Ajker Patrika

অবশেষে নির্বাচন নিয়ে এক মোহনায় বিএনপি-জামায়াত

  • বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বৈঠক
  • সরকারকে সর্বোচ্চ আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়ার বিষয়ে একমত
  • নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আগের অবস্থানেই আছে এনসিপি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অবশেষে নির্বাচন নিয়ে এক মোহনায় বিএনপি-জামায়াত

একসময়ের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল অনেক দিন ধরে। গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাগ্‌যুদ্ধের পাশাপাশি কোথাও কোথাও সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন দল দুটির নেতা-কর্মীরা। নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান দল দুটির মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। অবশেষে সে নির্বাচন নিয়েই আবারও এক মোহনায় মিলিত হয়েছেন তাঁরা। জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৈঠক করেছেন দল দুটির নেতারা। সেই বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়কাল নিয়ে একমত হয়েছেন তাঁরা।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বিরাজমান সংকট নিরসনে গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর রমনার একটি বাসায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান নিজেই দলের পক্ষে এ বৈঠকে অংশ নেন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বিএনপি ও জামায়াত ছাড়াও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে বিরাজমান সমস্যা এবং সেগুলো নিরসনে তিন দলের মধ্যে আলোচনা হয়। আলোচনার একপর্যায়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে এক জায়গায় আসে বিএনপি ও জামায়াত। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব না হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময় দেওয়ার পক্ষে থাকার বিষয়ে একমত হয় দল দুটি।

তবে বৈঠকের পরও নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রশ্নে আগের অবস্থানেই আছে এনসিপি।

বৃহস্পতিবার রাতের এই বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেনি কোনো পক্ষই। বিরাজমান পরিস্থিতি এবং নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে সম্প্রতি কোনো বৈঠক হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে আমাদের এ রকম কোনো বৈঠক হয়নি।’ জামায়াতের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।

তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের মতভিন্নতা যে দূর হয়েছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্যে। গতকাল শুক্রবার কুমিল্লায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘সরকার যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন করে জামায়াতের কোনো আপত্তি নেই। দুই মাস পর করলেও আপত্তি নেই। তবে সরকারের উচিত একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেওয়া। জামায়াত দুটি রোডম্যাপ চেয়েছে; একটি হচ্ছে নির্বাচনের রোডম্যাপ, অন্যটি হচ্ছে সংস্কারের রোডম্যাপ।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। শুরু থেকেই ওই সরকারের কাছে দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। দলটির দাবি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে এবং এর জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। তবে সরকারের দিক থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু না বলে ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এই দাবির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে সংস্কারে গুরুত্বারোপ করে জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানে সুপারিশ করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত