আজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে। তবে এই পরিবর্তনের কারণেই পৃথিবীতে প্রাণের বিস্তার সম্ভব হয়েছে বলে জানালেন গবেষকেরা।
২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ার সঙ্গে বাতাসে অক্সিজেন বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক আছে এবং এটি প্রাণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার জিওসায়েন্স’ সাময়িকীতে।
প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় নীলাভ সবুজ শৈবাল বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া। সূর্যালোকের সাহায্যে এরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন উৎপাদন করে। গবেষকেরা বলছেন, দিনের দৈর্ঘ্য যত বাড়তে থাকে, এই শৈবালগুলোর অক্সিজেন উৎপাদনের সময় তত বাড়ে। এর ফলেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধীরে ধীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞানী গ্রেগরি ডিক বলেন, ‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন কীভাবে এল, সেটা বহুদিন ধরেই বড় প্রশ্ন ছিল। আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর দিন যত দীর্ঘ হয়েছে, সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অক্সিজেন উৎপাদনও তত বেড়েছে।’
পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি ধীর হওয়ার পেছনে রয়েছে চাঁদের প্রভাব। চাঁদ পৃথিবীর ওপর মহাকর্ষীয় টান সৃষ্টি করে, যা ধীরে ধীরে পৃথিবীর ঘূর্ণন কমিয়ে দেয় এবং দিন দীর্ঘ করে।
গবেষণায় দেখা যায়, ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর দিনে সময় ছিল মাত্র ১৮ ঘণ্টা। আবার ৭০ মিলিয়ন বছর আগে দিন ছিল আধা ঘণ্টা কম দীর্ঘ, মানে বর্তমান দিনের চেয়ে ছোট। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতি শতকে দিনে গড়ে ১ দশমিক ৮ মিলিসেকেন্ড করে বাড়ছে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো ‘গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট’। এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিপুল সংখ্যায় বিস্তার লাভ করে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হঠাৎ করেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
তবে এ ঘটনা ঠিক কীভাবে ও কেন ঘটেছিল বা কেন এটি পৃথিবীর ইতিহাসের আরও আগেভাগে ঘটেনি, তা এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে এক রহস্য।
এই রহস্যের সূত্র খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ অণুজীব নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ পাওয়া গেছে একধরনের মাইক্রোবায়াল ম্যাট (ক্ষুদ্র জীব বা অণুজীব দিয়ে গঠিত একধরনের জীবন্ত স্তর। অণুজীববিদের সমন্বয়ে তৈরি হয় পাতলা স্তর)। এসব ম্যাটকে গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টে ভূমিকা রাখা প্রাচীন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার আধুনিক প্রতিরূপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই গবেষণার অংশ হিসেবে লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ মাইক্রোবায়াল ম্যাট নিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা।
এখানে দেখা যায়, রাত হলে সালফার খাদক সাদা অণুজীব ওপরে উঠে আসে, আর দিনের শুরুতে সূর্য উঠলে তারা নিচে নেমে যায় এবং নীল-সবুজ শৈবাল ওপরে উঠে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শুরু করে।
অক্সিজেন উৎপাদনকারী বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া এবং সালফার আহরণকারী সাদা অণুজীব একসঙ্গে বাস করে হ্রদের তলদেশে গঠিত মাইক্রোবায়াল ম্যাটে।
রাতের বেলায় সাদা অণুজীবগুলো ম্যাটের ওপরে উঠে আসে এবং সালফার চূর্ণ করে শক্তি উৎপাদন করে। কিন্তু ভোর হলে সূর্য আকাশে দেখা গেলে তারা ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়।
এরপর ওপরে উঠে আসে বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া, যারা সূর্যালোকের সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে।
তবে গবেষকেরা দেখতে পান, সূর্য ওঠার পর এই শৈবালদের কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগে। ফলে দিনের সময় যদি ছোট হয়, তাহলে অক্সিজেন উৎপাদনের সময়ও কমে যায়।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউটের জিওমাইক্রোবায়োলজিস্ট জুডিথ ক্লাট বলেন, ‘দিন যত ছোট, অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য সময় তত কমে। এতে অক্সিজেন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধীর হয়।’
এই ধারণাকে প্রমাণ করতে স্বাভাবিক পরিবেশ ও পরীক্ষাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অণুজীববিদদের নিয়ে পরীক্ষা ও পরিমাপ চালিয়েছে গবেষক দলটি। এরপর এই তথ্যের ভিত্তিতে সূর্যালোক, অণুজীবীয় অক্সিজেন উৎপাদন এবং পৃথিবীর ইতিহাসের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করতে বিস্তারিত মডেলিং গবেষণা পরিচালনা করেন তাঁরা।
এ সম্পর্কে জার্মানির লাইবনিজ সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল মেরিন রিসার্চর সামুদ্রিক বিজ্ঞানী অর্জুন চেন্নু বলেন, ‘আমাদের সাধারণ ধারণা বলে, দুটি ১২ ঘণ্টার দিন একটানা ২৪ ঘণ্টার দিনের মতোই হবে। এ ক্ষেত্রে সূর্যের আলো দ্বিগুণ গতিতে ওঠে ও নামে এবং অক্সিজেন উৎপাদনও ঠিক একই গতিতে পরিবর্তিত হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে তা হয় না, আর সেটাই এই গবেষণার চমক।
গবেষেকরা বলেন, তবে ব্যাকটেরিয়াল ম্যাট থেকে অক্সিজেন নিঃসরণ সূর্যালোকের গতির সঙ্গে সরাসরি তাল মেলাতে পারে না, কারণ এটি নির্ভর করে অণুগুলোর ছড়িয়ে পড়ার গতির ওপর। সূর্যালোক দ্রুত পরিবর্তিত হলেও অক্সিজেন তত দ্রুত নিঃসৃত হয় না। এই সূক্ষ্ম পার্থক্যের কারণে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
এই ফলাফল বৈশ্বিক অক্সিজেন মাত্রার মডেলে যুক্ত করা হলে দেখা যায়—পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ। শুধু গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টই নয়, বরং প্রায় ৫৫০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল আরও একটি বড় অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনা, যাকে বলা হয় ‘নিওপ্রোটেরোজোইক অক্সিজেনেশন ইভেন্ট’—এটিও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।
গবেষক চেন্নু আরও বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো একত্রিত করেছি, মলিকুলার ডিফিউশন থেকে শুরু করে গ্রহের গতিবিদ্যা পর্যন্ত। আমরা দেখিয়েছি যে, দিনের দৈর্ঘ্য এবং মাটির নিচে বাস করা অনুজীবগুলোর অক্সিজেন নিঃসরণের মধ্যে একটি মৌলিক সম্পর্ক রয়েছে।’
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে। তবে এই পরিবর্তনের কারণেই পৃথিবীতে প্রাণের বিস্তার সম্ভব হয়েছে বলে জানালেন গবেষকেরা।
২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ার সঙ্গে বাতাসে অক্সিজেন বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক আছে এবং এটি প্রাণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার জিওসায়েন্স’ সাময়িকীতে।
প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় নীলাভ সবুজ শৈবাল বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া। সূর্যালোকের সাহায্যে এরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন উৎপাদন করে। গবেষকেরা বলছেন, দিনের দৈর্ঘ্য যত বাড়তে থাকে, এই শৈবালগুলোর অক্সিজেন উৎপাদনের সময় তত বাড়ে। এর ফলেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধীরে ধীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞানী গ্রেগরি ডিক বলেন, ‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন কীভাবে এল, সেটা বহুদিন ধরেই বড় প্রশ্ন ছিল। আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর দিন যত দীর্ঘ হয়েছে, সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অক্সিজেন উৎপাদনও তত বেড়েছে।’
পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি ধীর হওয়ার পেছনে রয়েছে চাঁদের প্রভাব। চাঁদ পৃথিবীর ওপর মহাকর্ষীয় টান সৃষ্টি করে, যা ধীরে ধীরে পৃথিবীর ঘূর্ণন কমিয়ে দেয় এবং দিন দীর্ঘ করে।
গবেষণায় দেখা যায়, ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর দিনে সময় ছিল মাত্র ১৮ ঘণ্টা। আবার ৭০ মিলিয়ন বছর আগে দিন ছিল আধা ঘণ্টা কম দীর্ঘ, মানে বর্তমান দিনের চেয়ে ছোট। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতি শতকে দিনে গড়ে ১ দশমিক ৮ মিলিসেকেন্ড করে বাড়ছে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো ‘গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট’। এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিপুল সংখ্যায় বিস্তার লাভ করে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হঠাৎ করেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
তবে এ ঘটনা ঠিক কীভাবে ও কেন ঘটেছিল বা কেন এটি পৃথিবীর ইতিহাসের আরও আগেভাগে ঘটেনি, তা এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে এক রহস্য।
এই রহস্যের সূত্র খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ অণুজীব নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ পাওয়া গেছে একধরনের মাইক্রোবায়াল ম্যাট (ক্ষুদ্র জীব বা অণুজীব দিয়ে গঠিত একধরনের জীবন্ত স্তর। অণুজীববিদের সমন্বয়ে তৈরি হয় পাতলা স্তর)। এসব ম্যাটকে গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টে ভূমিকা রাখা প্রাচীন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার আধুনিক প্রতিরূপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই গবেষণার অংশ হিসেবে লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ মাইক্রোবায়াল ম্যাট নিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা।
এখানে দেখা যায়, রাত হলে সালফার খাদক সাদা অণুজীব ওপরে উঠে আসে, আর দিনের শুরুতে সূর্য উঠলে তারা নিচে নেমে যায় এবং নীল-সবুজ শৈবাল ওপরে উঠে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শুরু করে।
অক্সিজেন উৎপাদনকারী বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া এবং সালফার আহরণকারী সাদা অণুজীব একসঙ্গে বাস করে হ্রদের তলদেশে গঠিত মাইক্রোবায়াল ম্যাটে।
রাতের বেলায় সাদা অণুজীবগুলো ম্যাটের ওপরে উঠে আসে এবং সালফার চূর্ণ করে শক্তি উৎপাদন করে। কিন্তু ভোর হলে সূর্য আকাশে দেখা গেলে তারা ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়।
এরপর ওপরে উঠে আসে বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া, যারা সূর্যালোকের সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে।
তবে গবেষকেরা দেখতে পান, সূর্য ওঠার পর এই শৈবালদের কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগে। ফলে দিনের সময় যদি ছোট হয়, তাহলে অক্সিজেন উৎপাদনের সময়ও কমে যায়।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউটের জিওমাইক্রোবায়োলজিস্ট জুডিথ ক্লাট বলেন, ‘দিন যত ছোট, অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য সময় তত কমে। এতে অক্সিজেন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধীর হয়।’
এই ধারণাকে প্রমাণ করতে স্বাভাবিক পরিবেশ ও পরীক্ষাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অণুজীববিদদের নিয়ে পরীক্ষা ও পরিমাপ চালিয়েছে গবেষক দলটি। এরপর এই তথ্যের ভিত্তিতে সূর্যালোক, অণুজীবীয় অক্সিজেন উৎপাদন এবং পৃথিবীর ইতিহাসের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করতে বিস্তারিত মডেলিং গবেষণা পরিচালনা করেন তাঁরা।
এ সম্পর্কে জার্মানির লাইবনিজ সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল মেরিন রিসার্চর সামুদ্রিক বিজ্ঞানী অর্জুন চেন্নু বলেন, ‘আমাদের সাধারণ ধারণা বলে, দুটি ১২ ঘণ্টার দিন একটানা ২৪ ঘণ্টার দিনের মতোই হবে। এ ক্ষেত্রে সূর্যের আলো দ্বিগুণ গতিতে ওঠে ও নামে এবং অক্সিজেন উৎপাদনও ঠিক একই গতিতে পরিবর্তিত হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে তা হয় না, আর সেটাই এই গবেষণার চমক।
গবেষেকরা বলেন, তবে ব্যাকটেরিয়াল ম্যাট থেকে অক্সিজেন নিঃসরণ সূর্যালোকের গতির সঙ্গে সরাসরি তাল মেলাতে পারে না, কারণ এটি নির্ভর করে অণুগুলোর ছড়িয়ে পড়ার গতির ওপর। সূর্যালোক দ্রুত পরিবর্তিত হলেও অক্সিজেন তত দ্রুত নিঃসৃত হয় না। এই সূক্ষ্ম পার্থক্যের কারণে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
এই ফলাফল বৈশ্বিক অক্সিজেন মাত্রার মডেলে যুক্ত করা হলে দেখা যায়—পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ। শুধু গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টই নয়, বরং প্রায় ৫৫০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল আরও একটি বড় অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনা, যাকে বলা হয় ‘নিওপ্রোটেরোজোইক অক্সিজেনেশন ইভেন্ট’—এটিও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।
গবেষক চেন্নু আরও বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো একত্রিত করেছি, মলিকুলার ডিফিউশন থেকে শুরু করে গ্রহের গতিবিদ্যা পর্যন্ত। আমরা দেখিয়েছি যে, দিনের দৈর্ঘ্য এবং মাটির নিচে বাস করা অনুজীবগুলোর অক্সিজেন নিঃসরণের মধ্যে একটি মৌলিক সম্পর্ক রয়েছে।’
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে। তবে এই পরিবর্তনের কারণেই পৃথিবীতে প্রাণের বিস্তার সম্ভব হয়েছে বলে জানালেন গবেষকেরা।
২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ার সঙ্গে বাতাসে অক্সিজেন বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক আছে এবং এটি প্রাণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার জিওসায়েন্স’ সাময়িকীতে।
প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় নীলাভ সবুজ শৈবাল বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া। সূর্যালোকের সাহায্যে এরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন উৎপাদন করে। গবেষকেরা বলছেন, দিনের দৈর্ঘ্য যত বাড়তে থাকে, এই শৈবালগুলোর অক্সিজেন উৎপাদনের সময় তত বাড়ে। এর ফলেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধীরে ধীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞানী গ্রেগরি ডিক বলেন, ‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন কীভাবে এল, সেটা বহুদিন ধরেই বড় প্রশ্ন ছিল। আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর দিন যত দীর্ঘ হয়েছে, সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অক্সিজেন উৎপাদনও তত বেড়েছে।’
পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি ধীর হওয়ার পেছনে রয়েছে চাঁদের প্রভাব। চাঁদ পৃথিবীর ওপর মহাকর্ষীয় টান সৃষ্টি করে, যা ধীরে ধীরে পৃথিবীর ঘূর্ণন কমিয়ে দেয় এবং দিন দীর্ঘ করে।
গবেষণায় দেখা যায়, ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর দিনে সময় ছিল মাত্র ১৮ ঘণ্টা। আবার ৭০ মিলিয়ন বছর আগে দিন ছিল আধা ঘণ্টা কম দীর্ঘ, মানে বর্তমান দিনের চেয়ে ছোট। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতি শতকে দিনে গড়ে ১ দশমিক ৮ মিলিসেকেন্ড করে বাড়ছে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো ‘গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট’। এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিপুল সংখ্যায় বিস্তার লাভ করে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হঠাৎ করেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
তবে এ ঘটনা ঠিক কীভাবে ও কেন ঘটেছিল বা কেন এটি পৃথিবীর ইতিহাসের আরও আগেভাগে ঘটেনি, তা এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে এক রহস্য।
এই রহস্যের সূত্র খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ অণুজীব নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ পাওয়া গেছে একধরনের মাইক্রোবায়াল ম্যাট (ক্ষুদ্র জীব বা অণুজীব দিয়ে গঠিত একধরনের জীবন্ত স্তর। অণুজীববিদের সমন্বয়ে তৈরি হয় পাতলা স্তর)। এসব ম্যাটকে গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টে ভূমিকা রাখা প্রাচীন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার আধুনিক প্রতিরূপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই গবেষণার অংশ হিসেবে লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ মাইক্রোবায়াল ম্যাট নিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা।
এখানে দেখা যায়, রাত হলে সালফার খাদক সাদা অণুজীব ওপরে উঠে আসে, আর দিনের শুরুতে সূর্য উঠলে তারা নিচে নেমে যায় এবং নীল-সবুজ শৈবাল ওপরে উঠে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শুরু করে।
অক্সিজেন উৎপাদনকারী বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া এবং সালফার আহরণকারী সাদা অণুজীব একসঙ্গে বাস করে হ্রদের তলদেশে গঠিত মাইক্রোবায়াল ম্যাটে।
রাতের বেলায় সাদা অণুজীবগুলো ম্যাটের ওপরে উঠে আসে এবং সালফার চূর্ণ করে শক্তি উৎপাদন করে। কিন্তু ভোর হলে সূর্য আকাশে দেখা গেলে তারা ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়।
এরপর ওপরে উঠে আসে বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া, যারা সূর্যালোকের সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে।
তবে গবেষকেরা দেখতে পান, সূর্য ওঠার পর এই শৈবালদের কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগে। ফলে দিনের সময় যদি ছোট হয়, তাহলে অক্সিজেন উৎপাদনের সময়ও কমে যায়।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউটের জিওমাইক্রোবায়োলজিস্ট জুডিথ ক্লাট বলেন, ‘দিন যত ছোট, অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য সময় তত কমে। এতে অক্সিজেন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধীর হয়।’
এই ধারণাকে প্রমাণ করতে স্বাভাবিক পরিবেশ ও পরীক্ষাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অণুজীববিদদের নিয়ে পরীক্ষা ও পরিমাপ চালিয়েছে গবেষক দলটি। এরপর এই তথ্যের ভিত্তিতে সূর্যালোক, অণুজীবীয় অক্সিজেন উৎপাদন এবং পৃথিবীর ইতিহাসের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করতে বিস্তারিত মডেলিং গবেষণা পরিচালনা করেন তাঁরা।
এ সম্পর্কে জার্মানির লাইবনিজ সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল মেরিন রিসার্চর সামুদ্রিক বিজ্ঞানী অর্জুন চেন্নু বলেন, ‘আমাদের সাধারণ ধারণা বলে, দুটি ১২ ঘণ্টার দিন একটানা ২৪ ঘণ্টার দিনের মতোই হবে। এ ক্ষেত্রে সূর্যের আলো দ্বিগুণ গতিতে ওঠে ও নামে এবং অক্সিজেন উৎপাদনও ঠিক একই গতিতে পরিবর্তিত হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে তা হয় না, আর সেটাই এই গবেষণার চমক।
গবেষেকরা বলেন, তবে ব্যাকটেরিয়াল ম্যাট থেকে অক্সিজেন নিঃসরণ সূর্যালোকের গতির সঙ্গে সরাসরি তাল মেলাতে পারে না, কারণ এটি নির্ভর করে অণুগুলোর ছড়িয়ে পড়ার গতির ওপর। সূর্যালোক দ্রুত পরিবর্তিত হলেও অক্সিজেন তত দ্রুত নিঃসৃত হয় না। এই সূক্ষ্ম পার্থক্যের কারণে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
এই ফলাফল বৈশ্বিক অক্সিজেন মাত্রার মডেলে যুক্ত করা হলে দেখা যায়—পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ। শুধু গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টই নয়, বরং প্রায় ৫৫০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল আরও একটি বড় অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনা, যাকে বলা হয় ‘নিওপ্রোটেরোজোইক অক্সিজেনেশন ইভেন্ট’—এটিও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।
গবেষক চেন্নু আরও বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো একত্রিত করেছি, মলিকুলার ডিফিউশন থেকে শুরু করে গ্রহের গতিবিদ্যা পর্যন্ত। আমরা দেখিয়েছি যে, দিনের দৈর্ঘ্য এবং মাটির নিচে বাস করা অনুজীবগুলোর অক্সিজেন নিঃসরণের মধ্যে একটি মৌলিক সম্পর্ক রয়েছে।’
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে। তবে এই পরিবর্তনের কারণেই পৃথিবীতে প্রাণের বিস্তার সম্ভব হয়েছে বলে জানালেন গবেষকেরা।
২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ার সঙ্গে বাতাসে অক্সিজেন বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক আছে এবং এটি প্রাণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার জিওসায়েন্স’ সাময়িকীতে।
প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় নীলাভ সবুজ শৈবাল বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া। সূর্যালোকের সাহায্যে এরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন উৎপাদন করে। গবেষকেরা বলছেন, দিনের দৈর্ঘ্য যত বাড়তে থাকে, এই শৈবালগুলোর অক্সিজেন উৎপাদনের সময় তত বাড়ে। এর ফলেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধীরে ধীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞানী গ্রেগরি ডিক বলেন, ‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন কীভাবে এল, সেটা বহুদিন ধরেই বড় প্রশ্ন ছিল। আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর দিন যত দীর্ঘ হয়েছে, সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অক্সিজেন উৎপাদনও তত বেড়েছে।’
পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি ধীর হওয়ার পেছনে রয়েছে চাঁদের প্রভাব। চাঁদ পৃথিবীর ওপর মহাকর্ষীয় টান সৃষ্টি করে, যা ধীরে ধীরে পৃথিবীর ঘূর্ণন কমিয়ে দেয় এবং দিন দীর্ঘ করে।
গবেষণায় দেখা যায়, ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর দিনে সময় ছিল মাত্র ১৮ ঘণ্টা। আবার ৭০ মিলিয়ন বছর আগে দিন ছিল আধা ঘণ্টা কম দীর্ঘ, মানে বর্তমান দিনের চেয়ে ছোট। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতি শতকে দিনে গড়ে ১ দশমিক ৮ মিলিসেকেন্ড করে বাড়ছে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো ‘গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট’। এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিপুল সংখ্যায় বিস্তার লাভ করে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হঠাৎ করেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
তবে এ ঘটনা ঠিক কীভাবে ও কেন ঘটেছিল বা কেন এটি পৃথিবীর ইতিহাসের আরও আগেভাগে ঘটেনি, তা এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে এক রহস্য।
এই রহস্যের সূত্র খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা কাজ করেছেন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ অণুজীব নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ পাওয়া গেছে একধরনের মাইক্রোবায়াল ম্যাট (ক্ষুদ্র জীব বা অণুজীব দিয়ে গঠিত একধরনের জীবন্ত স্তর। অণুজীববিদের সমন্বয়ে তৈরি হয় পাতলা স্তর)। এসব ম্যাটকে গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টে ভূমিকা রাখা প্রাচীন সায়ানোব্যাকটেরিয়ার আধুনিক প্রতিরূপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই গবেষণার অংশ হিসেবে লেক হুরনের ‘মিডল আইল্যান্ড সিংকহোল’-এ সায়ানোব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ মাইক্রোবায়াল ম্যাট নিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা।
এখানে দেখা যায়, রাত হলে সালফার খাদক সাদা অণুজীব ওপরে উঠে আসে, আর দিনের শুরুতে সূর্য উঠলে তারা নিচে নেমে যায় এবং নীল-সবুজ শৈবাল ওপরে উঠে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শুরু করে।
অক্সিজেন উৎপাদনকারী বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া এবং সালফার আহরণকারী সাদা অণুজীব একসঙ্গে বাস করে হ্রদের তলদেশে গঠিত মাইক্রোবায়াল ম্যাটে।
রাতের বেলায় সাদা অণুজীবগুলো ম্যাটের ওপরে উঠে আসে এবং সালফার চূর্ণ করে শক্তি উৎপাদন করে। কিন্তু ভোর হলে সূর্য আকাশে দেখা গেলে তারা ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়।
এরপর ওপরে উঠে আসে বেগুনি সায়ানোব্যাকটেরিয়া, যারা সূর্যালোকের সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে।
তবে গবেষকেরা দেখতে পান, সূর্য ওঠার পর এই শৈবালদের কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগে। ফলে দিনের সময় যদি ছোট হয়, তাহলে অক্সিজেন উৎপাদনের সময়ও কমে যায়।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউটের জিওমাইক্রোবায়োলজিস্ট জুডিথ ক্লাট বলেন, ‘দিন যত ছোট, অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য সময় তত কমে। এতে অক্সিজেন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধীর হয়।’
এই ধারণাকে প্রমাণ করতে স্বাভাবিক পরিবেশ ও পরীক্ষাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অণুজীববিদদের নিয়ে পরীক্ষা ও পরিমাপ চালিয়েছে গবেষক দলটি। এরপর এই তথ্যের ভিত্তিতে সূর্যালোক, অণুজীবীয় অক্সিজেন উৎপাদন এবং পৃথিবীর ইতিহাসের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করতে বিস্তারিত মডেলিং গবেষণা পরিচালনা করেন তাঁরা।
এ সম্পর্কে জার্মানির লাইবনিজ সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল মেরিন রিসার্চর সামুদ্রিক বিজ্ঞানী অর্জুন চেন্নু বলেন, ‘আমাদের সাধারণ ধারণা বলে, দুটি ১২ ঘণ্টার দিন একটানা ২৪ ঘণ্টার দিনের মতোই হবে। এ ক্ষেত্রে সূর্যের আলো দ্বিগুণ গতিতে ওঠে ও নামে এবং অক্সিজেন উৎপাদনও ঠিক একই গতিতে পরিবর্তিত হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে তা হয় না, আর সেটাই এই গবেষণার চমক।
গবেষেকরা বলেন, তবে ব্যাকটেরিয়াল ম্যাট থেকে অক্সিজেন নিঃসরণ সূর্যালোকের গতির সঙ্গে সরাসরি তাল মেলাতে পারে না, কারণ এটি নির্ভর করে অণুগুলোর ছড়িয়ে পড়ার গতির ওপর। সূর্যালোক দ্রুত পরিবর্তিত হলেও অক্সিজেন তত দ্রুত নিঃসৃত হয় না। এই সূক্ষ্ম পার্থক্যের কারণে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
এই ফলাফল বৈশ্বিক অক্সিজেন মাত্রার মডেলে যুক্ত করা হলে দেখা যায়—পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ। শুধু গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্টই নয়, বরং প্রায় ৫৫০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল আরও একটি বড় অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনা, যাকে বলা হয় ‘নিওপ্রোটেরোজোইক অক্সিজেনেশন ইভেন্ট’—এটিও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।
গবেষক চেন্নু আরও বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো একত্রিত করেছি, মলিকুলার ডিফিউশন থেকে শুরু করে গ্রহের গতিবিদ্যা পর্যন্ত। আমরা দেখিয়েছি যে, দিনের দৈর্ঘ্য এবং মাটির নিচে বাস করা অনুজীবগুলোর অক্সিজেন নিঃসরণের মধ্যে একটি মৌলিক সম্পর্ক রয়েছে।’
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

এই প্রোটিন তৈরি করেছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সোলার ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সোলেইন তৈরিতে প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ইউরিয়া, যা মানুষের মূত্রেই পাওয়া যায়।
২ ঘণ্টা আগে
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
৩ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মাধ্যাকর্ষণের কারণে আমরা বসে-দাঁড়িয়ে প্লেটে বা হাতে নিয়ে খাবার খেতে পারি; কিন্তু মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ নেই, তাই সেখানকার খাবার ও খাওয়ার পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন। সাধারণত নভোচারীরা হিমায়িত বা শুকনো খাবার খান। আর এসব খাবার পৃথিবী থেকে মহাকাশে নিয়ে যেতে হয়।
তবে এবার মহাকাশেই বাতাস (thin air) ও নভোচারীদের প্রস্রাব থেকে খাদ্য তৈরি সম্ভব বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ‘সোলেইন’ (Solein) নামে একটি প্রোটিন পাউডার খেয়ে ভবিষ্যতে চাঁদ বা মঙ্গলে দীর্ঘমেয়াদি মিশনে যাওয়া নভোচারীরা বেঁচে থাকতে পারবেন।
ইএসএ জানিয়েছে, একটি নতুন পাইলট প্রকল্পের আওতায় তারা সোলেইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি তৈরি করতে প্রয়োজন কেবল মাইক্রোব (অণুজীব), বাতাস ও বিদ্যুৎ।
এই প্রোটিন তৈরি করেছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সোলার ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সোলেইন তৈরিতে প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ইউরিয়া, যা মানুষের প্রস্রাবেই পাওয়া যায়।
ইএসএ ঘোষণা দিয়েছে, এই খাবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) তৈরির জন্য তারা একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। তাদের মতে, এই পরীক্ষা সফল হলে ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের খাদ্যব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে।
সোলার ফুডসের স্পেস ও ডিফেন্স বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরত্তু লুকানেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল শুরু। আমাদের লক্ষ্য হলো, মহাকাশে সোলেইন উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করা। আমরা আশা করছি, ২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশচারীদের প্রধান প্রোটিন উৎস হয়ে উঠবে সোলেইন।’
প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘হোবি-ওয়ান’ (HOBI-WAN), এর পূর্ণরূপ Hydrogen Oxidizing Bacteria In Weightlessness As a source of Nutrition। প্রথম ধাপে এই প্রযুক্তি পৃথিবীতে উন্নয়ন করা হবে, এরপর তা মাইক্রোগ্র্যাভিটি (অল্প মহাকর্ষ) পরিবেশে পরীক্ষা করা হবে।
ইএসএর প্রধান অনুসন্ধান বিজ্ঞানী অ্যাঞ্জেলিক ভ্যান ওমবারজেন বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো এমন একটি খাদ্য উপাদান তৈরি করা, যা মহাকাশ অভিযানে নভোচারীদের জন্য সার্বিক কল্যাণ বয়ে আনবে।
অ্যাঞ্জেলিক ভ্যান আরও বলেন, মানবজাতি যদি একদিন দীর্ঘ সময়ের জন্য চাঁদে বা মঙ্গলে অবস্থান করতে চায়, তাহলে সীমিত সরবরাহের মধ্যেও টিকে থাকার মতো উদ্ভাবনী ও টেকসই সমাধান প্রয়োজন হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইএসএ ভবিষ্যতের মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সক্ষমতা তৈরি করছে।
সূত্র: স্পেস ডটকম

মাধ্যাকর্ষণের কারণে আমরা বসে-দাঁড়িয়ে প্লেটে বা হাতে নিয়ে খাবার খেতে পারি; কিন্তু মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ নেই, তাই সেখানকার খাবার ও খাওয়ার পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন। সাধারণত নভোচারীরা হিমায়িত বা শুকনো খাবার খান। আর এসব খাবার পৃথিবী থেকে মহাকাশে নিয়ে যেতে হয়।
তবে এবার মহাকাশেই বাতাস (thin air) ও নভোচারীদের প্রস্রাব থেকে খাদ্য তৈরি সম্ভব বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ‘সোলেইন’ (Solein) নামে একটি প্রোটিন পাউডার খেয়ে ভবিষ্যতে চাঁদ বা মঙ্গলে দীর্ঘমেয়াদি মিশনে যাওয়া নভোচারীরা বেঁচে থাকতে পারবেন।
ইএসএ জানিয়েছে, একটি নতুন পাইলট প্রকল্পের আওতায় তারা সোলেইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি তৈরি করতে প্রয়োজন কেবল মাইক্রোব (অণুজীব), বাতাস ও বিদ্যুৎ।
এই প্রোটিন তৈরি করেছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সোলার ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সোলেইন তৈরিতে প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ইউরিয়া, যা মানুষের প্রস্রাবেই পাওয়া যায়।
ইএসএ ঘোষণা দিয়েছে, এই খাবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) তৈরির জন্য তারা একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। তাদের মতে, এই পরীক্ষা সফল হলে ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের খাদ্যব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে।
সোলার ফুডসের স্পেস ও ডিফেন্স বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আরত্তু লুকানেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল শুরু। আমাদের লক্ষ্য হলো, মহাকাশে সোলেইন উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করা। আমরা আশা করছি, ২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশচারীদের প্রধান প্রোটিন উৎস হয়ে উঠবে সোলেইন।’
প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘হোবি-ওয়ান’ (HOBI-WAN), এর পূর্ণরূপ Hydrogen Oxidizing Bacteria In Weightlessness As a source of Nutrition। প্রথম ধাপে এই প্রযুক্তি পৃথিবীতে উন্নয়ন করা হবে, এরপর তা মাইক্রোগ্র্যাভিটি (অল্প মহাকর্ষ) পরিবেশে পরীক্ষা করা হবে।
ইএসএর প্রধান অনুসন্ধান বিজ্ঞানী অ্যাঞ্জেলিক ভ্যান ওমবারজেন বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো এমন একটি খাদ্য উপাদান তৈরি করা, যা মহাকাশ অভিযানে নভোচারীদের জন্য সার্বিক কল্যাণ বয়ে আনবে।
অ্যাঞ্জেলিক ভ্যান আরও বলেন, মানবজাতি যদি একদিন দীর্ঘ সময়ের জন্য চাঁদে বা মঙ্গলে অবস্থান করতে চায়, তাহলে সীমিত সরবরাহের মধ্যেও টিকে থাকার মতো উদ্ভাবনী ও টেকসই সমাধান প্রয়োজন হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইএসএ ভবিষ্যতের মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সক্ষমতা তৈরি করছে।
সূত্র: স্পেস ডটকম

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে।
২৭ এপ্রিল ২০২৫
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
৩ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে।
২৭ এপ্রিল ২০২৫
এই প্রোটিন তৈরি করেছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সোলার ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সোলেইন তৈরিতে প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ইউরিয়া, যা মানুষের মূত্রেই পাওয়া যায়।
২ ঘণ্টা আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে।
২৭ এপ্রিল ২০২৫
এই প্রোটিন তৈরি করেছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সোলার ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সোলেইন তৈরিতে প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ইউরিয়া, যা মানুষের মূত্রেই পাওয়া যায়।
২ ঘণ্টা আগে
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে।
২৭ এপ্রিল ২০২৫
এই প্রোটিন তৈরি করেছে ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সোলার ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সোলেইন তৈরিতে প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য নাইট্রোজেনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় ইউরিয়া, যা মানুষের মূত্রেই পাওয়া যায়।
২ ঘণ্টা আগে
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
৩ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে