রাজীব কুমার সাহা
বাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দ হলো নেপথ্য। আমাদের যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দটির প্রয়োগ করেছি। ঘটনার নেপথ্যে কে বা নেপথ্যে থেকে কেউ কোনো ঘটনার কলকাঠি নাড়ছে কি না তা উদ্ঘাটনে আমরা নেপথ্য শব্দটির বহুল ব্যবহার লক্ষ করি। কিন্তু নেপথ্যে শব্দটির মূল অর্থ কী? আমরা কি নেপথ্য শব্দের মূল অর্থ ছাপিয়ে এর আলংকারিক অর্থ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছি? আবার নেপথ্য শব্দটি শুনলে রোগীর উপযুক্ত আহার্যরূপে পথ্য শব্দের কথা মনে পড়ে। পথ্য শব্দের সঙ্গে এর আদৌ কোনো সম্পর্ক রয়েছে? তবে চলুন আজ জানব নেপথ্য শব্দের নেপথ্যকথা।
নেপথ্য তৎসম শব্দ। এর ব্যুৎপত্তি হলো সংস্কৃত [নে+পথ+য]। এটি বিশেষ্য পদ। এর আক্ষরিক অর্থ হলো (দর্শকের অগোচরে) অভিনয়মঞ্চের অন্তরালবর্তী স্থান; রঙ্গালয়ের সজ্জাঘর; বেশ; সজ্জা; অলংকার প্রভৃতি। আর এর আলংকারিক অর্থ হলো আড়াল বা অন্তরাল। অর্থাৎ এর মধ্যে একটি নেতিবাচক দিক রয়েছে। যদিও কালের পরিক্রমায় নেপথ্য শব্দটি তার আক্ষরিক অর্থের মাত্রা ছাড়িয়ে আলংকারিক অর্থেই সমধিক প্রায়োগিক স্থিতি লাভ করেছে। রোগীর উপযুক্ত আহার্যরূপে ব্যবহৃত পথ্য শব্দের সঙ্গে নেপথ্য শব্দের কোনো যোগ নেই, যা শব্দটির ব্যুৎপত্তিতেই সুস্পষ্ট।
নেপথ্য শব্দটির আঁতুড়ঘর রঙ্গমঞ্চ। রঙ্গমঞ্চ মানে নাটকের মঞ্চ। আধুনিক সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে পারি থিয়েটার। আর থিয়েটার ও নাটক যেখানে রয়েছে সেখানে অবধারিতভাবেই চলে আসে অভিনয়ের বিষয়টি। আর অভিনয়ের সঙ্গে নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে অভিনেতা-অভিনেত্রীর। কালের পরিক্রমায় রঙ্গমঞ্চের নেপথ্য শব্দটির জায়গা দখল করে নিয়েছে ইংরেজি গ্রিনরুম শব্দটি। বাংলায় যদি বলি ‘সবুজ ঘর’ তাহলে অনেকেই বুঝতে পারবেন না। যদিও ইতিমধ্যে পারিভাষিক শব্দ হিসেবে গ্রিনরুম শব্দটি বহুলাংশেই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। নাটক বা থিয়েটারের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরা জানেন নাটকের কলাকুশলীদের জন্য মঞ্চের ঠিক পাশের একটি ঘরকে সাধারণত গ্রিনরুম নামে ডাকা হয়। যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নাটকের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। কিন্তু নামটা কেন গ্রিনরুম? যদিও সেটি আরেক গল্প, আরেক দিন বলব।
আগেই বলেছি নেপথ্য তৎসম শব্দ। সংস্কৃতে শব্দটির মূল অর্থ ছিল ‘নায়কের গমনীয় পথ’। অর্থাৎ রঙ্গমঞ্চে নায়ক যে পথ দিয়ে আসা-যাওয়া করে সেটি হলো নেপথ্য। এই পথটি এবং এ পথে নায়কের গমনাগমনের বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়। যদিও আভিধানিক হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ অভিধানে নায়কের গমনাগমনের পথটিকে ‘কামজননাদি ব্যাপার’রূপে উল্লেখ করেছেন। আবার রঙ্গমঞ্চের অন্তরালবর্তী স্থানটিও নেপথ্য। মোটকথা, নেপথ্য হলো সেই আড়ালকৃত স্থান যেখান থেকে প্রম্পটার নামক আপাত অদৃশ্য একজন ব্যক্তি যিনি অনুচ্চস্বরে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপের খেই ধরিয়ে দেন এবং যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অভিনয়ের আগে এবং মাঝে প্রয়োজনীয় সাজসজ্জাদি সম্পন্ন করে নেন। অভিনয়শিল্পীদের অভিনয়ের আগে সাজসজ্জা গ্রহণের বিষয়টিকেই বলা হয় নেপথ্যবিধান। পুরো কাজটিই সম্পাদিত হয় লোকচক্ষুর অন্তরালে। এ অনুষঙ্গেই বর্তমানে নেপথ্য শব্দটি রঙ্গমঞ্চ থেকে উঠে এসে সমাজের সর্বস্তরের আড়ালে থাকা ব্যক্তিটিকে নির্দেশ করে।
নেপথ্য শব্দটি আমরা আলংকারিক অর্থে ভালো-মন্দ দুই রূপেই প্রয়োগ করে থাকি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শব্দটির প্রয়োগ লক্ষ করলে দেখতে পাই এটি অপেক্ষাকৃত নেতিবাচক অর্থেই বেশি প্রযুক্ত হচ্ছে। সুতরাং প্রায়োগিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, নেপথ্য শব্দটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো গোপনীয়তা। শব্দের কালানুক্রমিক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে অনেক সময়ে শব্দ তার আক্ষরিক অর্থ হারালেও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে অটল থাকে। নেপথ্য শব্দটির ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটেছে।
বাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দ হলো নেপথ্য। আমাদের যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দটির প্রয়োগ করেছি। ঘটনার নেপথ্যে কে বা নেপথ্যে থেকে কেউ কোনো ঘটনার কলকাঠি নাড়ছে কি না তা উদ্ঘাটনে আমরা নেপথ্য শব্দটির বহুল ব্যবহার লক্ষ করি। কিন্তু নেপথ্যে শব্দটির মূল অর্থ কী? আমরা কি নেপথ্য শব্দের মূল অর্থ ছাপিয়ে এর আলংকারিক অর্থ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছি? আবার নেপথ্য শব্দটি শুনলে রোগীর উপযুক্ত আহার্যরূপে পথ্য শব্দের কথা মনে পড়ে। পথ্য শব্দের সঙ্গে এর আদৌ কোনো সম্পর্ক রয়েছে? তবে চলুন আজ জানব নেপথ্য শব্দের নেপথ্যকথা।
নেপথ্য তৎসম শব্দ। এর ব্যুৎপত্তি হলো সংস্কৃত [নে+পথ+য]। এটি বিশেষ্য পদ। এর আক্ষরিক অর্থ হলো (দর্শকের অগোচরে) অভিনয়মঞ্চের অন্তরালবর্তী স্থান; রঙ্গালয়ের সজ্জাঘর; বেশ; সজ্জা; অলংকার প্রভৃতি। আর এর আলংকারিক অর্থ হলো আড়াল বা অন্তরাল। অর্থাৎ এর মধ্যে একটি নেতিবাচক দিক রয়েছে। যদিও কালের পরিক্রমায় নেপথ্য শব্দটি তার আক্ষরিক অর্থের মাত্রা ছাড়িয়ে আলংকারিক অর্থেই সমধিক প্রায়োগিক স্থিতি লাভ করেছে। রোগীর উপযুক্ত আহার্যরূপে ব্যবহৃত পথ্য শব্দের সঙ্গে নেপথ্য শব্দের কোনো যোগ নেই, যা শব্দটির ব্যুৎপত্তিতেই সুস্পষ্ট।
নেপথ্য শব্দটির আঁতুড়ঘর রঙ্গমঞ্চ। রঙ্গমঞ্চ মানে নাটকের মঞ্চ। আধুনিক সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে পারি থিয়েটার। আর থিয়েটার ও নাটক যেখানে রয়েছে সেখানে অবধারিতভাবেই চলে আসে অভিনয়ের বিষয়টি। আর অভিনয়ের সঙ্গে নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে অভিনেতা-অভিনেত্রীর। কালের পরিক্রমায় রঙ্গমঞ্চের নেপথ্য শব্দটির জায়গা দখল করে নিয়েছে ইংরেজি গ্রিনরুম শব্দটি। বাংলায় যদি বলি ‘সবুজ ঘর’ তাহলে অনেকেই বুঝতে পারবেন না। যদিও ইতিমধ্যে পারিভাষিক শব্দ হিসেবে গ্রিনরুম শব্দটি বহুলাংশেই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। নাটক বা থিয়েটারের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরা জানেন নাটকের কলাকুশলীদের জন্য মঞ্চের ঠিক পাশের একটি ঘরকে সাধারণত গ্রিনরুম নামে ডাকা হয়। যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নাটকের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। কিন্তু নামটা কেন গ্রিনরুম? যদিও সেটি আরেক গল্প, আরেক দিন বলব।
আগেই বলেছি নেপথ্য তৎসম শব্দ। সংস্কৃতে শব্দটির মূল অর্থ ছিল ‘নায়কের গমনীয় পথ’। অর্থাৎ রঙ্গমঞ্চে নায়ক যে পথ দিয়ে আসা-যাওয়া করে সেটি হলো নেপথ্য। এই পথটি এবং এ পথে নায়কের গমনাগমনের বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়। যদিও আভিধানিক হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ অভিধানে নায়কের গমনাগমনের পথটিকে ‘কামজননাদি ব্যাপার’রূপে উল্লেখ করেছেন। আবার রঙ্গমঞ্চের অন্তরালবর্তী স্থানটিও নেপথ্য। মোটকথা, নেপথ্য হলো সেই আড়ালকৃত স্থান যেখান থেকে প্রম্পটার নামক আপাত অদৃশ্য একজন ব্যক্তি যিনি অনুচ্চস্বরে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপের খেই ধরিয়ে দেন এবং যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অভিনয়ের আগে এবং মাঝে প্রয়োজনীয় সাজসজ্জাদি সম্পন্ন করে নেন। অভিনয়শিল্পীদের অভিনয়ের আগে সাজসজ্জা গ্রহণের বিষয়টিকেই বলা হয় নেপথ্যবিধান। পুরো কাজটিই সম্পাদিত হয় লোকচক্ষুর অন্তরালে। এ অনুষঙ্গেই বর্তমানে নেপথ্য শব্দটি রঙ্গমঞ্চ থেকে উঠে এসে সমাজের সর্বস্তরের আড়ালে থাকা ব্যক্তিটিকে নির্দেশ করে।
নেপথ্য শব্দটি আমরা আলংকারিক অর্থে ভালো-মন্দ দুই রূপেই প্রয়োগ করে থাকি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শব্দটির প্রয়োগ লক্ষ করলে দেখতে পাই এটি অপেক্ষাকৃত নেতিবাচক অর্থেই বেশি প্রযুক্ত হচ্ছে। সুতরাং প্রায়োগিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, নেপথ্য শব্দটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো গোপনীয়তা। শব্দের কালানুক্রমিক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে অনেক সময়ে শব্দ তার আক্ষরিক অর্থ হারালেও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে অটল থাকে। নেপথ্য শব্দটির ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটেছে।
ড. কামরুল হাসান মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্যের ব্রুনেল ইউনিভার্সিটির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পিএইচডি করেছেন। হামবোল্ট রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন জার্মানির পটসডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১০ ঘণ্টা আগেমানুষের জীবনে আতঙ্ক বা ভয় একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়। পারিপার্শ্বিকতার কারণে ছোটবেলা থেকেই ভূত-প্রেত, দেও-দৈত্য, রাক্ষস-খোক্কস প্রভৃতি শব্দ ও কল্পিত ভয়ংকর রূপ বা চেহারা অন্তরে গেঁথে যায় এবং সেখান থেকেই আতঙ্কের যাত্রা হয়েছে শুরু। একটু উনিশ-বিশ হলেই ভয় লাগে, বুক ধড়ফড় করে ওঠে।
১০ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঐতিহাসিক বৈঠক হয়েছে। পুরো বিশ্বের নজর ছিল সেদিকে। সাধারণত যেটা হয়, দুই দেশের নেতারা যখন মুখোমুখি হন, তখন বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা বসেন হিসাবনিকাশে।
১১ ঘণ্টা আগেপ্রায় সময়ই খবর হয়, যানজটের কারণে রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছে দিতে পারে না অ্যাম্বুলেন্স এবং পথেই রোগীর মৃত্যু। ২০১৮ সালে সড়ক আন্দোলনের সময়টায় যখন দ্রুত ও সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আন্দোলনকারীরা আলাদা লেন করে দিল...
১১ ঘণ্টা আগে