হেদায়াতুল্লাহ বিন হাবিব, ঢাকা
মানুষ হিসেবে আমাদের একটি স্বভাবজাত চাহিদা হলো, আমরা নিজেদের প্রশংসা শুনতে খুব পছন্দ করি। প্রশংসা মিথ্যা হলেও বলতে বারণ করি না, শুনতেই থাকি। বরং আরও বেশি কামনা করি। এর বিপরীতে নিন্দা বা সমালোচনা একদমই সহ্য করতে পারি না। চরম বাস্তব ও সত্য হলেও সমালোচককে থামিয়ে দিই। ক্ষমতা থাকলে নিন্দুককে দমিয়ে দিই, শায়েস্তা করি।
অথচ উচিত ছিল, সমালোচনা আমলে নিয়ে নিজেকে সংশোধন ও পরিশীলিত করা। জীবনকে সুন্দর করে সাজানো।
মানুষ শুধু প্রশংসা শুনতেই যে পছন্দ করে, তাই না—বরং কেউ কেউ বলতেও পছন্দ করে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মানুষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হই আমরা। আর যদি প্রশংসিত ব্যক্তি জাগতিক কোনো পদ-পদবি বা ক্ষমতার অধিকারী হয়, তাহলে তো একদম লাগামহীন হয়ে যাই। ইনিয়ে-বিনিয়ে কত কথাই না বলি তাকে খুশি করতে। এককথায় যাকে বলে চাটুকারিতা বা তেলবাজি।
এতে তার থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যায়। কিছু অর্থকড়িও হয়তো মিলে। কিন্তু সামান্য এই স্বার্থের জন্য আমরা কখনো নির্জলা মিথ্যা পর্যন্ত বলে ফেলি নির্দ্বিধায়। অথচ প্রতিটি মিথ্যার জন্য কবিরা গুনাহ লেখা হচ্ছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) এভাবে সামনাসামনি কারও প্রশংসা করা পছন্দ করতেন না। কাউকে এমনটা করতে দেখলে বারণ করতেন। এক হাদিসে এসেছে, একবার নবীজি (সা.) এক ব্যক্তিকে কারও প্রশংসা করতে শুনে বললেন, ‘তোমরা তো তাকে ধ্বংস করে দিলে। তোমরা তার মেরুদণ্ড ভেঙে দিলে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৬৩, সহিহ্ মুসলিম: ৬৭)
অতিরিক্ত প্রশংসার কারণে মানুষ অনেক সময় কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলে। আগের মতো পূর্ণোদ্যমে আর কাজ করতে পারে না। তাই নবীজি এটাকে মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাই কোনো ভালো কাজের পরিমিত প্রশংসার সঙ্গে ভুলত্রুটি কিছু থাকলে তা সুন্দরভাবে ধরিয়ে দেওয়া উত্তম। এতে ভবিষ্যতে আরও সুন্দর কাজের আশা করা যায়।
একবার নবীজির কাছে এক ব্যক্তির কথা বলা হলো। আরেক ব্যক্তি তখন তার প্রশংসা করতে শুরু করল। তা দেখে নবীজি (সা.) বললেন, ‘তোমার অকল্যাণ হোক, তুমি তো তোমার বন্ধুর ঘাড় কেটে দিলে! (কথাটা নবীজি কয়েকবার বললেন) তোমাদের কেউ যদি কারও প্রশংসা করেই, তাহলে যেন বলে—আমি তার ব্যাপারে এমন এমন ধারণা করি, যদি বাস্তবেই সে এমনটা মনে করে থাকে। তার হিসেব আল্লাহ নেবেন। তিনি ছাড়া আর কেউ কারও ভালো হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত জানতে পারে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৬২, সহিহ্ মুসলিম: ৬৫)
হজরত উসমান (রা.)-এর একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে হাদিসের কিতাবে। এক লোক তার সামনে বসে তার প্রশংসা করতে লাগল। সেখানে মিকদাদ (রা.)-ও ছিলেন। তিনি তা দেখে হাঁটু গেড়ে বসে লোকটির মুখে ছোট কঙ্কর মারতে শুরু করলেন। উসমান (রা.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হলো তোমার, এমন করছ কেন!’ তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমরা কাউকে মুখের ওপর প্রশংসা করতে দেখবে, তার মুখে মাটি নিক্ষেপ করবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৯)
এসব হাদিসে নবীজি (সা.) কারও সামনাসামনি বা অতিরিক্ত প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন। আবার কিছু হাদিসে এর বৈধতার প্রমাণও পাওয়া যায়। তাই বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম এর সামঞ্জস্যবিধান করেছেন এভাবে—প্রশংসিত ব্যক্তির যদি ইমান-আমল ও আত্মশুদ্ধি পরিপূর্ণ থাকে, প্রশংসার কারণে যদি মনে কোনো ধরনের গর্ব-অহংকার ও বড়াই না আসে, তাহলে তা জায়েজ আছে। এর বিপরীত হলে সম্মুখ-প্রশংসা কঠোরভাবে অপন্দীয় ও গর্হিত কাজ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
তাই আমাদের উচিত, মানুষের অমূলক প্রশংসা থেকে নিজেদের বিরত রাখা।
লেখক: মুহাদ্দিস, খতিব
মানুষ হিসেবে আমাদের একটি স্বভাবজাত চাহিদা হলো, আমরা নিজেদের প্রশংসা শুনতে খুব পছন্দ করি। প্রশংসা মিথ্যা হলেও বলতে বারণ করি না, শুনতেই থাকি। বরং আরও বেশি কামনা করি। এর বিপরীতে নিন্দা বা সমালোচনা একদমই সহ্য করতে পারি না। চরম বাস্তব ও সত্য হলেও সমালোচককে থামিয়ে দিই। ক্ষমতা থাকলে নিন্দুককে দমিয়ে দিই, শায়েস্তা করি।
অথচ উচিত ছিল, সমালোচনা আমলে নিয়ে নিজেকে সংশোধন ও পরিশীলিত করা। জীবনকে সুন্দর করে সাজানো।
মানুষ শুধু প্রশংসা শুনতেই যে পছন্দ করে, তাই না—বরং কেউ কেউ বলতেও পছন্দ করে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মানুষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হই আমরা। আর যদি প্রশংসিত ব্যক্তি জাগতিক কোনো পদ-পদবি বা ক্ষমতার অধিকারী হয়, তাহলে তো একদম লাগামহীন হয়ে যাই। ইনিয়ে-বিনিয়ে কত কথাই না বলি তাকে খুশি করতে। এককথায় যাকে বলে চাটুকারিতা বা তেলবাজি।
এতে তার থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যায়। কিছু অর্থকড়িও হয়তো মিলে। কিন্তু সামান্য এই স্বার্থের জন্য আমরা কখনো নির্জলা মিথ্যা পর্যন্ত বলে ফেলি নির্দ্বিধায়। অথচ প্রতিটি মিথ্যার জন্য কবিরা গুনাহ লেখা হচ্ছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) এভাবে সামনাসামনি কারও প্রশংসা করা পছন্দ করতেন না। কাউকে এমনটা করতে দেখলে বারণ করতেন। এক হাদিসে এসেছে, একবার নবীজি (সা.) এক ব্যক্তিকে কারও প্রশংসা করতে শুনে বললেন, ‘তোমরা তো তাকে ধ্বংস করে দিলে। তোমরা তার মেরুদণ্ড ভেঙে দিলে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৬৩, সহিহ্ মুসলিম: ৬৭)
অতিরিক্ত প্রশংসার কারণে মানুষ অনেক সময় কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলে। আগের মতো পূর্ণোদ্যমে আর কাজ করতে পারে না। তাই নবীজি এটাকে মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাই কোনো ভালো কাজের পরিমিত প্রশংসার সঙ্গে ভুলত্রুটি কিছু থাকলে তা সুন্দরভাবে ধরিয়ে দেওয়া উত্তম। এতে ভবিষ্যতে আরও সুন্দর কাজের আশা করা যায়।
একবার নবীজির কাছে এক ব্যক্তির কথা বলা হলো। আরেক ব্যক্তি তখন তার প্রশংসা করতে শুরু করল। তা দেখে নবীজি (সা.) বললেন, ‘তোমার অকল্যাণ হোক, তুমি তো তোমার বন্ধুর ঘাড় কেটে দিলে! (কথাটা নবীজি কয়েকবার বললেন) তোমাদের কেউ যদি কারও প্রশংসা করেই, তাহলে যেন বলে—আমি তার ব্যাপারে এমন এমন ধারণা করি, যদি বাস্তবেই সে এমনটা মনে করে থাকে। তার হিসেব আল্লাহ নেবেন। তিনি ছাড়া আর কেউ কারও ভালো হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত জানতে পারে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৬২, সহিহ্ মুসলিম: ৬৫)
হজরত উসমান (রা.)-এর একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে হাদিসের কিতাবে। এক লোক তার সামনে বসে তার প্রশংসা করতে লাগল। সেখানে মিকদাদ (রা.)-ও ছিলেন। তিনি তা দেখে হাঁটু গেড়ে বসে লোকটির মুখে ছোট কঙ্কর মারতে শুরু করলেন। উসমান (রা.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হলো তোমার, এমন করছ কেন!’ তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমরা কাউকে মুখের ওপর প্রশংসা করতে দেখবে, তার মুখে মাটি নিক্ষেপ করবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৯)
এসব হাদিসে নবীজি (সা.) কারও সামনাসামনি বা অতিরিক্ত প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন। আবার কিছু হাদিসে এর বৈধতার প্রমাণও পাওয়া যায়। তাই বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম এর সামঞ্জস্যবিধান করেছেন এভাবে—প্রশংসিত ব্যক্তির যদি ইমান-আমল ও আত্মশুদ্ধি পরিপূর্ণ থাকে, প্রশংসার কারণে যদি মনে কোনো ধরনের গর্ব-অহংকার ও বড়াই না আসে, তাহলে তা জায়েজ আছে। এর বিপরীত হলে সম্মুখ-প্রশংসা কঠোরভাবে অপন্দীয় ও গর্হিত কাজ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
তাই আমাদের উচিত, মানুষের অমূলক প্রশংসা থেকে নিজেদের বিরত রাখা।
লেখক: মুহাদ্দিস, খতিব
কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা এই পঙ্ক্তিগুলো শুধু কাব্যের সৌন্দর্য নয়, এগুলো একটি চেতনার ঘোষণা। কাজী নজরুল ইসলাম এই চার লাইনের মধ্যে তুলে ধরেছেন ইসলামের সর্বজনীনতা, সাম্যের দীক্ষা এবং মানবতাবাদের এক অভিন্ন বার্তা। কিন্তু আমরা যখন এই কবিতার আলোকে বর্তমান বাংলাদেশের দিকে তাকাই, তখন অনেক প্রশ্ন ভিড়...
৩৮ মিনিট আগেসুখী সংসার গঠনে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হয়। বিশেষ করে স্বামীকে হতে হয় খুব সচেতন, দায়িত্ববান এবং চিন্তাশীল। ঘরে ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে তাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করা সচেতন পুরুষের পরিচয়। এটি নবী করিম (সা.)-এর সুন্নত। এতে অত্যন্ত সওয়াবও পাওয়া যায়।
৬ ঘণ্টা আগেবিশ্বাসভঙ্গের এক নির্মম রূপ বিশ্বাসঘাতকতা বা গাদ্দারি। এটি বিশ্বাসের বন্ধন ছিন্ন করে দেয়। বিশ্বাস মানুষের মনে-প্রাণে আস্থার দেয়াল গড়ে তোলে। আর বিশ্বাসঘাতকতা সেই দেয়ালে আঘাত করে ভেঙে ফেলে সবকিছু।
১৩ ঘণ্টা আগেসময়ের এক গাঢ় দুপুরে, জ্ঞান ভুবনের দরজায় এক সন্ন্যাসী দাঁড়িয়ে ছিলেন—নীরব, দীপ্ত, অদ্ভুত নিরাসক্ত। তাঁর হাতে ছিল না কোনো তরবারি, ছিল কেবল এক কলম। তাঁর কণ্ঠে ছিল না কোনো উচ্চারণ, কিন্তু তাঁর লেখা যুগে যুগে উচ্চারিত হয়েছে পৃথিবীর সকল ভাষায়। তিনি ইবনে সিনা। মৃত্যু তাঁকে কেড়ে নেয় ১০৩৭ সালের ২২ জুন...
১ দিন আগে