Ajker Patrika

বাদুড় উল্টো হয়ে ঝুলে ঘুমালেও পড়ে যায় না কেন

আপডেট : ১২ মে ২০২৪, ২০: ০০
বাদুড় উল্টো হয়ে ঝুলে ঘুমালেও পড়ে যায় না কেন

রাতের বেলা বাদুড়কে উড়ে উড়ে বিভিন্ন পোকামাকড় ও ছোট প্রাণীদের শিকার করতে দেখা যায়। আবার সকাল বেলা এদের গাছের ডালে বা গুহায় উল্টো ঝুলে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু এরা আর দশটা পাখি বা প্রাণীর মতো সোজা হয়ে ঘুমায় না কেন বা এভাবে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকার সুবিধাই বা কী? 

বাদুড় এইভাবে ঝুলে থাকার কয়েকটি ভিন্ন কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি এদের ওড়ার জন্য একটি আদর্শ অবস্থান। 

অন্যান্য পাখির মতো বাদুড় মাটি থেকে উড়তে পারে না। প্রাণীটির পাখা থেকে এতটা শক্তিশালী নয় যে, মাটি থেকে ওড়ার জন্য পর্যাপ্ত জোর পায়। এদের পেছনের পাগুলো এত ছোট ও অবিকশিত যে এরা জোরে দৌড়াতে পারে না। ফলে ওড়ার জন্য প্রয়োজনীয় গতি তৈরি করতে পারে না। এর পরিবর্তে বাদুড় সামনের বাহু ব্যবহার করে উচ্চ কোনো স্থানে উঠে যায়। এরপরে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। যখন ওড়ার দরকার হয়, তখন পেছনের পা দুটো ডাল থেকে ছেড়ে দেয় ও গাছ থেকে মাটির দিকে পড়তে থাকে। আর মাটি স্পর্শ করার আগেই ডানা ঝাপটে উড়তে থাকে। নিচের থেকে পড়ার মাধ্যমে বাদুড় ওড়ার জন্য ডানায় প্রয়োজনীয় বল পায়। 

এই দুর্বলতার কারণে হুট করে অন্য কোনো প্রাণীর আক্রমণ করলে যেন দ্রুত উড়ে গিয়ে বাঁচতে পারার সে জন্যও বাদুড় উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। 

বিপদ থেকে লুকানোর একটি দুর্দান্ত উপায় হলো—উল্টো হয়ে ঝুলে থাকা। যখন বেশির ভাগ শিকারি সক্রিয় থাকে তখন বাদুড়েরা এমন জায়গায় জড়ো হয় যেখানে শিকারিরা বাদুড়কে খুঁজে পায় না বা সেখানে পৌঁছাতে পারে না। এর মাধ্যমে শিকারি থেকে নিরাপদ থাকতে পারে। এসব জায়গায় থাকার জন্য বাদুড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতায় রয়েছে। এ ছাড়া ঝুলে থাকার ক্ষমতার কারণে দুর্গম জায়গায় থাকতে পারে বাদুড়েরা। 

বাদুড়ের একটি অনন্য শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন ক্ষমতাও রয়েছে। ফলে এরা প্রায় কোনো শক্তি খরচ না করেই ঝুলে থাকতে পারে। 

এই কৌশলটি যেভাবে কাজ করে
যদি কোনো বস্তু হাতে নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই বাহুর বেশ কয়েকটি পেশি সংকুচিত করতে হবে। পেশিগুলো টেন্ডনের (ঘন, শক্ত এবং তন্তুময় যোজক কলা, যা পেশিকে হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে) মাধ্যমে আঙুলের সঙ্গে যুক্ত থাকে। একটি পেশি সংকুচিত হলে একটি টেন্ডনে টান লাগে। 

বাদুড়ের আঙুলও একইভাবে বন্ধ হয়। তবে এদের টেন্ডনগুলো শুধু দেহের উপরি অংশের সঙ্গে যুক্ত থাকে, পেশির সঙ্গে নয়। বাদুড় উল্টো ঝুলে থাকার জন্য পছন্দের জায়গা পর্যন্ত উড়ে যায়। এরপর আঙুলগুলো খুলে দেয় ও পৃষ্ঠটি আঁকড়ে ধরে। এরপর দেহকে শিথিল করে দেয়। শরীরের উপরিভাগের ওজন আঙুলের সঙ্গে যুক্ত ট্যান্ডনগুলোকে নিচের দিকে টেনে নেয়। ফলে সেগুলো কোনো পৃষ্ঠকে (যেমন, গাছের ডাল) দৃঢ়ভাবে চেপে ধরতে পারে। এভাবে আঙুলের জয়েন্টগুলো কোনো পৃষ্ঠকে আঁকড়ে ধরে ও বাদুড়ের শরীরের ওজন আঙুলের ওপর ভর করে থাকে। 

বাদুড়কে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকতে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয় না। শুধু পৃষ্ঠ ছেড়ে দেওয়ার জন্য পেশিগুলোকে শিথিল করতে শক্তি ব্যয় করতে হয়। ফলে আঙুলগুলো খুলে যায়। বাদুড়ের শরীরের পেশি শিথিল অবস্থায় থাকলে আঙুলগুলো বন্ধ থাকে, তাই এরা মারা যাওয়ার পরও উল্টোভাবে ঝুলতে থাকে, যতক্ষণ না বাহ্যিক প্রভাবে আঙুলগুলো আলগা হয়। 

তথ্যসূত্র: হাও স্টাফ ওয়ার্কস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত