Ajker Patrika

শতভাগ সফল হয়েছি দাবি করব না: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫: ৩২
শতভাগ সফল হয়েছি দাবি করব না: শেখ হাসিনা

টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা থাকা সত্ত্বেও সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে সব সময়ই যে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি, এমন দাবি করব না। তবে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যা বলি তা বাস্তবায়ন করি।’ 

আজ বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ইশতেহার ঘোষণা করেন। 

বিগত তিন জাতীয় নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে মনুষ্যসৃষ্ট, প্রাকৃতিক এবং বৈশ্বিক বাধাবিপত্তি আমাদের চলার গতিপথ মন্থর করেছে।’ 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ঢেউয়ে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। 

অধিক মূল্যে আমদানিতে টাকার মূল্যের অবনতির কারণে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যার প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্য এবং মানুষের জীবনযাপনের ওপর। বহুমুখী ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমরা অনেক সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে পারিনি। এ সমস্যা শুধু আমাদের দেশের নয়, এ সমস্যা ধনী-গরিব সব দেশের।’ 

এ সময় সরকারের সব প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। 

সন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচালের স্বপ্ন কোনো দিনই পূরণ হবে না
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার জন্য সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড বলে বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচাল করার স্বপ্ন-সাধ কোনো দিনই পূরণ হতে দেবে না এ দেশের জনগণ।’

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন এলেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং উন্নয়নবিরোধী একটি চক্র ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে সক্রিয় হয়ে ওঠে। নির্বাচনে কূটকৌশল অবলম্বন বা কারচুপির মাধ্যমে কিংবা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে তারা আটঘাট বেঁধে মাঠে নামে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফল না হলে জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিশোধস্পৃহায়। অগ্নি-সন্ত্রাস, যানবাহন পোড়ানো, বোমাবাজি, নাশকতা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত করে ঘরবন্দী করতে চায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তার ওপর এবার তারা বিদেশ থেকেও কলকাঠি নাড়ছে।’

বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে শেখ হাসিনা অভিযোগ করে বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট পাবে না—এটা বুঝতে পেরে আগে থেকে এবার তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। হরতাল-অবরোধের নামে যানবাহন পোড়ানো, মানুষ হত্যা, রেললাইন উপড়ে ফেলাসহ বিভিন্ন নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। মা ও শিশুর অগ্নিদগ্ধ লাশ সবার বিবেককে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিয়েছে। এ ধরনের হীন কাজ আর সহ্য করা যায় না। জনগণের সাড়া না পেয়ে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে এসব নাশকতা চালিয়ে জান-মালের ক্ষতি করছে।’

২০১৩-২০১৬ সালের মতো দেশবাসীকে অগ্নি-সন্ত্রাস প্রতিহত করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী এই শকুনের দল আর কোনো দিন যাতে বিষময় দন্ত-নখর বসিয়ে বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করতে না পারে—আসুন, বিজয়ের মাসে এ শপথ নেই। 

২০০৯ সালের পর টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার পরিচালনার পথ পরিক্রমায় যা কিছু ভুলত্রুটি, তার দায়ভার আমাদের। সাফল্যের কৃতিত্ব আপনাদের। আমাদের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা কথা দিচ্ছি, অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব।

সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন করা হবে
সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদে অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধন করা হয়েছে এবং অর্পিত সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট সমস্যা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগে বাধা দূর করা হবে। 

সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন এবং সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আবশ্যক পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখবে। 

সরকারি বিধি অনুযায়ী এনজিও নিবন্ধিত হবে এবং সরকার তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিজস্ব বিধি মোতাবেক পরিচালিত হবে। দারিদ্র্য বিমোচন, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষুদ্রঋণ প্রদান বিষয়ে নিজস্ব বিধি ও রীতি অনুযায়ী কাজ করার অধিকার অব্যাহত রাখা হবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, অর্থায়নকারী অন্যান্য এনজিওর সব কার্যক্রম ও আয়-ব্যয়ের হিসাব স্বচ্ছ এবং স্থানীয় জনগণ ও সরকারি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচিত হলে সরকারের পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচিত হলে সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতা চলমান থাকবে। আন্তসীমান্ত যোগাযোগ, ট্রানজিট, জ্বালানি অংশীদারত্ব এবং ন্যায়সংগত পানিবণ্টনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হুমকি-ধমকি না দিয়ে চলুন জনগণের মুখোমুখি হই: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারকে হুমকি-ধমকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে অগ্রসর হতে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার দলের পক্ষ থেকে আবারও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই—চলুন, বর্তমান দুর্বল অন্তর্বর্তী সরকারকে হুমকি-ধমকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জনগণের মুখোমুখি হই।’

আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে বিএনপি।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র যখন প্রস্তুত হচ্ছে, তখন কয়েকটি রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কার্যত গণতন্ত্রকামী জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধেই মনে হয় অবস্থান নিচ্ছে বা নিয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মনে হয় একটি কথা গুরুত্বসহকারে মনে রাখা উচিত। নিজ দলের বাইরের সমর্থকদের বাইরে এক বিশালসংখ্যক অরাজনৈতিক জনগোষ্ঠী রয়েছে। এই জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করি। মাসের পর মাস আলোচনা হয়েছে, কিন্তু এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট আলোচনা কতটুকু হয়েছে, সেটি এখন বড় প্রশ্ন।’

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিরাজমান সংকটকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি মনে করি, এই সংকট তৈরি করা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের যে পথ, সেই পথকে বাধাগ্রস্ত করা; বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে সংস্কারের জন্য যে নির্বাচন হওয়া দরকার, সেই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা; জনগণের ভবিষ্যৎকে একটা অনিশ্চিত অবস্থায় ফেলা।’

সংকট মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই আজকে এই জায়গা থেকে একমত হয়ে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেইসব চক্রান্তকে রুখে দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সুগম করি।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াতের সঙ্গে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল। আজ বুধবার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াতের প্রচার বিভাগ জানায়, বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন অ্যাডভাইজার টু দ্য বাংলাদেশ মিশন চিফ ক্রিস পাপাজর্জিউ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইএমএফের ঢাকার আবাসিক প্রতিনিধি ম্যাক্সিম ক্রিশকো, ডেপুটি চিফ অব মিশন আইভো ক্রেজনার ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক তাওহিদ এলাহি।

জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, শিক্ষাবিদ ড. আবদুর রব ও শফিউল্লাহ।

জামায়াত জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনীতি, বিভিন্ন আর্থিক খাত, করব্যবস্থা ও সামাজিক খাতের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারের ভেতরেই ভূত আছে: রিজভী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: ফোকাস বাংলা
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: ফোকাস বাংলা

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভেতর থেকে কারা কাজ করছে? সরকারই-বা এত দিন নীরব বসে থাকল কেন? সরকারের ভেতরেই ভূত আছে। সরকার আসল শত্রুপক্ষকে চিহ্নিত না করে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে গেছে। সবাই নয়, কেউ কেউ।’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে আজ বুধবার জিয়াউর রহমান আর্কাইভের উদ্যোগে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে প্রকাশনা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যে বিপুল প্রাণশক্তি ও আত্মত্যাগের নিদর্শন এ দেশের ছাত্র-তরুণ-শ্রমিকেরা দেখিয়েছে, এরপরে আর কোনো বৈরিতা থাকার কথা নয়। সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঝগড়াঝাঁটি, তর্কবিতর্ক সবকিছুর মধ্য দিয়ে একটা জায়গায় উপনীত হতে হবে যে—আমরা এ রাষ্ট্রকে বিনির্মাণ করব গণতান্ত্রিক চেতনার মধ্য দিয়ে। এই চেতনার মূল ভিত্তি হবে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে শক্তিশালী রাখা। এই মূল স্পিরিট যদি ঠিক থাকে, জুলাই সনদ নিয়ে, এর বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া নিয়ে কী হবে, তা নিয়ে এত বিবাদ-বিসম্বাদ কেন? এটা হওয়ার কথা নয়।’

রিজভী বলেন, ‘“জুলাই সনদ আইনিপ্রক্রিয়ায় না হলে হবে না”—যাঁরা এ কথা বলছেন, তাঁরা এতই আইন বিশেষজ্ঞ, তাহলে শেখ হাসিনার আমলে যে এত বেআইনি কাজ হলো, তখন বুক চিতিয়ে আরও ভালো করে দাঁড়াননি কেন? আজকে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে, নাহলে নাকি নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে! এক রাজনৈতিক দলের নেতা এ কথা বলেছেন।’

সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হওয়া নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বোমা বানাচ্ছেন। গাড়িতে আগুন দিচ্ছেন। এতে প্রমাণিত—তাদের অমানবিক নিষ্ঠুরতার যে চেহারা, এটা অনেক আগে থেকেই ছিল। রাষ্ট্রক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বাসে আগুন, মানুষ পুড়িয়ে মেরে বিরোধী দলের ওপর তারা চাপাত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামীকাল যেকোনো নৈরাজ্যের জবাব দিতে প্রস্তুত শিবির: শিবির সভাপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী ছাত্রশিবির। ছবি: আজকের পত্রিকা
দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী ছাত্রশিবির। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার যেকোনো নৈরাজ্যের উপযুক্ত জবাব দিতে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, আগামীকাল ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ছাত্রশিবির। একই সঙ্গে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন ঘোষণা দেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী আগামীকাল ঢাকা লকডাউন কর্মসূচি দিয়েছে। আমরা তাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ ও অরাজকতার কোনো স্থান নেই। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের যেকোনো প্রচেষ্টা ছাত্রসমাজ ও জনগণ প্রতিহত করবে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দেশের আপামর ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে যেকোনো নৈরাজ্যের উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত। আগামীকাল সারা দেশে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।’

শিবির সভাপতি বলেন, ‘আগামীকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুনি হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণা করবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। গত দুই দিনে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটির দুর্বৃত্তরা ১৫টির অধিক বাস আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের আগুন-সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ময়মনসিংহে ঘুমন্ত অবস্থায় একজন বাসচালক নিহত হয়েছে।’

দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী ছাত্রশিবির। ছবি: আজকের পত্রিকা
দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী ছাত্রশিবির। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতাকে দায়ী করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতা এর কারণ। আমরা সরকারকে এই অগ্নিসন্ত্রাসীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে জুলাই গণহত্যা এবং সব গুম, খুন, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তি, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে বিচারের আওতায় আনার জোরালো দাবি জানাচ্ছি। যারা এই ফ্যাসিবাদী শাসনকে বৈধতা দিতে ভূমিকা রেখেছিল, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলেও সেটি অত্যন্ত ধীরগতির। এর কারণ কিছু সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কালক্ষেপণ করিয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতাদের ছাড়াতে একটি পক্ষ মামলা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জামিন করিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই জামিনের সঙ্গে ফ্যাসিবাদী মানসিকতার কিছু ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আইনজীবীরা জড়িত। এমন অনেক তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিবিরের সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগাসহ অন্য নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত