Ajker Patrika

‘ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করলে সরকার কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করলে সরকার কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’

নিত্য পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এতে সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। দাম সহনীয় করতে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি দলীয় দুই সাংসদ এসব অভিযোগ করেন।

জাতীয় পার্টির সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘নিত্য পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। নিম্নবিত্ত ও সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। দুই দিন পরে রমজান মাস। এই মুহূর্তে সরকারে প্রয়োজন নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। সরকার অনেক সময় বলছে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। সরকারের চেয়ে শক্তিশালী কেউ নেই। যদি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে থাকে, তাহলে সরকার কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কেন অবৈধ মজুতদারের ব্যাপারে সরকার উদাসীন। মানুষ দয়া ভিক্ষা চাচ্ছে না। রাষ্ট্রের উচিত মানুষ যাতে সহনীয় মূল্যে দ্রব্য কিনতে পারে সেই ব্যবস্থা করা।’

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সরকার সময়ের কাজ সময়ে করছে না বলে দাবি করছেন বিএনপির দলীয় সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। তিনি বলেন, ‘দুই তিন মাস আগ থেকে আমরা দেখছি দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি। কিন্তু সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স করল দুই মাস পর। গত তিন মাসে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জাঁতাকলে পড়ে গরিব নিঃস্ব। মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে যাচ্ছে।’ 

গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দ্রব্যমূল্য নিয়ে চমৎকার কথা বলেছেন। আমি মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। কিন্তু কথাগুলো যেন ছিল শুধু এক কোটি মানুষের জন্য। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত সাড়ে ৫ কোটি মানুষের যে দুরবস্থা, এর কোন দিকনির্দেশনা নেই। আমার প্রস্তাব হলো, যে লাখ লাখ ডলার বিদেশে প্রতিবছর পাচার হচ্ছে, তার কিছু অংশ, অর্থাৎ দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের কর্মসংস্থান এবং আর্থিক সহায়তা করা যেতো, তাহলে এই শ্রেণির বাঁচার ব্যবস্থা হতো।’

সিরাজ বলেন, মধ্যবিত্ত হলো দেশের মেরুদণ্ড। তারা নিঃশেষ হয়ে গেছে, ভেঙে চুরে চুরমার হয়ে গেছে। তারা না পারতেছে চাইতে, না পারতেছে দাঁড়াতে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।  

শাহজাহানপুরে কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ অনেকদুর এগিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেক ক্ষেত্রে আমরা পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশকেও পেছনে ফেলে দিয়েছি। কিন্তু আজকের এই স্বাধীনতার মাসে সন্তানহারা পিতা আল্লাহর দরবারে বিচার চাইছেন। বিচারতো চাওয়ার কথা রাষ্ট্র এবং প্রশাসনের কাছে।’

বাবলা বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা একজন নিরপরাধ ছাত্রীর মৃত্যুর গ্যারিন্ট দিতে ব্যর্থ হয়েছি। সংসদ সদস্য হিসেব আমি লজ্জিত। কি অপরাধ ছিল প্রীতির, কেন তাকে এভাবে প্রাণ দিতে হলো? সেতো রাজনীতির ঊর্ধ্বে ছিল। এই প্রশ্ন আজ সমগ্র জাতির। কেন তার পিতা রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাইতেও ভয় পাচ্ছে। এই কেনোর প্রশ্নের উত্তর রাষ্ট্রকে দিতে হবে।’

২৪ মার্চ রাতে ঢাকার শাহজাহানপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত রিকশারোহী কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি। তার বাবা জামাল উদ্দিন মেয়ের হত্যার বিচার চান না বলে জানান।

সৈয়দ আবু হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন কোন না কোনোভাবে মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। গত রোববার বুলবুল নামে এক চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। উনিও রাজনীতির ঊর্ধ্বে ছিলেন। আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, তখন দেশের নাগরিকদের বিনা অপরাধে প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে হায়েনারা। এসব হায়েনাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে জাতি হিসাবে আমাদের যে অর্জন, বিশেষ করে যে উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা বলছি, তা ম্লান হয়ে যাবে। শক্ত হাতে এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানান এই সাংসদ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত