Ajker Patrika

ঈদে ঘুরে আসুন জাফলং

সুমন্ত গুপ্ত
জাফলংয়ের ঝুলন্ত ব্রিজ। ছবি: লেখক
জাফলংয়ের ঝুলন্ত ব্রিজ। ছবি: লেখক

সকালবেলা ডেরা থেকে বের হয়ে গেলাম জিন্দাবাজার নেহার মার্কেটের সামনে। সেখানে বন্ধুরা অপেক্ষা করছিল। আমরা যাচ্ছি মেঘালয়কন্যা জাফলং। সঙ্গী স্কুল বেলার বন্ধুরা।

বন্দরবাজার, মিরাবাজার, শিবগঞ্জ পেরিয়ে আমাদের বহনকারী বাস চলছে এগিয়ে। সময়ের সঙ্গে পৌঁছে গেলাম জাফলংয়ে। সময় এখন বসন্তকাল। ঋতুবদলের সঙ্গে সঙ্গে জাফলংয়ের রূপেরও বদল হয়। গাড়ি থেকে নেমে আমরা পদব্রজে এগিয়ে যেতে থাকলাম। শতাধিক সিঁড়ি পেরিয়ে চলেছি এগিয়ে। ডাউকি এখন অগভীর, মৃদু, শান্ত। অথচ বর্ষা এলেই এর রূপ বদলে যায়। তখন এখানে জল থইথই অবস্থা। সেই প্রবল জলস্রোত বহুদূর থেকে নিয়ে আসে শত শত টন ওজনের প্রকাণ্ড পাথরের বোল্ডার।

আশপাশ দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলো ভটভট আওয়াজ তুলে এদিক-সেদিক চলে যাচ্ছে। ওগুলো শৌখিন পর্যটকদের জন্য। আরেক ধরনের নৌকা আছে—সরু, লম্বা আর গভীর খোলবিশিষ্ট। ওগুলো কাজের নৌকা। স্থানীয়দের জীবিকা অর্জনের সহায়। নৌকা ভর্তি করে নুড়ি পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছে মহাজনের মোকামে।

আমরা হেঁটে পাথুরে বেলাভূমি পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম জিরো পয়েন্টে। ভেবেছিলাম, পর্যটক তেমন দেখা যাবে না। কিন্তু আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। পর্যটকের কলরবে মুখর পুরো এলাকা। কিছুদূর যাওয়ার পর শুনতে পেলাম বাঁশির শব্দ। এগিয়ে গিয়ে দেখলাম, আমাদের বর্ডার গার্ড আর বিএসএফ একসঙ্গে দাঁড়িয়ে দর্শনার্থীদের সরিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ আমরা খেয়াল করলাম, বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি! সামনেই পিয়াইন নদের পানিতে দাপাদাপি করছে শিশু থেকে শুরু করে প্রবীণেরা। ছোট ছোট ডিঙির দেখা পেলাম। নদীতে বেশ কয়েকটি নৌকা ভেসে বেড়াতে দেখা গেল। মনে মনে ভাবলাম নৌকায় ভেসে বেড়াতে পারলে মন্দ হয় না। একটু এগিয়ে যেতেই একজন বললেন, এখানে নৌকায় চড়া যাবে না। আমাদের এক বন্ধু বলে উঠল, তাহলে তাঁরা যে ভেসে বেড়াচ্ছেন! প্রত্যুত্তরে লোকটি বললেন, যাঁদের ভেসে বেড়াতে দেখছেন, তাঁরা সবাই ভারতীয় নাগরিক। আর বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারবেন না।

কিছুটা মন খারাপ হলো আমাদের। কিন্তু আশপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাদের মন ভুলিয়ে দিল। চোখের সামনে দেখতে পেলাম ঝুলন্ত ব্রিজ। ছোটবেলায় নৌকা করে জিরো পয়েন্টে এসেও দূর থেকে দেখতে হতো। কিন্তু আজ চোখের একদম সামনে সেই ঝুলন্ত ব্রিজ। কয়েক ক্রোশ এগিয়ে গেলেই ছুঁতে পারব সেটি। কিন্তু শত ইচ্ছা থাকলেও আমরা যেতে পারব না। সীমান্ত আমাদের বেঁধে রেখেছে।

পিয়াইন নদের অববাহিকায় ভারতের মেঘালয় প্রদেশের গা ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে জাফলং। সীমান্তের ওপারে ভারতের ডাউকি অঞ্চল। আসামের ওম নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে ডাউকি নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই নদ আবার উৎপন্ন হয়েছে আসামের জৈন্তা পাহাড় থেকে। এই ডাউকিই বাংলাদেশে পিয়াইন নদ নামে পরিচিত। এই পিয়াইন বা ডাউকির অববাহিকায় গড়ে উঠেছে জাফলং। এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে নদী—এ দুইয়ের সম্মেলন এই স্থানকে দিয়েছে অপূর্ব এক ব্যঞ্জনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত