Ajker Patrika

যে কারণে গোপনে দান করতে বলেছেন নবীজি

ইসলাম ডেস্ক 
যে কারণে গোপনে দান করতে বলেছেন নবীজি। ছবি: সংগৃহীত
যে কারণে গোপনে দান করতে বলেছেন নবীজি। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে দান-সদকা একটি মহান ইবাদত। এই ইবাদত মানুষের হৃদয় পরিশুদ্ধ করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ সুগম করে। শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা নয়, বরং এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষাও বটে—কে তাঁর রাস্তায় কতটা উদার হতে পারে?

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সদকা বিপদ দূর করে এবং মৃত্যু ছাড়া যে বিপদ নির্ধারিত ছিল, তা সরিয়ে দেয়।’ (জামে তিরমিজি)।

এই হাদিস থেকে স্পষ্ট—দান শুধু দরিদ্রের প্রয়োজন মেটায় না, বরং দানকারী নিজেও এর মাধ্যমে নানা অজানা ও অদৃশ্য বিপদ থেকে রক্ষা পায়। কখনো কোনো দুর্ঘটনা, কঠিন রোগ, দাম্পত্য কলহ, মানসিক অশান্তি কিংবা আর্থিক সংকট—এসব থেকে দান-সদকা মানুষকে রক্ষা করতে পারে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তাদের দৃষ্টান্ত একটি বীজের মতো; যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়—প্রতিটি শীষে ১০০ দানা থাকে।’ (সুরা বাকারা: ২৬১)। এ

আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, দান-সদকা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং তা বহুগুণে ফিরিয়ে দেয়। দান শুধু ধনীদের কাজ নয়। সামান্য যা আছে, তা দিয়েও দান করা যায়।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একটি খেজুরও যদি থাকে, তা দিয়ে দান করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। অর্থাৎ, যার যা আছে, তা দিয়েই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।

দান-সদকা সহানুভূতি ও মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে। দানের মাধ্যমে সামাজিক ভারসাম্য তৈরি হয়, ধনী-গরিবের মাঝে ভালোবাসা ও সহমর্মিতা গড়ে ওঠে। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য—নিজের জন্য নয়, অন্যের উপকারের মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা।

নবীজি (সা.) ছিলেন দানশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি বলেছেন, ‘দান গোপনে করো, তা আল্লাহর ক্রোধ নিভিয়ে দেয়।’ (তাবারানি)। গোপনে দান করা মানুষের একনিষ্ঠতা প্রকাশ করে এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার পথ খুলে দেয়।

পরকালে দানকারীদের মুখমণ্ডল হবে উদ্ভাসিত। দুনিয়াতে আল্লাহ তাদের জীবনে প্রশান্তি, নিরাপত্তা ও অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত নিয়মিত দান করা—তা যত অল্পই হোক না কেন। বিপদের আগে সদকা একটি ঢাল; যা বিপদের সময় রহমতের ছায়া হয়ে পাশে থাকে।

লেখক: রাফাত আশরাফ, শিক্ষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত