আবদুল আযীয কাসেমি
রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। রমজানে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনার পর রাতের বেলায় চলত কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবি ও তাহাজ্জুদ। দীর্ঘ তারাবির পাশাপাশি তাঁরা তাহাজ্জুদও পড়তেন রাত জেগে।
এ কাজে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করত নবীজির সেই বিখ্যাত হাদিস, যেটি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় এর সঙ্গে রোজা রাখবে, তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজানে রাতের নামাজ আদায় করবে ইমান ও সওয়াবের আশায়, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) মুছে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
এ বিষয়ে আরও একটি চমৎকার হাদিস বর্ণনা করেছেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রোজা আবেদন করে বলবে, হে রব, আমি তাঁকে দিনের বেলা খানাপিনা ও যৌনচাহিদা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তাঁর পক্ষে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, ‘হে রব, আমি তাঁকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখে নামাজে ব্যস্ত রেখেছি। আপনি তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ (শুআবুল ইমান)
রমজানের প্রথম দুই দশক সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, এ সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) রাত জাগতেন। খুব অল্পসময়ই ঘুমাতেন; বাকি সময় ইবাদতে কাটাতেন। তবে রমজানের শেষ দশকে শুধু নিজেই রাত জাগতেন না, পরিবারকেও রাত জাগতে উৎসাহ দিতেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি পরিশ্রম করতেন, যা তিনি অন্যসময় করতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আয়েশা রা. থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন রমজানের শেষ দশকের আগমন হতো, তিনি কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরও জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সায়েব ইবনে ইয়াজিদ বলেন, হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশে হজরত উবাই ইবনে কাআব ও তামিমে দারি (রা.) আমাদের তারাবি পড়াতেন। তিনি এক এক রাকাতে দুশ আয়াতও তিলাওয়াত করতেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে লাঠির ওপর ভর দিতাম। নামাজ শেষ হতে হতে সুবহে সাদিকের সামান্য সময় বাকি থাকত। (বায়হাকি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুবকর বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, রমজানে তারাবির নামাজ থেকে যখন আমরা বাসায় ফিরতাম, তখন ভৃত্যরা সাহরির খাবার নিয়ে তাড়াহুড়ো করত সুবহে সাদিক উদিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে।’ (মুয়াত্তা মালিক)
ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা সায়েব বিন ইয়াজিদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম হজরত ওমর (রা)-এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তাঁরা দীর্ঘ দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। হজরত ওসমান বিন আফফানের যুগে এসে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে লাঠিতে ভর করতে হতো।’ (বায়হাকি)
সংক্রান্ত আরও বহু ঘটনা হাদিসগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এসে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে এসেছে। যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য আছে তাঁদের রাত জেগে ইবাদত করা উত্তম। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা যতটুকু সম্ভব রাত জেগে তারাবি, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াতে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।
লেখক: শিক্ষক
রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। রমজানে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনার পর রাতের বেলায় চলত কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবি ও তাহাজ্জুদ। দীর্ঘ তারাবির পাশাপাশি তাঁরা তাহাজ্জুদও পড়তেন রাত জেগে।
এ কাজে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করত নবীজির সেই বিখ্যাত হাদিস, যেটি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় এর সঙ্গে রোজা রাখবে, তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজানে রাতের নামাজ আদায় করবে ইমান ও সওয়াবের আশায়, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) মুছে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
এ বিষয়ে আরও একটি চমৎকার হাদিস বর্ণনা করেছেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রোজা আবেদন করে বলবে, হে রব, আমি তাঁকে দিনের বেলা খানাপিনা ও যৌনচাহিদা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তাঁর পক্ষে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, ‘হে রব, আমি তাঁকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখে নামাজে ব্যস্ত রেখেছি। আপনি তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ (শুআবুল ইমান)
রমজানের প্রথম দুই দশক সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, এ সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) রাত জাগতেন। খুব অল্পসময়ই ঘুমাতেন; বাকি সময় ইবাদতে কাটাতেন। তবে রমজানের শেষ দশকে শুধু নিজেই রাত জাগতেন না, পরিবারকেও রাত জাগতে উৎসাহ দিতেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি পরিশ্রম করতেন, যা তিনি অন্যসময় করতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আয়েশা রা. থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন রমজানের শেষ দশকের আগমন হতো, তিনি কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরও জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সায়েব ইবনে ইয়াজিদ বলেন, হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশে হজরত উবাই ইবনে কাআব ও তামিমে দারি (রা.) আমাদের তারাবি পড়াতেন। তিনি এক এক রাকাতে দুশ আয়াতও তিলাওয়াত করতেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে লাঠির ওপর ভর দিতাম। নামাজ শেষ হতে হতে সুবহে সাদিকের সামান্য সময় বাকি থাকত। (বায়হাকি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুবকর বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, রমজানে তারাবির নামাজ থেকে যখন আমরা বাসায় ফিরতাম, তখন ভৃত্যরা সাহরির খাবার নিয়ে তাড়াহুড়ো করত সুবহে সাদিক উদিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে।’ (মুয়াত্তা মালিক)
ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা সায়েব বিন ইয়াজিদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম হজরত ওমর (রা)-এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তাঁরা দীর্ঘ দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। হজরত ওসমান বিন আফফানের যুগে এসে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে লাঠিতে ভর করতে হতো।’ (বায়হাকি)
সংক্রান্ত আরও বহু ঘটনা হাদিসগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এসে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে এসেছে। যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য আছে তাঁদের রাত জেগে ইবাদত করা উত্তম। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা যতটুকু সম্ভব রাত জেগে তারাবি, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াতে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।
লেখক: শিক্ষক
সময়ের এক গাঢ় দুপুরে, জ্ঞান ভুবনের দরজায় এক সন্ন্যাসী দাঁড়িয়ে ছিলেন—নীরব, দীপ্ত, অদ্ভুত নিরাসক্ত। তাঁর হাতে ছিল না কোনো তরবারি, ছিল কেবল এক কলম। তাঁর কণ্ঠে ছিল না কোনো উচ্চারণ, কিন্তু তাঁর লেখা যুগে যুগে উচ্চারিত হয়েছে পৃথিবীর সকল ভাষায়। তিনি ইবনে সিনা। মৃত্যু তাঁকে কেড়ে নেয় ১০৩৭ সালের ২২ জুন...
১৫ মিনিট আগেঘুম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শরীরের ক্লান্তি আর অবসাদ দূর হয় ঘুমে। ঘুমোলেই ভেসে ওঠে নানা স্বপ্ন। কখনো ভয়ের, কখনো আসার কখনোবা আনন্দের। কোন স্বপ্ন দেখলে করণীয় কী—সে বিষয়ে রয়েছে ইসলামের নির্দেশনা।
৬ ঘণ্টা আগেজান্নাত লাভের বহু পথ-পদ্ধতি কোরআন-হাদিসে বর্ণিত আছে। এমন চারটি আমল রয়েছে; যা করলে নির্বিঘ্নে জান্নাত যাওয়া যাবে। হজরত আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, হে লোক সকল—
৭ ঘণ্টা আগেসন্তানকে ইবাদতে উৎসাহ দেওয়া মা-বাবার মহান দায়িত্ব। ছোটবেলা থেকেই নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে তারা পরবর্তী জীবনে নীতিমান ও ধার্মিক হয়ে বেড়ে ওঠে। খেলার ছলে নামাজের ভঙ্গি শেখানো, দোয়া মুখস্থ করানো, পরিবারের সঙ্গে ইবাদতে অংশ নিতে বলা—এগুলো তাদের মনে ধর্মীয় চেতনা গড়ে তোলে।
১২ ঘণ্টা আগে