেষে মারামারির কথাটা বলে বোঝালেন আপনি একটা অযোগ্য এবং সেবনকারী।’

জাতীয় দলের স্ট্রাইকার আল আমিন তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ফুটবল পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। জনাব আসিফ আকবর সাহেব, যে অভিব্যক্তিতে কথা বলেছেন—সেটি স্পোর্টসের ভাষা নয়। তিনি ডিসিপ্লিন ইস্যুতে কথা বলেছেন। ফুটবল অনেক শারীরিক খেলা হলেও ধৈর্য ধারণ করতে হয়, প্রতিপক্ষকে সম্মান জানিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। অসদাচরণ কিংবা ফাউলের জন্য রেফারির ইনস্ট্যান্ট সিদ্ধান্ত মেনে মাঠও ছাড়তে হয়। তা ছাড়া ন্যাশনাল ক্যাম্পে খাবার থেকে শুরু করে টাইম ম্যানেজমেন্ট সব চলে নিয়মমাফিক। নিয়মের হেরফের হলেই গুনতে হয় শাস্তি। তাই ফুটবলারদের দয়া করে ডিসিপ্লিন শেখাতে আসবেন না। আপনাকে অবশ্যই এর জন্য অনুতপ্ত হওয়া উচিত!’

ফেসবুক পোস্টে আবাহনী লিমিটেডের প্রধান কোচ মারুফুল হক লিখেছেন, ‘ওনার স্কুল বা কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করছিলেন স্টেডিয়ামে বিপিএল এর খেলা বন্ধ করে, একজন মাঠ প্রেমিক হলে স্টেডিয়ামে অন্য অনুষ্ঠান কিভাবে করেন? বাফুফে ফুটবল চালায় ৪ জেলায়, বাকি ৬০ জেলায় ক্রিকেট এর খবর রাখেন কি জনাব?

এর আগে গতকাল ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ক্রিকেট কনফারেন্সে আসিফ বলেন, ‘ফুটবলারদের জন্য (ক্রিকেট) খেলা যাচ্ছে না সারা দেশে। তারা উইকেট ভেঙে ফেলল, উইকেট নষ্ট করে ফেলেছে। আবার ২৪ তারিখ আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল খেলা কুমিল্লা স্টেডিয়ামে। এই সমস্যাটা শুধু কুমিল্লার না। প্রতিটা জেলার স্টেডিয়াম দখল করে রেখেছে ফুটবল, প্রতিটা জেলার যেখানে ফুটবলের কাজ নেই, সেখানেও ফুটবল দখল করে রেখেছে এবং ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে জিতে গেল বৃষ্টি

ক্রীড়া ডেস্ক    
বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে মাঠে গড়িয়েছে ৬.৩ ওভার। ছবি: এক্স
বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে মাঠে গড়িয়েছে ৬.৩ ওভার। ছবি: এক্স

দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে জিতল না কেউ। নেলসনের সাক্সটন ওভালে বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে।

বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তাই শুরুর পর ম্যাচ পরিত্যক্ত করেছেন অফিসিয়ালরা। প্রথম ৩ টি-টোয়েন্টি শেষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় একটা বিষয় এখন নিশ্চিত–সিরিজ হারছে না নিউজিল্যান্ড। চ্যালেঞ্জ থেকেই গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সিরিজ বাঁচাতে চাইলে শেষ ম্যাচে জিততেই হবে সফরকারী দলকে। ১৩ নভেম্বর শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে দুই দল।

বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও এদিন যথাসময়েই টস হয়। ম্যাচও শুরু হয় নির্ধারিত সময়ে। পঞ্চম ওভারে প্রথমবার ম্যাচে বৃষ্টি হানা দেয়। এজন্য কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ ছিল। বৃষ্টি থামার পর ফের মাঠে বল গড়ায়। কিন্তু বেশিক্ষণ খেলা হয়নি। ৯ বল পর ফের বৃষ্টি নামলে দ্বিতীয়বারের মতো খেলা বন্ধ হয়। এই দফায় আর বৃষ্টি থামেনি।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৬.৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরিসংখ্যানই বলছে–কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে অতিথি ব্যাটারদের। কাইল জেমিসন, জ্যাকব ডাফি, জেমস নিশামদের বোলিংয়ের সামনে হাতখুলে খেলতে পারেননি আমির জাঙ্গু, আলিক আথানেজরা। নিশামের করা ষষ্ঠ ওভারে ড্যারেল মিচেলের হাতে ধরা পড়েন আথানেজ। ১৮ বলে ২১ রান করেন এই ওপেনার। ১২ রান করতেই ১৮ বল খেলেন আরেক ওপেনার জাঙ্গু।

এর আগে প্রথম ৩ টি-টোয়েন্টিতে দারুণ লড়াই করেছে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিনটি ম্যাচই ফয়সালা হয় শেষ ওভারে। তাই আরও একটি জমজমাট লড়াই দেখার অপেক্ষায় ছিল ভক্তরা। সেটা হতে দিল না প্রকৃতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরেক হেমন্তে বুলবুল-সুমনদের অন্য বাস্তবতা

অয়ন রায়, ঢাকা  
আজ বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের ২৫ বছর। ছবি: সংগৃহীত
আজ বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের ২৫ বছর। ছবি: সংগৃহীত

২০০০ সালের ১০ নভেম্বর। হেমন্তের এক সুন্দর সকালে বাংলাদেশ ক্রিকেট পা দিয়েছিল নতুন যুগে। একই বছরের ২৬ জুন টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর বাংলাদেশ প্রথমবার খেলতে নামে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় টস করেছেন আরেক বাঙালি অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে। টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিটা এসেছিল আমিনুল ইসলাম বুলবুলের ব্যাট থেকে। ৯ উইকেটে হারলেও সেই টেস্টের স্মৃতি আজও অনেকের কাছে অমলিন।

আজ টেস্ট অভিষেকের ২৫ বছর পূর্ণ হলো বাংলাদেশের। রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দুদিনব্যাপী ক্রিকেট কনফারেন্সের আয়োজন করেছে। কাল সন্ধ্যায় সোনারগাঁও হোটেলে সম্মেলনের প্রথম দিন শেষে বিসিবি সভাপতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডায় ফিরে যাচ্ছিলেন ২৫ বছর আগের স্মৃতিতে। একটা তর্ক বেশ জমে উঠল। এক সাংবাদিক বুলবুলের কাছে জানতে চাইলেন, অভিষেক টেস্টে তিনি সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন কার বলে—মুরালি কার্তিক নাকি সুনীল জোশির? দুজনই তখন তরুণ বাঁহাতি স্পিনার, বোলিং অ্যাকশনও প্রায় কাছাকাছি। বুলবুল কোনো সময়ক্ষেপণ না করে বললেন, মুরালি কার্তিক। স্কোরিং শটের স্মৃতিও সতেজ বুলবুলের, ‘মোহামেডানের সমর্থকেরা বলতেন ঝাড়ু শট। কিন্তু আমি খেলেছিলাম প্যাডল সুইপ। শতভাগ নিশ্চিত, ওটা ছিল মুরালি কার্তিক। ওর সঙ্গে যখনই দেখা হয়, শততম টেস্টের স্মৃতিচারণা হয়। এখন তো সে ধারাভাষ্য দেয়।’

বুলবুল সৌভাগ্যবান, বিসিবির সভাপতি হিসেবে তিনি উদ্যাপন করছেন অভিষেক টেস্টের রজতজয়ন্তী। বুলবুল সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন, আজ বিকেলে কেক কাটা হবে, সবাই থাকবেন। অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরির রজতজয়ন্তী উপলক্ষেও কি কেক কাটা হবে না? বুলবুল বলেন, ‘না, আর আমি প্রথম দিনে সেঞ্চুরি করিনি। প্রথম দিন অপরাজিত ছিলাম ৬৪ রানে, সুমনও ফিফটি করেছিল। আমি সেঞ্চুরি করেছিলাম দ্বিতীয় দিনে।’

বুলবুলের সংবাদ সম্মেলন শেষে দেখা হয়ে গেল হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গে। বিসিবি যে দুদিনব্যাপী ক্রিকেট কনফারেন্সের আয়োজন করেছে, সেটির সমন্বয়ক সুমনই। অভিষেক টেস্টের দুই পারফরমারসহ আরও অনেকে এখনো ক্রিকেটে সক্রিয়। তবে এ মুহূর্তে অভিষেক টেস্টের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের ঠিকানা কারাগার। আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় গত মে মাসে।

ঐতিহাসিক দিন উদ্যাপনেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না বুলবুলের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ক্রিকেট বোর্ড। তারা দেশের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে চায় বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে। গতকাল শুরু হওয়া কনফারেন্সের প্রথম দিনে দেশের ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নতির কথাই আলোচনা হয়েছে বেশি। কনফারেন্স শেষে বুলবুল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় লিগের দল গঠন করবে জেলা-বিভাগীয় পর্যায়ের কোচ। বড় বড় স্টেডিয়াম নয়, তাঁদের চাওয়া ভালো খেলার মাঠ আর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। বুলবুলরা স্বীকার করেন, টেস্ট আঙিনায় পা দেওয়ার পর গত ২৫ বছরে দেশের ক্রিকেট যত দূর পৌঁছানোর কথা, ততটা এগোনো হয়নি।

২৫ বছরে এখন পর্যন্ত বছরে গড়ে একটি টেস্টও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৫৪ ম্যাচ খেলে জিতেছে ২৩ টেস্ট, হেরেছে ১১২ ও ১৯ ম্যাচ ড্র হয়েছে। টেস্টে ১১২ হারের মধ্যে ৪৭ বারই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। শুধু তা-ই নয়, সদ্য টেস্ট মর্যাদা পাওয়া আফগানিস্তানের কাছেও বাংলাদেশ হেরেছে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে। টেস্টে প্রথম জয় বাংলাদেশ পেয়েছে ৩৫ তম ম্যাচে এসে। ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়েকে ২২৬ রানে হারিয়ে টেস্টে বাংলাদেশ প্রথম জেতে। সেই জয়টা পরে এসেছে কালেভদ্রে।

টেস্টে ২৫ বছরে অধিনায়কত্ব নিয়েও তো কম ঘটনা ঘটেনি। অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে আবার অধিনায়ক হওয়া, চোটে পড়ায় নিয়মিত অধিনায়ক না থাকায় অন্য কারও কাঁধে নেতৃত্বভার তুলে দেওয়ার ঘটনা দেখে গেছে। ২৫ বছরে এখন পর্যন্ত ১৪ অধিনায়কের অধীনে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি ৩৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ ম্যাচ, সর্বোচ্চ ৬,৩২৮ রান, সবচেয়ে বেশি ৩ ডাবল সেঞ্চুরি—সব রেকর্ড মুশফিকেরই। সেই মুশফিকই ১৯ নভেম্বর দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে যাচ্ছেন।

হতাশার মধ্যে আছে কিছু গৌরবগাথা। গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাঠে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ-মুশফিকুর রহিমরা। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাঠে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে কলম্বোয় বাংলাদেশ জিতেছিল তাদের শততম টেস্ট।

টেস্টে বাজে পারফরম্যান্সের কারণ হিসেবে দেশের ঘরোয়া ‘পিকনিক ক্রিকেট’ নামে পরিচিত ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে তাইজুল ইসলাম-মুমিনুল হকরা কথা বলেছেন অনেকবার। আর অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডকে মিরপুরের ঘূর্ণি উইকেটে হারালেও এমন ফর্মুলায় বাংলাদেশ হেরেছে বেশ কয়েকবার। গতকাল ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে বুলবুল বলেন, ‘আমাদের দরকার খোলা মাঠ। ভালো উইকেট। উইকেটের বাউন্স ভালো থাকবে। ভালো আউটফিল্ডও থাকবে, যাতে একটা বাচ্চা ছেলে বা মেয়ে সহজে ফিল্ডিং করতে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত