Ajker Patrika

‘বইয়ের পাতায় কলসিন্দুর’ নারী ফুটবলারদের জোগাবে অনুপ্রেরণা

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৭
‘বইয়ের পাতায় কলসিন্দুর’ নারী ফুটবলারদের জোগাবে অনুপ্রেরণা

বইয়ের পাতায় সাবিনা আক্তারের মুখের হাসিটা সেই আগের মতোই আছে। শান্ত-স্নিগ্ধ আর সরলতায় ভরা। সম্ভাবনা জাগিয়ে অকালে (২০১৭ সালে) নশ্বর পৃথিবীকে বিদায় বলেছেন ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশের নারী ফুটবলে সাবিনা আর কলসিন্দুর গ্রামের গল্প এখন আগ্রহ নিয়ে জানবে-শিখবে দেশের ছাত্রছাত্রীরা। 

বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ দিয়ে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৫ দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তঘেঁষা কলসিন্দুর গ্রামের মেয়ে সাবিনা। একই গ্রামের মারিয়া মান্দা, সানজিদা আক্তার, তহুরা খাতুনরা আজ বাংলাদেশ নারী ফুটবলের ‘পোস্টার গার্ল’। 

অন্য জগতে পাড়ি জমানো সাবিনা হয়তো মারিয়াদের সাফল্যে অংশীদার হতে পারবেন না; তবে নিজ গ্রামের প্রতি তাঁর অবদানটুকু ঠিকই গাঁথা হয়ে গেছে একাদশ শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের পাতায়। 

বাংলাদেশের ফুটবলে সাম্প্রতিক যা সাফল্য, এর অধিকাংশটাই এসেছে নারী ফুটবলারদের কল্যাণে। আর এই দলের প্রাণ একঝাঁক কিশোরী ফুটবলার এসেছেন এককালের ‘অচেনা’ গ্রাম কলসিন্দুর থেকে। 

গ্রামটিকে অবশ্য এখন আর অচেনা বলার উপায় নেই। জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের পাতা ওল্টালেই যেন কলসিন্দুরের মেয়েদের লড়াই আর সাফল্যগাথা থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম; তারই ব্যবস্থা করেছে সরকার। 

বয়সভিত্তিক ফুটবলকে দুহাত ভরে সাফল্য এনে দেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন কলসিন্দুরের নারী ফুটবলাররা। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে শুরু করে অনূর্ধ্ব-১৮ আর সাম্প্রতিক সময়ের অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ শিরোপা জয়েও মারিয়া-শামসুন্নাহার জুনিয়রদের অবদান। পরিশ্রম আর আন্তরিকতায় নিজেরা হেসেছেন সাফল্যের হাসি। 

কলসিন্দুর নামটির সঙ্গে এত দিন পরিচয় ছিল শুধু দেশের ফুটবলপ্রেমীদের। নতুন পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এবার জানবে ছাত্রছাত্রীরা। সাফজয়ী অধিনায়ক মারিয়ার কণ্ঠে তাই গর্বের সুর, ‘আগে কলসিন্দুর গ্রামকে কেউ চিনত না। এখন সারা দেশের মানুষ চিনছে। এখন হয়তো খেলাধুলার প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ আরও বাড়বে।’ 

একই গ্রামের তারকা ফুটবলার সানজিদা লিখেছেন, ‘কলসিন্দুর নিয়ে আজ আমি গর্বিত। গর্বিত পাঠ্যবইয়ে কলসিন্দুরকে তুলে ধরায়।’ 

ফুটবলে নিজেদের অবদানে গর্ব আর উচ্ছ্বাস মারিয়াদের। হয়তো ওপারের জগৎ থেকে বান্ধবীদের সাফল্যে হাসছেন সাবিনাও। তাঁর স্মৃতি মনে করতেই কষ্ট পেলেন মারিয়া, ‘আমরা ওকে অনেক মিস করি। ও বেঁচে থাকলে আমাদের সঙ্গেই ক্যাম্পে থাকত, শিরোপা জিতত। গর্ব করতে পারত।’ কষ্ট বুকে চেপে এখন এই স্বীকৃতিকে উপভোগ করছেন কলসিন্দুর গ্রামের মেয়েরা। 

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আরেকটি সুখবর আছে দেশের নারী ফুটবলারদের। বাফুফে ভবনের নারী আবাসিক ক্যাম্পটিকে ‘এক তারকা’ এলিট একাডেমির স্বীকৃতি দিয়েছে ফিফা ও এএফসি। ১১ শর্ত পূরণ করে এশিয়ার প্রথম জাতীয় একাডেমির স্বীকৃতি পেয়েছে নারী ফুটবলারদের আবাসিক ক্যাম্পটি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত