আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে পারদর্শী হতে পারত না। হাজার হাজার বছর আগে থেকেই গণনা করছিল আমাদের প্রজাতি।
প্রাচীন গণনার প্রমাণ
গণনার শুরু বহু আগেই—সম্ভবত ২০ হাজার বছরেরও আগে। আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে পাওয়া ‘ইশাঙ্গো হাড়’ (Ishango Bone) সেই প্রমাণ বহন করে। ৪ ইঞ্চি লম্বা (১০ সেন্টিমিটার) এই হাড়টিতে (সম্ভবত বাবুন বা বন্য বিড়ালের) খোঁচানো ছিল অসংখ্য সমান্তরাল দাগ। গবেষকেরা মনে করেন, এটি ছিল একধরনের ট্যালি বা গণনার রেকর্ড। ১৯৭০ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার মার্শাক দাবি করেন, এটি সম্ভবত ছয় মাসের একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার।
আরও প্রাচীন এক নিদর্শন হলো ‘লেবোম্বো হাড়’ (Lebombo Bone), যা দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৭০-এর দশকে আবিষ্কৃত হয়। প্রায় ৪৩ হাজার বছর পুরোনো এই হাড়েও খোঁচানো ছিল অনেকগুলো দাগ। ধারণা করা হয়, এটি হয়তো ২৯ দিনের চন্দ্র মাস বা নারীর ঋতুচক্রের হিসাব রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো।
ডেনমার্কের ইতিহাসবিদ জেন্স হেয়ারুপ বলেন, ‘গণনার সূচনালগ্ন আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়, তবে সম্ভবত তা রাতের আকাশের পর্যবেক্ষণ থেকেই উদ্ভূত হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন কোনো কৃত্রিম আলো ছিল না, কেবল গুহার আগুন। আর আলোক দূষণহীন সেই আকাশে চাঁদ-তারা দেখাটাই ছিল এক বিস্ময়।’
সুমেরীয়দের গণিতচর্চা
গণিতের পরবর্তী বড় ধাপ এসেছিল প্রাচীন সুমেরীয়দের হাত ধরে। তারা কিউনিফর্ম নামক প্রাচীনতম লেখার পদ্ধতি উদ্ভাবনের কৃতিত্বও পায়। বর্তমান ইরাকের দক্ষিণাংশে অবস্থিত সুমেরীয় নগররাষ্ট্রগুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল।
তারা কাদার ফলকে লিপিবদ্ধ করত সংখ্যার বিভিন্ন রূপ। তারা যে সংখ্যা পদ্ধতি (সেক্সাজেসিমেল) ব্যবহার করত, সেটিই আজকের যুগের ঘড়ি, ত্রিকোণমিতি ও নেভিগেশনের (পথ নির্দেশনা) ভিত্তি—অর্থাৎ ৬০ ভিত্তিক পদ্ধতি।
সুমেরীয়রা শুধু সাধারণ গণনায় থেমে থাকেনি। তারা অ্যারিথমেটিক (পাটিগণিত) এবং অ্যালজেব্রার (বীজগণিত) প্রাথমিক রূপও তৈরি করেছিল। তারা আয়তক্ষেত্র, ত্রিভুজ ও অনিয়মিত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রও জানত, যা ব্যবহার করে তারা জমি মাপত এবং সেচ ব্যবস্থার নকশা করত।
সেন্ট লরেন্স ইউনিভার্সিটির গণিতবিদ ডানকান মেলভিল বলেন, সুমেরীয়দের আমলাতন্ত্রের চাহিদা থেকেই এই ধরনের গাণিতিক পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে।
তিনি বলেন, গুদামে যা কিছু ঢুকত বা বের হতো, শুধু তার সংখ্যা নয়—তার পরিমাণও জানতে হতো তাদের।
সুমীয়রা বিভিন্ন এককে হিসাব করত এবং ক্ষেত্রের মাপ থেকে ক্ষেত্রফল বের করার মতো কাজে জ্যামিতি ও গাণিতিক রূপান্তর ব্যবহার করত। এখান থেকেই পাটিগণিত ও গণনামূলক জ্যামিতির সূচনা বলে মনে করেন মেলভিল।
আধুনিক গণিতের উত্থান
সুমেরীয় এবং তাদের উত্তরসূরি ব্যাবিলনীয়দের মতোই, প্রাচীন মিসর, গ্রিস, ভারত ও চীনের সভ্যতাও গণিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পরবর্তীকালে ইসলামি সভ্যতার সময় গণিতে নতুন ধারা সংযোজিত হয়।
আধুনিক ইউরোপে গণিতের বিকাশ ঘটে দুর্দান্ত গতিতে। বিশেষ করে ক্যালকুলাসের উদ্ভাবন এক নতুন যুগের সূচনা করে। ক্যালকুলাস হলো এমন একটি গাণিতিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে যেকোনো বক্ররেখার নিচের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়—যা আধুনিক প্রকৌশল ও বিজ্ঞানের ভিত্তি।
ক্যালকুলাস আবিষ্কারের দাবিদার ছিলেন দুজন বিজ্ঞানী—ইংরেজ আইজ্যাক নিউটন এবং জার্মান গণিতজ্ঞ গটফ্রিড উইলহেম লাইবনিজ। নিউটন তাঁর ১৬৮৭ সালের গ্রন্থ প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকাতে ‘ফ্লাক্সনের পদ্ধতি’ নামে ক্যালকুলাসের কথা বলেন। অন্যদিকে, লাইবনিজ কিছু বছর আগেই ক্যালকুলাসের ডিফেরেন্সিয়াল (ব্যবকলান) ও ইন্টেগ্রাল-সংক্রান্ত (সমাকলন) পদ্ধতি প্রকাশ করেছিলেন। লাইবনিজের গাণিতিক সংকেত আজও ব্যবহৃত হয়।
দুই বিজ্ঞানীর মধ্যে এই আবিষ্কার নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। নিউটনের অনুসারীরা লাইবনিজের বিরুদ্ধে তাঁর অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি চুরি করার অভিযোগও তোলেন। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁরা পরস্পর স্বাধীনভাবে ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে পারদর্শী হতে পারত না। হাজার হাজার বছর আগে থেকেই গণনা করছিল আমাদের প্রজাতি।
প্রাচীন গণনার প্রমাণ
গণনার শুরু বহু আগেই—সম্ভবত ২০ হাজার বছরেরও আগে। আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে পাওয়া ‘ইশাঙ্গো হাড়’ (Ishango Bone) সেই প্রমাণ বহন করে। ৪ ইঞ্চি লম্বা (১০ সেন্টিমিটার) এই হাড়টিতে (সম্ভবত বাবুন বা বন্য বিড়ালের) খোঁচানো ছিল অসংখ্য সমান্তরাল দাগ। গবেষকেরা মনে করেন, এটি ছিল একধরনের ট্যালি বা গণনার রেকর্ড। ১৯৭০ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার মার্শাক দাবি করেন, এটি সম্ভবত ছয় মাসের একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার।
আরও প্রাচীন এক নিদর্শন হলো ‘লেবোম্বো হাড়’ (Lebombo Bone), যা দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৭০-এর দশকে আবিষ্কৃত হয়। প্রায় ৪৩ হাজার বছর পুরোনো এই হাড়েও খোঁচানো ছিল অনেকগুলো দাগ। ধারণা করা হয়, এটি হয়তো ২৯ দিনের চন্দ্র মাস বা নারীর ঋতুচক্রের হিসাব রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো।
ডেনমার্কের ইতিহাসবিদ জেন্স হেয়ারুপ বলেন, ‘গণনার সূচনালগ্ন আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়, তবে সম্ভবত তা রাতের আকাশের পর্যবেক্ষণ থেকেই উদ্ভূত হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন কোনো কৃত্রিম আলো ছিল না, কেবল গুহার আগুন। আর আলোক দূষণহীন সেই আকাশে চাঁদ-তারা দেখাটাই ছিল এক বিস্ময়।’
সুমেরীয়দের গণিতচর্চা
গণিতের পরবর্তী বড় ধাপ এসেছিল প্রাচীন সুমেরীয়দের হাত ধরে। তারা কিউনিফর্ম নামক প্রাচীনতম লেখার পদ্ধতি উদ্ভাবনের কৃতিত্বও পায়। বর্তমান ইরাকের দক্ষিণাংশে অবস্থিত সুমেরীয় নগররাষ্ট্রগুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল।
তারা কাদার ফলকে লিপিবদ্ধ করত সংখ্যার বিভিন্ন রূপ। তারা যে সংখ্যা পদ্ধতি (সেক্সাজেসিমেল) ব্যবহার করত, সেটিই আজকের যুগের ঘড়ি, ত্রিকোণমিতি ও নেভিগেশনের (পথ নির্দেশনা) ভিত্তি—অর্থাৎ ৬০ ভিত্তিক পদ্ধতি।
সুমেরীয়রা শুধু সাধারণ গণনায় থেমে থাকেনি। তারা অ্যারিথমেটিক (পাটিগণিত) এবং অ্যালজেব্রার (বীজগণিত) প্রাথমিক রূপও তৈরি করেছিল। তারা আয়তক্ষেত্র, ত্রিভুজ ও অনিয়মিত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রও জানত, যা ব্যবহার করে তারা জমি মাপত এবং সেচ ব্যবস্থার নকশা করত।
সেন্ট লরেন্স ইউনিভার্সিটির গণিতবিদ ডানকান মেলভিল বলেন, সুমেরীয়দের আমলাতন্ত্রের চাহিদা থেকেই এই ধরনের গাণিতিক পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে।
তিনি বলেন, গুদামে যা কিছু ঢুকত বা বের হতো, শুধু তার সংখ্যা নয়—তার পরিমাণও জানতে হতো তাদের।
সুমীয়রা বিভিন্ন এককে হিসাব করত এবং ক্ষেত্রের মাপ থেকে ক্ষেত্রফল বের করার মতো কাজে জ্যামিতি ও গাণিতিক রূপান্তর ব্যবহার করত। এখান থেকেই পাটিগণিত ও গণনামূলক জ্যামিতির সূচনা বলে মনে করেন মেলভিল।
আধুনিক গণিতের উত্থান
সুমেরীয় এবং তাদের উত্তরসূরি ব্যাবিলনীয়দের মতোই, প্রাচীন মিসর, গ্রিস, ভারত ও চীনের সভ্যতাও গণিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পরবর্তীকালে ইসলামি সভ্যতার সময় গণিতে নতুন ধারা সংযোজিত হয়।
আধুনিক ইউরোপে গণিতের বিকাশ ঘটে দুর্দান্ত গতিতে। বিশেষ করে ক্যালকুলাসের উদ্ভাবন এক নতুন যুগের সূচনা করে। ক্যালকুলাস হলো এমন একটি গাণিতিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে যেকোনো বক্ররেখার নিচের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়—যা আধুনিক প্রকৌশল ও বিজ্ঞানের ভিত্তি।
ক্যালকুলাস আবিষ্কারের দাবিদার ছিলেন দুজন বিজ্ঞানী—ইংরেজ আইজ্যাক নিউটন এবং জার্মান গণিতজ্ঞ গটফ্রিড উইলহেম লাইবনিজ। নিউটন তাঁর ১৬৮৭ সালের গ্রন্থ প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকাতে ‘ফ্লাক্সনের পদ্ধতি’ নামে ক্যালকুলাসের কথা বলেন। অন্যদিকে, লাইবনিজ কিছু বছর আগেই ক্যালকুলাসের ডিফেরেন্সিয়াল (ব্যবকলান) ও ইন্টেগ্রাল-সংক্রান্ত (সমাকলন) পদ্ধতি প্রকাশ করেছিলেন। লাইবনিজের গাণিতিক সংকেত আজও ব্যবহৃত হয়।
দুই বিজ্ঞানীর মধ্যে এই আবিষ্কার নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। নিউটনের অনুসারীরা লাইবনিজের বিরুদ্ধে তাঁর অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি চুরি করার অভিযোগও তোলেন। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁরা পরস্পর স্বাধীনভাবে ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে পারদর্শী হতে পারত না। হাজার হাজার বছর আগে থেকেই গণনা করছিল আমাদের প্রজাতি।
প্রাচীন গণনার প্রমাণ
গণনার শুরু বহু আগেই—সম্ভবত ২০ হাজার বছরেরও আগে। আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে পাওয়া ‘ইশাঙ্গো হাড়’ (Ishango Bone) সেই প্রমাণ বহন করে। ৪ ইঞ্চি লম্বা (১০ সেন্টিমিটার) এই হাড়টিতে (সম্ভবত বাবুন বা বন্য বিড়ালের) খোঁচানো ছিল অসংখ্য সমান্তরাল দাগ। গবেষকেরা মনে করেন, এটি ছিল একধরনের ট্যালি বা গণনার রেকর্ড। ১৯৭০ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার মার্শাক দাবি করেন, এটি সম্ভবত ছয় মাসের একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার।
আরও প্রাচীন এক নিদর্শন হলো ‘লেবোম্বো হাড়’ (Lebombo Bone), যা দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৭০-এর দশকে আবিষ্কৃত হয়। প্রায় ৪৩ হাজার বছর পুরোনো এই হাড়েও খোঁচানো ছিল অনেকগুলো দাগ। ধারণা করা হয়, এটি হয়তো ২৯ দিনের চন্দ্র মাস বা নারীর ঋতুচক্রের হিসাব রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো।
ডেনমার্কের ইতিহাসবিদ জেন্স হেয়ারুপ বলেন, ‘গণনার সূচনালগ্ন আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়, তবে সম্ভবত তা রাতের আকাশের পর্যবেক্ষণ থেকেই উদ্ভূত হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন কোনো কৃত্রিম আলো ছিল না, কেবল গুহার আগুন। আর আলোক দূষণহীন সেই আকাশে চাঁদ-তারা দেখাটাই ছিল এক বিস্ময়।’
সুমেরীয়দের গণিতচর্চা
গণিতের পরবর্তী বড় ধাপ এসেছিল প্রাচীন সুমেরীয়দের হাত ধরে। তারা কিউনিফর্ম নামক প্রাচীনতম লেখার পদ্ধতি উদ্ভাবনের কৃতিত্বও পায়। বর্তমান ইরাকের দক্ষিণাংশে অবস্থিত সুমেরীয় নগররাষ্ট্রগুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল।
তারা কাদার ফলকে লিপিবদ্ধ করত সংখ্যার বিভিন্ন রূপ। তারা যে সংখ্যা পদ্ধতি (সেক্সাজেসিমেল) ব্যবহার করত, সেটিই আজকের যুগের ঘড়ি, ত্রিকোণমিতি ও নেভিগেশনের (পথ নির্দেশনা) ভিত্তি—অর্থাৎ ৬০ ভিত্তিক পদ্ধতি।
সুমেরীয়রা শুধু সাধারণ গণনায় থেমে থাকেনি। তারা অ্যারিথমেটিক (পাটিগণিত) এবং অ্যালজেব্রার (বীজগণিত) প্রাথমিক রূপও তৈরি করেছিল। তারা আয়তক্ষেত্র, ত্রিভুজ ও অনিয়মিত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রও জানত, যা ব্যবহার করে তারা জমি মাপত এবং সেচ ব্যবস্থার নকশা করত।
সেন্ট লরেন্স ইউনিভার্সিটির গণিতবিদ ডানকান মেলভিল বলেন, সুমেরীয়দের আমলাতন্ত্রের চাহিদা থেকেই এই ধরনের গাণিতিক পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে।
তিনি বলেন, গুদামে যা কিছু ঢুকত বা বের হতো, শুধু তার সংখ্যা নয়—তার পরিমাণও জানতে হতো তাদের।
সুমীয়রা বিভিন্ন এককে হিসাব করত এবং ক্ষেত্রের মাপ থেকে ক্ষেত্রফল বের করার মতো কাজে জ্যামিতি ও গাণিতিক রূপান্তর ব্যবহার করত। এখান থেকেই পাটিগণিত ও গণনামূলক জ্যামিতির সূচনা বলে মনে করেন মেলভিল।
আধুনিক গণিতের উত্থান
সুমেরীয় এবং তাদের উত্তরসূরি ব্যাবিলনীয়দের মতোই, প্রাচীন মিসর, গ্রিস, ভারত ও চীনের সভ্যতাও গণিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পরবর্তীকালে ইসলামি সভ্যতার সময় গণিতে নতুন ধারা সংযোজিত হয়।
আধুনিক ইউরোপে গণিতের বিকাশ ঘটে দুর্দান্ত গতিতে। বিশেষ করে ক্যালকুলাসের উদ্ভাবন এক নতুন যুগের সূচনা করে। ক্যালকুলাস হলো এমন একটি গাণিতিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে যেকোনো বক্ররেখার নিচের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়—যা আধুনিক প্রকৌশল ও বিজ্ঞানের ভিত্তি।
ক্যালকুলাস আবিষ্কারের দাবিদার ছিলেন দুজন বিজ্ঞানী—ইংরেজ আইজ্যাক নিউটন এবং জার্মান গণিতজ্ঞ গটফ্রিড উইলহেম লাইবনিজ। নিউটন তাঁর ১৬৮৭ সালের গ্রন্থ প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকাতে ‘ফ্লাক্সনের পদ্ধতি’ নামে ক্যালকুলাসের কথা বলেন। অন্যদিকে, লাইবনিজ কিছু বছর আগেই ক্যালকুলাসের ডিফেরেন্সিয়াল (ব্যবকলান) ও ইন্টেগ্রাল-সংক্রান্ত (সমাকলন) পদ্ধতি প্রকাশ করেছিলেন। লাইবনিজের গাণিতিক সংকেত আজও ব্যবহৃত হয়।
দুই বিজ্ঞানীর মধ্যে এই আবিষ্কার নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। নিউটনের অনুসারীরা লাইবনিজের বিরুদ্ধে তাঁর অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি চুরি করার অভিযোগও তোলেন। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁরা পরস্পর স্বাধীনভাবে ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে পারদর্শী হতে পারত না। হাজার হাজার বছর আগে থেকেই গণনা করছিল আমাদের প্রজাতি।
প্রাচীন গণনার প্রমাণ
গণনার শুরু বহু আগেই—সম্ভবত ২০ হাজার বছরেরও আগে। আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে পাওয়া ‘ইশাঙ্গো হাড়’ (Ishango Bone) সেই প্রমাণ বহন করে। ৪ ইঞ্চি লম্বা (১০ সেন্টিমিটার) এই হাড়টিতে (সম্ভবত বাবুন বা বন্য বিড়ালের) খোঁচানো ছিল অসংখ্য সমান্তরাল দাগ। গবেষকেরা মনে করেন, এটি ছিল একধরনের ট্যালি বা গণনার রেকর্ড। ১৯৭০ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার মার্শাক দাবি করেন, এটি সম্ভবত ছয় মাসের একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার।
আরও প্রাচীন এক নিদর্শন হলো ‘লেবোম্বো হাড়’ (Lebombo Bone), যা দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৭০-এর দশকে আবিষ্কৃত হয়। প্রায় ৪৩ হাজার বছর পুরোনো এই হাড়েও খোঁচানো ছিল অনেকগুলো দাগ। ধারণা করা হয়, এটি হয়তো ২৯ দিনের চন্দ্র মাস বা নারীর ঋতুচক্রের হিসাব রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো।
ডেনমার্কের ইতিহাসবিদ জেন্স হেয়ারুপ বলেন, ‘গণনার সূচনালগ্ন আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়, তবে সম্ভবত তা রাতের আকাশের পর্যবেক্ষণ থেকেই উদ্ভূত হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন কোনো কৃত্রিম আলো ছিল না, কেবল গুহার আগুন। আর আলোক দূষণহীন সেই আকাশে চাঁদ-তারা দেখাটাই ছিল এক বিস্ময়।’
সুমেরীয়দের গণিতচর্চা
গণিতের পরবর্তী বড় ধাপ এসেছিল প্রাচীন সুমেরীয়দের হাত ধরে। তারা কিউনিফর্ম নামক প্রাচীনতম লেখার পদ্ধতি উদ্ভাবনের কৃতিত্বও পায়। বর্তমান ইরাকের দক্ষিণাংশে অবস্থিত সুমেরীয় নগররাষ্ট্রগুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল।
তারা কাদার ফলকে লিপিবদ্ধ করত সংখ্যার বিভিন্ন রূপ। তারা যে সংখ্যা পদ্ধতি (সেক্সাজেসিমেল) ব্যবহার করত, সেটিই আজকের যুগের ঘড়ি, ত্রিকোণমিতি ও নেভিগেশনের (পথ নির্দেশনা) ভিত্তি—অর্থাৎ ৬০ ভিত্তিক পদ্ধতি।
সুমেরীয়রা শুধু সাধারণ গণনায় থেমে থাকেনি। তারা অ্যারিথমেটিক (পাটিগণিত) এবং অ্যালজেব্রার (বীজগণিত) প্রাথমিক রূপও তৈরি করেছিল। তারা আয়তক্ষেত্র, ত্রিভুজ ও অনিয়মিত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রও জানত, যা ব্যবহার করে তারা জমি মাপত এবং সেচ ব্যবস্থার নকশা করত।
সেন্ট লরেন্স ইউনিভার্সিটির গণিতবিদ ডানকান মেলভিল বলেন, সুমেরীয়দের আমলাতন্ত্রের চাহিদা থেকেই এই ধরনের গাণিতিক পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে।
তিনি বলেন, গুদামে যা কিছু ঢুকত বা বের হতো, শুধু তার সংখ্যা নয়—তার পরিমাণও জানতে হতো তাদের।
সুমীয়রা বিভিন্ন এককে হিসাব করত এবং ক্ষেত্রের মাপ থেকে ক্ষেত্রফল বের করার মতো কাজে জ্যামিতি ও গাণিতিক রূপান্তর ব্যবহার করত। এখান থেকেই পাটিগণিত ও গণনামূলক জ্যামিতির সূচনা বলে মনে করেন মেলভিল।
আধুনিক গণিতের উত্থান
সুমেরীয় এবং তাদের উত্তরসূরি ব্যাবিলনীয়দের মতোই, প্রাচীন মিসর, গ্রিস, ভারত ও চীনের সভ্যতাও গণিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পরবর্তীকালে ইসলামি সভ্যতার সময় গণিতে নতুন ধারা সংযোজিত হয়।
আধুনিক ইউরোপে গণিতের বিকাশ ঘটে দুর্দান্ত গতিতে। বিশেষ করে ক্যালকুলাসের উদ্ভাবন এক নতুন যুগের সূচনা করে। ক্যালকুলাস হলো এমন একটি গাণিতিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে যেকোনো বক্ররেখার নিচের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়—যা আধুনিক প্রকৌশল ও বিজ্ঞানের ভিত্তি।
ক্যালকুলাস আবিষ্কারের দাবিদার ছিলেন দুজন বিজ্ঞানী—ইংরেজ আইজ্যাক নিউটন এবং জার্মান গণিতজ্ঞ গটফ্রিড উইলহেম লাইবনিজ। নিউটন তাঁর ১৬৮৭ সালের গ্রন্থ প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকাতে ‘ফ্লাক্সনের পদ্ধতি’ নামে ক্যালকুলাসের কথা বলেন। অন্যদিকে, লাইবনিজ কিছু বছর আগেই ক্যালকুলাসের ডিফেরেন্সিয়াল (ব্যবকলান) ও ইন্টেগ্রাল-সংক্রান্ত (সমাকলন) পদ্ধতি প্রকাশ করেছিলেন। লাইবনিজের গাণিতিক সংকেত আজও ব্যবহৃত হয়।
দুই বিজ্ঞানীর মধ্যে এই আবিষ্কার নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। নিউটনের অনুসারীরা লাইবনিজের বিরুদ্ধে তাঁর অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি চুরি করার অভিযোগও তোলেন। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁরা পরস্পর স্বাধীনভাবে ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৪ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
নিউরোকম্পিউটিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবমস্তিষ্কের ‘নিউরাল ওয়্যারিং’ পদ্ধতি অনুকরণ করে জেনারেটিভ এআই এবং চ্যাটজিপিটির মতো অন্যান্য আধুনিক এআই মডেলে ব্যবহৃত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যেতে পারে।
তাঁরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (টিএসএম)। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নিউরন কেবল কাছের বা সম্পর্কিত নিউরনের সঙ্গে যুক্ত হয় যেভাবে মানুষের মস্তিষ্ক দক্ষতার সঙ্গে তথ্য সংগঠিত করে গুছিয়ে সংরক্ষণ করে।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র লেকচারার ড. রোমান বাউয়ার বলেন, ‘খুব বেশি শক্তি না খরচ করেও বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব। এতে পারফরম্যান্সও কমে না। আমাদের গবেষণা তা ই বলছে।’
গবেষকেরা জানান, অপ্রয়োজনীয় বিপুলসংখ্যক সংযোগ বাদ দেয় এই মডেলটি। যার ফলে নির্ভুলতা বজায় রেখে এআই আরও দ্রুত ও টেকসইভাবে কাজ করতে পারে।
ড. বাউয়ার বলেন, ‘বর্তমানে বড় বড় এআই মডেলগুলো প্রশিক্ষণ দিতে ১০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ লাগে। যে গতিতে এআই মডেল বাড়ছে, তাতে এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের জন্য একেবারেই টেকসই ও নির্ভরযোগ্য নয়।’
এই পদ্ধতির একটি উন্নত সংস্করণও তৈরি করেছেন গবেষকেরা। এর নাম দিয়েছেন এনহ্যান্সড টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (ইটিএসএম)। এটি ‘প্রুনিং’-এর মতো করে অপ্রয়োজনীয় সংযোগগুলো ছাঁটাই করে ফেলে। যার ফলে এআই আরও দক্ষ ও কার্যকর হয়ে ওঠে।
এটি মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে শেখার সময় ধীরে ধীরে নিজের স্নায়ু সংযোগগুলো পরিশুদ্ধ বা সাজিয়ে নেয়, তার মতোই।
গবেষকেরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন যে এই পদ্ধতিতে ‘নিওরোমরফিক কম্পিউটার’ তৈরি করা যায় কি না, যেগুলো একদম মানুষের মস্তিষ্কের মতোভাবে চিন্তা ও কাজ করতে পারবে।

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
নিউরোকম্পিউটিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবমস্তিষ্কের ‘নিউরাল ওয়্যারিং’ পদ্ধতি অনুকরণ করে জেনারেটিভ এআই এবং চ্যাটজিপিটির মতো অন্যান্য আধুনিক এআই মডেলে ব্যবহৃত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যেতে পারে।
তাঁরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (টিএসএম)। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নিউরন কেবল কাছের বা সম্পর্কিত নিউরনের সঙ্গে যুক্ত হয় যেভাবে মানুষের মস্তিষ্ক দক্ষতার সঙ্গে তথ্য সংগঠিত করে গুছিয়ে সংরক্ষণ করে।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র লেকচারার ড. রোমান বাউয়ার বলেন, ‘খুব বেশি শক্তি না খরচ করেও বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব। এতে পারফরম্যান্সও কমে না। আমাদের গবেষণা তা ই বলছে।’
গবেষকেরা জানান, অপ্রয়োজনীয় বিপুলসংখ্যক সংযোগ বাদ দেয় এই মডেলটি। যার ফলে নির্ভুলতা বজায় রেখে এআই আরও দ্রুত ও টেকসইভাবে কাজ করতে পারে।
ড. বাউয়ার বলেন, ‘বর্তমানে বড় বড় এআই মডেলগুলো প্রশিক্ষণ দিতে ১০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ লাগে। যে গতিতে এআই মডেল বাড়ছে, তাতে এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের জন্য একেবারেই টেকসই ও নির্ভরযোগ্য নয়।’
এই পদ্ধতির একটি উন্নত সংস্করণও তৈরি করেছেন গবেষকেরা। এর নাম দিয়েছেন এনহ্যান্সড টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (ইটিএসএম)। এটি ‘প্রুনিং’-এর মতো করে অপ্রয়োজনীয় সংযোগগুলো ছাঁটাই করে ফেলে। যার ফলে এআই আরও দক্ষ ও কার্যকর হয়ে ওঠে।
এটি মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে শেখার সময় ধীরে ধীরে নিজের স্নায়ু সংযোগগুলো পরিশুদ্ধ বা সাজিয়ে নেয়, তার মতোই।
গবেষকেরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন যে এই পদ্ধতিতে ‘নিওরোমরফিক কম্পিউটার’ তৈরি করা যায় কি না, যেগুলো একদম মানুষের মস্তিষ্কের মতোভাবে চিন্তা ও কাজ করতে পারবে।

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে...
১২ মে ২০২৫
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৪ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও ঘন ঘন ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ‘প্যাসিভ রেডিয়েটিভ কুলিং’ প্রযুক্তির এই নতুন রং গরমের সময় ঘরকে শীতল রাখার পথ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত রঙের প্রলেপটি সূর্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ বিকিরণ প্রতিফলিত করে। এর ফলে ছাদ সূর্যালোক শোষণ না করে ঠান্ডা থাকে। আর রংটির তাপ নির্গমন ক্ষমতাও খুব বেশি, তাই পরিষ্কার আকাশে এটি সহজেই বাতাসে তাপ ছড়িয়ে দিতে পারে।
নেতো বলেন, ‘রোদের মধ্যেও এই রং করা ছাদ আশপাশের বাতাসের চেয়ে শীতল থাকে।’
এই শীতল পৃষ্ঠে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির তৈরি হয়। সাধারণত রাতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা শিশির জমে, কিন্তু এই আবরণ ব্যবহার করলে তা আট থেকে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ছয় মাসের পরীক্ষায় গবেষকেরা এই প্রলেপটি সিডনি ন্যানোসায়েন্স হাবের ছাদে ব্যবহার করেন। তবে প্রলেপটির ওপর একটি অতিবেগুনি রশ্মি-প্রতিরোধী স্তর যোগ করা হয়, যা শিশিরবিন্দু সংগ্রহে সহায়তা করে। তাঁরা দেখেছেন, এই রঙের সাহায্যে বছরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় প্রতিদিন প্রতি বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ৩৯০ মিলিলিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব। অর্থাৎ ২০০ বর্গমিটার আকারের একটি ছাদে অনুকূল দিনে গড়ে প্রায় ৭০ লিটার পানি পাওয়া যেতে পারে।
অধ্যাপক নেতো বলেন, ‘এই প্রযুক্তি শহরাঞ্চলে গরমের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। যেখানে ইনসুলেশন দুর্বল, সেখানে ছাদের তাপমাত্রা কমে গেলে ঘরের ভেতরের তাপও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।’
বর্তমানে গবেষকেরা রংটির বাণিজ্যিক সংস্করণ তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এটি ভালো মানের সাধারণ রঙের মতোই দামে পাওয়া যাবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেবাস্টিয়ান ফাউচ বলেছেন, ‘এই ধরনের কুল কোটিং প্রযুক্তি এক দশক ধরে উন্নয়নাধীন, কিন্তু এখনো ব্যাপকভাবে বাজারে আসেনি। সম্ভবত ২০৩০ সালের আগেই তা ঘটবে।’

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও ঘন ঘন ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ‘প্যাসিভ রেডিয়েটিভ কুলিং’ প্রযুক্তির এই নতুন রং গরমের সময় ঘরকে শীতল রাখার পথ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত রঙের প্রলেপটি সূর্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ বিকিরণ প্রতিফলিত করে। এর ফলে ছাদ সূর্যালোক শোষণ না করে ঠান্ডা থাকে। আর রংটির তাপ নির্গমন ক্ষমতাও খুব বেশি, তাই পরিষ্কার আকাশে এটি সহজেই বাতাসে তাপ ছড়িয়ে দিতে পারে।
নেতো বলেন, ‘রোদের মধ্যেও এই রং করা ছাদ আশপাশের বাতাসের চেয়ে শীতল থাকে।’
এই শীতল পৃষ্ঠে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির তৈরি হয়। সাধারণত রাতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা শিশির জমে, কিন্তু এই আবরণ ব্যবহার করলে তা আট থেকে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ছয় মাসের পরীক্ষায় গবেষকেরা এই প্রলেপটি সিডনি ন্যানোসায়েন্স হাবের ছাদে ব্যবহার করেন। তবে প্রলেপটির ওপর একটি অতিবেগুনি রশ্মি-প্রতিরোধী স্তর যোগ করা হয়, যা শিশিরবিন্দু সংগ্রহে সহায়তা করে। তাঁরা দেখেছেন, এই রঙের সাহায্যে বছরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় প্রতিদিন প্রতি বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ৩৯০ মিলিলিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব। অর্থাৎ ২০০ বর্গমিটার আকারের একটি ছাদে অনুকূল দিনে গড়ে প্রায় ৭০ লিটার পানি পাওয়া যেতে পারে।
অধ্যাপক নেতো বলেন, ‘এই প্রযুক্তি শহরাঞ্চলে গরমের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। যেখানে ইনসুলেশন দুর্বল, সেখানে ছাদের তাপমাত্রা কমে গেলে ঘরের ভেতরের তাপও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।’
বর্তমানে গবেষকেরা রংটির বাণিজ্যিক সংস্করণ তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এটি ভালো মানের সাধারণ রঙের মতোই দামে পাওয়া যাবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেবাস্টিয়ান ফাউচ বলেছেন, ‘এই ধরনের কুল কোটিং প্রযুক্তি এক দশক ধরে উন্নয়নাধীন, কিন্তু এখনো ব্যাপকভাবে বাজারে আসেনি। সম্ভবত ২০৩০ সালের আগেই তা ঘটবে।’

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে...
১২ মে ২০২৫
মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
১ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন এমন এক উপায় বের করতে, যাতে নকল দাঁতের বদলে মানুষের নিজস্ব জৈব দাঁতই চোয়ালে জন্ম নিতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, লন্ডনের কিংস কলেজের রিজেনারেটিভ ডেন্টিস্ট্রির পরিচালক অধ্যাপক আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপোনি প্রায় দুই দশক ধরে ল্যাবে দাঁত গজানোর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালে তিনি এমন এক দলের সদস্য ছিলেন যারা মানব ও ইঁদুরের কোষ ব্যবহার করে একটি দাঁত তৈরি করেছিল। এই বছর তাঁর নেতৃত্বে নতুন এক গবেষণায় দাঁত তৈরির জন্য ব্যবহৃত ‘স্ক্যাফোল্ড’ বা পরিবেশকে আরও বাস্তবসম্মতভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। মানব কোষ ব্যবহার করে সত্যিকারের দাঁত তৈরির পথে এটিকে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভলপোনি জানান, ১৯৮০-এর দশক থেকেই ল্যাবে দাঁত তৈরির ধারণা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। তাঁর দল প্রথমবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাড়ির কোষ (যা মুখের ভেতরের অংশ থেকে সহজে সংগ্রহ করা যায়) ব্যবহার করে ইঁদুরের ভ্রূণ দাঁতের ‘প্রোজেনিটর’ কোষের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতের মূল কাঠামো তৈরি করেছিল। তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের কোষ পরস্পরের সঙ্গে এক হয়ে দাঁত তৈরি করে। আর তৃতীয় উপাদান হলো সেই পরিবেশ, যেখানে এটি ঘটে।’
জানা গেছে, যথার্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে কোলাজেন প্রোটিন দিয়ে স্ক্যাফোল্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘হাইড্রোজেল’ নামে এক ধরনের পানি শোষণকারী পলিমার।
কিংস কলেজের গবেষক শুয়েচেন ঝ্যাং জানান, ইঁদুরের ভ্রূণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে হাইড্রোজেলে স্থাপন করার আট দিন পর দাঁতের মতো গঠন তৈরি হয়। এটি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় তৈরি। আগের গবেষণায় এই দাঁতের বীজ ইঁদুরের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়ে তা শিকড় ও এনামেলসহ দাঁতে রূপ নিয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনো মানুষের জন্য ব্যবহার উপযোগী দাঁত তৈরি অনেক দূরের বিষয়। কিন্তু নতুন এই উপাদান কোষগুলোর মধ্যে সমন্বয়কে আরও কার্যকর করছে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না কীভাবে ইঁদুরের ভ্রূণ কোষের বদলে সম্পূর্ণ মানব কোষ দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।
ভলপোনি ভবিষ্যতে দুইভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছেন। এক, ল্যাবে দাঁত আংশিকভাবে গজিয়ে সেটি রোগীর দাঁতের গর্তে প্রতিস্থাপন করা; দুই, পুরো দাঁত তৈরি করে তা সার্জারির মাধ্যমে স্থাপন করা।
যদি সফল হওয়া যায়, তবে এই প্রক্রিয়ায় রোগীর নিজস্ব কোষ থেকে জন্ম নেওয়া দাঁত শরীর সহজেই গ্রহণ করবে, প্রদাহ বা প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি থাকবে না, আর এটি স্বাভাবিক দাঁতের মতোই অনুভূত হবে—নকল দাঁতে যা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী এক দশকের মধ্যেই ল্যাবে জন্ম নেওয়া জৈব দাঁত মানুষের মুখে প্রতিস্থাপনের যুগ শুরু হতে পারে।

দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন এমন এক উপায় বের করতে, যাতে নকল দাঁতের বদলে মানুষের নিজস্ব জৈব দাঁতই চোয়ালে জন্ম নিতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, লন্ডনের কিংস কলেজের রিজেনারেটিভ ডেন্টিস্ট্রির পরিচালক অধ্যাপক আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপোনি প্রায় দুই দশক ধরে ল্যাবে দাঁত গজানোর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালে তিনি এমন এক দলের সদস্য ছিলেন যারা মানব ও ইঁদুরের কোষ ব্যবহার করে একটি দাঁত তৈরি করেছিল। এই বছর তাঁর নেতৃত্বে নতুন এক গবেষণায় দাঁত তৈরির জন্য ব্যবহৃত ‘স্ক্যাফোল্ড’ বা পরিবেশকে আরও বাস্তবসম্মতভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। মানব কোষ ব্যবহার করে সত্যিকারের দাঁত তৈরির পথে এটিকে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভলপোনি জানান, ১৯৮০-এর দশক থেকেই ল্যাবে দাঁত তৈরির ধারণা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। তাঁর দল প্রথমবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাড়ির কোষ (যা মুখের ভেতরের অংশ থেকে সহজে সংগ্রহ করা যায়) ব্যবহার করে ইঁদুরের ভ্রূণ দাঁতের ‘প্রোজেনিটর’ কোষের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতের মূল কাঠামো তৈরি করেছিল। তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের কোষ পরস্পরের সঙ্গে এক হয়ে দাঁত তৈরি করে। আর তৃতীয় উপাদান হলো সেই পরিবেশ, যেখানে এটি ঘটে।’
জানা গেছে, যথার্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে কোলাজেন প্রোটিন দিয়ে স্ক্যাফোল্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘হাইড্রোজেল’ নামে এক ধরনের পানি শোষণকারী পলিমার।
কিংস কলেজের গবেষক শুয়েচেন ঝ্যাং জানান, ইঁদুরের ভ্রূণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে হাইড্রোজেলে স্থাপন করার আট দিন পর দাঁতের মতো গঠন তৈরি হয়। এটি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় তৈরি। আগের গবেষণায় এই দাঁতের বীজ ইঁদুরের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়ে তা শিকড় ও এনামেলসহ দাঁতে রূপ নিয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনো মানুষের জন্য ব্যবহার উপযোগী দাঁত তৈরি অনেক দূরের বিষয়। কিন্তু নতুন এই উপাদান কোষগুলোর মধ্যে সমন্বয়কে আরও কার্যকর করছে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না কীভাবে ইঁদুরের ভ্রূণ কোষের বদলে সম্পূর্ণ মানব কোষ দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।
ভলপোনি ভবিষ্যতে দুইভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছেন। এক, ল্যাবে দাঁত আংশিকভাবে গজিয়ে সেটি রোগীর দাঁতের গর্তে প্রতিস্থাপন করা; দুই, পুরো দাঁত তৈরি করে তা সার্জারির মাধ্যমে স্থাপন করা।
যদি সফল হওয়া যায়, তবে এই প্রক্রিয়ায় রোগীর নিজস্ব কোষ থেকে জন্ম নেওয়া দাঁত শরীর সহজেই গ্রহণ করবে, প্রদাহ বা প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি থাকবে না, আর এটি স্বাভাবিক দাঁতের মতোই অনুভূত হবে—নকল দাঁতে যা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী এক দশকের মধ্যেই ল্যাবে জন্ম নেওয়া জৈব দাঁত মানুষের মুখে প্রতিস্থাপনের যুগ শুরু হতে পারে।

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে...
১২ মে ২০২৫
মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৪ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

বিজ্ঞানের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে গণিতকে। তবে মানুষ ঠিক কবে থেকে গণিত করতে শুরু করে, সেই প্রশ্নের উত্তর জটিল। কারণ, গাণিতিক চিন্তাধারা এবং আবিষ্কারগুলো দীর্ঘ সময়ে ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। কাউন্টিং বা গণনা ছিল গণিতের ভিত্তি। কারণ, মানুষ যদি প্রথমে গণনা করতে না শিখত, তবে তারা কখনোই জটিল ও বিমূর্ত গণিতে...
১২ মে ২০২৫
মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৪ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে