জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়।
আমাদের এই বাংলাদেশের জন্যও তো ‘এই আমার জন্মভূমি’ বলার সঙ্গে সঙ্গে গর্বে ভরে যায় মন। নানা ধরনের আপদ-বিপদের ভঙ্গুর পথ বেয়ে আমাদের এগিয়ে চলা, কিন্তু ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি!’ আর তার ভাষা? তা নিয়েই তো আমাদের আলাপ-সালাপ।
বাংলা ভাষা ‘গরিব ঘরের মেয়ে’। বনেদি ভাষাভাষীরা এই ভাষাকে বরাবর অবজ্ঞার চোখেই দেখেছে। বাংলায় তুর্কি শাসন পেরিয়ে স্বাধীন সুলতানি আমলে প্রবেশ করার পর এই ভাষা ধীরে ধীরে ভাষা সাম্রাজ্যে তার জায়গা খুঁজে পেতে শুরু করে। কীভাবে সে ঘটনা ঘটল, তা নিয়েই আমরা কথা বলব শুরুতে। তারপর সে পথ বেয়েই পৌঁছে যাব ভাষা আন্দোলনের কাছে।
দীনেশচন্দ্র সেনের শরণাপন্ন হয়ে বলা যায়, বাংলার মুসলমান শাসকেরা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন পরম মমতায়। বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছেন উচ্চাসন। চারদিকে হিন্দু প্রজা, শঙ্খ আর ঘণ্টার রোল, আরতির পঞ্চপ্রদীপ আর রয়েছে সংস্কৃত ভাষায় লেখা রামায়ণ-মহাভারত। মুসলমান বাদশা জানতে চান, ‘এগুলো কী’? পণ্ডিতেরা বলেন, এগুলো বুঝতে হলে ধর্মশাস্ত্র জানা চাই। বাদশা সে পথে গেলেন না। বললেন, ‘দেশি ভাষায় রামায়ণ-মহাভারত রচনা করো।’ পণ্ডিতদের মুখ গেল শুকিয়ে। ইতরের ভাষায় লিখতে হবে দেব ভাষা! বর্ণাশ্রমে জর্জরিত বাংলা চণ্ডালকে দিতে হবে সংস্কৃত ব্রাহ্মণের পাশে আসন!
কিন্তু এ যে রাজাদেশ! তাই পরাগলী মহাভারতে উল্লেখ করা হয়, ‘শ্রীযুত নায়ক সে যে নসরত খান, রচাইল পাঞ্চালী সে গুণের বিধান।’ এর মানে হলো হুসেন শাহের পুত্র নসরত শাহ মহাভারতের বঙ্গানুবাদ করিয়েছেন। ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এই অনুবাদ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। হুসেন শাহের সেনাপতি পরাগল খাঁ কবীন্দ্র পরমেশ্বর নামে এক সুপণ্ডিতকে দিয়ে মহাভারতের অনুবাদ করান।
হুসেন শাহসহ মুসলমান শাসকেরা সে সময় দেশীয় ভাষা বাংলার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। পঞ্চদশ শতাব্দীতে কবি বিজয় গুপ্ত যখন মনসা দেবীর ভাসান গান রচনা করেন, তখন গৌড়ের অধিপতি ছিলেন হুসেন শাহ। বিজয় গুপ্ত লিখেছেন, ‘সনাতন হুসেন শাহ নৃপতি তিলক।’
এটা সেই সময়, যখন বাংলার অধিবাসীরা বাংলা ভাষার সাহিত্যমূল্যের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়।
আমাদের এই বাংলাদেশের জন্যও তো ‘এই আমার জন্মভূমি’ বলার সঙ্গে সঙ্গে গর্বে ভরে যায় মন। নানা ধরনের আপদ-বিপদের ভঙ্গুর পথ বেয়ে আমাদের এগিয়ে চলা, কিন্তু ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি!’ আর তার ভাষা? তা নিয়েই তো আমাদের আলাপ-সালাপ।
বাংলা ভাষা ‘গরিব ঘরের মেয়ে’। বনেদি ভাষাভাষীরা এই ভাষাকে বরাবর অবজ্ঞার চোখেই দেখেছে। বাংলায় তুর্কি শাসন পেরিয়ে স্বাধীন সুলতানি আমলে প্রবেশ করার পর এই ভাষা ধীরে ধীরে ভাষা সাম্রাজ্যে তার জায়গা খুঁজে পেতে শুরু করে। কীভাবে সে ঘটনা ঘটল, তা নিয়েই আমরা কথা বলব শুরুতে। তারপর সে পথ বেয়েই পৌঁছে যাব ভাষা আন্দোলনের কাছে।
দীনেশচন্দ্র সেনের শরণাপন্ন হয়ে বলা যায়, বাংলার মুসলমান শাসকেরা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন পরম মমতায়। বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছেন উচ্চাসন। চারদিকে হিন্দু প্রজা, শঙ্খ আর ঘণ্টার রোল, আরতির পঞ্চপ্রদীপ আর রয়েছে সংস্কৃত ভাষায় লেখা রামায়ণ-মহাভারত। মুসলমান বাদশা জানতে চান, ‘এগুলো কী’? পণ্ডিতেরা বলেন, এগুলো বুঝতে হলে ধর্মশাস্ত্র জানা চাই। বাদশা সে পথে গেলেন না। বললেন, ‘দেশি ভাষায় রামায়ণ-মহাভারত রচনা করো।’ পণ্ডিতদের মুখ গেল শুকিয়ে। ইতরের ভাষায় লিখতে হবে দেব ভাষা! বর্ণাশ্রমে জর্জরিত বাংলা চণ্ডালকে দিতে হবে সংস্কৃত ব্রাহ্মণের পাশে আসন!
কিন্তু এ যে রাজাদেশ! তাই পরাগলী মহাভারতে উল্লেখ করা হয়, ‘শ্রীযুত নায়ক সে যে নসরত খান, রচাইল পাঞ্চালী সে গুণের বিধান।’ এর মানে হলো হুসেন শাহের পুত্র নসরত শাহ মহাভারতের বঙ্গানুবাদ করিয়েছেন। ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এই অনুবাদ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। হুসেন শাহের সেনাপতি পরাগল খাঁ কবীন্দ্র পরমেশ্বর নামে এক সুপণ্ডিতকে দিয়ে মহাভারতের অনুবাদ করান।
হুসেন শাহসহ মুসলমান শাসকেরা সে সময় দেশীয় ভাষা বাংলার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। পঞ্চদশ শতাব্দীতে কবি বিজয় গুপ্ত যখন মনসা দেবীর ভাসান গান রচনা করেন, তখন গৌড়ের অধিপতি ছিলেন হুসেন শাহ। বিজয় গুপ্ত লিখেছেন, ‘সনাতন হুসেন শাহ নৃপতি তিলক।’
এটা সেই সময়, যখন বাংলার অধিবাসীরা বাংলা ভাষার সাহিত্যমূল্যের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।
যশোর-খুলনা অঞ্চলের দুঃখ বলা হয় ভবদহকে। কারণ, প্রায় চার দশক ধরে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এক অভিশপ্ত জলাবদ্ধতার শিকার। বছরের অধিকাংশ সময়ই তারা পানির মধ্যে নিমজ্জিত থাকে। বিভিন্ন সরকারের আমলে জলাবদ্ধতা নিরসনে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোনোটাই তাদের জীবনে স্বস্তি বয়ে আনেনি।
১৪ ঘণ্টা আগেডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে অশালীন ভাষার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে অনেকের বিস্ময়, অস্বস্তি ও অসন্তোষ দৃশ্যমান। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা তথ্যের ছড়াছড়ি, মিথ্যা বয়ান। এর বিপরীতে ফ্যাক্টচেকারদের ক্যারিয়ারেরও উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটছে।
১৪ ঘণ্টা আগেকাতারের আকাশে সেই রাতের নীরবতা হঠাৎই ভেঙে গেল এক ভয়ংকর বিস্ফোরণের গর্জনে। দোহায় হামাসের এক শীর্ষ নেতাকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ যেন শুধু একটি বাড়ি নয়, ভেঙে দিল গোটা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা-সমীকরণের দেয়াল। কাতার—যে নগরী এত দিন কূটনৈতিক আলোচনার মঞ্চ ছিল...
১৪ ঘণ্টা আগেগাজার বোমা আর ক্ষুধার ঘায়ে জর্জরিত ফিলিস্তিনিদের ক্ষতে ক্ষণিকের হলেও স্বস্তির পরশ দিচ্ছে তাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে স্বীকৃতির ‘ঘনঘটা’। ইতিহাসের পরিহাস, স্বীকৃতিদাতা কিছু দেশেরই অস্ত্রশস্ত্র, কূটনৈতিক সমর্থনে পুষ্ট হয়ে ফিলিস্তিনিদের পীড়ন করে এসেছে ক্ষমতাদর্পী ইসরায়েল। ইসরায়েল গাজার সাধারণ বাসিন্দাদ
২ দিন আগে