নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
পরাজিত শক্তি অর্থ ব্যয় করে অপপ্রচারের মহা কারখানা গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, নিত্যনতুনভাবে অপপ্রচার হবে, সবাইকে দ্বিধাগ্রস্ত করবে। কোনো অপপ্রচার দেখলে মানুষকে সচেতন করার জন্য পুলিশের প্রতি নির্দেশনা দেন তিনি।
আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে যেকোনো যুদ্ধ জয় সম্ভব বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই যে এগিয়ে যাওয়ার যে যুদ্ধ, লড়াই যেটা, এটা আনন্দের লড়াই, এটা কষ্টের লড়াই না।
অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই এর মধ্যে যা আমরা করতে চাই, যা আমাদের সামর্থ্য আছে, এগুলো করে ফেলা। আমাদের যত সংস্কার করার দরকার আছে, করে ফেলব। কারও জন্য অপেক্ষা করে আমাদের কোনো ফায়দা হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
নির্বাচনে পুলিশ নানা রকমের সমস্যায় পড়তে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নানা রকম চাপ আসবে, ডেসপারেট হয়ে যাবে—আমার কেন্দ্র জিতাতে হবে, ওর কেন্দ্রকে জিতাতে হবে, তুমি এখন আইন মানতে চাইলে তোমার ওপরে ক্ষ্যাপাক্ষেপি করবে। আমাদের সেখানে শক্ত থাকতে হবে, আইনের ভেতরে থাকতে হবে। যাতে করে নির্বাচিত সরকার আইনের সরকার হয়।’
পুলিশকে নির্বাচনের সময় আইন অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এক মহা অন্ধকার আমরা পার হয়ে এসেছি। আমাদের কপাল ভালো। ছাত্ররা আমাদের সেটা থেকে মুক্তি দিয়েছে। আমরা যেন আবার এই গর্তের মধ্যে ঢুকে না পড়ি। তাহলে আমাদের কেউ আর উদ্ধার করতে পারবে না।’
সরকারকে কোনো কাজ করতে হলে তার পরিবেশ পুলিশকে তৈরি করতে হয় বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারে বারে আমরা বলছি দুটো শব্দ—আইন ও শৃঙ্খলা। এটাই হলো পুলিশ। কাজেই ওই পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। আইনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।’ পুলিশকে অবহেলা করে বা পাশ কাটিয়ে দেশ গড়া সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলে তখন বাকি জিনিসগুলো হয়। তখন বীজ লাগানো হয়, চারা লাগানো যায়—সবকিছু হয়।’
বৈঠকে পুলিশের কর্মকর্তারা তাঁদের সমস্যার কথা বলেন। সেগুলো সমাধান করার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। এ নিয়ে বৈঠক করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হারিয়ে ফেলা খুব সোজা। মুহূর্তে হারিয়ে যায়। এই সম্ভাবনাকে ধরে রাখার যেটুকু সময় আমাদের আছে, সেটুকু সময়ের মধ্যে আমরা চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে যারা আসবে, তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই। এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে পরিণত হবে।’
গণ-অভ্যুত্থানের পরে সারা দুনিয়া সমর্থন করেছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু মিনমিনে সমর্থন না। আচ্ছা আচ্ছা, ঠিক আছে করো, ওরকম না। উৎসাহভরে এগিয়ে আসল। তারা যে রকম মনে করেছে যে এই দেশ যদি উঠে দাঁড়াতে পারে, সেটা ভালো সঙ্গী হবে সবার।’
আওয়ামী লীগের সময়কালকে তথা পুরোনো বাংলাদেশ ‘অন্ধকার যুগ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সে সময় পুলিশ সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল, হুকুমের চাপে তাদের চিন্তায় তা ঢুকে গিয়েছিল বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।
পুলিশকে সেই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করার জন্য তোমাদেরকে ওই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে যে, আমরা নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করব। আমাদের অনেক দোষ দেয়। আমরা দেখিয়ে দেব, মানুষ খারাপ না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়েছিলাম। আমরা সেই খারাপ মানুষ থেকে বের হয়ে এসেছি। আমরা ভালো মানুষ, দেখো আমরা কী করতে পারি। সেই দৃঢ় চিন্তাটা মাথার ভেতরে রাখতে হবে। আমরা একটু দেখিয়ে দেব, আমাদের সবাই গালিগালাজ করে মন্দভাবে। আমাদের কাজের মাধ্যমে আমরা দেখাব।’
নতুন বাংলাদেশ স্লোগানের যুক্তি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, নতুন দেশ আর আশপাশে দুই-চারটা দেশের সঙ্গে পাল্লা দেবে না, আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়। আমরা ছোট মাঠে খেলার খেলোয়াড় না। বাংলাদেশ অপূর্ব একটা দেশ। আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলব।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সৃজনশীল কাজ করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা। নিজ নিজ জেলার সমস্যার তালিকা করে সমাধান করার কথা বলেন তিনি। নারীদের নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীদের সুরক্ষা দেওয়া এটা একটা মস্ত বড় কাজ। এটা আমাদের অবহেলার কারণেই এটা ক্রমে সমাজের মধ্যে দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। আমাদের দেশের অর্ধেক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে বলেন সরকারপ্রধান। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন তিনি।
জেলাওয়ারি আইনশৃঙ্খলার র্যাঙ্কিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কাজের উৎসাহ দিতে এটা করা; যেন ঝিমিয়ে পড়লে এটা আমাকে জাগিয়ে দেয়।
অনলাইনে মামলার সুবিধার কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার কথা আবারও জানান তিনি। রোহিঙ্গারা যাতে পাসপোর্ট না নিতে পারে, সে জন্য ইউএনএসির ডেটাবেইসের তথ্য সরকার নিচ্ছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিকসটা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত তথ্য স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। পাসপোর্ট অথরিটি ঠিক করবে যে তুমি রোহিঙ্গা; তোমাকে আমরা পাসপোর্ট দিতে পারলাম না এখানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার নাই।
পুলিশের কাজ সহজ করার জন্য সরকার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। পুলিশ হলো কোর বাহিনী, যারা মানুষের সঙ্গে সরকারকে সংযুক্ত রাখে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম। সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৭ কর্মকর্তা যোগ দেন।

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
পরাজিত শক্তি অর্থ ব্যয় করে অপপ্রচারের মহা কারখানা গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, নিত্যনতুনভাবে অপপ্রচার হবে, সবাইকে দ্বিধাগ্রস্ত করবে। কোনো অপপ্রচার দেখলে মানুষকে সচেতন করার জন্য পুলিশের প্রতি নির্দেশনা দেন তিনি।
আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে যেকোনো যুদ্ধ জয় সম্ভব বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই যে এগিয়ে যাওয়ার যে যুদ্ধ, লড়াই যেটা, এটা আনন্দের লড়াই, এটা কষ্টের লড়াই না।
অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই এর মধ্যে যা আমরা করতে চাই, যা আমাদের সামর্থ্য আছে, এগুলো করে ফেলা। আমাদের যত সংস্কার করার দরকার আছে, করে ফেলব। কারও জন্য অপেক্ষা করে আমাদের কোনো ফায়দা হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
নির্বাচনে পুলিশ নানা রকমের সমস্যায় পড়তে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নানা রকম চাপ আসবে, ডেসপারেট হয়ে যাবে—আমার কেন্দ্র জিতাতে হবে, ওর কেন্দ্রকে জিতাতে হবে, তুমি এখন আইন মানতে চাইলে তোমার ওপরে ক্ষ্যাপাক্ষেপি করবে। আমাদের সেখানে শক্ত থাকতে হবে, আইনের ভেতরে থাকতে হবে। যাতে করে নির্বাচিত সরকার আইনের সরকার হয়।’
পুলিশকে নির্বাচনের সময় আইন অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এক মহা অন্ধকার আমরা পার হয়ে এসেছি। আমাদের কপাল ভালো। ছাত্ররা আমাদের সেটা থেকে মুক্তি দিয়েছে। আমরা যেন আবার এই গর্তের মধ্যে ঢুকে না পড়ি। তাহলে আমাদের কেউ আর উদ্ধার করতে পারবে না।’
সরকারকে কোনো কাজ করতে হলে তার পরিবেশ পুলিশকে তৈরি করতে হয় বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারে বারে আমরা বলছি দুটো শব্দ—আইন ও শৃঙ্খলা। এটাই হলো পুলিশ। কাজেই ওই পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। আইনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।’ পুলিশকে অবহেলা করে বা পাশ কাটিয়ে দেশ গড়া সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলে তখন বাকি জিনিসগুলো হয়। তখন বীজ লাগানো হয়, চারা লাগানো যায়—সবকিছু হয়।’
বৈঠকে পুলিশের কর্মকর্তারা তাঁদের সমস্যার কথা বলেন। সেগুলো সমাধান করার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। এ নিয়ে বৈঠক করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হারিয়ে ফেলা খুব সোজা। মুহূর্তে হারিয়ে যায়। এই সম্ভাবনাকে ধরে রাখার যেটুকু সময় আমাদের আছে, সেটুকু সময়ের মধ্যে আমরা চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে যারা আসবে, তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই। এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে পরিণত হবে।’
গণ-অভ্যুত্থানের পরে সারা দুনিয়া সমর্থন করেছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু মিনমিনে সমর্থন না। আচ্ছা আচ্ছা, ঠিক আছে করো, ওরকম না। উৎসাহভরে এগিয়ে আসল। তারা যে রকম মনে করেছে যে এই দেশ যদি উঠে দাঁড়াতে পারে, সেটা ভালো সঙ্গী হবে সবার।’
আওয়ামী লীগের সময়কালকে তথা পুরোনো বাংলাদেশ ‘অন্ধকার যুগ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সে সময় পুলিশ সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল, হুকুমের চাপে তাদের চিন্তায় তা ঢুকে গিয়েছিল বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।
পুলিশকে সেই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করার জন্য তোমাদেরকে ওই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে যে, আমরা নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করব। আমাদের অনেক দোষ দেয়। আমরা দেখিয়ে দেব, মানুষ খারাপ না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়েছিলাম। আমরা সেই খারাপ মানুষ থেকে বের হয়ে এসেছি। আমরা ভালো মানুষ, দেখো আমরা কী করতে পারি। সেই দৃঢ় চিন্তাটা মাথার ভেতরে রাখতে হবে। আমরা একটু দেখিয়ে দেব, আমাদের সবাই গালিগালাজ করে মন্দভাবে। আমাদের কাজের মাধ্যমে আমরা দেখাব।’
নতুন বাংলাদেশ স্লোগানের যুক্তি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, নতুন দেশ আর আশপাশে দুই-চারটা দেশের সঙ্গে পাল্লা দেবে না, আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়। আমরা ছোট মাঠে খেলার খেলোয়াড় না। বাংলাদেশ অপূর্ব একটা দেশ। আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলব।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সৃজনশীল কাজ করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা। নিজ নিজ জেলার সমস্যার তালিকা করে সমাধান করার কথা বলেন তিনি। নারীদের নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীদের সুরক্ষা দেওয়া এটা একটা মস্ত বড় কাজ। এটা আমাদের অবহেলার কারণেই এটা ক্রমে সমাজের মধ্যে দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। আমাদের দেশের অর্ধেক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে বলেন সরকারপ্রধান। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন তিনি।
জেলাওয়ারি আইনশৃঙ্খলার র্যাঙ্কিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কাজের উৎসাহ দিতে এটা করা; যেন ঝিমিয়ে পড়লে এটা আমাকে জাগিয়ে দেয়।
অনলাইনে মামলার সুবিধার কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার কথা আবারও জানান তিনি। রোহিঙ্গারা যাতে পাসপোর্ট না নিতে পারে, সে জন্য ইউএনএসির ডেটাবেইসের তথ্য সরকার নিচ্ছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিকসটা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত তথ্য স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। পাসপোর্ট অথরিটি ঠিক করবে যে তুমি রোহিঙ্গা; তোমাকে আমরা পাসপোর্ট দিতে পারলাম না এখানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার নাই।
পুলিশের কাজ সহজ করার জন্য সরকার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। পুলিশ হলো কোর বাহিনী, যারা মানুষের সঙ্গে সরকারকে সংযুক্ত রাখে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম। সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৭ কর্মকর্তা যোগ দেন।

জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
১০ ঘণ্টা আগে
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
১০ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
১১ ঘণ্টা আগেরেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা

জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি। দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে নৈরাজ্য। যানবাহনে একের পর এক আগুন দেওয়া হচ্ছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে ককটেল।
সরকারঘোষিত সময় অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট নিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। এমন একসময়ে রাজধানীসহ দেশজুড়ে নৈরাজ্য ও অস্থিরতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, নানা কারণে সে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট প্রশ্নে মতভিন্নতায় দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সুযোগ নিচ্ছে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসতে পারছে না। দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় তাদের মধ্যে বিভাজনটা সৃষ্টি হয়েছে এবং মতভেদ বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে যা সংকটে পরিণত হয়েছে। এর দায় তাদের নিতে হবে।
আগামীকাল ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এদিনকে ঘিরে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। দলটির বিদেশে অবস্থানকারী নেতারা একের পর এক হুমকি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গতকালও রাজধানীর সূত্রাপুরে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে নির্বাচনী গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। একই সময়ে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। গত সোমবার দিনদুপুরে রাজধানীতে গুলি করে মারা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে। এ দুই ঘটনা দীর্ঘদিন পর আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীতে আরও বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে, প্রশাসনে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ।
এমন অবস্থার জন্য দলগুলোর ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করেছেন অনেক বিশ্লেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারম্যান শারমীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন শক্তি এখানে কাজ করছে। যারা নির্বাচনকে সঠিক সময়ে হতে দিতে চায় না বা সুষ্ঠু নির্বাচনে যাদের রাজনৈতিক পরিকল্পনায় অসুবিধা হতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো আছে।
বিরাজমান পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের কারণ নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে না দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াত। দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটার সঙ্গে বর্তমানে সৃষ্ট যে অসন্তোষ বা অশান্তি, তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আমরা মনে করি।’ তিনি বলেন, ‘এখানে নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না, নানাভাবে দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারাই এ বিশৃঙ্খলা করছে।’
চলমান নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য অবশ্য সরাসরি সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে জামায়াতে ইসলামী। জানতে চাইলে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘এটা তো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের ব্যর্থতা নয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের, তাদের এত বাহিনী কী করে, গোয়েন্দা বাহিনী কী করে? তাদের কাজ তো এগুলো দমন করা। এ ব্যর্থতা হলো সরকারের, সরকারের প্রশাসনের।’
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতাকে সমানভাবে দায়ী করছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোর অনৈক্যে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন। একই সঙ্গে সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুন জ্বালিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে এবং জনমনে ভীতি ছড়াচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন নির্বিকার বলেই এসব ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও ব্যর্থতা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা দেখেছি, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অনেক অপরাধীই জামিন পেয়ে গেছে। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে এখন দেশকে অস্থিতিশীল এবং পুরোনো বন্দোবস্তে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।’
রাজধানীতে বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। এগুলো যেন আর না হয়, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এগুলো যারা করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এসব দুষ্কৃতকারীকে প্রতিহত করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। গতকাল মঞ্চের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের সময় প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান এবং সরকারের দায়সারা আচরণের ফলে যে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ সুযোগে পরাজিত মাফিয়া গোষ্ঠী অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়েছে। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’

জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি। দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে নৈরাজ্য। যানবাহনে একের পর এক আগুন দেওয়া হচ্ছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে ককটেল।
সরকারঘোষিত সময় অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট নিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। এমন একসময়ে রাজধানীসহ দেশজুড়ে নৈরাজ্য ও অস্থিরতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, নানা কারণে সে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট প্রশ্নে মতভিন্নতায় দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সুযোগ নিচ্ছে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসতে পারছে না। দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় তাদের মধ্যে বিভাজনটা সৃষ্টি হয়েছে এবং মতভেদ বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে যা সংকটে পরিণত হয়েছে। এর দায় তাদের নিতে হবে।
আগামীকাল ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এদিনকে ঘিরে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। দলটির বিদেশে অবস্থানকারী নেতারা একের পর এক হুমকি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গতকালও রাজধানীর সূত্রাপুরে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে নির্বাচনী গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। একই সময়ে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। গত সোমবার দিনদুপুরে রাজধানীতে গুলি করে মারা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে। এ দুই ঘটনা দীর্ঘদিন পর আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীতে আরও বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে, প্রশাসনে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ।
এমন অবস্থার জন্য দলগুলোর ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করেছেন অনেক বিশ্লেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারম্যান শারমীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন শক্তি এখানে কাজ করছে। যারা নির্বাচনকে সঠিক সময়ে হতে দিতে চায় না বা সুষ্ঠু নির্বাচনে যাদের রাজনৈতিক পরিকল্পনায় অসুবিধা হতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো আছে।
বিরাজমান পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের কারণ নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে না দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াত। দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটার সঙ্গে বর্তমানে সৃষ্ট যে অসন্তোষ বা অশান্তি, তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আমরা মনে করি।’ তিনি বলেন, ‘এখানে নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না, নানাভাবে দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারাই এ বিশৃঙ্খলা করছে।’
চলমান নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য অবশ্য সরাসরি সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে জামায়াতে ইসলামী। জানতে চাইলে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘এটা তো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের ব্যর্থতা নয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের, তাদের এত বাহিনী কী করে, গোয়েন্দা বাহিনী কী করে? তাদের কাজ তো এগুলো দমন করা। এ ব্যর্থতা হলো সরকারের, সরকারের প্রশাসনের।’
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতাকে সমানভাবে দায়ী করছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোর অনৈক্যে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন। একই সঙ্গে সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুন জ্বালিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে এবং জনমনে ভীতি ছড়াচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন নির্বিকার বলেই এসব ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও ব্যর্থতা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা দেখেছি, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অনেক অপরাধীই জামিন পেয়ে গেছে। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে এখন দেশকে অস্থিতিশীল এবং পুরোনো বন্দোবস্তে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।’
রাজধানীতে বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। এগুলো যেন আর না হয়, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এগুলো যারা করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এসব দুষ্কৃতকারীকে প্রতিহত করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। গতকাল মঞ্চের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের সময় প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান এবং সরকারের দায়সারা আচরণের ফলে যে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ সুযোগে পরাজিত মাফিয়া গোষ্ঠী অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়েছে। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
১৭ মার্চ ২০২৫
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
১০ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
১১ ঘণ্টা আগেড. ইফতেখারুজ্জামান

সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
তবে এটুকু অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না যে এর পেছনে মূলত পতিত কর্তৃত্ববাদী শক্তি, যারা অভূতপূর্ব জুলাই আন্দোলনের ফলে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারছে না। তাদের কোনো অনুশোচনা নেই, যা তাদের কাছে আশা করাও অবাস্তব। বরং তাদের আছে চোরতন্ত্রের ফলে অর্জিত সীমাহীন অর্থ ও পেশিশক্তি, যার ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবহার করে তারা দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে চাইছে।
তাদের রেখে যাওয়া জঞ্জাল অপসারণ করে রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্রে উত্তরণের অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সমন্বিত কৌশলে অপতৎপরতায় লিপ্ত এই স্বার্থান্বেষী মহল। এটি উপলব্ধি করা যেমন কোনো রকেট বিজ্ঞানের বিষয় নয়, তেমনি শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সরকার ও উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হাতে এদের নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করি। যদি এই সক্ষমতার প্রয়োগ অ্যাডহকভিত্তিক না হয়ে সুচিন্তিত ও বহুমাত্রিক কৌশলনির্ভর হয়।
একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে বিজয়ী ও বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলসমূহের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশের মধ্যে চলমান অনৈক্য, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও অসহিষ্ণুতা যেন পতিত অপশক্তির জন্য অধিকতর সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না করে, তা মনে রাখা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অপরিহার্য।
লেখক: নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
তবে এটুকু অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না যে এর পেছনে মূলত পতিত কর্তৃত্ববাদী শক্তি, যারা অভূতপূর্ব জুলাই আন্দোলনের ফলে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারছে না। তাদের কোনো অনুশোচনা নেই, যা তাদের কাছে আশা করাও অবাস্তব। বরং তাদের আছে চোরতন্ত্রের ফলে অর্জিত সীমাহীন অর্থ ও পেশিশক্তি, যার ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবহার করে তারা দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে চাইছে।
তাদের রেখে যাওয়া জঞ্জাল অপসারণ করে রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্রে উত্তরণের অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সমন্বিত কৌশলে অপতৎপরতায় লিপ্ত এই স্বার্থান্বেষী মহল। এটি উপলব্ধি করা যেমন কোনো রকেট বিজ্ঞানের বিষয় নয়, তেমনি শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সরকার ও উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হাতে এদের নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করি। যদি এই সক্ষমতার প্রয়োগ অ্যাডহকভিত্তিক না হয়ে সুচিন্তিত ও বহুমাত্রিক কৌশলনির্ভর হয়।
একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে বিজয়ী ও বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলসমূহের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশের মধ্যে চলমান অনৈক্য, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও অসহিষ্ণুতা যেন পতিত অপশক্তির জন্য অধিকতর সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না করে, তা মনে রাখা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অপরিহার্য।
লেখক: নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
১৭ মার্চ ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
১০ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
১১ ঘণ্টা আগেরাশেদা কে চৌধূরী

দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
কিন্তু সেই আশার বিপরীতে এখন গোটা দেশে ‘ঘোলাটে’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা। প্রতিনিয়ত অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এসব অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। আর এ পরিস্থিতি কেউ কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গনগুলোয় উদ্বেগজনকভাবে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা গোষ্ঠীর উদয় হয়েছে। এগুলো চিহ্নিত করা বা নিরসনের দায়িত্ব তো নাগরিকের না, রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের উচিত এসব বিষয়ে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব নেওয়া; কারণ, অরাজকতার ভার জনগণের নয়, সরকারকেই বহন করতে হবে। তবে এ দায় শুধু সরকারের ওপর চাপিয়ে দিলেও হবে না। আমরা নাগরিকেরাও এই অবস্থার জন্য কমবেশি দায়ী। কখনো সচেতনভাবে, কখনো অবচেতনে আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব থেকেছি।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও রাজনীতির মাঠে সমঝোতার দেখা মিলছে না। রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভাবতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা কী? জনগণ শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়। তাই দলগুলোকে কমপক্ষে একটি ন্যূনতম ঐক্যের জায়গায় আসতে হবে। মতবিরোধ থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সমঝোতা ছাড়া কোনো সমাজে শান্তি আসে না।
আজকের এই অস্থিরতার ফলে বিনিয়োগ কমছে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগণের স্বার্থকে কেন্দ্র করে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া।
লেখক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা

দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
কিন্তু সেই আশার বিপরীতে এখন গোটা দেশে ‘ঘোলাটে’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা। প্রতিনিয়ত অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এসব অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। আর এ পরিস্থিতি কেউ কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গনগুলোয় উদ্বেগজনকভাবে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা গোষ্ঠীর উদয় হয়েছে। এগুলো চিহ্নিত করা বা নিরসনের দায়িত্ব তো নাগরিকের না, রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের উচিত এসব বিষয়ে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব নেওয়া; কারণ, অরাজকতার ভার জনগণের নয়, সরকারকেই বহন করতে হবে। তবে এ দায় শুধু সরকারের ওপর চাপিয়ে দিলেও হবে না। আমরা নাগরিকেরাও এই অবস্থার জন্য কমবেশি দায়ী। কখনো সচেতনভাবে, কখনো অবচেতনে আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব থেকেছি।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও রাজনীতির মাঠে সমঝোতার দেখা মিলছে না। রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভাবতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা কী? জনগণ শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়। তাই দলগুলোকে কমপক্ষে একটি ন্যূনতম ঐক্যের জায়গায় আসতে হবে। মতবিরোধ থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সমঝোতা ছাড়া কোনো সমাজে শান্তি আসে না।
আজকের এই অস্থিরতার ফলে বিনিয়োগ কমছে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগণের স্বার্থকে কেন্দ্র করে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া।
লেখক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
১৭ মার্চ ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
১০ ঘণ্টা আগে
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
১১ ঘণ্টা আগেফরহাদ মজহার

নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত। গণ-অভ্যুত্থানের পরে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় যদি আমরা যেতাম, তাহলে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে জনগণকে আমরা যুক্ত করে নিতে পারতাম। কিন্তু জনগণকে আমরা বাংলাদেশ নতুনভাবে গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করিনি। বিপরীতে আমরা যুক্ত লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তথাকথিত ‘জাতীয় ঐকমত্য’ স্থাপনের চেষ্টা করছি।
গণ-অভ্যুত্থান যৌক্তিকভাবে যেখানে পৌঁছানোর কথা, আমরা তাকে সেখানে যেতে দিইনি। না দেওয়ার কারণে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে আমরা সরকারটা গঠন করেছি। বিদ্যমান সংবিধানে ‘উপদেষ্টা’ বলে কোনো কিছু নেই। ফলে এই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শুরুতেই। অবৈধ সরকার সমঝোতা করতে বসেছে লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির সঙ্গে। ফলে গলদ তো এই জায়গাতেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আমরা এখন নির্বাচনের ধুয়া তুলছি, ভুলে যাচ্ছি, আমরা একটি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে আছি।
উপদেষ্টা সরকার শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষা করতে শপথ নিয়েছে। তাহলে কী করে আবার বিভিন্ন রকম কমিশন (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ ১১টি সংস্কার কমিশন) করে? সংবিধান সংস্কারের কোনো এখতিয়ার তো সরকারের নেই। এই প্রকট স্ববিরোধিতাই হলো এখনকার অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে একতরফা দোষারোপ করা যাবে না। প্রধান দোষ কিন্তু সরকারের।
বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে বর্তমান সংবিধান অবশ্যই ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বলতে হবে—আমরা সাংবিধানিকভাবে আমাদের সংকট সমাধান করার চেষ্টা করেছি এবং আমরা দেখেছি, ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা এবং প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলো কোনো অর্থপূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ফলে আমাদের সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের চেষ্টাটা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমরা এখন বর্তমান সংবিধানকে বাতিল ঘোষণা করছি এবং এখন থেকে আমরা আমরা আমাদের পূর্ণ গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent) সম্পন্ন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলে ঘোষণা করছি। আগামী নির্বাচনটা হবে গণপরিষদ নির্বাচন এবং গণপরিষদে বাংলাদেশের জন্য নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে।
তাহলে সংকটটা কী আসলে? বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন এবং গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েম। এটাই তো সংকট? তো গঠনতন্ত্র (Constitution) তৈরি করতে দেবেন না?
বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। সবই লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি। কেন? বলা হয়, নির্বাচন করতে ২০-৩০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে কি কোনো সাধারণ লোকের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব? লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি ছাড়া নির্বাচনের কি কারও সামর্থ্য আছে? তাই নির্বাচনের কথা বলা অবান্তর ও অবাস্তব।
লেখক: কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক

নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত। গণ-অভ্যুত্থানের পরে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় যদি আমরা যেতাম, তাহলে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে জনগণকে আমরা যুক্ত করে নিতে পারতাম। কিন্তু জনগণকে আমরা বাংলাদেশ নতুনভাবে গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করিনি। বিপরীতে আমরা যুক্ত লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তথাকথিত ‘জাতীয় ঐকমত্য’ স্থাপনের চেষ্টা করছি।
গণ-অভ্যুত্থান যৌক্তিকভাবে যেখানে পৌঁছানোর কথা, আমরা তাকে সেখানে যেতে দিইনি। না দেওয়ার কারণে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে আমরা সরকারটা গঠন করেছি। বিদ্যমান সংবিধানে ‘উপদেষ্টা’ বলে কোনো কিছু নেই। ফলে এই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শুরুতেই। অবৈধ সরকার সমঝোতা করতে বসেছে লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির সঙ্গে। ফলে গলদ তো এই জায়গাতেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আমরা এখন নির্বাচনের ধুয়া তুলছি, ভুলে যাচ্ছি, আমরা একটি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে আছি।
উপদেষ্টা সরকার শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষা করতে শপথ নিয়েছে। তাহলে কী করে আবার বিভিন্ন রকম কমিশন (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ ১১টি সংস্কার কমিশন) করে? সংবিধান সংস্কারের কোনো এখতিয়ার তো সরকারের নেই। এই প্রকট স্ববিরোধিতাই হলো এখনকার অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে একতরফা দোষারোপ করা যাবে না। প্রধান দোষ কিন্তু সরকারের।
বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে বর্তমান সংবিধান অবশ্যই ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বলতে হবে—আমরা সাংবিধানিকভাবে আমাদের সংকট সমাধান করার চেষ্টা করেছি এবং আমরা দেখেছি, ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা এবং প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলো কোনো অর্থপূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ফলে আমাদের সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের চেষ্টাটা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমরা এখন বর্তমান সংবিধানকে বাতিল ঘোষণা করছি এবং এখন থেকে আমরা আমরা আমাদের পূর্ণ গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent) সম্পন্ন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলে ঘোষণা করছি। আগামী নির্বাচনটা হবে গণপরিষদ নির্বাচন এবং গণপরিষদে বাংলাদেশের জন্য নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে।
তাহলে সংকটটা কী আসলে? বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন এবং গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েম। এটাই তো সংকট? তো গঠনতন্ত্র (Constitution) তৈরি করতে দেবেন না?
বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। সবই লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি। কেন? বলা হয়, নির্বাচন করতে ২০-৩০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে কি কোনো সাধারণ লোকের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব? লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি ছাড়া নির্বাচনের কি কারও সামর্থ্য আছে? তাই নির্বাচনের কথা বলা অবান্তর ও অবাস্তব।
লেখক: কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
১৭ মার্চ ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
১০ ঘণ্টা আগে
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
১০ ঘণ্টা আগে