আবদুল আযীয কাসেমি
ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস তথা রমজান মাস পাবে তারা যেন রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা: ৮৪) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, সব মুমিনের জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। তবে এ বিধানটি ফরজ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, বুদ্ধিমান হওয়া এবং বাড়িতে থাকা ইত্যাদি শর্ত রয়েছে। এসব শর্ত পাওয়া গেলেও ক্ষেত্র বিশেষে রোজার বিধানে কিছুটা শিথিলতা রাখা হয়েছে। উল্লিখিত আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য কোনো দিন এ সংখ্যা পূর্ণ করে নেবে।’ (সুরা বাকারা: ৮৪)
এ আয়াতে যে অসুস্থতার কথা বলা হয়েছে সেটি ব্যাপকার্থে। নারীর ঋতুস্রাবের সময় ও প্রসব পরবর্তী স্রাবের সময়কালও এতে অন্তর্ভুক্ত। অন্তঃসত্ত্বা নারী যদি রোজা রাখার ফলে স্বাস্থ্যহানি কিংবা অনাগত সন্তানের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা করেন, তবে সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞ ধার্মিক ডাক্তারের পরামর্শে রোজা ভাঙতে পারবেন। তবে সুস্থ হওয়ার পর রোজাগুলো কাজা করতে হবে। তদ্রূপ যেসব নারীর সন্তানকে দুধপান করাতে হয়, তারা যদি তা করতে গিয়ে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন, তবে তাদের জন্যও রোজা ভাঙার অনুমতি আছে। সে ক্ষেত্রেও সুস্থ হওয়ার পর রোজা কাজা করতে হবে। কাফফারা আদায় করা আবশ্যক নয়।
মনে রাখতে হবে, অন্তঃসত্ত্বা মায়ের রোজা রাখার কারণে গর্ভে থাকা নবজাতকের দৈর্ঘ্য বা ওজনে কোনো পরিবর্তন আসে না। হ্যাঁ, কখনো-কখনো অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত কারণে দুর্বল হয়ে পড়েন। সুতরাং এ রকম কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা আবশ্যক। তারা যদি নিষেধ করেন, তবেই রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে।
যেসব কারণে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে—
এক. ধারাবাহিক বমি। কেননা বমি হওয়ার পর ১৫ ঘণ্টার চেয়ে বেশি সময় ধরে কোনো তরল পদার্থ গ্রহণ না করলে শুষ্কতার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে অন্তঃসত্ত্বা মা প্রচণ্ডভাবে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন।
দুই. শরীরে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
তিন. বাচ্চার ওজনের ঘাটতি দেখা যাওয়া।
চার. রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া।
এ ছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে সমস্যা হতে পারে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোজার ব্যাপারে শিথিলতার বিষয়টি সরাসরি হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা মুসাফির লোকের রোজা ও অর্ধেক নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন। আর অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদায়িনী নারীদের রোজা মাফ করে দিয়েছেন। (তিরমিজি: ৭১৫)
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারী রোজা ভাঙতে পারবে। তবে পরে সেটা কাজা করে নিতে হবে। রোজার বদলে নিঃস্বদের খাওয়াবে না। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ৭৫৬৪)
সতর্কতা অবলম্বন করলে অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা ক্ষুধাজনিত কারণে সৃষ্ট সমস্যা থেকে বাঁচতে পারবেন। যথা—
এক. ক্লান্তি কমাতে বিশ্রামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া।
দুই. যত দূর পারা যায় দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা।
তিন. অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা।
চার. ভারী কিছু বহন না করা।
পাঁচ. অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা। বিশেষত ভাজাপোড়া খাবার একেবারেই না খাওয়া।
ছয়. গর্ভকালীন ডায়বেটিস থাকলে চিনিজাতীয় খাবার ও মিষ্টি এড়িয়ে চলা।
সাত. সাহরিতে ফাইবার জাতীয় কিছু খাওয়া। যাতে সেটা দিনের বেলা লম্বা সময় শক্তি জোগায়।
আট. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।
নয়. ইফতারের পর প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া।
লেখক: শিক্ষক
ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস তথা রমজান মাস পাবে তারা যেন রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা: ৮৪) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, সব মুমিনের জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। তবে এ বিধানটি ফরজ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, বুদ্ধিমান হওয়া এবং বাড়িতে থাকা ইত্যাদি শর্ত রয়েছে। এসব শর্ত পাওয়া গেলেও ক্ষেত্র বিশেষে রোজার বিধানে কিছুটা শিথিলতা রাখা হয়েছে। উল্লিখিত আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য কোনো দিন এ সংখ্যা পূর্ণ করে নেবে।’ (সুরা বাকারা: ৮৪)
এ আয়াতে যে অসুস্থতার কথা বলা হয়েছে সেটি ব্যাপকার্থে। নারীর ঋতুস্রাবের সময় ও প্রসব পরবর্তী স্রাবের সময়কালও এতে অন্তর্ভুক্ত। অন্তঃসত্ত্বা নারী যদি রোজা রাখার ফলে স্বাস্থ্যহানি কিংবা অনাগত সন্তানের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা করেন, তবে সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞ ধার্মিক ডাক্তারের পরামর্শে রোজা ভাঙতে পারবেন। তবে সুস্থ হওয়ার পর রোজাগুলো কাজা করতে হবে। তদ্রূপ যেসব নারীর সন্তানকে দুধপান করাতে হয়, তারা যদি তা করতে গিয়ে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন, তবে তাদের জন্যও রোজা ভাঙার অনুমতি আছে। সে ক্ষেত্রেও সুস্থ হওয়ার পর রোজা কাজা করতে হবে। কাফফারা আদায় করা আবশ্যক নয়।
মনে রাখতে হবে, অন্তঃসত্ত্বা মায়ের রোজা রাখার কারণে গর্ভে থাকা নবজাতকের দৈর্ঘ্য বা ওজনে কোনো পরিবর্তন আসে না। হ্যাঁ, কখনো-কখনো অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত কারণে দুর্বল হয়ে পড়েন। সুতরাং এ রকম কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা আবশ্যক। তারা যদি নিষেধ করেন, তবেই রোজা ভাঙার অনুমতি রয়েছে।
যেসব কারণে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে—
এক. ধারাবাহিক বমি। কেননা বমি হওয়ার পর ১৫ ঘণ্টার চেয়ে বেশি সময় ধরে কোনো তরল পদার্থ গ্রহণ না করলে শুষ্কতার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে অন্তঃসত্ত্বা মা প্রচণ্ডভাবে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন।
দুই. শরীরে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
তিন. বাচ্চার ওজনের ঘাটতি দেখা যাওয়া।
চার. রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া।
এ ছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে সমস্যা হতে পারে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোজার ব্যাপারে শিথিলতার বিষয়টি সরাসরি হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা মুসাফির লোকের রোজা ও অর্ধেক নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন। আর অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদায়িনী নারীদের রোজা মাফ করে দিয়েছেন। (তিরমিজি: ৭১৫)
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারী রোজা ভাঙতে পারবে। তবে পরে সেটা কাজা করে নিতে হবে। রোজার বদলে নিঃস্বদের খাওয়াবে না। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ৭৫৬৪)
সতর্কতা অবলম্বন করলে অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা ক্ষুধাজনিত কারণে সৃষ্ট সমস্যা থেকে বাঁচতে পারবেন। যথা—
এক. ক্লান্তি কমাতে বিশ্রামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া।
দুই. যত দূর পারা যায় দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা।
তিন. অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা।
চার. ভারী কিছু বহন না করা।
পাঁচ. অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা। বিশেষত ভাজাপোড়া খাবার একেবারেই না খাওয়া।
ছয়. গর্ভকালীন ডায়বেটিস থাকলে চিনিজাতীয় খাবার ও মিষ্টি এড়িয়ে চলা।
সাত. সাহরিতে ফাইবার জাতীয় কিছু খাওয়া। যাতে সেটা দিনের বেলা লম্বা সময় শক্তি জোগায়।
আট. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।
নয়. ইফতারের পর প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া।
লেখক: শিক্ষক
কোরআন ও হাদিসে জান্নাতের বিবরণে এর সৌন্দর্য ও শান্তির কথা বহুবার বর্ণিত হয়েছে। এটি প্রতিটি মোমিনের পরম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য। এই গন্তব্যে যেতে হলে মহানবী (সা.)-এর সুপারিশের বিকল্প নেই। তিন ধরনের ব্যক্তির জান্নাতের জিম্মাদারি নবী (সা.) নিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগেহজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট কার্যাবলির মাধ্যমে পবিত্র কাবাঘর জিয়ারত করার ইচ্ছা পোষণ করাকেই হজ বলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘মানুষের মধ্যে যারা সেখানে পৌঁছানোর সামর্থ্য রাখে, তাদের ওপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ করা ফরজ’ (সুরা আলে ইমরান ৯৭)।
১ দিন আগেআল্লাহর সন্তুষ্টি, প্রেম ও ভালোবাসা অর্জনের এক অনন্য প্রেমময় ও তুলনাহীন ইবাদত হজ। আজকের লেখায় আলোচনা করব হজের প্রকারভেদ, হজের প্রয়োজনীয় মাসআলা ও আহকাম বিষয়ে।
২ দিন আগেমুমিনের বহুল প্রত্যাশিত ইবাদত হজে মাবরুর। ‘হজে মাবরুর’ হজের একটি পরিভাষা। সহজে বললে, হজে মাবরুর হলো সেই হজ, যা আল্লাহর কাছে কবুল হয়। হজ পালনের সময় বিশুদ্ধ নিয়ত থাকা...
২ দিন আগে