মামুনুর রশীদ
আমার এক বন্ধু বহু বছর আগে দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে একটা বড় ধরনের ত্রুটি আবিষ্কার করেছিলেন। ত্রুটিটি কমবেশি সব কবি-গীতিকারই করেছেন। দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে প্রকৃতির যে বর্ণনা থাকে সেইভাবে মানুষের কথা থাকে না। যে সংগীতে আবার মানুষের কথা থাকে, তাকে গণসংগীত আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু যেসব গানে প্রকৃতির রূপ যত আবেগ দিয়ে বর্ণনা করা হয়, সেসবই আবার শ্রেষ্ঠ দেশাত্মবোধক গান। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দেশাত্মবোধক গানেও হয়তো প্রকৃতির বর্ণনা থাকে। কিন্তু মানুষের যে শক্তি তা-ও সেসব গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়।
আজকের জলবায়ু পরিবর্তনের কালে প্রকৃতিও সেভাবে থাকছে না। শ্যামল সুন্দর বাংলার দিগন্ত রেখা ক্রমেই ধূসর হয়ে আসছে। এর জন্য যদিও মানুষই দায়ী। তবু কেন মানুষ এই ভয়াবহ পরিবর্তন ঘটাচ্ছে? সম্প্রতি বিশ্বের বড় বড় দেশ প্রকৃতি হত্যার দায় কিছুটা স্বীকার করলেও দায়মুক্ত হওয়ার জন্য বড় কোনো উদ্যোগে এগিয়ে আসছে না কেউ। এ ছাড়া ছোট-বড় কিছু দেশ যেভাবে যুদ্ধ-উন্মাদ হয়ে উঠছে, তা-ও কি কম উৎকণ্ঠার? পৃথিবীর দেশে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, তাতে আমাদের বায়ুমণ্ডল খুব দ্রুতই কার্বন নিঃসরণে বিষাক্ত হয়ে যাবে।
শুধু বায়ুমণ্ডলেই নয়, সমুদ্রের অতলেও নানা ধরনের যুদ্ধাস্ত্রের মহড়ায় পৃথিবীর তিন ভাগ জলাধার সংক্রমিত হয়ে উঠছে। পৃথিবীতে আসছে নতুন নতুন ব্যাধি। তার মধ্যে অধিকাংশই সংক্রামক ও ছোঁয়াচে। পৃথিবীর এক ক্ষুদ্রসংখ্যক মানুষই এর স্রষ্টা। শান্তিপ্রিয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এর জন্য দায়ী নয়। একবার এক দেশে তার শিক্ষার হার নির্ণয়ের জন্য পরিসংখ্যানের কাজ শুরুর প্রাক্কালে একটি সভা হয়। তারা নিশ্চিত, এ বিষয়ে একটি ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সবাই অভিমত দেন, যিনি পড়তে এবং লিখতে পারেন তিনিই শিক্ষিত বলে গণ্য হবেন। সেই সভাপ্রধান আরও একটি বিষয় যুক্ত করতে বললেন। তা হলো, এই মানুষটি স্বাস্থ্যকর পয়ঃপ্রণালি ব্যবহার করেন কি না। তিনিই শিক্ষিত হবেন, যিনি তাঁর শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ব্যবস্থাটি মানেন কি না। আবার শিক্ষায় প্রাথমিক যোগ্যতা থাকলেই চলছে না, তার সঙ্গে চাই স্বাস্থ্যজ্ঞান।
আরও একটি বিষয় যোগ করলে হয়তো তা আরও পূর্ণাঙ্গ হতো, সেটি হলো পরিবেশ জ্ঞান। পরিবেশটা তো শুধু মানুষেরই নয়, উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতেরও। এই জ্ঞানটা প্রভূতভাবে অর্জন করেছিল বিশেষ নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা। তাদের কাছে এই ধরিত্রী ‘মা’। এই মাকে রক্ষা করার জন্য তারা গাছপালা, বন্য প্রাণীর যত্ন নিয়ে থাকে। পাহাড়-নদীকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। প্রকৃতি রক্ষার জন্য তারা বড় বড় যুদ্ধে অতীতে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তাদের যুদ্ধাস্ত্র ছিল তির-ধনুক। বারুদ তারা
কখনোই ব্যবহার করেনি। নিজেরা বারুদে ঝলসে গেছে কিন্তু তবু বারুদ নিয়ে নিজেদের প্রতিরোধ
গড়ে তোলেনি।
বন্ধুর কথাটি আবার মনে হলো। ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’—আমাদের এই গানটিতে কোথাও জনগণ নেই। কিন্তু তিল তিল করে গড়ে ওঠা এই বসুন্ধরার অবমাননা মানুষ সহ্য করবে না। প্রকৃতির বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যোগসূত্রটা যুক্ত করতে পারলেই দেশাত্মবোধক গান মানুষের গান হয়ে উঠতে পারত। শিল্পে সৌন্দর্যবোধ সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতির অসংখ্য ছবি আমরা সেখানে দেখতে পাই। কিন্তু জয়নুল আবেদীনের দুর্ভিক্ষের ছবিতে যে নান্দনিকতা ফুটে ওঠে, তা-ও একধরনের উচ্চ রুচির পরিচয়।
রুচির দুর্ভিক্ষের কথা বলে আমি নানাভাবেই ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখে পড়েছিলাম। রুচির অর্থ নতুন করে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। শিল্প-সাহিত্যের মধ্য দিয়েই মানুষের রুচি তৈরি হয়। আজকের দিনে তার স্থান দখল করেছে মিডিয়া। টেলিভিশন, চলচ্চিত্রের মাধ্যমগুলো উচ্চাঙ্গের সব শিল্পকে স্থূল করে দেয়। বিজ্ঞাপনী চলচ্চিত্রগুলো মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে পণ্যের বিপণনের জন্য, তা-ও কখনো নিদারুণ রুচির দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে। এই মাধ্যমগুলো সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রেও একধরনের পণ্য বিপণনের নিয়ম মেনে চলে। তাতে শুধু পণ্য নয়, মানুষকেও পণ্যের নিরিখেই দেখা হয়ে থাকে। ফলে সেখানেও রুচির দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আগেই বলেছি, লিখতে ও পড়তে পারলেই মানুষ শিক্ষিত হয় না। তাকে স্বাস্থ্যজ্ঞানও অর্জন করতে হয়। স্বাস্থ্যজ্ঞান অর্জন করলেই সে কিন্তু উন্নত রুচির দিকে স্বভাবতই ধাবিত হবে। ঠিক আছে, প্রকৃতিপ্রেমই যদি দেশপ্রেমের একমাত্র নিয়ামক হয়, আমাদের দেশাত্মবোধক গানের মতো; তাহলে যেসব রাষ্ট্রনায়ক যুদ্ধ-বিগ্রহে জড়িয়ে পড়ছেন তাঁদের আমরা কী বলব, যেখানে মানুষ হত্যাই একমাত্র উদ্দেশ্য?
মানবসভ্যতার দুটি বড় নিদর্শন—একটি শিক্ষা অন্যটি সৌন্দর্যবোধ। যার দুটি মিলিয়েই হয় মানবকল্যাণ। কিন্তু কখনো রাজ্য জয় করে কোনো বীর পাঠাগার বা বিশ্ববিদ্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে, মানবকল্যাণ তখন সুদূরের কাহিনি। আজকে যখন ফিলিস্তিনি শিশু, নারী এবং অসহায় মানুষ ইসরায়েলের হামলার ফলে নিষ্ঠুরতার সঙ্গে রক্তাক্ত হচ্ছে, তখন ইসরায়েলের দেশপ্রেম উসকে উঠছে কোন দেশাত্মবোধের কারণে? আর হিংসায় উন্মত্ত এই পৃথিবীতে পূজনীয় বিষয় হচ্ছে প্রতিশোধ। প্রতিশোধ-স্পৃহা যদিও মানুষের আদিম প্রবণতা। যখন পৃথিবীতে একটি রক্তগোলাপ ফুটছে, তখনই রক্তাক্ত হচ্ছে মানুষ। তাই প্রকৃতিকে নিয়ে অজস্র কাব্য এবং গান রচিত হলেও পাশাপাশি মানুষের কথাটিও থাকা প্রয়োজন।
আমরা জানি, ‘সবার ওপর মানুষ সত্য’—এই সত্যকে মেনে নিলে পৃথিবীর সব আয়োজন মানুষ এবং তার সহযোগীদের জন্য। লতা, গুল্ম, ফুল, পাখি, আকাশ, মেঘ এসবের রস আস্বাদন করে মানুষ। মানুষ তার শৈল্পিক ক্ষমতা দিয়ে নতুন নতুন মাত্রা প্রয়োগ করে প্রকৃতিকে। যেসব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে সেসবের কোনো কিছু যদি অবশেষ থাকে তাহলে তার উন্নত সামাজিক ব্যবস্থা, যেমন মহেঞ্জোদারো বা হরপ্পার কথা এলেই প্রশংসিত হয় তার পয়ঃপ্রণালির কথা, যার মধ্য দিয়ে একটা উন্নত মানবকল্যাণের কথা জানা যায়। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমরা জানতে পারি। সেখানকার আবাসিক ব্যবস্থার কথাও বিশ্ববিশ্রুত। অতীতের সব মহৎ সাহিত্যই মানুষের কলঙ্ক, মহত্ত্ব, কল্যাণ চিন্তার কথা বলে। তাই দেশাত্মবোধ মানেই মানুষের জয়গান, মানুষের অদম্য দেশপ্রেম।
লেখক: মামুনুর রশীদ
নাট্যব্যক্তিত্ব
আমার এক বন্ধু বহু বছর আগে দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে একটা বড় ধরনের ত্রুটি আবিষ্কার করেছিলেন। ত্রুটিটি কমবেশি সব কবি-গীতিকারই করেছেন। দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে প্রকৃতির যে বর্ণনা থাকে সেইভাবে মানুষের কথা থাকে না। যে সংগীতে আবার মানুষের কথা থাকে, তাকে গণসংগীত আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু যেসব গানে প্রকৃতির রূপ যত আবেগ দিয়ে বর্ণনা করা হয়, সেসবই আবার শ্রেষ্ঠ দেশাত্মবোধক গান। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দেশাত্মবোধক গানেও হয়তো প্রকৃতির বর্ণনা থাকে। কিন্তু মানুষের যে শক্তি তা-ও সেসব গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়।
আজকের জলবায়ু পরিবর্তনের কালে প্রকৃতিও সেভাবে থাকছে না। শ্যামল সুন্দর বাংলার দিগন্ত রেখা ক্রমেই ধূসর হয়ে আসছে। এর জন্য যদিও মানুষই দায়ী। তবু কেন মানুষ এই ভয়াবহ পরিবর্তন ঘটাচ্ছে? সম্প্রতি বিশ্বের বড় বড় দেশ প্রকৃতি হত্যার দায় কিছুটা স্বীকার করলেও দায়মুক্ত হওয়ার জন্য বড় কোনো উদ্যোগে এগিয়ে আসছে না কেউ। এ ছাড়া ছোট-বড় কিছু দেশ যেভাবে যুদ্ধ-উন্মাদ হয়ে উঠছে, তা-ও কি কম উৎকণ্ঠার? পৃথিবীর দেশে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, তাতে আমাদের বায়ুমণ্ডল খুব দ্রুতই কার্বন নিঃসরণে বিষাক্ত হয়ে যাবে।
শুধু বায়ুমণ্ডলেই নয়, সমুদ্রের অতলেও নানা ধরনের যুদ্ধাস্ত্রের মহড়ায় পৃথিবীর তিন ভাগ জলাধার সংক্রমিত হয়ে উঠছে। পৃথিবীতে আসছে নতুন নতুন ব্যাধি। তার মধ্যে অধিকাংশই সংক্রামক ও ছোঁয়াচে। পৃথিবীর এক ক্ষুদ্রসংখ্যক মানুষই এর স্রষ্টা। শান্তিপ্রিয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এর জন্য দায়ী নয়। একবার এক দেশে তার শিক্ষার হার নির্ণয়ের জন্য পরিসংখ্যানের কাজ শুরুর প্রাক্কালে একটি সভা হয়। তারা নিশ্চিত, এ বিষয়ে একটি ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সবাই অভিমত দেন, যিনি পড়তে এবং লিখতে পারেন তিনিই শিক্ষিত বলে গণ্য হবেন। সেই সভাপ্রধান আরও একটি বিষয় যুক্ত করতে বললেন। তা হলো, এই মানুষটি স্বাস্থ্যকর পয়ঃপ্রণালি ব্যবহার করেন কি না। তিনিই শিক্ষিত হবেন, যিনি তাঁর শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ব্যবস্থাটি মানেন কি না। আবার শিক্ষায় প্রাথমিক যোগ্যতা থাকলেই চলছে না, তার সঙ্গে চাই স্বাস্থ্যজ্ঞান।
আরও একটি বিষয় যোগ করলে হয়তো তা আরও পূর্ণাঙ্গ হতো, সেটি হলো পরিবেশ জ্ঞান। পরিবেশটা তো শুধু মানুষেরই নয়, উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতেরও। এই জ্ঞানটা প্রভূতভাবে অর্জন করেছিল বিশেষ নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা। তাদের কাছে এই ধরিত্রী ‘মা’। এই মাকে রক্ষা করার জন্য তারা গাছপালা, বন্য প্রাণীর যত্ন নিয়ে থাকে। পাহাড়-নদীকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। প্রকৃতি রক্ষার জন্য তারা বড় বড় যুদ্ধে অতীতে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তাদের যুদ্ধাস্ত্র ছিল তির-ধনুক। বারুদ তারা
কখনোই ব্যবহার করেনি। নিজেরা বারুদে ঝলসে গেছে কিন্তু তবু বারুদ নিয়ে নিজেদের প্রতিরোধ
গড়ে তোলেনি।
বন্ধুর কথাটি আবার মনে হলো। ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’—আমাদের এই গানটিতে কোথাও জনগণ নেই। কিন্তু তিল তিল করে গড়ে ওঠা এই বসুন্ধরার অবমাননা মানুষ সহ্য করবে না। প্রকৃতির বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যোগসূত্রটা যুক্ত করতে পারলেই দেশাত্মবোধক গান মানুষের গান হয়ে উঠতে পারত। শিল্পে সৌন্দর্যবোধ সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতির অসংখ্য ছবি আমরা সেখানে দেখতে পাই। কিন্তু জয়নুল আবেদীনের দুর্ভিক্ষের ছবিতে যে নান্দনিকতা ফুটে ওঠে, তা-ও একধরনের উচ্চ রুচির পরিচয়।
রুচির দুর্ভিক্ষের কথা বলে আমি নানাভাবেই ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখে পড়েছিলাম। রুচির অর্থ নতুন করে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। শিল্প-সাহিত্যের মধ্য দিয়েই মানুষের রুচি তৈরি হয়। আজকের দিনে তার স্থান দখল করেছে মিডিয়া। টেলিভিশন, চলচ্চিত্রের মাধ্যমগুলো উচ্চাঙ্গের সব শিল্পকে স্থূল করে দেয়। বিজ্ঞাপনী চলচ্চিত্রগুলো মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে পণ্যের বিপণনের জন্য, তা-ও কখনো নিদারুণ রুচির দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে। এই মাধ্যমগুলো সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রেও একধরনের পণ্য বিপণনের নিয়ম মেনে চলে। তাতে শুধু পণ্য নয়, মানুষকেও পণ্যের নিরিখেই দেখা হয়ে থাকে। ফলে সেখানেও রুচির দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আগেই বলেছি, লিখতে ও পড়তে পারলেই মানুষ শিক্ষিত হয় না। তাকে স্বাস্থ্যজ্ঞানও অর্জন করতে হয়। স্বাস্থ্যজ্ঞান অর্জন করলেই সে কিন্তু উন্নত রুচির দিকে স্বভাবতই ধাবিত হবে। ঠিক আছে, প্রকৃতিপ্রেমই যদি দেশপ্রেমের একমাত্র নিয়ামক হয়, আমাদের দেশাত্মবোধক গানের মতো; তাহলে যেসব রাষ্ট্রনায়ক যুদ্ধ-বিগ্রহে জড়িয়ে পড়ছেন তাঁদের আমরা কী বলব, যেখানে মানুষ হত্যাই একমাত্র উদ্দেশ্য?
মানবসভ্যতার দুটি বড় নিদর্শন—একটি শিক্ষা অন্যটি সৌন্দর্যবোধ। যার দুটি মিলিয়েই হয় মানবকল্যাণ। কিন্তু কখনো রাজ্য জয় করে কোনো বীর পাঠাগার বা বিশ্ববিদ্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে, মানবকল্যাণ তখন সুদূরের কাহিনি। আজকে যখন ফিলিস্তিনি শিশু, নারী এবং অসহায় মানুষ ইসরায়েলের হামলার ফলে নিষ্ঠুরতার সঙ্গে রক্তাক্ত হচ্ছে, তখন ইসরায়েলের দেশপ্রেম উসকে উঠছে কোন দেশাত্মবোধের কারণে? আর হিংসায় উন্মত্ত এই পৃথিবীতে পূজনীয় বিষয় হচ্ছে প্রতিশোধ। প্রতিশোধ-স্পৃহা যদিও মানুষের আদিম প্রবণতা। যখন পৃথিবীতে একটি রক্তগোলাপ ফুটছে, তখনই রক্তাক্ত হচ্ছে মানুষ। তাই প্রকৃতিকে নিয়ে অজস্র কাব্য এবং গান রচিত হলেও পাশাপাশি মানুষের কথাটিও থাকা প্রয়োজন।
আমরা জানি, ‘সবার ওপর মানুষ সত্য’—এই সত্যকে মেনে নিলে পৃথিবীর সব আয়োজন মানুষ এবং তার সহযোগীদের জন্য। লতা, গুল্ম, ফুল, পাখি, আকাশ, মেঘ এসবের রস আস্বাদন করে মানুষ। মানুষ তার শৈল্পিক ক্ষমতা দিয়ে নতুন নতুন মাত্রা প্রয়োগ করে প্রকৃতিকে। যেসব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে সেসবের কোনো কিছু যদি অবশেষ থাকে তাহলে তার উন্নত সামাজিক ব্যবস্থা, যেমন মহেঞ্জোদারো বা হরপ্পার কথা এলেই প্রশংসিত হয় তার পয়ঃপ্রণালির কথা, যার মধ্য দিয়ে একটা উন্নত মানবকল্যাণের কথা জানা যায়। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমরা জানতে পারি। সেখানকার আবাসিক ব্যবস্থার কথাও বিশ্ববিশ্রুত। অতীতের সব মহৎ সাহিত্যই মানুষের কলঙ্ক, মহত্ত্ব, কল্যাণ চিন্তার কথা বলে। তাই দেশাত্মবোধ মানেই মানুষের জয়গান, মানুষের অদম্য দেশপ্রেম।
লেখক: মামুনুর রশীদ
নাট্যব্যক্তিত্ব
লেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
২৮ মিনিট আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
৩৮ মিনিট আগেবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন আমাদের সামনে একটি হতাশাজনক বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
১ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সভা এখন অতীত বিষয়। ওই সভার পর দেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুই সমন্বয় হয়ে গেছে এবং এখনো হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি একটি দ্রুত অগ্রসরমাণ বিষয়। তার কয়েক দিনও এক জায়গায় অবস্থানের সুযোগ নেই।
১ দিন আগে