নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সংস্কার কতটুকু হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য হচ্ছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, সংস্কারকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলা হচ্ছে। সে জায়গায় আমরা মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা ঐক্যমত কমিশনে জমা দিয়েছি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে ফ্যাসিবাদী এবং স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো থেকে রক্ষা করতে হলে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে এসব কথা বলেন আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো আছে, দলগুলোর কাছে আমাদের বক্তব্য হলো, সংস্কারকে কোন বায়বীয় তত্তের মধ্যে অপ্রয়োগযোগ্য অবস্থায় ফেলে রাখার পক্ষে আমরা নই। বরং বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য জবাবদিহিতা এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে ঢেলে সাঁজাতে যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, যেগুলো আমরা আমাদের এনসিপির রুপরেখার মধ্যে হাজির করেছি।
আখতার হোসেন বলেন, সে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা হতে পারে, সেগুলো অবশ্যই বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সামনের নির্বাচনের দিকে আমরা অগ্রসর হতে পারি।
এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই দফা বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের যে প্রক্রিয়া সেটা কিরকম হতে পারে সেটা আমরা উত্থাপন করবো। এই সংস্কার কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটা নিয়ে এখনও ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা হয় নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোতে ভরপুর। এর বাইরে এসে নতুন একটি সংবিধানের কথা বলে এসেছি। সেই সংবিধানরকে বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, একটি গণপরিষদ গঠন করে তাদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব যা থাকবে তার মধ্য দিয়ে নতুন করে সংবিধান লেখা প্রয়োজন। নতুন সংবিধান প্রনয়ন করা প্রয়োজন। সে জন্য অবশ্যই রাজনৈতিক ঐকমতের দরকার রয়েছে, সেই বিষয়গুলো আমরা ঐকমত্য কমিশনের সাথে আমরা আলোচনা করব।
আখতার বলেন, এনসিপি মনে করে সরকারে পক্ষ থেকে বিচার এবং সংস্কার কাজের দৃশ্যমানতা যদি আন্তরিকতা থাকে এবং অপরাপর রাজনৈতিক দলে সহযোগিতা থাকে তালে প্রধান উপদেষ্টা যে ডিসেমব্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন, সেই সময়ের মধ্যেই সেটাকে সামনে নিয়ে আসা সম্ভব এবং নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
নির্বাচনের বিষয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, নির্বাচন যেকোন সময় হতে পারে, তবে আগে মৌলিক সংস্কারের যে রুপ রেখা সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। মৌলিক সংস্কারের রুপরেখা বাস্তবায়ন এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচারকে দৃশ্যমান পর্যায়ে নিয়ে আসার দিন থেকে অল্প দিনের মধ্যেই এনসিপি নির্বাচনের আয়োজনের জোর আরোপ করেছে।
বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য হয়েছে দাবি করে আখতার হোসেন বলেন, সেই নির্বাচনগুলো একপেশে নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতার একটা জায়গা রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে যেতে পারি। আমরা এগুলো নিয়ে সুস্পষ্ট রুপ রেখা হাজির করব।
তত্তাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর আগে নির্বাচনকালীন যোগ করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা তুলে ধরে আখতার হোসেন বলেন, বর্তমানে আমরা যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সরকারকে তত্তাবধায়ক সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে নামেই দেওয়া হোক না কেন, তার পূর্বে যেন নির্বাচনকালীন ত্তাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নাম দেয়া হয়। যাতে করে সেই সরকার দীর্ঘ সময় থাকার যে মানষিকতা, সেটা কমে আসে এবং তাদের যেন শুধু নির্বাচনের ব্যপারেই ফোকাসটা থাকে সেটা আমরা তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি চলছে, সেই পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি থেকে বের হয়ে পলিসি নির্ভর রাজনীতি যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সেজন্য আমরা ছায়ামন্ত্রী সভার কথা বলেছি। সংসদীয় যে যে স্থায়ী কমিটিগুলো আছে, সেগুলো সুনির্দিষ্ট ছাযা মন্ত্রীসভার কার্যক্রম কি হতে পারে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সংসদের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটি যেমন পাবলিক একাউন্স কমিটি, পরিকল্পনা, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের স্থায়ী কমিটির প্রধান বিরোধী দল থেকে হতে হবে। অন্যান্য জায়গায়ও যেন এই অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এই ক্ষমতার ভারসাম্যটা আমাদের দেশ সুষ্টূভাবে চলার জন্য খুব প্রয়োজন।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া কথা তুলে ধরে দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, আমরা বিগত সময়গুলোতে দেখে এসেছি নির্বাহী বিভাগ তার জায়গায় একচ্ছত্র পুরো রাষ্ট্র পরিচালনায় আধিপত্য ছিল এবং অন্যান্য বিভাগগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতো। সেই জায়গায় জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহিতায় রাখার একটা কাজ করবে। সাংবিধানিক পদ গুলোতে নিয়োগদানের কাজ করবে।
নিজেদের দেওয়া প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা সংসদে তারা তাদের স্বাধীন মত পকাশ করতে পারবে, সরকারের স্থিতিশীলতা যাতে রক্ষা হয় সেখানে সাংবিধানিক একটা ব্যবস্থা থাকবে। ভোটারদের বয়স যাতে ১৬ এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীর বয়স যেন ২৩ হয়। তথ্য প্রাপ্তির যে অধিকার এটাকে যেন মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রধান করা হয়। ক্ষমতায়ন এবং প্রতিনিধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি ১০০ আসনে নারী সংসদ সদস্যের কথা বলেছি।
তিনি বলেন, মৌলিক অধিকার বিরোধী দমনমূলক আইন ও সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৩(৩) এর সংস্কার। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এবং সংবিধানের ৩৩(৩) প্রতিরোধমূলক আটকের যে ধারা এই ধারাটি সংস্কারের কথা আমরা বলেছি। আমরা বছরের পর বছর দেখেছি নির্বাচনের জন্য থ্রেট তাকে তুলে এনেছে, কোনর কারন কেউ জানে না। এই আটকের কারনটা জানাতে হবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে তাকে হাজির করতে হবে।
সারজিস আলম বলেন, নির্বাহী ক্ষমতার ভারসাম্যের ব্ষিয়ে আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে থাকতে পারবে, দলনেতা প্রধনমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য একই ব্যক্তি হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থাভোট দেয়া যাবে এটাও আমরা তুলে ধরেছি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেটা এতদিনে আমাদের প্রত্যাশার ধারেকাছেও দেখতে পাই নি। সেখানে বিচার বিভাগের নিজস্ব প্রশাসনিক সচিবালয় গঠন, জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন। প্রধান বিচারপতি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ। বিচারপতি নিয়োগে জুডিশিয়াল নিয়োগ ও মেধাভিত্তিক পরীক্ষা। আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগে নিরপেক্ষ নিয়োগ পদ্ধতি এবং বিভাগীয় শহরগুলোতে হাইকোর্টের স্থায়ী আসন স্থাপন করার বিষয় তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, দুদককে রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠান বানানো হয়েছে। ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার বানিয়েছে, দুদককে যেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সরকারি ও বিচার বিভাগী কর্মকর্তা যারা ছিল, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা দায়েরের স্বাধীনতা দুদকের ছিল না। দুদকের আইনের ৩২(ক) ধারায় বলা ছিল, যে সরকারি কর্মকর্বতা বা বিচার বিভাগী যে কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করতে চাইলে, সরকারে পূর্বানুমতি নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি, এই প্রক্রিয়াটি দুর্নীতি রোধে একটা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এটাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করা যায়, তাই আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে এই দুদকে ৩২(ক) ধারাটি বাতিল করতে হবে।
দলীয় প্রতিকে স্থানীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাতিল করার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, এই প্রসেসের মধ্য দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত গ্রহণযোগতা সম্পন্ন মানুষ দলীয় ট্যাগ লাগাতে হবে বলে রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছে। জনপ্রতিনিধি হওয়া থেকে বিমুখ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসনের ক্ষেত্রে আমরা আলাদা সংস্কারের প্রস্তাব করেছি। নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণ আইন প্রনয়নের কথা বলেছি। আইন প্রনয়নের কথা বলেছি, নাগরিক সেবা প্রধান অভিযোগ প্রাতিকার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক ন্যয়পাল হিসেবে স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নাগরিক সেবা ও অভিযোগ প্রতিকার কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে নতুন প্রশাসনিক উন্নয়ন এবং সংস্কার বিভাগ সৃজন করার প্রস্তাব দিয়েছি। এসব বিষয়ে টাক্সফোর্স গঠন করে সামগ্রিক বিষয়গুলো দ্রুত রেসপন্স এবং দ্রুত সমন্বয় করার জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিসের কথা বলেছি।
সারজিস আলম বলেন, এই সেবার বিষয়গুলো কতটুকু সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে হবে এবং না করলে তাকে কিভাবে জবাবদিহি করতে হবে এবং তার কি শাস্তি হবে এই সামগ্রিক বিষয়গুলোর একটি রুপ রেখা আমরা আমাদের জায়গা থেকে দিয়েছি।
সংস্কার কতটুকু হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য হচ্ছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, সংস্কারকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলা হচ্ছে। সে জায়গায় আমরা মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা ঐক্যমত কমিশনে জমা দিয়েছি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে ফ্যাসিবাদী এবং স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো থেকে রক্ষা করতে হলে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে এসব কথা বলেন আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো আছে, দলগুলোর কাছে আমাদের বক্তব্য হলো, সংস্কারকে কোন বায়বীয় তত্তের মধ্যে অপ্রয়োগযোগ্য অবস্থায় ফেলে রাখার পক্ষে আমরা নই। বরং বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য জবাবদিহিতা এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে ঢেলে সাঁজাতে যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, যেগুলো আমরা আমাদের এনসিপির রুপরেখার মধ্যে হাজির করেছি।
আখতার হোসেন বলেন, সে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা হতে পারে, সেগুলো অবশ্যই বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সামনের নির্বাচনের দিকে আমরা অগ্রসর হতে পারি।
এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই দফা বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের যে প্রক্রিয়া সেটা কিরকম হতে পারে সেটা আমরা উত্থাপন করবো। এই সংস্কার কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটা নিয়ে এখনও ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা হয় নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোতে ভরপুর। এর বাইরে এসে নতুন একটি সংবিধানের কথা বলে এসেছি। সেই সংবিধানরকে বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, একটি গণপরিষদ গঠন করে তাদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব যা থাকবে তার মধ্য দিয়ে নতুন করে সংবিধান লেখা প্রয়োজন। নতুন সংবিধান প্রনয়ন করা প্রয়োজন। সে জন্য অবশ্যই রাজনৈতিক ঐকমতের দরকার রয়েছে, সেই বিষয়গুলো আমরা ঐকমত্য কমিশনের সাথে আমরা আলোচনা করব।
আখতার বলেন, এনসিপি মনে করে সরকারে পক্ষ থেকে বিচার এবং সংস্কার কাজের দৃশ্যমানতা যদি আন্তরিকতা থাকে এবং অপরাপর রাজনৈতিক দলে সহযোগিতা থাকে তালে প্রধান উপদেষ্টা যে ডিসেমব্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন, সেই সময়ের মধ্যেই সেটাকে সামনে নিয়ে আসা সম্ভব এবং নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
নির্বাচনের বিষয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, নির্বাচন যেকোন সময় হতে পারে, তবে আগে মৌলিক সংস্কারের যে রুপ রেখা সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। মৌলিক সংস্কারের রুপরেখা বাস্তবায়ন এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচারকে দৃশ্যমান পর্যায়ে নিয়ে আসার দিন থেকে অল্প দিনের মধ্যেই এনসিপি নির্বাচনের আয়োজনের জোর আরোপ করেছে।
বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য হয়েছে দাবি করে আখতার হোসেন বলেন, সেই নির্বাচনগুলো একপেশে নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতার একটা জায়গা রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে যেতে পারি। আমরা এগুলো নিয়ে সুস্পষ্ট রুপ রেখা হাজির করব।
তত্তাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর আগে নির্বাচনকালীন যোগ করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা তুলে ধরে আখতার হোসেন বলেন, বর্তমানে আমরা যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সরকারকে তত্তাবধায়ক সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে নামেই দেওয়া হোক না কেন, তার পূর্বে যেন নির্বাচনকালীন ত্তাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নাম দেয়া হয়। যাতে করে সেই সরকার দীর্ঘ সময় থাকার যে মানষিকতা, সেটা কমে আসে এবং তাদের যেন শুধু নির্বাচনের ব্যপারেই ফোকাসটা থাকে সেটা আমরা তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি চলছে, সেই পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি থেকে বের হয়ে পলিসি নির্ভর রাজনীতি যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সেজন্য আমরা ছায়ামন্ত্রী সভার কথা বলেছি। সংসদীয় যে যে স্থায়ী কমিটিগুলো আছে, সেগুলো সুনির্দিষ্ট ছাযা মন্ত্রীসভার কার্যক্রম কি হতে পারে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সংসদের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটি যেমন পাবলিক একাউন্স কমিটি, পরিকল্পনা, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের স্থায়ী কমিটির প্রধান বিরোধী দল থেকে হতে হবে। অন্যান্য জায়গায়ও যেন এই অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এই ক্ষমতার ভারসাম্যটা আমাদের দেশ সুষ্টূভাবে চলার জন্য খুব প্রয়োজন।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া কথা তুলে ধরে দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, আমরা বিগত সময়গুলোতে দেখে এসেছি নির্বাহী বিভাগ তার জায়গায় একচ্ছত্র পুরো রাষ্ট্র পরিচালনায় আধিপত্য ছিল এবং অন্যান্য বিভাগগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতো। সেই জায়গায় জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল নির্বাহী বিভাগকে জবাবদিহিতায় রাখার একটা কাজ করবে। সাংবিধানিক পদ গুলোতে নিয়োগদানের কাজ করবে।
নিজেদের দেওয়া প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা সংসদে তারা তাদের স্বাধীন মত পকাশ করতে পারবে, সরকারের স্থিতিশীলতা যাতে রক্ষা হয় সেখানে সাংবিধানিক একটা ব্যবস্থা থাকবে। ভোটারদের বয়স যাতে ১৬ এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীর বয়স যেন ২৩ হয়। তথ্য প্রাপ্তির যে অধিকার এটাকে যেন মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রধান করা হয়। ক্ষমতায়ন এবং প্রতিনিধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি ১০০ আসনে নারী সংসদ সদস্যের কথা বলেছি।
তিনি বলেন, মৌলিক অধিকার বিরোধী দমনমূলক আইন ও সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৩(৩) এর সংস্কার। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এবং সংবিধানের ৩৩(৩) প্রতিরোধমূলক আটকের যে ধারা এই ধারাটি সংস্কারের কথা আমরা বলেছি। আমরা বছরের পর বছর দেখেছি নির্বাচনের জন্য থ্রেট তাকে তুলে এনেছে, কোনর কারন কেউ জানে না। এই আটকের কারনটা জানাতে হবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে তাকে হাজির করতে হবে।
সারজিস আলম বলেন, নির্বাহী ক্ষমতার ভারসাম্যের ব্ষিয়ে আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে থাকতে পারবে, দলনেতা প্রধনমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য একই ব্যক্তি হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থাভোট দেয়া যাবে এটাও আমরা তুলে ধরেছি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেটা এতদিনে আমাদের প্রত্যাশার ধারেকাছেও দেখতে পাই নি। সেখানে বিচার বিভাগের নিজস্ব প্রশাসনিক সচিবালয় গঠন, জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন। প্রধান বিচারপতি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ। বিচারপতি নিয়োগে জুডিশিয়াল নিয়োগ ও মেধাভিত্তিক পরীক্ষা। আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগে নিরপেক্ষ নিয়োগ পদ্ধতি এবং বিভাগীয় শহরগুলোতে হাইকোর্টের স্থায়ী আসন স্থাপন করার বিষয় তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, দুদককে রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠান বানানো হয়েছে। ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার বানিয়েছে, দুদককে যেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সরকারি ও বিচার বিভাগী কর্মকর্তা যারা ছিল, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা দায়েরের স্বাধীনতা দুদকের ছিল না। দুদকের আইনের ৩২(ক) ধারায় বলা ছিল, যে সরকারি কর্মকর্বতা বা বিচার বিভাগী যে কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করতে চাইলে, সরকারে পূর্বানুমতি নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি, এই প্রক্রিয়াটি দুর্নীতি রোধে একটা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এটাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করা যায়, তাই আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে এই দুদকে ৩২(ক) ধারাটি বাতিল করতে হবে।
দলীয় প্রতিকে স্থানীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাতিল করার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, এই প্রসেসের মধ্য দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত গ্রহণযোগতা সম্পন্ন মানুষ দলীয় ট্যাগ লাগাতে হবে বলে রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছে। জনপ্রতিনিধি হওয়া থেকে বিমুখ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসনের ক্ষেত্রে আমরা আলাদা সংস্কারের প্রস্তাব করেছি। নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণ আইন প্রনয়নের কথা বলেছি। আইন প্রনয়নের কথা বলেছি, নাগরিক সেবা প্রধান অভিযোগ প্রাতিকার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক ন্যয়পাল হিসেবে স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নাগরিক সেবা ও অভিযোগ প্রতিকার কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে নতুন প্রশাসনিক উন্নয়ন এবং সংস্কার বিভাগ সৃজন করার প্রস্তাব দিয়েছি। এসব বিষয়ে টাক্সফোর্স গঠন করে সামগ্রিক বিষয়গুলো দ্রুত রেসপন্স এবং দ্রুত সমন্বয় করার জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিসের কথা বলেছি।
সারজিস আলম বলেন, এই সেবার বিষয়গুলো কতটুকু সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে হবে এবং না করলে তাকে কিভাবে জবাবদিহি করতে হবে এবং তার কি শাস্তি হবে এই সামগ্রিক বিষয়গুলোর একটি রুপ রেখা আমরা আমাদের জায়গা থেকে দিয়েছি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ধানমন্ডিতে বাবার বাড়িতে গেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। ১৭ বছর পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত ‘মাহবুব ভবন’-এ প্রবেশ করেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগেজাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী ড. শহিদুল আলম। আজ সোমবার ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ তথ্য জানান।
৯ ঘণ্টা আগেচিত্রা পরিবহন লিমিটেড নামক একটি বাস কোম্পানির অংশীদারিত্ব ও রুট পারমিট আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল তাদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মহিদুল ইসলাম দাউদের সকল সাংগঠনিক পদ স্থগিত করেছে। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেনারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর নারীদের প্রতি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক যৌথ বিবৃতিতে দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এই নিন্দা জানান।
১০ ঘণ্টা আগে