Ajker Patrika

ঐশ্বরিয়ার আলোচিত পোশাকগুলো

জীবনধারা ডেস্ক
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ৫৮
ঐশ্বরিয়ার আলোচিত পোশাকগুলো

কান চলচ্চিত্র উৎসবের লাল গালিচায় বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই প্রথম পা রেখেছিলেন ২০০২ সালে। সেটি ছিল উৎসবটির ৫৫তম আসর। সে আসরে ‘দেবদাস’ সিনেমার প্রিমিয়ারে অংশ নিতে গাড়ি থেকে তিনি নেমেছিলেন উজ্জ্বল হলুদরঙা শাড়ি পরে। শাড়িটি নকশা করেছিলেন বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার নিতা লুল্লা। কাঁচা হলুদরঙা এই শাড়ির সঙ্গে অ্যাশ পরেছিলেন সোনার গয়না। পুরোদস্তুর ভারতীয় নারীর রূপে জগৎ দেখেছিল তাঁকে। এবার চলছে কান উৎসবের ৭৭তম আসর। এ আসরে যে দুটি পোশাক তিনি পরেছেন, তার একটি প্রশংসিত হলেও অন্যটিকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি দর্শকেরা।

প্রায় ২২ বছরের হিসাবে এক, দুই, তিন করে গুনতে গেলে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ‘কান লুক’ অসংখ্য। লাল গালিচায় হেঁটে বেড়ানোর সময় পরিধেয় পোশাকের কারণে তিনি যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, আবার দর্শক ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলেছেন, ‘স্বপ্ন রানির এ কী অদ্ভুত হাল!’ এ যাবৎকালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ঐশ্বরিয়া পরিহিত আলোচিত পোশাকগুলো নিয়ে এবারের আয়োজন।

২০১৪ সালে কানে ঐশ্বরিয়া ইতালিয়ান ফ্যাশন ডিজাইনার রবার্তো কাভালির নকশা করা বডি শেপড স্ট্রাপলেস গাউন পরেন। সোনালি এ গাউনের সঙ্গে বাদামি কার্ল করা চুল ছেড়ে রাখেন অ্যাশ, ঠোঁটে ছিল টকটকে লাল লিপস্টিক। তাঁর এই ঝলমলে লুক দর্শক মহলে হয়েছিল প্রশংসিত। 

ঐশ্বরিয়ার এই লুকটি আজও কেউ ভুলতে পারেনি। ২০১৭ সালে কানের লাল গালিচায় যেন ডিজনির প্রিন্সেস সিনডারেলা হয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এই বিশ্বসুন্দরী। ফ্যাশন ডিজাইনার মাইকেল সিনকোর নকশা করা বরফ–নীলরঙা গাউনে কেউ অ্যাশকে ভেবে নিচ্ছিলেন সিনডারেলা, আবার কেউ প্রিন্সেস এলসা। গাউনের সঙ্গে মিনিমাল মেকআপে তাঁকে বেশ লাগছিল। পিঠময় ছড়িয়ে ছিল রেশমি বাদামি চুল।

মাইকেল সিনকোর নকশা করা আরও একটি পোশাক পরে দর্শকদের মোহাচ্ছন্ন করেছিলেন এই তারকা। ২০১৮ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে বেগুনি রঙের বাটারফ্লাই গাউনে তাঁকে দেখাচ্ছিল গ্ল্যামারাল প্রজাপতির মতো!

২০২২ সালে লাল গালিচায় ডলচে অ্যান্ড গাবানার থ্রিডি ফ্লোরাল মোটিফের গাউন পরে হাজির হন তিনি। কালো গাউনের ওপর বিভিন্ন রঙের ফুলের সন্নিবেশ ঘটেছিল যেন! চোখেমুখে গোলাপি আভা আর মিনিমাল মেকআপে অন্যরকম এক আলো ছড়াচ্ছিলেন এই বি টাউন কুইন। 

২০২২ এর কান চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর আরও একটি পোশাক প্রশংসিত হয়। ডিজাইনার গৌরব গুপ্তর ‘বার্থ অব ভেনাস’ নামের এই গোলাপি গাউনটি ঐশ্বরিয়ার চিরতরুণ রূপটিই বের করে এনেছিল। স্ক্যাল্পটেড হুডওয়ালা এই গাউনটিতে পাথর বসাতে কাজ করেছিলেন তিন হাজার পাঁচ শ জন শ্রমিক।  

৭৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ঐশ্বরিয়া পরিহিত একটি পোশাক বেশ আলোচিত হয়েছিল। রুপালি সিকুইন করা বিরাট হুডিওয়ালা এই গাউনটিতে এই নায়িকাকে অনেকটাই সর্পিল দেখাচ্ছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন নেটিজেনরা। তবে বোল্ড লুক ও টকটকে লাল লিপস্টিকসহ পুরো লুকটাকে দারুণভাবে ক্যারি করতে পেরেছিলেন এই তারকা। 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ভোগ, দ্য ন্যাশনাল ও অন্যান্য। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হালকা শীতে স্টাইলিশ থাকুন

ফারিয়া রহমান খান 
ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউস
ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউস

স্টাইল করে পোশাক পরতে জানলে শীতকালই কিন্তু সেরা সময়। রঙের মেলবন্ধন, পোশাকের কাটিং, টপ অ্যান্ড বটম নির্ধারণ করে শীতের পোশাক পরলেই আপনি ফিট। কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে শীতের পোশাকে নিজেকে অনবদ্যভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব।

ক্ল্যাসিকে মাতিয়ে দিন

শীতকালের কিছু চিরায়ত পোশাক রয়েছে, যেগুলো ফ্যাশনের ধারা থেকে কখনো হারিয়ে যায় না। তেমনই একটি পোশাক হলো স্কিনি জিনসের সঙ্গে ঢিলেঢালা সোয়েটার। তবে এই লুকের সুবিধা হলো, এর সঙ্গে যেকোনো ধরনের জুতা; যেমন বুট, অ্যাঙ্কেল বুট, হাঁটু পর্যন্ত বুট কিংবা স্নিকার সহজে মানিয়ে যায়।

আরেকটি ক্ল্যাসিক লুক হলো মার্লিন প্যান্ট, বুট কাট জিনসের মতো চওড়া পায়ের প্যান্টের সঙ্গে ক্যাশমেয়ার কার্ডিগান, ক্রপড জাম্পার অথবা ছোট ব্লেজারের মতো ফিটিং টপ।

এই লুকে কোমরের অংশটি খুব সুন্দরভাবে হাইলাইট হয়। তা ছাড়া শীতকালের আরেকটি ক্ল্যাসিক ড্রেস হলো স্কার্ট। আপনার পছন্দমতো মিডি বা ম্যাক্সি স্কার্ট, সঙ্গে লেগিংস ও ছোট বা লম্বা বুট জুতা, আর ওপরে ক্রপ সোয়েটার বা ব্লেজার পরতে পারেন।

ক্যাজুয়াল ও আরামদায়ক পোশাক

এ সময় ওভারসাইজড জাম্পার, কার্ডিগান, চওড়া প্যান্ট এবং লম্বা কোট দিয়ে সহজে কিছু ক্যাজুয়াল লুক তৈরি করা যায়। যেমন ওভারসাইজ জাম্পারের ওপর লম্বা কোট এবং নিচে একটি লেদারের প্যান্ট, সঙ্গে এক জোড়া স্নিকার খুব সুন্দর ক্যাজুয়াল লুক দেয়। তা ছাড়া স্টেট জিনসের সঙ্গে লম্বা হাতার শার্ট এবং একটি নিটেড কার্ডিগান পরা যেতে পারে।

স্টাইলিশ ও চিক পোশাক

যাঁরা একটু স্টাইলিশ লুক চান, তাঁরা লেদারের মিডি স্কার্টের সঙ্গে লেগিংস, একটি শর্ট ফিটিং জ্যাকেট ও হাঁটু পর্যন্ত লম্বা বুট পরতে পারেন। তা ছাড়া লম্বা প্লিটেড স্কার্টের সঙ্গে ক্রপড উলের জাম্পারও পরতে পারেন। আরেকটি চিক লুক হতে পারে লম্বা উলের ড্রেসের সঙ্গে ব্লেজার ও কোমরে বেল্ট।

নিত্যদিনের ব্যবহারের উপযোগী ও উৎসবমুখী এ দুটি ক্যাটাগরিতে এবারের শীতপোশাকগুলো সাজানো হয়েছে। সব বয়সী নারীর কথা বিবেচনায় রেখে বেছে নিয়েছি সূক্ষ্ম কিন্তু নজরকাড়া রং, সাহসী কাট, যা প্রতিটি পোশাককে স্টেটমেন্ট পিসে পরিণত করে। ডিজাইনগুলোতে ফ্লেয়ার ও ফাংশনালিটি একসঙ্গে মিলেছে। মিনিমাল এই শীতপোশাকগুলো সঠিক অ্যাকসেসরিজের সঙ্গে স্টাইলিশ কিংবা ক্যাজুয়াল—দুভাবেই পরা যাবে। স্ট্রাইপ, ডার্ক টোন, ডুডল ডিজাইন এবং প্রিন্টেড প্যাটার্নের জ্যাকেট ও ব্লেজারগুলোয় ব্যবহার করা হয়েছে পান্না সবুজ ও স্যাফায়ারের রং, ক্রিম, মেরুন এবং ইলেকট্রিক ব্লু রঙের সংমিশ্রণ।
তাসনিম ফেরদৌস প্রতিষ্ঠাতা ও ডিজাইনার, ওয়্যারহাউস

অনুষ্ঠানে শীতের পোশাক

সাধারণত শীতকালজুড়ে বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান থাকে। এসব অনুষ্ঠানে ক্যাজুয়াল চিক লুক চাইলে জিনসের সঙ্গে লম্বা হাতার উলের সোয়েটার অথবা স্কার্টের সঙ্গে পোলো নেক টপ পরতে পারেন। আবার সেমি ফরমাল লুক চাইলে স্কার্টের সঙ্গে ব্লেজার কিংবা মার্লিন প্যান্টের সঙ্গে লম্বা হাতার উলের সোয়েটার হবে আপনার জন্য সেরা অপশন। উষ্ণতার জন্য পোশাকের ওপর একটি শাল কিংবা উলের কোট যোগ করতে পারেন। এটি আপনার লুককে আরও বেশি স্মার্ট করে তুলবে।

তবে যেকোনো অনুষ্ঠানে পরার জন্য সঠিক রং বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন রাতের অনুষ্ঠানে একটু গাঢ় রঙের পোশাক মানানসই। সঠিক কাপড় ও রঙের পাশাপাশি ফিটিংয়ের দিকেও নজর দিতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকার পরও ফিটিং যদি ঠিক না হয়, তাহলে দেখতে বড্ড বেমানান লাগে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের পোশাকগুলো ব্যবহারের আগে

ফিচার ডেস্ক
শীতের পোশাকগুলো ব্যবহারের আগে

শহর থেকে একটু দূরেই যাঁদের বসবাস, তাঁরা এরই মধ্য়ে হালকা শীতের কাপড় নামিয়ে ফেলেছেন। দীর্ঘদিন বাক্সবন্দী সোয়েটার, জ্যাকেট, উলের মোজা, টুপি, চাদর, কার্ডিগান বের করে সঙ্গে সঙ্গেই তো আর গায়ে তোলা যায় না। এগুলো ব্যবহার করার আগে কয়েক দিন ভালোভাবে কড়া রোদে এপাশ-ওপাশ শুকিয়ে তারপরই পরতে হবে। যেসব কাপড়ে আবার ধুলার গন্ধ থাকে, সেগুলো ধুয়ে ব্যবহার করাই ভালো।

শীতের পোশাকগুলো পরার আগে যা করতে হবে:

সোয়েটার পরার আগে ধুয়ে পরাই ভালো। ঠান্ডা পানিতে পরিমাণমতো শ্যাম্পু ও ভিনেগার মিশিয়ে আলতো করে সোয়েটার ধোয়া উচিত। এটি কখনোই ওয়াশিং মেশিনে ধোবেন না। তাতে এর বুনন নষ্ট হয়ে যায়। ধোয়ার পর হালকা করে পানি নিংড়ে তারপর রোদে শুকিয়ে নিন।

হালকা শীতে ফ্লানেলের শার্ট, ব্লাউজ, স্কার্ট আরামদায়ক। এসব কাপড় দীর্ঘদিন ভালো রাখতে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। বেশি ময়লা হলে হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। পরে হালকা করে কেচে ধুয়ে নিন। কাপড় উল্টিয়ে রোদে শুকাতে দিন। এতে রং নষ্ট হবে না।

চাদর বের করে কড়া রোদে শুকিয়ে তারপর ব্যবহার করুন। ধোয়ার প্রয়োজন হলে ড্রাই ক্লিন করে নিতে পারেন। চাদর দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।

চামড়ার জ্যাকেট পরিষ্কার করার জন্য কুসুম গরম পানির সঙ্গে ভিনেগার মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণে তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে জ্যাকেটের উপরিভাগ মুছে নিন। এরপর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বাতাসে শুকিয়ে নিলেই, ব্যস।

শীতে প্রতিদিনই যে অনুষঙ্গগুলো ব্যবহৃত হয়; যেমন উলের মোজা, মাফলার, টুপি ইত্যাদি দ্রুত ময়লা হয়। তাই তিন-চার দিন পরপর কুসুম গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

সূত্র: হার জিন্দেগি ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আপনার প্রিয় খাবার যখন পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
খাবার শুধু আমাদের জীবন বাঁচায় না, পরিবেশের ক্ষতিও করে! প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
খাবার শুধু আমাদের জীবন বাঁচায় না, পরিবেশের ক্ষতিও করে! প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

অ্যাভোকাডো টোস্ট, মাচা লাতে বা বিলাসবহুল চকলেট। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এই খাবারগুলো বানানো এবং খাওয়ার ভিডিও এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়। খাবারগুলো দেখতে চমৎকার, আকর্ষণীয়; এমনকি স্বাস্থ্যকর মনে হলেও এর আড়ালে লুকিয়ে আছে এক উদ্বেগজনক রহস্য। কারণ, এই খাবারগুলো বন উজাড়, পানি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিকর বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত।

আমাদের প্লেটে পরিবেশিত এমন অনেক জনপ্রিয় খাদ্য আছে, যেগুলো নিঃশব্দে পরিবেশের ক্ষতি করছে। অথচ আমরা শুধু তাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং স্বাদের কারণে সেই সব খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হই। তাই এখন আমাদের খাদ্যাভ্যাসে সেই খাবারগুলো রাখা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। খাদ্যপ্রবণতার উন্মাদনা ফিকে হয়ে গেলেও এর পরিবেশগত ও সামাজিক মূল্য কিন্তু রয়েই যায়। এর প্রভাব আমাদের পছন্দের প্লেটের বাইরেও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে, যা দেখায় যে জনপ্রিয়তা মানেই টেকসই নয়।

পানি ও জমির ওপর চরম চাপ সৃষ্টিকারী খাদ্য

আমন্ড দুধ। মাত্র ১৬টি আমন্ডের জন্য ১৫ গ্যালনের বেশি পানি প্রয়োজন। ছবি: পেক্সেল
আমন্ড দুধ। মাত্র ১৬টি আমন্ডের জন্য ১৫ গ্যালনের বেশি পানি প্রয়োজন। ছবি: পেক্সেল

কিছু খাদ্য আছে, যেগুলোর উৎপাদন করতে গিয়ে পানির আধার শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক জমি ধ্বংস হচ্ছে। যেসব খাদ্য উৎপাদনে এমন ঘটনা ঘটছে, সেগুলোর মধ্যে আছে—

আমন্ড মিল্ক: আমণ্ড মিল্ক উৎপাদন করতে পরিবেশকে চরম মূল্য দিতে হয়। মাত্র ১৬টি আমন্ডের জন্য ১৫ গ্যালনের বেশি পানি প্রয়োজন। ক্যালিফোর্নিয়ায় বছরে দুই বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি আমন্ড উৎপাদন করা হয়। সেখানে দীর্ঘ এক দশক ধরে খরা চলছে। নিবিড় সেচের ফলে ভূগর্ভস্থ পানি দ্রুত কমে যাচ্ছে। কীটনাশক পানিকে দূষিত করছে এবং প্রাকৃতিক জলাভূমি আমন্ড বাগানে রূপান্তরিত হচ্ছে।

পেস্তা: জলবায়ু-সহনশীল ফসল হিসেবে বাজারজাত করা হয় পেস্তা। প্রতি কিলোগ্রাম পেস্তা উৎপাদনে প্রায় ১০ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। ফলে দুষ্প্রাপ্য পানির সংস্থান দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। স্পেনের মতো উৎপাদনকারী অঞ্চলে এখন খরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

কফি ইন্ডাস্ট্রি প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন পর্যন্ত ডিসপোজিবল কাপ ব্যবহার, ৪ বিলিয়ন গ্যালন পানি এবং লাখ লাখ গাছ নষ্ট করছে। ছবি: পেক্সেলস
কফি ইন্ডাস্ট্রি প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন পর্যন্ত ডিসপোজিবল কাপ ব্যবহার, ৪ বিলিয়ন গ্যালন পানি এবং লাখ লাখ গাছ নষ্ট করছে। ছবি: পেক্সেলস

কফি: আপনার প্রিয় চার আউন্সের এক কাপ কফি উৎপাদনের জন্য পানির প্রয়োজন প্রায় ১৪০ লিটার। বৈশ্বিক চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কফি খামারগুলো এখন রাসায়নিক-নির্ভর সূর্য-আশ্রিত খামারে পরিণত হচ্ছে। এতে বন উজাড় ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে বছরে ১৬ বিলিয়ন পর্যন্ত ডিসপোজিবল কাপ ব্যবহার ৪ বিলিয়ন গ্যালন পানি এবং লাখ লাখ গাছ নষ্ট করছে।

ভাত: গবাদিপশুর পরে ধান চাষ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিথেন নিঃসরণকারী উৎস। বছরে জার্মানির মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রায় সমান পরিমাণ গ্যাস নির্গত হয় ধানখেত থেকে, যার প্রধান কারণ পচনশীল খড়। প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪ লাখ লিটার পানির প্রয়োজন হয়।

বন উজাড় ও জীববৈচিত্র্য কমার কারণ

অনেক জনপ্রিয় খাবার উৎপাদন করতে গিয়ে পৃথিবীর মূল্যবান বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। এমন খাবারগুলোর মধ্যে আছে—

সয়া বা টোফু: টোফুর মতো উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিনের ভিত্তি সয়া বিশ্বব্যাপী ব্যাপক পরিবেশগত ক্ষতির কারণ। দক্ষিণ আমেরিকায়, সয়া চাষের জন্য সেরাদো তৃণভূমির (৩ হাজারের বেশি প্রজাতির আবাসস্থল) অর্ধেক জমি হারিয়েছে। সয়ার ৭৫ শতাংশ সরাসরি মানুষ খায় না, বরং গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা এর পরিবেশগত ক্ষতি আরও তীব্র করে।

পাম তেল: এটি বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত উদ্ভিজ্জ তেল, যা অর্ধেকের বেশি মুদিদোকানের পণ্যে পাওয়া যায়। এর উৎপাদন ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বন উজাড়ের মূল কারণ। ফলে ওরাংগুটান জনসংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। রেইনফরেস্ট পরিষ্কার করার ফলে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয় এবং স্থানীয় সম্প্রদায়কে স্থানচ্যুত হতে হয়।

গরুর মাংস: গরুর মাংসের উৎপাদন এখনো লাতিন আমেরিকার ৭০ শতাংশের বেশি বন উজাড়ের কারণ। এটি প্রচুর মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইড নির্গত করে; যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রধান হুমকি। তথাকথিত টেকসই গরুর মাংসও একটি প্রধান জলবায়ু ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত।

চকলেট: কোকো চাষের কারণে পশ্চিম আফ্রিকার ৯০ শতাংশের বেশি বনভূমি হারিয়ে গেছে। চকলেটের বার তৈরিতে পাম তেল এবং সয়া ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া আইভরি কোস্ট এবং ঘানার ছোট চাষিরা ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় শিশুশ্রমের মতো নৈতিক সমস্যাও বিদ্যমান।

সমুদ্র ও প্রথাগত কৃষির ওপর আঘাত

আমাদের খাদ্যপ্রবণতা শুধু জমি নয়, সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ও প্রথাগত কৃষকের জীবনকেও প্রভাবিত করছে।

মাছ: বিশ্বজুড়ে সুশি এবং পোক বাউলের জনপ্রিয়তা একটি গুরুতর পরিবেশগত ক্ষতি ডেকে এনেছে। অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে টুনা ও স্যামনের মতো মূল প্রজাতিগুলো বিলুপ্তির পথে। বিশ্বব্যাপী মাছ রপ্তানির অর্ধেক সরবরাহকারী উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, মাছ স্থানীয় ভোগের পরিবর্তে বিলাসবহুল বাজারের জন্য রপ্তানি হয়, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রোটিন ঘাটতি সৃষ্টি করে।

দুগ্ধজাতীয় ও অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাদ্য

সাধারণ দুগ্ধজাত পণ্য এবং প্রক্রিয়াজাত বাদামও পরিবেশের ওপর বড় ছাপ ফেলছে।

দই: গরুর মাংসের ব্যবহার কমলেও দুগ্ধজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে; যা পরিবেশের ওপর বড় ছাপ ফেলছে। গ্রিক এবং ছাঁকা দই সাধারণ দইয়ের চেয়ে চার গুণ বেশি দুধ ব্যবহার করে। গবাদিপশুর মিথেন নিঃসরণ এবং ব্যাপক পশুকল্যাণ-সংক্রান্ত উদ্বেগের সঙ্গে মিলিত হয়ে, দুধ একটি উচ্চ-প্রভাবশালী জলবায়ু পরিবর্তনকারী কারণ হিসেবে পরিণত হয়েছে।

বাদামের মাখন কিছু বাদামের মাখনে পাম তেল থাকে। এ ছাড়া পানির প্রয়োজনকারী ক্যালিফোর্নিয়ার আমন্ড বা তুর্কি হ্যাজেলনাট এবং ভিয়েতনামের কাজুশিল্পে শিশুশ্রম ও মানবাধিকারের উদ্বেগ রয়েছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন হ্যান্ডব্যাগ কেনার আগে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৩
নতুন হ্যান্ডব্যাগ কেনার আগে

প্রতিদিন যে হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করবেন, সেটি একটু ভালো মানের দেখে কিনুন। তবে এ ধরনের হ্যান্ডব্যাগ কিনতে খরচটাও কিছু বেশি হবে। তাই কেনার আগে কয়েকটি বিষয় মনে রাখতে হবে।

দাম দিয়ে ব্যাগ কিনলে আপনি নিশ্চিত চাইবেন, সেটি বেশ কিছুদিন টিকুক। ব্যাগ তৈরির উপাদান, এর সেলাই, জিপার ইত্যাদি ভালোভাবে দেখে তবেই কিনে ফেলুন। এসব বিষয় ঠিকঠাক থাকলে আশা করা যায়, আপনি আপনার ব্যাগটি বেশ কিছুদিন ব্যবহার করতে পারবেন।

আপনি বেশির ভাগ সময় ব্যাগে কোন কোন জিনিস রাখেন, কেনার আগে তা একটু ভেবে দেখুন। তারপর দেখুন সেগুলো রাখার জন্য ব্যাগে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে কি না। এবার ব্যাগের আকার নিয়ে চিন্তা করুন।

একাধিক পোশাকের সঙ্গে ভালোভাবে মিলবে, এমন রঙের ব্যাগ বেছে নেওয়া যেতে পারে। প্রতিটি পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে নতুন নতুন ব্যাগ কেনা একটি অসম্ভব জটিল বিষয়। ব্যাগের রং বাছাইয় করার ক্ষেত্রে হালকা ও ন্য়ুড রংগুলো প্রাধান্য দিন।

একটি ব্যাগ কেনার আগে সেটির ভেতরে আপনার সব জিনিসপত্র ঠিকমতো রাখা যাবে কি না, তা-ও বিবেচনায় নিতে ভুলবেন না। জিপার দেওয়া শক্ত হাতলের ব্যাগ ব্যবহার করা ভালো।

আপনি কি ব্যাগ কাঁধে নিতে পছন্দ করেন, নাকি বাহুতে? সেটিও ভেবে নিন। নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী এবং এসব বিষয় বিবেচনা করে নিতে হবে। তারপরে আপনার জন্য আদর্শ এবং সহজে বহনযোগ্য ব্যাগটি বাছাই করুন।

সূত্র: স্ট্রিট ডাইরেক্টরি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত