Ajker Patrika

মোস্তাফিজ হতে পারতেন নায়ক, হয়ে গেলেন খলনায়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ১৬
মোস্তাফিজ হতে পারতেন নায়ক, হয়ে গেলেন খলনায়ক

শেষ ওভারে লক্ষ্ণৌর দরকার ছিল ১৭ রান। স্ট্রাইকে তখন ১০৬ রানে অপরাজিত মার্কাস স্টয়নিস। মোস্তাফিজুর রহমানকে আক্রমণে নিয়ে এলেন চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। বল হাতে নিয়েই মোস্তাফিজ তাঁর নীল রুমালটা দিয়ে ভালো করে বল মুছে নেওয়ার চেষ্টা করলেন। বল মুছে নেওয়ার এ দৃশ্যই বলে দিচ্ছিল মাঠ কতটা শিশিরে ভেজা। 

প্রথম বলটা অন পেসে ইয়র্কার দিতে চেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। হয়নি, লংঅন দিয়ে ৮৬ মিটার দূরত্বে আছড়ে ফেলেন স্টয়নিস। ওখানেই যেন মোস্তাফিজের আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা খায়। স্নায়ুক্ষয়ী মুহূর্তে যে ‘টাফনেস’ দরকার পড়ে একজন বোলারের, সেটি প্রায় ভেঙে পড়ে মোস্তাফিজের। পরের বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে ফুলার হয়ে গেল। সোজা বোলারের মাথার ওপর দিয়ে স্টয়নিস পাঠিয়ে দিলেন বাউন্ডারির বাইরে। এলোমেলো হয়ে পড়া মোস্তাফিজের তৃতীয় বলটা হয়ে গেল ফুলটস। সঙ্গে হলো ‘নো বল’। 

যতই স্টয়নিসের মতো থিতু হয়ে ব্যাটার উইকেটে থাকুন না কেন, অন্তিম ওভারে চাপের মুহূর্তে আসলে ৬ বলে ১৭ রান তোলা মোটেও সহজ নয়। এ সময়ে বোলারের প্রত্যাবর্তনের সুযোগ থাকে প্রতিটি বলেই। আর ব্যাটার একটা ভুল করলেই শেষ! অথচ মোস্তাফিজ একটি বলেও ফিরতে পারলেন না। টানা ৪ বলে ১৯ রান দিয়ে হয়ে গেলেন চেন্নাইয়ের খলনায়ক! অথচ তাঁর নায়ক হওয়ার কী দুর্দান্ত সুযোগই না এসেছিল চেন্নাইয়ের উষ্ণ এই রাতে। 

ঘরের মাঠে লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে পরশু পাওয়ার প্লেতে নিজের প্রথম ওভারটা দুর্দান্ত হয়েছিল মোস্তাফিজের। ৩ ওভারে ৩২ রান দেওয়া ফিজের ওপরই বর্তাল শেষ ওভারের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার। চ্যালেঞ্জটা উতরে যেতে পারেননি মোস্তাফিজ। ব্যর্থতার অজুহাত হয় না। তবে মোস্তাফিজ জানালেন, চেন্নাইয়ে দিনে প্রচণ্ড গরম, রাতে পড়ে শিশির। এই শিশিরই পরশু ফিজের কাটার নির্বিষ করে দিয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের সাবেক কোচ, বর্তমানে লক্ষ্ণৌর সহকারী কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম। কাল আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘শিশির একটা ফ্যাক্টর ছিল। এটাই মোস্তাফিজের কাটার কেড়ে নিয়েছে।’ ম্যাচের পর চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজের ব্যাখ্যায়ও শিশির এসেছে। 
 
বিসিবি পরিচালক ও আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও পাশে থাকছেন মোস্তাফিজের। কাল তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মোস্তাফিজকে সবাই দোষ দিলেও আমি কোনোভাবেই দিই না। এটা খেলার অংশ। তখন স্টয়নিস যেভাবে মারছিল, স্বাভাবিকভাবেই তখন যেকোনো বোলারের ক্ষেত্রেই সেটা ঘটতে পারত।’ 

স্বপ্নের মতো শুরু বলতে যা বোঝায়, মোস্তাফিজের তেমনই হয়েছিল ২০২৪ আইপিএলে। ২২ মার্চ টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে তুমুল প্রশংসিত হয়েছিলেন। শুরুর প্রথম তিন ম্যাচে নেন ৭ উইকেট। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির ‘পার্পল ক্যাপটা’ প্রায় দুই সপ্তাহ ছিল মোস্তাফিজের দখলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য ছন্দে থাকা মোস্তাফিজকে ২ এপ্রিল আসতে হয় ঢাকায়। ঢাকা থেকে ফিরে নিজের শুরুর ছন্দ সেভাবে আর ধরে রাখতে পারেননি। সবশেষ তিন ম্যাচে তাঁর ইকোনমি প্রায় ১৩। রান খরচের ‘ফিফটি’ করেছেন দুই ম্যাচে। ১৫ থেকে ২০—শেষের দিকে ৬ ওভারের মধ্যে ফিজ সবশেষ তিন ম্যাচে বোলিং করেছেন ৩৯টি, ৯৯ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট, হজম করেছেন ৭ ছক্কা ও ১০ চার। ইয়র্কার-কাটার করতে গিয়ে ব্যাটারের ব্যাটের সামনে বল ফেলেছেন। সেগুলো সহজেই সীমানা পার করেছেন রোহিত শর্মা-মার্কাস স্টয়নিসদের মতো মারকুটে ব্যাটাররা। 

আগামী ২ মে বাংলাদেশে ফেরার আগে আরও দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকছে মোস্তাফিজের। এখন চেন্নাই টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁর ওপর কতটা ভরসা রাখে, সেটি নিয়েই তৈরি হয়েছে ঘোর সংশয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত